মাদকের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এই আদেশ দেন। আগের দিন রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে বর্তমান সময়ের আলোচিত–সমালোচিত এই চিত্রনায়িকাকে আটক করে র্যাব। পরে রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজকে আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনির বাসায় মিনি বার রয়েছে। মদের লাইসেন্স থাকলেও মেয়াদ পেরিয়েছে অনেক আগেই। পরীমনি, নজরুল রাজসহ এই চক্র ডিজে পার্টির আয়োজনের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করত। এসব অর্থ তারা বিভিন্ন ব্যবসার কাজে লাগাত।
এরপর বনানী থানায় পরীমনি ও নজরুল রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা করে র্যাব। পরীমনির বিরুদ্ধে মামলায় তাঁর ম্যানেজার আশরাফুল ইসলামকে আসামি করা হয়। আর নজরুল রাজের সঙ্গে তাঁর ম্যানেজার সবুজ আলীকে আসামি করা হয়।
রাত সাড়ে আটটার দিকে পরীমনিকে আদালতে হাজির করে মাদকের এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে বনানী থানা–পুলিশ। শুনানি নিয়ে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল বুধবার বিকেলে র্যাবের একটি দল পরীমনির বাসায় যায়। এ সময় ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন পরীমনি। লাইভে তিনি বলেন, দিনদুপুরে কে বা কারা তাঁর বাসায় আক্রমণ করেছে। তিনি থানা-পুলিশ, ডিবির কর্মকর্তা ও তাঁর পরিচিতজনদের কাছে ফোন করে তাঁকে বাঁচানোর আকুতি জানান। র্যাবের সদস্যরা বারবার পরিচয় দিলেও ভেতর থেকে দরজা খুলছিলেন না পরীমনি। পরে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে দরজা খুলে দেওয়া হলে র্যাবের সদস্যরা ভেতরে ঢোকেন। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। একপর্যায়ের পরীমনিকে আটক করা হয়।
অভিযান শেষ র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ ওয়াইন, আইস, এলএসডি ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ০৫, ২০২১
র্যাব হেফাজতে যেমন ছিলেন পরীমনি
লেখক: নজরুল ইসলাম।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বাস করা চিত্রনায়িকা পরীমনির ভিন্ন রকম দিন কাটল। বুধবার রাতে আটক হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আদালতে হাজির করার আগপর্যন্ত ২০ ঘণ্টার মতো র্যাব সদর দপ্তরে কাটাতে হয়েছে তাঁকে।
রাত সাড়ে আটটার দিকে আদালতে হাজির করে মাদকের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরীমনিকে সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ। আদালত তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ ও বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করে র্যাব। অভিযান শেষে মধ্যরাতে তাঁকে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন তিনি
র্যাব সূত্র জানায়, পরীমনিকে র্যাব সদর দপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে রাখা হয়। সেখানে আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে সদর দপ্তর পৌঁছানোর পর পছন্দমতো পরীমনি দুটি সেদ্ধ ডিম, ভাত ও চায়নিজ সবজি খান। এ ছাড়া তাঁকে লেমন জুস দেওয়া হয়। সকালে পরীমনিকে দেওয়া হয় পরোটা, সেদ্ধ ডিম ও গরুর মাংস। পরীমনি দুপুরে খেয়েছেন ভাত, মুরগির মাংস ও সবজি-ডাল।
একাধিক র্যাব কর্মকর্তা বলেন, পরীমনি যতক্ষণ র্যাব সদর দপ্তরে ছিলেন, একটু পরপরই তিনি লেমন জুস চেয়ে খেয়েছেন। র্যাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর আচরণ ছিল স্বাভাবিক।
র্যাব হেফাজতে পরীমনি কেমন ছিলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খাইরুল ইসলামের কাছে। জবাবে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব সদর দপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে রাখা হয়েছিল পরীমনিকে। তাঁর আচরণ ছিল স্বাভাবিক। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি র্যাব কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেছেন।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ০৬, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,