বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা বেদনায় নীল হয়েছি। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, ন্যায়বিচারের জন্য লড়াইয়ে অদম্য স্পৃহা দেখিয়েছে। আমরা মনে করি ফুলপরী বাংলাদেশে বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামালের উত্তরসূরী। যৌন হয়রানি ও র্যাগিং বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হচ্ছেন ফুলপরী। ফুলপরীকে আমরা স্যালুট জানাই। নিপীড়কের যে দলীয় ক্ষমতার পারিবারিক পরিচয় থাকুক না কেন, ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে সব ভেঙে যাবে।
রোববার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘র্যাগিং যৌন হয়রানি বিরোধী পদযাত্রা’ শেষে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক), আলিয়া ও কওমী মাদরাসা, স্কুল কলেজের ঘটনা ঘটে যাওয়া ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন ও হতাশ করে। সেই সব নিরসনই আমাদের যাত্রা। কথার ফুলঝুরি ছুটানো বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র লক্ষ্য নয়। আমরা সমস্যা মোকাবিলা এবং শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে জানি।
সাদ্দাম আরও বলেন, র্যাগিংয়ের পিছনে ছাত্র রাজনীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রশাসন সবার দায় রয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা ছাত্রলীগসহ সকল ছাত্রসংগঠন জিরো টলারেন্স নীতিপ্রদর্শন করব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। শুধু ছাত্ররাজনীতির ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। ঘটনা ঘটার পর ব্যবস্থা গ্রহণই শুধু নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই সমস্যা স্বীকার করতে হবে এবং রূপরেখা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে।
ছাত্রলীগের ডাকে ক্যাম্পাসে যাননি ফুলপরী, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগ নেত্রীর দ্বারা ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় বক্তব্য দিতে ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনকে রোববার ক্যাম্পাসে ডেকেছিল সংগঠনটির গঠিত তদন্ত কমিটি। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি ক্যাম্পাসে যাননি।
ফুলপরী সমকালকে জানান, তিনি বাড়ি থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত যাওয়া-আসার নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রক্টর তাকে কুষ্টিয়া ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দেবেন বলে জানান। কিন্তু বাকি পথে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ফুলপরী।
তবে, ক্যাম্পাসে না গেলেও ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি ফোনে ফুলপরীর বক্তব্য নেবে বলে জানা গেছে।
ফুলপরী বলেন, ‘নিরাপত্তা নেই, তাই আমি যাইনি। আমি প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাকে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া ও রেখে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। স্যার বলেছিলেন, আমি তোমাকে কুষ্টিয়া শহর ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দেব। যদি আসো আমাকে জানিয়ো।’
ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে আজ আর কেউ যোগাযোগ করেনি বলেও জানান ফুলপরী।
শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মুন্সী কামরুল হাসান অনিক সমকালকে বলেন, ‘যেহেতু সে আসবে না, তাই আমরা ফোনে তার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করব। আজকে আমাদের তদন্ত কার্যক্রমের শেষ দিন। আজই প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।’
সূত্র:সমকাল।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,