Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞী বা পাপিয়া-কথা (২০২০)

Share on Facebook

বাংলাদেশ হলো খবরের কারখানা। যাঁরা মনে করেন দেশে রাজনীতি নেই বলে খবরও নেই, তাঁরা ভুল করেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়। আগের খবরটি থেকে পরের খবরটিতে আরও বেশি চমক থাকে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন ক্যাসিনো-রাজা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ধরা পড়লেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ক্যাসিনোর দেশে ক্যাসিনো-সম্রাট। তিনি আবার যুবলীগের নেতাও। এরপর আরও ক্যাসিনো-মোগল ধরা পড়লেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবিষ্কৃত হলো বাংলাদেশে শুধু ক্যাসিনো-সম্রাট নেই, টেন্ডার-সম্রাটও আছেন। এক জি কে শামীম সরকারের গণপূর্ত বিভাগের প্রায় অর্ধেক কাজ বাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ কারণে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরমের কথাও চাউর হয়ে যায়। পরে আরও জানা গেল, কেবল আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বিএনপির সরকারের হোমরাচোমরাদের সঙ্গেও তাঁর দারুণ মহব্বত ছিল। সরকার বদলায়, এঁরা বদলান না। সে সময়ে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে এবার তারা পূতপবিত্র করে ছাড়বে।

কিন্তু পাঁচ মাস না যেতেই ক্ষমতাসীনদের ডেরা থেকে আরেক সম্রাজ্ঞী আবির্ভূত হলেন। তাঁর কাহিনি অতীতের যেকোনো রোমাঞ্চকর কাহিনিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমরা আরব্য উপন্যাসে নানা অবিশ্বাস্য কাহিনির কথা শুনেছি। সেখানে দৈত্যদানো, রাজা-রানির বিচিত্র ঘটনা দেখে যাঁরা বিস্মিত হতেন, তাঁরা বাংলাদেশের নতুন সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়ার কাহিনি দেখে ভিরমি খাবেন। আরব্য উপন্যাস হাজার বছর আগের। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যে সম্রাজ্ঞীর কাহিনি বের হলো, তার কাছে আরব্য উপন্যাস কিছুই না। কেননা, আরব্য রূপকথাকে আমরা রূপকথা হিসেবেই জানি।

কিন্তু বাংলাদেশের সম্রাজ্ঞীর কাহিনি কোনো রূপকথা নয়; নিরেট বাস্তব। পত্রিকায় ও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তাঁর যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিতে দেখা যায় তিনি চুল উঁচু করে বেঁধে নরম সোফায় লাঠি হাতে বসে আছেন। আবার কোনো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। গত শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া (২৮), তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), তাঁদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২) গ্রেপ্তার হন। র‍্যাবের দাবি, তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাহলে কি কোনো মহল তাঁকে বিদেশে পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল? না হলে যে সম্রাজ্ঞী পাঁচতারা হোটেলে মাসের পর মাস থাকতেন, তাঁকে ধরতে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে হলো কেন?

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ। যেন এত দিন পাপিয়ার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। হঠাৎ তাদের হুঁশ ফিরে এসেছে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে ক্যাসিনো-সম্রাট ও অন্যদের ক্ষেত্রেও। যখনই দেখা যায় ক্ষমতাসীন সংগঠনের কোনো নেতা বা সদস্যের অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে, তখনই সংগঠন তাঁকে বহিষ্কার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল জানিয়েছেন, পাপিয়া জাল টাকা, অবৈধভাবে টাকা পাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। পাপিয়া পাঁচ তারকা মানের বিভিন্ন হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে অভিযোগ করেছে র‍্যাব। ওই সব কর্মকাণ্ডের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। এত সব অপরাধের জড়িত থাকার পরও নাকি পাপিয়ার নামে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বিমানবন্দরে ধরা না পড়লে হয়তো যুব মহিলা লীগ তাঁকে সৎ ও সাচ্চা কর্মী হিসেবে সার্টিফিকেট দিত। পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হইচই করে উঠত।

এবার দেখা যাক একটি জেলা কমিটির যুবলীগ নেত্রী কী কী সম্পদের মালিক হয়েছেন। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে র‍্যাব ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০টি পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেকবই, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে। র‍্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ও নরসিংদী জেলায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।

অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, জাল নোট সরবরাহ, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই দম্পতি পাঁচ তারকা হোটেলের কয়েকটি বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করেন। এ জন্য তাঁরা পরিশোধ করেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই দম্পতি।

২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাঁকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সমকালকে বলেন, পাপিয়াকে যুবলীগ নেত্রী বানানোর সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরোধিতা করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তা আমলে নেননি। কাউন্সিল শেষে এলাকায় নয়, পাপিয়ার নাম ঘোষিত হয় ঢাকা থেকে।

শামীমা নূরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’ কিন্তু তিনি যে কথাটি বলেননি, তা হলো পাপিয়ারা কীভাবে তৈরি হন। কারা তৈরি করেন? তাঁদের কাছ থেকে কারা, কী সুবিধা নিয়েছেন।

আমরা ছোটবেলায় ‘লাইলি-মজনু’ ছবি দেখেছি। পরে এসেছে, ‘নয়া লাইলি নয়া মজনু’। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞীদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে। যে রাজনীতি সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীদের তৈরি করে, সেই রাজনীতিকে শুদ্ধ করতে না পারলে এ রকম লোকদেখানো অভিযানে কোনো কাজ হবে না। একজন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী ধরা পড়বে। হাজারো সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।

সহকর্মী ফারুক ওয়াসিফ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’ তাঁর বক্তব্যটি আরেকটু সংশোধন করে বলতে হয়, এত দিন তাঁকে কোথায় রেখেছিলেন?

সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিবাংলাদেশ হলো খবরের কারখানা। যাঁরা মনে করেন দেশে রাজনীতি নেই বলে খবরও নেই, তাঁরা ভুল করেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়। আগের খবরটি থেকে পরের খবরটিতে আরও বেশি চমক থাকে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন ক্যাসিনো-রাজা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ধরা পড়লেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ক্যাসিনোর দেশে ক্যাসিনো-সম্রাট। তিনি আবার যুবলীগের নেতাও। এরপর আরও ক্যাসিনো-মোগল ধরা পড়লেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবিষ্কৃত হলো বাংলাদেশে শুধু ক্যাসিনো-সম্রাট নেই, টেন্ডার-সম্রাটও আছেন। এক জি কে শামীম সরকারের গণপূর্ত বিভাগের প্রায় অর্ধেক কাজ বাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ কারণে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরমের কথাও চাউর হয়ে যায়। পরে আরও জানা গেল, কেবল আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বিএনপির সরকারের হোমরাচোমরাদের সঙ্গেও তাঁর দারুণ মহব্বত ছিল। সরকার বদলায়, এঁরা বদলান না। সে সময়ে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে এবার তারা পূতপবিত্র করে ছাড়বে।

কিন্তু পাঁচ মাস না যেতেই ক্ষমতাসীনদের ডেরা থেকে আরেক সম্রাজ্ঞী আবির্ভূত হলেন। তাঁর কাহিনি অতীতের যেকোনো রোমাঞ্চকর কাহিনিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমরা আরব্য উপন্যাসে নানা অবিশ্বাস্য কাহিনির কথা শুনেছি। সেখানে দৈত্যদানো, রাজা-রানির বিচিত্র ঘটনা দেখে যাঁরা বিস্মিত হতেন, তাঁরা বাংলাদেশের নতুন সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়ার কাহিনি দেখে ভিরমি খাবেন। আরব্য উপন্যাস হাজার বছর আগের। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যে সম্রাজ্ঞীর কাহিনি বের হলো, তার কাছে আরব্য উপন্যাস কিছুই না। কেননা, আরব্য রূপকথাকে আমরা রূপকথা হিসেবেই জানি।

কিন্তু বাংলাদেশের সম্রাজ্ঞীর কাহিনি কোনো রূপকথা নয়; নিরেট বাস্তব। পত্রিকায় ও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তাঁর যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিতে দেখা যায় তিনি চুল উঁচু করে বেঁধে নরম সোফায় লাঠি হাতে বসে আছেন। আবার কোনো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। গত শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া (২৮), তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), তাঁদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২) গ্রেপ্তার হন। র‍্যাবের দাবি, তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাহলে কি কোনো মহল তাঁকে বিদেশে পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল? না হলে যে সম্রাজ্ঞী পাঁচতারা হোটেলে মাসের পর মাস থাকতেন, তাঁকে ধরতে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে হলো কেন?

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ। যেন এত দিন পাপিয়ার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। হঠাৎ তাদের হুঁশ ফিরে এসেছে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে ক্যাসিনো-সম্রাট ও অন্যদের ক্ষেত্রেও। যখনই দেখা যায় ক্ষমতাসীন সংগঠনের কোনো নেতা বা সদস্যের অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে, তখনই সংগঠন তাঁকে বহিষ্কার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল জানিয়েছেন, পাপিয়া জাল টাকা, অবৈধভাবে টাকা পাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। পাপিয়া পাঁচ তারকা মানের বিভিন্ন হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে অভিযোগ করেছে র‍্যাব। ওই সব কর্মকাণ্ডের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। এত সব অপরাধের জড়িত থাকার পরও নাকি পাপিয়ার নামে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বিমানবন্দরে ধরা না পড়লে হয়তো যুব মহিলা লীগ তাঁকে সৎ ও সাচ্চা কর্মী হিসেবে সার্টিফিকেট দিত। পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হইচই করে উঠত।

এবার দেখা যাক একটি জেলা কমিটির যুবলীগ নেত্রী কী কী সম্পদের মালিক হয়েছেন। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে র‍্যাব ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০টি পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেকবই, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে। র‍্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ও নরসিংদী জেলায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।

অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, জাল নোট সরবরাহ, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই দম্পতি পাঁচ তারকা হোটেলের কয়েকটি বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করেন। এ জন্য তাঁরা পরিশোধ করেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই দম্পতি।

২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাঁকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সমকালকে বলেন, পাপিয়াকে যুবলীগ নেত্রী বানানোর সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরোধিতা করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তা আমলে নেননি। কাউন্সিল শেষে এলাকায় নয়, পাপিয়ার নাম ঘোষিত হয় ঢাকা থেকে।

শামীমা নূরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’ কিন্তু তিনি যে কথাটি বলেননি, তা হলো পাপিয়ারা কীভাবে তৈরি হন। কারা তৈরি করেন? তাঁদের কাছ থেকে কারা, কী সুবিধা নিয়েছেন।

আমরা ছোটবেলায় ‘লাইলি-মজনু’ ছবি দেখেছি। পরে এসেছে, ‘নয়া লাইলি নয়া মজনু’। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞীদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে। যে রাজনীতি সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীদের তৈরি করে, সেই রাজনীতিকে শুদ্ধ করতে না পারলে এ রকম লোকদেখানো অভিযানে কোনো কাজ হবে না। একজন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী ধরা পড়বে। হাজারো সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।

সহকর্মী ফারুক ওয়াসিফ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’ তাঁর বক্তব্যটি আরেকটু সংশোধন করে বলতে হয়, এত দিন তাঁকে কোথায় রেখেছিলেন?

সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিবাংলাদেশ হলো খবরের কারখানা। যাঁরা মনে করেন দেশে রাজনীতি নেই বলে খবরও নেই, তাঁরা ভুল করেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়। আগের খবরটি থেকে পরের খবরটিতে আরও বেশি চমক থাকে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন ক্যাসিনো-রাজা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ধরা পড়লেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ক্যাসিনোর দেশে ক্যাসিনো-সম্রাট। তিনি আবার যুবলীগের নেতাও। এরপর আরও ক্যাসিনো-মোগল ধরা পড়লেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবিষ্কৃত হলো বাংলাদেশে শুধু ক্যাসিনো-সম্রাট নেই, টেন্ডার-সম্রাটও আছেন। এক জি কে শামীম সরকারের গণপূর্ত বিভাগের প্রায় অর্ধেক কাজ বাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ কারণে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরমের কথাও চাউর হয়ে যায়। পরে আরও জানা গেল, কেবল আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বিএনপির সরকারের হোমরাচোমরাদের সঙ্গেও তাঁর দারুণ মহব্বত ছিল। সরকার বদলায়, এঁরা বদলান না। সে সময়ে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে এবার তারা পূতপবিত্র করে ছাড়বে।

কিন্তু পাঁচ মাস না যেতেই ক্ষমতাসীনদের ডেরা থেকে আরেক সম্রাজ্ঞী আবির্ভূত হলেন। তাঁর কাহিনি অতীতের যেকোনো রোমাঞ্চকর কাহিনিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমরা আরব্য উপন্যাসে নানা অবিশ্বাস্য কাহিনির কথা শুনেছি। সেখানে দৈত্যদানো, রাজা-রানির বিচিত্র ঘটনা দেখে যাঁরা বিস্মিত হতেন, তাঁরা বাংলাদেশের নতুন সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়ার কাহিনি দেখে ভিরমি খাবেন। আরব্য উপন্যাস হাজার বছর আগের। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যে সম্রাজ্ঞীর কাহিনি বের হলো, তার কাছে আরব্য উপন্যাস কিছুই না। কেননা, আরব্য রূপকথাকে আমরা রূপকথা হিসেবেই জানি।

কিন্তু বাংলাদেশের সম্রাজ্ঞীর কাহিনি কোনো রূপকথা নয়; নিরেট বাস্তব। পত্রিকায় ও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তাঁর যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিতে দেখা যায় তিনি চুল উঁচু করে বেঁধে নরম সোফায় লাঠি হাতে বসে আছেন। আবার কোনো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। গত শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া (২৮), তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), তাঁদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২) গ্রেপ্তার হন। র‍্যাবের দাবি, তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাহলে কি কোনো মহল তাঁকে বিদেশে পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল? না হলে যে সম্রাজ্ঞী পাঁচতারা হোটেলে মাসের পর মাস থাকতেন, তাঁকে ধরতে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে হলো কেন?

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ। যেন এত দিন পাপিয়ার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। হঠাৎ তাদের হুঁশ ফিরে এসেছে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে ক্যাসিনো-সম্রাট ও অন্যদের ক্ষেত্রেও। যখনই দেখা যায় ক্ষমতাসীন সংগঠনের কোনো নেতা বা সদস্যের অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে, তখনই সংগঠন তাঁকে বহিষ্কার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল জানিয়েছেন, পাপিয়া জাল টাকা, অবৈধভাবে টাকা পাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। পাপিয়া পাঁচ তারকা মানের বিভিন্ন হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে অভিযোগ করেছে র‍্যাব। ওই সব কর্মকাণ্ডের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। এত সব অপরাধের জড়িত থাকার পরও নাকি পাপিয়ার নামে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বিমানবন্দরে ধরা না পড়লে হয়তো যুব মহিলা লীগ তাঁকে সৎ ও সাচ্চা কর্মী হিসেবে সার্টিফিকেট দিত। পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হইচই করে উঠত।

এবার দেখা যাক একটি জেলা কমিটির যুবলীগ নেত্রী কী কী সম্পদের মালিক হয়েছেন। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে র‍্যাব ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০টি পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেকবই, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে। র‍্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ও নরসিংদী জেলায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।

অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, জাল নোট সরবরাহ, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই দম্পতি পাঁচ তারকা হোটেলের কয়েকটি বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করেন। এ জন্য তাঁরা পরিশোধ করেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই দম্পতি।

২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাঁকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সমকালকে বলেন, পাপিয়াকে যুবলীগ নেত্রী বানানোর সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরোধিতা করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তা আমলে নেননি। কাউন্সিল শেষে এলাকায় নয়, পাপিয়ার নাম ঘোষিত হয় ঢাকা থেকে।

শামীমা নূরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’ কিন্তু তিনি যে কথাটি বলেননি, তা হলো পাপিয়ারা কীভাবে তৈরি হন। কারা তৈরি করেন? তাঁদের কাছ থেকে কারা, কী সুবিধা নিয়েছেন।

আমরা ছোটবেলায় ‘লাইলি-মজনু’ ছবি দেখেছি। পরে এসেছে, ‘নয়া লাইলি নয়া মজনু’। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞীদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে। যে রাজনীতি সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীদের তৈরি করে, সেই রাজনীতিকে শুদ্ধ করতে না পারলে এ রকম লোকদেখানো অভিযানে কোনো কাজ হবে না। একজন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী ধরা পড়বে। হাজারো সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।

সহকর্মী ফারুক ওয়াসিফ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’ তাঁর বক্তব্যটি আরেকটু সংশোধন করে বলতে হয়, এত দিন তাঁকে কোথায় রেখেছিলেন?

সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিবাংলাদেশ হলো খবরের কারখানা। যাঁরা মনে করেন দেশে রাজনীতি নেই বলে খবরও নেই, তাঁরা ভুল করেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়। আগের খবরটি থেকে পরের খবরটিতে আরও বেশি চমক থাকে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন ক্যাসিনো-রাজা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ধরা পড়লেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ক্যাসিনোর দেশে ক্যাসিনো-সম্রাট। তিনি আবার যুবলীগের নেতাও। এরপর আরও ক্যাসিনো-মোগল ধরা পড়লেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবিষ্কৃত হলো বাংলাদেশে শুধু ক্যাসিনো-সম্রাট নেই, টেন্ডার-সম্রাটও আছেন। এক জি কে শামীম সরকারের গণপূর্ত বিভাগের প্রায় অর্ধেক কাজ বাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ কারণে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরমের কথাও চাউর হয়ে যায়। পরে আরও জানা গেল, কেবল আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বিএনপির সরকারের হোমরাচোমরাদের সঙ্গেও তাঁর দারুণ মহব্বত ছিল। সরকার বদলায়, এঁরা বদলান না। সে সময়ে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে এবার তারা পূতপবিত্র করে ছাড়বে।

কিন্তু পাঁচ মাস না যেতেই ক্ষমতাসীনদের ডেরা থেকে আরেক সম্রাজ্ঞী আবির্ভূত হলেন। তাঁর কাহিনি অতীতের যেকোনো রোমাঞ্চকর কাহিনিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমরা আরব্য উপন্যাসে নানা অবিশ্বাস্য কাহিনির কথা শুনেছি। সেখানে দৈত্যদানো, রাজা-রানির বিচিত্র ঘটনা দেখে যাঁরা বিস্মিত হতেন, তাঁরা বাংলাদেশের নতুন সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়ার কাহিনি দেখে ভিরমি খাবেন। আরব্য উপন্যাস হাজার বছর আগের। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যে সম্রাজ্ঞীর কাহিনি বের হলো, তার কাছে আরব্য উপন্যাস কিছুই না। কেননা, আরব্য রূপকথাকে আমরা রূপকথা হিসেবেই জানি।

কিন্তু বাংলাদেশের সম্রাজ্ঞীর কাহিনি কোনো রূপকথা নয়; নিরেট বাস্তব। পত্রিকায় ও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তাঁর যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিতে দেখা যায় তিনি চুল উঁচু করে বেঁধে নরম সোফায় লাঠি হাতে বসে আছেন। আবার কোনো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। গত শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া (২৮), তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), তাঁদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২) গ্রেপ্তার হন। র‍্যাবের দাবি, তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাহলে কি কোনো মহল তাঁকে বিদেশে পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল? না হলে যে সম্রাজ্ঞী পাঁচতারা হোটেলে মাসের পর মাস থাকতেন, তাঁকে ধরতে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে হলো কেন?

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ। যেন এত দিন পাপিয়ার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। হঠাৎ তাদের হুঁশ ফিরে এসেছে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে ক্যাসিনো-সম্রাট ও অন্যদের ক্ষেত্রেও। যখনই দেখা যায় ক্ষমতাসীন সংগঠনের কোনো নেতা বা সদস্যের অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে, তখনই সংগঠন তাঁকে বহিষ্কার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল জানিয়েছেন, পাপিয়া জাল টাকা, অবৈধভাবে টাকা পাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। পাপিয়া পাঁচ তারকা মানের বিভিন্ন হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে অভিযোগ করেছে র‍্যাব। ওই সব কর্মকাণ্ডের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। এত সব অপরাধের জড়িত থাকার পরও নাকি পাপিয়ার নামে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বিমানবন্দরে ধরা না পড়লে হয়তো যুব মহিলা লীগ তাঁকে সৎ ও সাচ্চা কর্মী হিসেবে সার্টিফিকেট দিত। পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হইচই করে উঠত।

এবার দেখা যাক একটি জেলা কমিটির যুবলীগ নেত্রী কী কী সম্পদের মালিক হয়েছেন। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে র‍্যাব ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০টি পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেকবই, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে। র‍্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ও নরসিংদী জেলায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।

অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, জাল নোট সরবরাহ, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই দম্পতি পাঁচ তারকা হোটেলের কয়েকটি বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করেন। এ জন্য তাঁরা পরিশোধ করেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই দম্পতি।

২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাঁকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সমকালকে বলেন, পাপিয়াকে যুবলীগ নেত্রী বানানোর সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরোধিতা করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তা আমলে নেননি। কাউন্সিল শেষে এলাকায় নয়, পাপিয়ার নাম ঘোষিত হয় ঢাকা থেকে।

শামীমা নূরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’ কিন্তু তিনি যে কথাটি বলেননি, তা হলো পাপিয়ারা কীভাবে তৈরি হন। কারা তৈরি করেন? তাঁদের কাছ থেকে কারা, কী সুবিধা নিয়েছেন।

আমরা ছোটবেলায় ‘লাইলি-মজনু’ ছবি দেখেছি। পরে এসেছে, ‘নয়া লাইলি নয়া মজনু’। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞীদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে। যে রাজনীতি সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীদের তৈরি করে, সেই রাজনীতিকে শুদ্ধ করতে না পারলে এ রকম লোকদেখানো অভিযানে কোনো কাজ হবে না। একজন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী ধরা পড়বে। হাজারো সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।

সহকর্মী ফারুক ওয়াসিফ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’ তাঁর বক্তব্যটি আরেকটু সংশোধন করে বলতে হয়, এত দিন তাঁকে কোথায় রেখেছিলেন?

সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিবাংলাদেশ হলো খবরের কারখানা। যাঁরা মনে করেন দেশে রাজনীতি নেই বলে খবরও নেই, তাঁরা ভুল করেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়। আগের খবরটি থেকে পরের খবরটিতে আরও বেশি চমক থাকে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন ক্যাসিনো-রাজা ইসমাইল হোসেন সম্রাট ধরা পড়লেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ক্যাসিনোর দেশে ক্যাসিনো-সম্রাট। তিনি আবার যুবলীগের নেতাও। এরপর আরও ক্যাসিনো-মোগল ধরা পড়লেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবিষ্কৃত হলো বাংলাদেশে শুধু ক্যাসিনো-সম্রাট নেই, টেন্ডার-সম্রাটও আছেন। এক জি কে শামীম সরকারের গণপূর্ত বিভাগের প্রায় অর্ধেক কাজ বাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ কারণে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাঁর দহরম-মহরমের কথাও চাউর হয়ে যায়। পরে আরও জানা গেল, কেবল আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বিএনপির সরকারের হোমরাচোমরাদের সঙ্গেও তাঁর দারুণ মহব্বত ছিল। সরকার বদলায়, এঁরা বদলান না। সে সময়ে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে এবার তারা পূতপবিত্র করে ছাড়বে।

কিন্তু পাঁচ মাস না যেতেই ক্ষমতাসীনদের ডেরা থেকে আরেক সম্রাজ্ঞী আবির্ভূত হলেন। তাঁর কাহিনি অতীতের যেকোনো রোমাঞ্চকর কাহিনিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমরা আরব্য উপন্যাসে নানা অবিশ্বাস্য কাহিনির কথা শুনেছি। সেখানে দৈত্যদানো, রাজা-রানির বিচিত্র ঘটনা দেখে যাঁরা বিস্মিত হতেন, তাঁরা বাংলাদেশের নতুন সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়ার কাহিনি দেখে ভিরমি খাবেন। আরব্য উপন্যাস হাজার বছর আগের। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যে সম্রাজ্ঞীর কাহিনি বের হলো, তার কাছে আরব্য উপন্যাস কিছুই না। কেননা, আরব্য রূপকথাকে আমরা রূপকথা হিসেবেই জানি।

কিন্তু বাংলাদেশের সম্রাজ্ঞীর কাহিনি কোনো রূপকথা নয়; নিরেট বাস্তব। পত্রিকায় ও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তাঁর যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিতে দেখা যায় তিনি চুল উঁচু করে বেঁধে নরম সোফায় লাঠি হাতে বসে আছেন। আবার কোনো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। গত শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া (২৮), তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), তাঁদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২) গ্রেপ্তার হন। র‍্যাবের দাবি, তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাহলে কি কোনো মহল তাঁকে বিদেশে পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল? না হলে যে সম্রাজ্ঞী পাঁচতারা হোটেলে মাসের পর মাস থাকতেন, তাঁকে ধরতে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে হলো কেন?

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ। যেন এত দিন পাপিয়ার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। হঠাৎ তাদের হুঁশ ফিরে এসেছে। এ রকম ঘটনা ঘটেছে ক্যাসিনো-সম্রাট ও অন্যদের ক্ষেত্রেও। যখনই দেখা যায় ক্ষমতাসীন সংগঠনের কোনো নেতা বা সদস্যের অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে, তখনই সংগঠন তাঁকে বহিষ্কার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল জানিয়েছেন, পাপিয়া জাল টাকা, অবৈধভাবে টাকা পাচার, অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। পাপিয়া পাঁচ তারকা মানের বিভিন্ন হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে অভিযোগ করেছে র‍্যাব। ওই সব কর্মকাণ্ডের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। এত সব অপরাধের জড়িত থাকার পরও নাকি পাপিয়ার নামে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বিমানবন্দরে ধরা না পড়লে হয়তো যুব মহিলা লীগ তাঁকে সৎ ও সাচ্চা কর্মী হিসেবে সার্টিফিকেট দিত। পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে হইচই করে উঠত।

এবার দেখা যাক একটি জেলা কমিটির যুবলীগ নেত্রী কী কী সম্পদের মালিক হয়েছেন। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে র‍্যাব ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০টি পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেকবই, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে। র‍্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ও নরসিংদী জেলায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।

অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, জাল নোট সরবরাহ, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই দম্পতি পাঁচ তারকা হোটেলের কয়েকটি বিলাসবহুল কক্ষে অবস্থান করেন। এ জন্য তাঁরা পরিশোধ করেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি এই দম্পতি।

২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাঁকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সমকালকে বলেন, পাপিয়াকে যুবলীগ নেত্রী বানানোর সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরোধিতা করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তা আমলে নেননি। কাউন্সিল শেষে এলাকায় নয়, পাপিয়ার নাম ঘোষিত হয় ঢাকা থেকে।

শামীমা নূরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক, কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’ কিন্তু তিনি যে কথাটি বলেননি, তা হলো পাপিয়ারা কীভাবে তৈরি হন। কারা তৈরি করেন? তাঁদের কাছ থেকে কারা, কী সুবিধা নিয়েছেন।

আমরা ছোটবেলায় ‘লাইলি-মজনু’ ছবি দেখেছি। পরে এসেছে, ‘নয়া লাইলি নয়া মজনু’। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও নয়া সম্রাট ও নয়া সম্রাজ্ঞীদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে। যে রাজনীতি সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীদের তৈরি করে, সেই রাজনীতিকে শুদ্ধ করতে না পারলে এ রকম লোকদেখানো অভিযানে কোনো কাজ হবে না। একজন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞী ধরা পড়বে। হাজারো সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।

সহকর্মী ফারুক ওয়াসিফ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’ তাঁর বক্তব্যটি আরেকটু সংশোধন করে বলতে হয়, এত দিন তাঁকে কোথায় রেখেছিলেন?

সূত্র: সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি

তারিখ: ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ