Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

নগদ টাকার লেনদেন যে কারণে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন (২০২১)

Share on Facebook

লেখক:ফারুক মঈনউদ্দীন।

অনেকেরই হয়তো হলিউডের ডাই হার্ড উইথ আ ভেনজানস সিনেমাটির কথা স্মরণে আছে। পুলিশের নজর এড়িয়ে সাইমন নামের এক কুখ্যাত ব্যাংক ডাকাত নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভের ভূগর্ভস্থ গোল্ড ভল্ট থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার দামের সোনার বার লুট করে নিয়ে যায়। তবে ১৪ ট্রাকভর্তি সোনা হজম করা ছিল সত্যিই কঠিন। নিউইয়র্ক সাবওয়ের ভেতর থেকে সুড়ঙ্গ করে ফেড রিজার্ভের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন সাইমন। সেই দুর্বলতম জায়গাটি ঠিকভাবে শনাক্ত করে সেভাবেই কাহিনিটা সাজিয়েছিলেন চিত্রনাট্যকার জোনাথন হেনস্লি। এই স্পর্শকাতর তথ্যটা জানার কারণে এফবিআইয়ের হাতে হেনস্লিকে হেনস্তা ও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তাদের প্রশ্ন ছিল, সাবওয়ের একটা অংশ যে গোল্ড ভল্টের এত কাছে, এই তথ্য তিনি কীভাবে জানেন এবং ভল্টের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনার ভেতরের এত তথ্য কীভাবে জোগাড় করেছেন। অবশ্য ফেড রিজার্ভের কর্তারা ঠোঁট বাঁকিয়ে বলেছিলেন, নাটক, উপন্যাস বা সিনেমায় এ রকম ঘটানো হলেও বাস্তবে ফেড রিজার্ভের ভল্ট থেকে সোনা বের করে নিয়ে যাওয়া এককথায় অসম্ভব।

ফেড রিজার্ভের সোনা লুটের কল্পকাহিনি অবাস্তব হলেও দুই বছর ধরে সুড়ঙ্গ কেটে কিশোরগঞ্জ জেলার সোনালী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১২ কোটি টাকা চুরির ঘটনাটা সত্য। চোরকে ধরে ফেলাও সম্ভব হয়েছিল। আমাদের দেশে কোনো ব্যাংকের ভল্ট থেকে নগদ টাকা চুরি বা লুটের ঘটনায় সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত। আগে কখনো চুরির টাকা দুই কোটির ঘর ছাড়িয়ে যায়নি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত টাকা লুটের খবরগুলো লক্ষ করলে একটা সহজ ধরন চিহ্নিত করা যায়। যে কয়েকটি ঘটনার হদিস পাওয়া গেছে, সেগুলো কেবল মফস্বল এলাকার ছোট শাখাগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বড় শহরের কোনো শাখায় কখনোই এ রকম কিছু ঘটেনি। এ থেকে বোঝা যায়, যেসব মফস্বল এলাকায় এ রকম ঘটেছে, সেখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল এবং ভল্টরুম ও ভল্ট নির্দেশিত মান বজায় রেখে স্থাপন করা হয়নি। দেশের গ্রামীণ এবং জেলা শহরের বহু শাখা রয়েছে পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করা যে কতখানি অসম্ভব, সেটা ব্যাংক বিষয়ে সামান্য জ্ঞান রাখেন, এমন মানুষই কেবল বুঝতে পারেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা বাদ দিলেও সাধারণ একটা বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার ভল্ট ভাঙাও যে খুব সহজ কাজ নয়, সেটাও অনেকে জানেন না। ভল্ট ভাঙার চেয়ে অনেক সহজ চাবি দিয়ে খুলে টাকা বের করে নেওয়া। তবে সেটাও যে খুব সহজ, তা-ও নয়। দেশে ব্যাংকের শাখার সংখ্যা এবং আমাদের কর্মসংস্কৃতিতে নীতিমালা ভঙ্গ করা কিংবা নীতিমালা পরিপালনের অনীহার প্রবণতা বিবেচনা করলে এমন দুর্ঘটনার সংখ্যা আশঙ্কার চেয়ে কম। দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় কিছু দুর্ঘটনা ঘটার পর বাংলাদেশ ব্যাংক ভল্টরুম নির্মাণের জন্য একটা নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার মধ্যে রয়েছে ভল্টরুমের দেয়াল, মেঝে ও ছাদে আরসিসি ঢালাইবেষ্টনী তৈরি করা, সিকিউরিটি টেস্টেড ইস্পাতের দরজা, সিসিটিভি ক্যামেরা, সিকিউরিটি অ্যালার্ম স্থাপন এবং ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ইনফরমেশন সিস্টেমের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ইত্যাদি।

ব্যাংকের শাখার ভল্টের দুই সেট চাবি দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকে। যেকোনো একটা সেট দিয়ে ভল্ট খোলা সম্ভব নয়, দুজনের উপস্থিতিতে উভয় সেটের চাবি ব্যবহার করেই কেবল কাজটি করা সম্ভব। কিছুদিন আগে নতুন প্রজন্মের একটা ব্যাংকের শাখার ভল্টে ১৯ কোটি টাকার ঘাটতি পাওয়া যাওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। ব্যাংকের ভল্টে দিন শেষে যত টাকা নগদ থাকার কথা, তার চেয়ে এক পয়সাও কম বা বেশি থাকার কোনো সুযোগ নেই। শাখার ব্যালান্স শিটের সঙ্গে ভল্টের নগদ টাকার পরিমাণ না মিললে বুঝে নিতে হবে, কোথাও ভুল আছে। তাই শাখায় কর্মরত ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে ক্যাশ না মেলা একটা বিভীষিকার মতো।

কারণ, ক্যাশ না মিললে শাখা বন্ধ করে বাড়ি যাওয়া যায় না। ভুল খুঁজে বের করতে অনেক সময় বেশ রাত হয়ে যায়। কোনো ভুল যদি পাওয়া না যায়, তাহলে একাধিক কারণে ক্যাশ না মিলতে পারে। হতে পারে অতিরিক্ত পেমেন্ট করা হয়েছে কিংবা জমা বইয়ের পাতায় লেখা অঙ্কের চেয়ে কম টাকা জমা হয়েছে। তবে ক্যাশ না মেলা মানে কেবল ঘাটতি নয়। খাতায় যত টাকা নগদ থাকার কথা, তার চেয়ে বেশি পাওয়াও যেতে পারে। এ রকম ঘটার সম্ভাব্য কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যা হয়, সেটি হচ্ছে গ্রাহকের জমা দেওয়া টাকার সঙ্গে জমা বইয়ের যে পৃষ্ঠা ছিঁড়ে রাখার কথা, সেটি অসাবধানতায় হয়তো রাখা হয়নি। এসব ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ভুল শনাক্ত করা না গেলে সাসপেন্স অ্যাকাউন্টের সঙ্গে অতিরিক্ত বা ঘাটতির পরিমাণটা সমন্বয় করে সমস্যার আপাত–সমাধান করতে হয়। তারপর খুঁজে বের করতে হয় গরমিলের মূল কারণ।

এই ক্যাশ না মেলার ব্যাপারটা ব্যাংকের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভুলটা ধরা পড়ে এবং ক্যাশ মিলে যায়। কিন্তু ক্যাশ রেজিস্টারের হিসাব থেকে ১৯ কোটি টাকা কম হওয়ার ঘটনাটা কোনো ভুলের কারণে ঘটেছে, এমন দাবি অবশ্য কেউ করেননি। আবার এই টাকা মাত্র আগের দিন সন্ধ্যায় ক্যাশ মিলে যাওয়ার পর কোনো বড় গ্রাহককে দেওয়া হয়েছে কি না, সেটাও বড় এক রহস্য! কারণ, ১৯ কোটি টাকার পুরোটাই যদি ১ হাজার টাকার নোটে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা হবে প্রায় থান ইটের সমান ১৯০টি বান্ডিলের এক বিশাল চালান।

যাহোক, এই লেখা রহস্য ভেদ করার উদ্দেশ্যে নয়। প্রসঙ্গটা তোলার মূল কারণ ভিন্ন। আমাদের আর্থিক খাতের উন্নয়নের জন্য নগদ টাকার লেনদেন যদি সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তাহলে এই অবিশ্বাস্য বিপুল অঙ্কের নগদ টাকার প্রয়োজন পড়ত না। এ কথা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না যে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের ওপরের লেনদেন নগদে না করে কেবল ব্যাংকিং চ্যানেলে করার কোনো বিধান যদি করা যায়, তাহলে নগদ টাকার অগাধ শক্তির ভেতরকার অস্বচ্ছতা, মানি লন্ডারিং এবং সর্বোপরি রাজস্ব ফাঁকির প্রবণতা কমে যাবে।

ফারুক মঈনউদ্দীন লেখক ও ব্যাংকার।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ অক্টোবর ১৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ