জামায়াত উলেমা-ই-হিন্দ সভাপতি মাহমুদ মাদানি বলেছেন, এই দেশ যতখানি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতের, ততটাই তাঁরও। তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের দেশ। আমরা ভারতবাসী। এই দেশ যতটা প্রধানমন্ত্রী মোদির বা সংঘপ্রধান মোহন ভাগবতের, ততটাই আমার। কেউ কারও থেকে এক ইঞ্চি কম বা বেশি নন।’
রাজধানী নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে গত শুক্রবার জামায়াত উলেমা–ই–হিন্দের তিন দিনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাহমুদ মাদানি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দিভাষী মুসলমানদের কাছে ভারত সেরা দেশ। মুসলমানরা এ দেশে বহিরাগত—এ প্রচার ভুল ও ভিত্তিহীন। ইসলাম প্রাচীন ধর্মগুলোর অন্যতম। ভারতও মুসলমানদের মাতৃভূমি।
মাহমুদ মাদানি বলেন, ‘ভারতীয়দের কাছে ধর্মাচরণের স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার। আমরাও জবরদস্তি ধর্মান্তরকরণের বিরোধী। ইসলাম জোর খাটিয়ে, ধোঁকা দিয়ে, ভয় কিংবা লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তর করানোর বিরোধী। কিন্তু ওই অভিযোগে নানা সংগঠন নানাভাবে মুসলমান সমাজকে অভিযুক্ত করছে। আক্রমণ করছে। নামাজ বন্ধ করে দিয়ে, পুলিশি অত্যাচারের মধ্য দিয়ে, বুলডোজার ব্যবহার করে তারা মুসলমান সমাজকে তটস্থ করে রাখতে চাইছে।’
মাহমুদ মাদানি যেদিন এসব অভিযোগ করেন, সেদিনই মুম্বাইয়ে দাউদি বোহরা মুসলিম সম্প্রদায়ের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করে নিজেকে ওই পরিবারের এক সদস্য হিসেবে জাহির করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সাম্প্রতিক কালে তাঁর নির্দেশে বিজেপি মুসলমান সমাজের পিছিয়ে পড়া পসমন্দাদের মন জয়ে উঠেপড়ে লেগেছে। ভোটে তাঁদের সমর্থন পেতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
জামায়াত উলেমা–ই–হিন্দের তিন দিনের এ সম্মেলনে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, মুসলিম সমাজের ব্যক্তিগত আইন, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা, মাদ্রাসাশিক্ষার স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় স্বশাসন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা হবে।
সম্মেলন সূত্রে জানা গেছে, ঘৃণা ভাষণ বন্ধে দেশজুড়ে জনমত গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর সম্মেলনে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। প্রচার করা হবে বিভিন্ন ধর্মের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সৌভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষার কথাও।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,