Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পেলের আজ চলে যা‌ওয়া এবং ক্লাস ফাইভে পেলেকে নিয়ে সেই গল্প (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: নাইর ইকবাল ,ঢাকা।

বৃহস্পতিবার (ডিসেম্বর ২৯, ২০২২) ৮২ বছর বয়সে সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন পেলে।

তখনো ১৯৫৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের ফুটেজ দেখা হয়নি। দেখা হয়ে ওঠেনি ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতালিকে নিয়ে ছেলেখেলা করার দৃশ্যগুলো। কিন্তু একটি নাম খুব ছোটবেলা থেকেই মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল—এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। ফুটবল কিংবদন্তি পেলের আসল নাম যে এটি, তা ক্লাস ফাইভেই জেনে গিয়েছিল বাংলাদেশের একটি প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা।

বাংলা বইয়ে সেই গল্পটির নাম ছিল ‘কালোমানিক পেলে’। সেই গল্পের কী যে এক আকর্ষণ। পড়তে বসলেই বারবার পাতা উল্টে পড়তে ইচ্ছা করত গল্পের লাইনগুলো, ‘…তাঁর আসল নাম এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। ডাক নাম পেলে।’ গল্পটি ছিল সাও পাওলোর এক ছোট্ট ছেলের কিংবদন্তি ফুটবলার হয়ে ওঠার। তাঁর সংগ্রামের গল্প। পরিবারের অভাব মেটাতে দোকানে কাজ করা, এমনকি জুতা পরিষ্কার করার সেই সংগ্রাম। পড়তে পড়তে কী এক অদ্ভুত মমতা পেয়ে বসত বাংলা বইয়ের ওই ‘এডসন’ –এর প্রতি। ছোটবেলায় এত কিছু করেও তিনি ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর সাধনায় মাত্র ১৬ বছর বয়সেই তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করলেন। ফুটবলার হিসেবে ছড়িয়ে পড়ল তাঁর খ্যাতি। সেখান থেকেই ব্রাজিলের হলুদ–নীল জার্সি, বিশ্বকাপ জেতা, কিংবদন্তি হয়ে ওঠা।

পড়তে পড়তে স্বপ্নাতুর হয়ে উঠত দুই চোখ। হওয়া যায়, ইচ্ছা থাকলে আর চেষ্টা থাকলে অনেক কিছুই হওয়া যায়। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘কালোমানিক’–এর গল্প এ দেশের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছিল। পেলে নিজেও কি জানতেন, তাঁর দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের ছোট্ট এক বদ্বীপের কতগুলো প্রজন্ম তাঁর জীবনের কাহিনি পড়ে স্বপ্ন দেখেছে বড় কিছুর। তিনি কি জানতেন, তাঁর অনেকটাই আড়ালে পড়ে যাওয়া ওই বিরাট নামটি কত ছেলমেয়ে মুখস্থ করে পরীক্ষা দিয়েছে!

এখনো স্পষ্ট মনে আছে, বাংলা বইয়ের গল্প–কবিতা–ছড়ার ভিড়ে একটু পরের দিকেই ছিল পেলের জীবন নিয়ে সেই গল্পটি। বছরের শুরুতে বই পাওয়ার পর আর সবকিছু বাদ দিয়ে কতজন যে ওই গল্পই ঠোঁটস্থ করে রেখেছিল, তার হিসাব নেই। শিক্ষাবর্ষের যে সময় ওই গল্প স্যার পড়ানো শুরু করলেন, তার আগেই সেটি ঝাড়া ঝাড়া। কী উত্তেজনা সেদিন ক্লাসে! স্যার হাসি হাসি মুখ করে পড়াতে লাগলেন, ‘ফুটবলের কালোমানিক পেলে…!’

পরীক্ষায় ওই গল্প নিয়ে খুব বেশি প্রশ্ন আসত না। শিক্ষকেরা ধরেই নিতেন, এই গল্প থেকে প্রশ্ন করে লাভ নেই। সবাই পারবে। কোনো কারণে যদি একটি–দুটি প্রশ্ন সেই গল্প থেকে হয়ে যেত, তাহলে তো উৎসব! মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখা। নিজেদের অল্পবিস্তর ফুটবল–জ্ঞান পরীক্ষার খাতায় ঝেড়ে দেওয়ার মস্ত বড় সুযোগ। এই সুযোগ কেউ ছাড়ে!

প্রজন্মান্তরে জীবনের অংশ হয়েই ছিলেন পেলে। বাংলা বইয়ের সেই গল্পে ছিল শুধু তাঁর জীবনের সংগ্রামের গল্প, ফুটবলার হয়ে ওঠার গল্প। পরের গল্পটা ছিল না। সেটি এক কিংবদন্তি হয়ে ওঠার, ফুটবলের সাম্রাজ্য নিজের করে নেওয়ার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিষেকেই গোল, এরপর ব্রাজিল দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা, তা–ও তিন–তিনবার। ফুটবলের অবিসংবাদিত নাম হয়ে ওঠা। একসময় নাকি জরিপ করেই দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় যেকোনো ব্র্যান্ডের মতোই ‘পেলে’ নামটিও একটা ব্র্যান্ড। অনেকটা সময়জুড়ে, অন্তত ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো আরেক কিংবদন্তির আবির্ভাব পর্যন্ত ফুটবল–দুনিয়ায় পেলেকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতোই কেউ ছিলেন না।

পেলে কোনো দিন বাংলাদেশে আসেননি। হয়তো বাংলাদেশের নামটি তিনি জানতেন। ব্রাজিল থেকে বহু দূরের এই দেশের মানুষও তাঁর চিরবিদায়ে অনুভব করছে বিরাট শূন্যতা। হয়তো সেই ক্লাস ফাইভের গল্পটির জন্যই। সেই গল্পটিই তো পেলের মতো আকাশের নক্ষত্রকে আমাদের খুব আপনজনে পরিণত করেছিল। তাঁর মৃত্যু যেন আমাদের জীবনের একটি অধ্যায়েরই নাই হয়ে যাওয়া।

অনন্তলোকে ভালো থাকবেন পেলে। আমরা আপনাকে ভালোবাসি।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ডিসেম্বর ৩০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ