বেশ আগে একটা লেখা লিখেছিলাম বেশ আগে মা কে নিয়ে ” কাঠ কাটার বড় বড় দাঁতওয়ালা করাত। ”
বুঝাতে চেয়েছিলাম আমদের জন্ম হয়েছে মায়ের কত কষ্টে, কত ব্যথায়। শরীরের পনেরো বিশটা হাড় ভেঙে ফেলার মত ব্যথা শরীরে ধারণ মা আমাদের জন্ম দিয়েছেন। কাঠ কাটার বড় বড় দাঁতওয়ালা করাত শরীরে চালানো্ পর আমাদের জন্ম হয়েছে।
তার পরও আমাদের মা কখনো কোন এ জনের প্রিয়া প্রেমিকা ছিলেন। এবং কোন সৌভাগ্যবান নরের। যে বা যারা নারীদের করেছেন মহীষিণী। ভাগ্যবতী। আবার দুঃখিনি।
মেয়েদের থেকে ছেলেরা। নারীদের থেকে নররা সব সময়ই সৌভাগ্যবান। এটা নিজের উপলদ্ধি।
পরীর বর্ণনায় যে নারী। সৌন্দর্যের বর্ণনায় যে নারী। কবির, চিত্র শিল্পীর বর্ণনায় যে নারী। ভাস্কর্য শিল্পীর বর্ণনায় যে নারী। এসবই নরের উপলদ্ধি।
নদীর মত, সমুদ্রের মত, গোলাপের মত যে নারী। আকাশের মত বিশাল। হিমালয়ের মত বিরাট। যাকে ভালোবাসার উচ্চতায় একবার উঠালে আর যাকে নিচে নামানো যায় না, এ উদারতা, এ সাহস, এ শক্তি শুধু নর রাই নারীর জন্য দেখাতে পারে। পেরেছে।
হঠাৎ চোখে চোখ। ছল করা অনুভুতি। অরণ্যের উপমায় কেশ। সবই নরের উপলদ্ধি। হরিনীর চঞ্চলতা। দিঘীর পানির মত শাস্ত। দেহে কস্তরি সম সুগন্ধির বন্ধনে চির বাঁধা। সবই নরের উপলদ্ধি।
চাঁদের আলোর মত, জোসস্নার আলোর মত নরম যে নারীর শরীর, এতো সবই তো নরের উপলদ্ধি। অনুভুতি।
তাজমহলের ভিতরের যে উপখ্যান সেও তো ছিল শুধু সম্রাট শাহ্জাহানের অনুভুতি, উপভোগ আর উপলদ্ধির বিষয়। মমতাজ মহলকে প্রেমিকা হিসাবে যে সময়ের ও কালে স্রোতে একটি শ্রেষ্ট কবিতা লিখা। একটি প্রেমের সমাধি, সেটিও শাহ্জাহানের অনুভুতি থেকে।
ইরানের কবি ওমর খৈয়াম নিজের অনুভুতি নিয়ে লিখেছেন –
” খৈয়াম, সুরা পানে যদি হও প্রমত্ত, প্রফুল্ল থাক তবে।
প্রফুল্ল হও, সুন্দরী প্রিয়া পাশে লও যবে।”
জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধন-দৌলত, রাজ্য-সম্রাজ্য সমস্তকে তুচ্ছ করে উচ্চ করে এনেছেন নারীকে। আর এ সবই নিজের অনুভুতি নিজের বা নর সকলের উপলদ্ধি।
ওমর খৈয়াম লিখেছেন –
” যদি প্রিয়ার কেশের বেণীর ফাঁদে নিজেকে বেঁধে ফেল তা হলে সেটা হবে সর্বশ্রেষ্ঠ।”
ওমর খৈয়াম নরকে গিয়েও আমিরদের আমির থাকবেন সাথে সূরা, রুটি, কবিতার বই আর সাথে যদি থাকে প্রিয়া। লিখেছেন তিনি –
” একটি সূরাহী রঙিন মদিরা অর্ধেক রুটি হাতে, আর এখানা কবিতার বই, এস প্রিয়া মোর সাথে।”
নরকে গিয়েও ওমর খৈয়ামের নারীকে নিয়ে যে উপলদ্ধি এ সবই নরের উপলদ্ধি।
মে ১৩, ২০১২
রেটিং করুনঃ ,