Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পশ্চিমা মিডিয়ায় যেভাবে নায়ক জেলেনস্কি, খলনায়ক পুতিন (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক: শুভা জিনিয়া চৌধুরী ঢাকা।

ভ্লাদিমির আর ভলোদিমির। নাম দুটো কাছাকাছি হলেও মানুষ দুটো তা নন। একটি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের নামের প্রথম অংশ। আরেকটি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের নামের প্রথম অংশ। এক বছর ধরে চলা যুদ্ধের দামামা, অস্ত্রের ঝনঝনানি, রক্তপাত, হানাহানির খবরে ঠাসা বিশ্ব গণমাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দুজনই এখন আলোচিত নাম।

পশ্চিমা গণমাধ্যমে অবশ্য পুতিনের খবর নতুন নয়। ২২ বছর ধরে রাশিয়ার ক্ষমতায় থাকা, মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসে চারবার ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় থাকা পুতিন তাঁর কার্যকলাপ, বক্তব্য, পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানের কারণে বরাবরই আলোচিত।

জেলেনস্কি প্রায় চার বছর ধরে ইউক্রেনের ক্ষমতায়। গত এক বছরে জেলেনস্কিকে নিয়ে গণমাধ্যমে যত আলোচনা হয়েছে, তার আগের তিন বছরে এর একভাগও হয়নি। বিশ্বে বহু দেশের মানুষ হয়তো নামটাও ভালোভাবে জানতেন না। জেলেনস্কির জনপ্রিয়তার শুরুটা কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কল্যাণেই। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে গণমাধ্যমের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন জেলেনস্কি। একসময়ের কৌতুক অভিনেতাকে রীতিমতো নায়ক করে তুলেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। আর পশ্চিমা গণমাধ্যমে যুদ্ধের ময়দানে জেলেনস্কি যখন নায়ক, তখন স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতিপক্ষ পুতিন আবির্ভূত হয়েছেন খলনায়ক হিসেবে।

পশ্চিমা গণমাধ্যমে পুতিন যেমন

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন পুতিন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য বানানো হলে সেটি তাঁর দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। অভিযান শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য তিনটি শর্ত দেন পুতিন। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির খবর অনুসারে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক ফোনালাপে এসব শর্তের কথা বলেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে ছিল ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি, ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও নাৎসিবাদের প্রভাবমুক্ত করা এবং দেশটির নিরপেক্ষ অবস্থান (পশ্চিমাপ্রীতি কাটানো) নিশ্চিত করা।

তবে পশ্চিমা সমালোচকেরা মনে করেন, পুতিন রাশিয়াকে নিজের খেয়ালখুশিমতো চালাচ্ছেন। যুদ্ধের জন্য একতরফাভাবে পুতিনের একগুঁয়েমিকে দায়ী করে পশ্চিমা গণমাধ্যম। আরটির খবর বলছে, গত বছরের মার্চে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাকালে পশ্চিমাদের ‘মিথ্যার সাম্রাজ্য’ আখ্যায়িত করেন পুতিন।

যুদ্ধের এক বছরের মাথায় এসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যুদ্ধের বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন পুতিন। পশ্চিমাদের বৈশ্বিক সংঘাতের বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, রাশিয়াকে এই যুদ্ধে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। যুদ্ধে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের দুঃখ-কষ্ট তিনি অনুধাবন করেন।

দিনে দিনে যুদ্ধ ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে। যুদ্ধে জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমারা। রাশিয়া ও পুতিনের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আর ইউক্রেন পেয়েছে অস্ত্রসহায়তা। এর পাশাপাশি গণমাধ্যমে পুতিনকে যুদ্ধের ময়দানে খলনায়কের ভূমিকায় উপস্থাপন করা হয়েছে। রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা, মাক্সার স্যাটেলাইটে ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ বহর নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়েছে পশ্চিমা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে।

যুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমা গণমাধ্যম পুতিনকে নিয়ে আজগুবি অনেক খবরও প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট, ফক্স নিউজ, ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম পুতিন ক্যানসারে আক্রান্ত, পুতিনের মুখ ফোলা, সই করতে গিয়ে পুতিনের হাত কাঁপা, সিঁড়ি থেকে পড়ে পুতিনের ‘মলত্যাগ করার’ খবরও ছেপেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সোমবার হঠাৎ ইউক্রেন সফর করেছেন। এই সফরকে কেন্দ্র করে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এই পদক্ষেপের জন্য পুতিনকে দোষী করা হচ্ছে। বিবিসি, রয়টার্স, এএফপিতে প্রকাশিত হচ্ছে, পুতিন এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কতটা ভুল করলেন, তার খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। নাম উল্লেখ না করলেও যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ইউক্রেনকেন্দ্রিক সংঘাতে ‘আগুনে ঘি ঢালা’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলেনস্কির নায়ক হয়ে ওঠা

যুদ্ধের শুরু থেকেই একের পর এক লাইভ ভিডিওতে এসেছেন জেলেনস্কি। তাঁকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পথে পথে। পশ্চিমাদের কাছে বারবার অস্ত্রসহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এসব খবর ফলাও করে প্রচার করেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম।

যুদ্ধের শুরুর দিক থেকেই জেলেনস্কিকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা না দিলেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার জেলেনস্কিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে জেলেনস্কি সে প্রস্তাবে রাজি না হয়ে যুদ্ধের মাঠে থাকতে চেয়েছেন।

কিয়েভ, মারিউপোল, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, সোলেদরে রুশ সেনাদের পিছিয়ে পড়ার খবর যতটা ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে, তাঁদের সাফল্যের খবর সেভাবে স্থান পায়নি। যেমন গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনীর সফলতাকে পশ্চিমা গণমাধ্যম ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। কিয়েভ ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা বলেছে, যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে পুতিন যে ইউক্রেনে জয় পাচ্ছেন, তা দেখাতেই মরিয়া হয়ে এ অঞ্চলে লড়াই করছেন রুশ সেনারা।

বর্তমান বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছে চীন

যুদ্ধের এক বছর পূর্তির আগে পুতিনের ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ ভাষণের ঠিক আগের দিন হঠাৎ করেই কিয়েভ সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করে যত দিন যুদ্ধ চলবে, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইউক্রেনকে কামানের গোলা, রাডারসহ নানা সমরাস্ত্র সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। জেলেনস্কি বলেন, বাইডেনের সঙ্গে দূরপাল্লার অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁর। বাইডেনের এই সফরের খবর ফলাও করে প্রচার করেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম।

পুতিন খলনায়ক, না জেলেনস্কি নায়ক, সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি নয়। বিশ্ববাসীর কল্যাণে এখন যে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা বেশি দরকার তা হলো, যুদ্ধটা থামবে কবে? আল–জাজিরায় প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ নিকোলে মিত্রখিন অবশ্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে ইউক্রেন ও রাশিয়ার হাতে পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই। তাই এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছর যুদ্ধ শেষ হবে বলে মনে করছেন তিনি। মিত্রখিনের ভবিষ্যদ্বাণী সময়ের আগে ফলে যাক। শিগগিরই এ যুদ্ধ শেষ হোক, এমনটাই চাওয়া ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধে প্রাণ যাওয়া উলুখাগড়া’ তথা বিশ্ববাসীর।

****তথ্যসূত্র: এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি, আরটি, আল জাজিরা।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ