কোন কিছুর মধ্যে কোন একটা পার্থক্য খুঁজে না পাওয়াটাই অন্যতম একটি সহজ কাজ। সঠিক কোন পার্থক্য খুঁজে বের করাটা জ্ঞানী আর বিজ্ঞানীর কাজ বলেই কোন কিছুর মধ্যে পার্থক্য খুঁজে বের করাটা সবচেয়ে কঠিন ও দৃঢ় কাজ।
একটা উদাহরণ দেই। আমার চেয়ে আরও একটু বোকা ও সরল ধরণের এক বন্ধু বলল ” আমি জোড় গলায় বলতে পারি এগুলি সবই পাথর।” আমি আমার সরল বন্ধুটিকে থামিয়ে দিয়ে নিজে পাথরগুলির মধ্য থেকে কয়লার টুকরাগুলি, ইটের টুকরাগুলি আলাদা করতে করতে খাঁটি জহুরি এসেই বলল ” দূরে সর, দূরে সর। এসবই দামি আর অমূল্য পাথর, রত্ন। সমস্যা হয়েছে একটাই অমূল্য পাথর রত্নগুলি ইট আর কয়লার টুকরার সাথে মিশে পড়েছে। ” আমাদেরকে বলল ” তোমরা কী অমূল্য পাথর, রত্ন, মণি, মুক্তা চিন !!” আমরা মাথা নাড়িয়ে বুঝালাম আমরা অমূল্য পাথর, রত্ন, মণি, মুক্তা ভালোই চিনি। খাঁটি জহুরি বলল ” তা হলে তোমরা অমূল্য পাথর রত্ন, মণি, মুক্তা বাদ রেখে কয়লার টুকরাগুলি, ইটের টুকরাগুলি কেন পৃথক করছিলে।” আশা করি আমাদের জ্ঞানের গভীরতা নিয়ে আর কারো কোন প্রশ্ন চিহ্ন থাকার কথা নয়। এক কথায় নিরেট মূর্খ্য।
এখন রাত অনেক গভীর। প্রায় রাত দুইটা। আজ শনিবার। সাপ্তাহিক ঘুমাবার দিন। প্রয়োজনে সারা দিনেই ঘুমাব। সাপ্তাহিক খাওয়া-দাওয়ার জন্য বাজার করাটাও গৃহকর্তিকে অনেক বুঝিয়ে স্থগিত করে রেখেছি। কোনটার কর কমলো আর কোনটার কর বাড়লো !! এসব তো চট করে বুঝার উপায় নেই। দুদিন আগে বাজেট হয়েছে মাত্র। এসব হিসাব নিকাশ করে এক সাপ্তাহ পর সাপ্তাহিক বাজার ঘাট করলে বেশ কটা টাকা জমা হত। মাসের বাজেটে ধরা আর সখের হাঁড়ি পাতিলগুলিও কেনা যেত।
কিন্তু সমস্যা হল। মাথায় একটা চিন্তা এসেছে রাতের বেলা যে ছোট হওয়া বা ক্ষুদ্র, নাকি তুচ্ছ ছোট !!
গভীর রাতে মনে হল, যে মন দরিদ্র সে মন তুচ্ছ। আর কাছে যাকে পায় তাকে তাচ্ছিল্ল বা তামাশা করে। আর অবশেষে তুচ্ছ মন সংকোচিত হয়ে থাকে। সংকোচিত হয়ে পদতলে স্থান করে নেয়।
এক অর্থে ক্ষুদ্রই বৃহৎ। মহৎ। এমন একটি ব্যাখ্যা মনে এসেছে কিন্তু নিদ্রার মধ্যে যে বড় শান্তি। এটাকেই এখন বড় মনে হচ্ছে। মনে যে ব্যাখ্যা এসেছে স্মৃতি শক্তি উন্নত হলে অবশ্য ” এক অর্থে ক্ষুদ্রই বৃহৎ ও মহৎ” এ নিয়ে কলমে লেখা আসবেই।
তারিখ: জুন ০৯, ২০১২
রেটিং করুনঃ ,