Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুতিনই কি বিশ্বের গোপন শীর্ষ ধনী (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:শওকত হোসেন।

পল ক্লেবনিকভ, ‘ফোর্বস’ রাশিয়ার সম্পাদক। ২০০৪ সালের ৯ জুলাই। ‘ফোর্বস’ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে একটু সামনে এগিয়েছেন। সময়টা ছিল মধ্যরাত। একটি গাড়ি থেকে চারবার গুলি করা হলো পলকে। মস্কোর রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন। হাসপাতালে নিতেও দেরি হলো। যে অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল, তাতে ছিল না অক্সিজেনের ব্যবস্থা, এমনকি হাসপাতালের লিফটও ছিল নষ্ট। ফলে অপারেশন টেবিলে পৌঁছাবার আগেই মারা গেলেন ওই অনুসন্ধানী সাংবাদিক। পল ক্লেবনিকভ রাশিয়ার শীর্ষ ধনীদের নিয়ে কাজ করতেন। তাঁর অনুসন্ধানের লক্ষ্য ছিল, রাশিয়ার হঠাৎ ধনী হওয়া ব্যবসায়ীদের সম্পদের খোঁজ পাওয়া। ধারণা করা হয় পল ক্লেবনিকভের মৃত্যুর জন্য দায়ী রাশিয়ার ধনী ব্যবসায়ী বরিস বেরেজভস্কি। তিনিই তিন চেচেন ভাড়াটে খুনিকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

পুতিনের সম্পদ দখলের তিন মডেল

এবার মিখায়েল খুদোরকভস্কির কথা বলা যেতে পারে। ‘ফোর্বস’-এ তখনকার ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ মিখায়েল খুদোরকভস্কির সম্পদ নিয়ে পল ক্লেবনিকভ প্রথম লেখাটি লিখেছিলেন ২০০২ সালে। তখন তার কোম্পানি ‘ইওকস’ রাশিয়ার ১৭ শতাংশ তেল উৎপাদন করত। ৩৭০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে তিনিই ছিলেন রাশিয়ার শীর্ষ ধনী। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি তহবিল জোগাতেন। একসময় তাঁর কোম্পানিতে কাজ করতেন, এমন একজন ছিলেন পুতিনের জ্বালানিমন্ত্রী, আরেকজন ডেপুটি চিফ অব স্টাফ। ২০০৩ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে তাঁকেই জেলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার কথা উল্লেখ করে ‘ফোর্বস’ লিখেছে, জেলে দেওয়ার পাশাপাশি মিখায়েল খুদোরকভস্কির সব সম্পদ জব্দ করা হয়, কোম্পানিকেও দেউলিয়া ঘোষণা দেওয়া হয়। সন্দেহ নেই তাকে আটকের পেছনের মানুষটি ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুতিন খুদোরকভস্কির সম্পদ দিয়ে কী করেছিলেন? বলা হয়, তা পুতিনের দখলেই চলে যায়। পুতিন যে তার সম্পদ গ্রাস করেছিলেন, এই তত্ত্বের দাবিদার হচ্ছে বিল ব্রাওডার। তিনি একসময় রাশিয়ায় সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজ করতেন, পরে পুতিনবিরোধী হন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে বেসরকারীকরণ নীতি নেওয়া হলে রাশিয়ার একশ্রেণির মানুষ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। পুতিন সম্পদ দখলের জন্য তাঁদেরই বেছে নিয়েছিলেন। বিল ব্রাওডার বলেন, পুতিন এসব ব্যবসায়ীর সঙ্গে একটি ডিল বা চুক্তিতে এসেছিলেন। চুক্তিটি হলো—‘তুমি আমাকে তোমার সম্পদের ৫০ শতাংশ দিয়ে দাও, বাকি ৫০ শতাংশ রক্ষার দায়িত্ব আমার। আর যদি তা না করো, তবে ১০০ শতাংশই আমার আর তুমি থাকবে জেলে।’ বিল ব্রাওডার ২০১৭ সালে হিসাব করে মার্কিন সিনেটের এক শুনানিতে বলেছিলেন, ‘এ পথে পুতিনের অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার।’

২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে করা তদন্তে এফবিআইয়ের সাবেক প্রধান রবার্ট মুয়েলার রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান পিওতর এভেনকে উদ্ধৃত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘পিওতর এভেন হচ্ছেন, রাশিয়ার সেই ৫০ ব্যবসায়ীর একজন, যাঁরা নিয়মিতভাবে ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে মিলিত হতেন। সেই বৈঠকে পুতিনের প্রস্তাব বা সমালোচনাই ছিল আসলে একধরনের নির্দেশ। সে অনুযায়ী কাজ করতে হতো।’

পুতিনের এভাবে সম্পদ আহরণকে বলা হয়, ‘দ্য খুদোরকভস্কি মডেল’। তবে আরও দুটি মডেলের কথা প্রচলিত আছে। যেমন দ্য মাফিয়া মডেল ও দ্য ব্লাস্টার মডেল। সম্পদ আহরণের মাফিয়া মডেল হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা সহযোগী ও পরিবারের সদস্যদের সরকারি কাজ দাও। এর বিনিময়ে একটি অংশ (শেয়ার বা নগদ অর্থ) পাবে দলের মাফিয়াপ্রধান। সুইডিশ অর্থনীতিবিদ আন্দ্রেস অসল্যান্ড ২০১৯ সালে লিখেছিলেন ‘রাশিয়াস ক্রনি ক্যাপিটালিজম’ নামে একটি বই। সেখানে বলা হয়েছে, পুতিন তাঁর বাল্যবন্ধু, পরিবারের সদস্য, দেহরক্ষী এবং অন্য ঘনিষ্ঠদের কাছে সম্পদ গচ্ছিত রাখেন। তাঁর হিসাবে, প্রত্যেকের কাছে ৫০ কোটি থেকে শুরু করে ২০০ কোটি ডলারের সম্পদ রাখা আছে। এই হিসাবে পুতিনের সম্পদ আছে ১৩০ বিলিয়ন ডলার।
আন্দ্রেস অসল্যান্ডের মন্তব্য হচ্ছে ‘রাশিয়ায় তুমি যত ধনী, তত বেশি নির্ভরশীল। এখানে সম্পদ তোমাকে অবশ্যই স্বাধীনতা দেয় না। যখন তোমার অনেক বেশি অর্থ, তখন তোমার জীবনে যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে।’
বিজ্ঞাপন

পুতিনের আছে বিপুল সম্পদ—এই দাবি করলেই শুধু চলবে না। প্রমাণ তো দিতে হবে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবেই উৎপত্তি হয়েছে ব্লাস্টার মডেলের। এই মডেল অনুযায়ী, পুতিনের নিজের নামে আলাদা করে কিছু রাখার দরকারটা কি? পুরো রাশিয়াই তাঁর দখলে। তাঁর এক ইশারায় রাশিয়ার যেকোনো কিছুই চলে আসবে তাঁর কাছে। যত দিন ক্ষমতা আছে, সবকিছুই থাকবে পুতিনের দখলে।

পুতিনের যত সম্পদ

ক্রেমলিন প্রতিবছরই পুতিনের সম্পদের বিবরণ দেয়। সে বিবরণ অনুযায়ী, সামান্যই সম্পদের মালিক তিনি। যেমন ২০২০ সালে তাঁর আয় ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার, সম্পদের মধ্যে ছিল ৩টি গাড়ি, ১টি ট্রেইলর, ৮০০ স্কয়ার ফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, ২০০ স্কয়ার ফুটের গ্যারেজ, ১৬০০ স্কয়ার ফুটের আরেকটি অ্যাপার্টমেন্ট, সঙ্গে দুটি গাড়ির পার্কিং।

দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়, পুতিন খুবই সাধারণ জীবন যাপন করেন। সুতরাং যে সম্পদের কথা পশ্চিমা বিশ্ব প্রচার করে, তা মোটেও সঠিক নয়। তবে তাঁর সম্পদের কথা যে কেবল পশ্চিমা বিশ্ব প্রচার করে তা নয়, রাশিয়ার অনেকেও তা করে থাকেন। এর মধ্যে কেউ আছেন, এক সময় পুতিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, এমনকি একসময় তাঁর সম্পদ দেখাশোনাও করেছেন। যেমন ক্রেমলিনের মধ্যম সারির উপদেষ্টা স্টানিসলভ বেলকভস্কি। ২০১২ সালে তিনি বলেছিলেন, পুতিনের সম্পদের পরিমাণ ৭০ বিলিয়ন ডলার। তিনি মূলত বিভিন্ন তেল কোম্পানিতে পুতিনের গোপন শেয়ারের ভিত্তিতে ওই হিসাব দিয়েছিলেন।

পুতিনের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত বিল ব্রাওডার। তিনি একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির প্রধান ছিলেন। তিনি রাশিয়ায় সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজ করতেন এবং পুতিনের ভক্ত ছিলেন। কিন্তু ২০০৫ সালে একদিন তাঁকে রাশিয়া থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং রাশিয়ায় তাঁর প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানো হয়। রাশিয়া কেন এ ধরনের কাজ করছে তা জানতে সার্জেই মাগনিটস্কি নামে একজন তরুণ আইনজীবীকে নিয়োগ দেন। তিনি রাশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার জালিয়াতির প্রমাণ পান। এই নিয়ে আদালতে শুনানি চলা অবস্থাতেই গ্রেপ্তার হন মাগনিটস্কি এবং কারাগারেই মারা যান।

বিল ব্রাওডার রাশিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওই ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হলে ওবামা সরকার ২০১৭ সালে ‘মাগনিটস্কি লেজিসলেশন’ নামের একটি আইন পাস করে। ওই আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত যে কোনো বিদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। বিল ব্রাওডার এ নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। ‘রেড নোটিশ: এ ট্রু স্টোরি অব হাই ফিন্যান্স, মার্ডার অ্যান্ড ওয়ান ম্যানস ফাইট ফর জাস্টিস’ বইটি আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
পুতিনই কি গোপন শীর্ষ ধনী

এ বিষয়ে গুগলে কয়েক শ লেখা পাওয়া যাবে। ইউক্রেনে হামলার পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা আরও জোরদার হয়েছে। ফরচুনের শিরোনাম হচ্ছে, ‘পুতিনের আসল সম্পদ আসলে একটি রহস্য, যা কেউ ভেদ করতে পারেনি’। আর ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’–এর শিরোনাম হচ্ছে, ‘মিথ্যা, সম্পর্ক ও লোভ, যা পুতিনকে বিশ্বের সেরা ধনী বানিয়েছে।’

পুতিনের সমালোচকেরা তাঁর সম্পদের হিসাবের দিক থেকে বিল ব্রাওডারের দেওয়া হিসাবকেই বেশি উল্লেখ করেন। অর্থাৎ তাঁর সম্পদের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার। সঙ্গে অন্যান্য সম্পদ তো আছেই। বর্তমানে ঘোষিত শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সম্পদ ২২৩ বিলিয়ন ডলার ও দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী জেফ বেজোসের সম্পদ ১৭৮ বিলিয়ন ডলার। বলা হচ্ছে, সব মিলিয়ে পুতিনের সম্পদ ইলন মাস্কের চেয়েও বেশি। সুতরাং পুতিনই গোপনে বিশ্বের শীর্ষ ধনী।

এখন দেখা যাক, ২০০ বিলিয়ন ডলারের বাইরে পুতিনের আর কী কী আছে। পুতিনকে প্রায়ই বেশ কিছু দামি হাত ঘড়ি পরতে দেখা যায়। এর মধ্যে আছে পাটেক ফিলিপস পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ওয়াচ ও এ. লান্জ অ্যান্ড শোন টৌবোগ্রাফ ওয়াচ। যার মূল্য যথাক্রমে ৬০ হাজার ডলার ও ৫ লাখ ডলার।

গুজব আছে, পুতিন ১ লাখ ৯০ হাজার স্কয়ার ফুটের একটি ম্যানশনের মালিক, যার মূল্য ১৪০ কোটি ডলার। এটার নাম ব্ল্যাক সি ম্যানশন। এটিকে বলা হয় পুতিনের কান্ট্রি কটেজ। ওই কটেজের স্থপতি ছিলেন ইতালির বিখ্যাত লানফ্যানকো সিরিলো। অভিযোগ হচ্ছে, ‘হেলথ’ নামে রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রীয় প্রকল্প আছে। ওই প্রকল্প থেকে অর্থ সরিয়েই ম্যানশনটি নির্মাণ করা হয়েছে। যদিও ক্রেমলিন বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে। তবে যেভাবে পুরো এলাকাটিকে ‘নো ফ্লাই জোন’ হিসেবে রাখা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এফএসবির পাহারা দেয়, তাতে ম্যানশনটি পুতিনের বলেই সবাই ধরে নিয়েছেন।

আরও প্রচলিত আছে, পুতিনের মালিকানায় আছে আরও ১৯টি বাড়ি, ৭০০ গাড়ি এবং ৪৮টি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার। এর মধ্যে একটি উড়োজাহাজের দাম ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যাকে বলা হয়, ‘উড়ন্ত ক্রেমলিন’। এটির বাথরুম সোনা দিয়ে তৈরি। আর আছে ১০ কোটি ডলার মূল্যের একটি সুপার ইয়ট। ‘টাইম ম্যাগাজিন’ লিখেছেন, কিছু মেরামত কাজের জন্য এই ইয়টটি কদিন আগেও জার্মানিতে ছিল। মেরামত শেষ না হতেই হঠাৎ করেই ইয়টটি রাশিয়ায় ফিরে গেছে। সম্ভবত, ইউক্রেন আক্রমণ করবেন বলেই ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন পুতিন।

পুতিনের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা

ইউক্রেন আক্রমণ করায় রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তি পুতিনের ওপরেও আরও নিষেধাজ্ঞার চাপ রয়েছে। কিন্তু তা করার আগে জানতে তো হবে কোথায় রয়েছে পুতিনের সম্পদ।

টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে, রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি তাদের কাছে এক লেখা চিঠিতে বলেন, ‘পুতিনকে ধরতে হলে তাঁর সম্পদকে ধরতে হবে।’ রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, পুতিনের সম্পদ আছে সব পশ্চিমা বিশ্বে। লুকানো আছে বা আছে অন্যের নামে। সুতরাং তার সহযোগীদের ধরতে হবে। ‘পানামা পেপারস’-এ তেমন কয়েকজন সহযোগীর নাম এসেছিল।

সব মিলিয়ে পুতিনকে নিয়ে বেশ বিপদেই আছে পশ্চিমা বিশ্ব। তাঁর সম্পদের নানা রকম তথ্য দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু প্রত্যক্ষ প্রমাণ আছে কম। পুতিনের ব্যক্তিগত সম্পদ এখনো ধোঁয়াশা হয়েই আছে। এই রহস্যের সমাধান হবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ০৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ