Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

দেশ থেকে গার্মেন্টসের অর্ডার সরে যাচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে (২০২৪)

Share on Facebook

রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন এবং শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের একটা অংশ প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বাজারে চলে যাবার ঘটনায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতের জন্য গভীর সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে।

‘নো এক্সিট’ নামের প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ জাকির বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্রেতা এবং বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী। তিনি জানিয়েছে সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারায় তাদের একটি ক্রেতার নব্বই শতাংশ ক্রয়াদেশ ভারতে চলে গেছে। পরিস্থিতি ভালো হলে তবেই ক্রেতারা আবার ফিরতে পারেন।

তিনি বলেন, আমার অনেকগুলো অর্ডার ইন্ডিয়াতে প্লেস হয়ে গেছে। যে কাস্টমার আমার এখানেই কাজ করতো তার অর্ডারগুলো সে ইন্ডিয়াতে প্লেস করেছে শিপমেন্ট ও ডেলিভারি ইস্যুর কারণে। আমরা যদি পরিস্থিতি উন্নয়ন করতে পারি ক্রেতারা আবার ফিরে আসবে।

বাংলাদেশের বড় বড় পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে এমন অঞ্চলের মধ্যে আশুলিয়া, সাভার এবং গাজীপুর এলাকায় সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। শ্রমিক অসন্তোষ এবং উত্তেজনার এক পর্যায়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

ক্রমাগত পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলা হলেও সেটি যে পুরোপুরি স্বাভাবিক নয় সেটি স্পষ্ট। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি রুবানা হক বর্তমান পরিস্থিতিকে পোশাক খাতের জন্য একটা বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, বারো থেকে পনেরো দিন প্রচুর ফ্যাক্টরি বন্ধ থেকেছে। একেবারে বন্ধ। কেউ কেউ আবার ধরেন দুপুর পর্যন্ত চালাতে পেরেছে এরপর পারেননি। এগুলোতো পুরাটাই লস। আর এর চাইতে বড় লস যেটা হচ্ছে সেটা হলো আমাদের যারা ক্রেতা তারাতো সরে যাচ্ছেন। তারা বলছেন যে আমরা তোমাদের সাথে আছি, বাংলাদেশকে লাগবে, সবই বলছেন, কিন্তু আমরাতো এটার বাস্তবতাটা জানি। বাস্তবতাটা হলো অন্তত শতকরা ২৫-৩০ ভাগ অর্ডার ডিসেম্বরের মধ্যে সরে যাবে। এবং বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে, ক্যাম্বোডিয়া যাচ্ছে, ভিয়েতনামে যাচ্ছে, ভারতে যাচ্ছে, পাকিস্তানে যাচ্ছে, এমনকি মিয়ানমারে চলে যাচ্ছে।

পোশাক খাতের সমস্যা তুলে ধরা নিয়ে একটি সংকট রয়েছে বলেও মনে করেন রুবানা হক।

বাংলাদেশে পোশাক খাতে অস্থিরতার একাধিক কারণ সামনে আসছে। এর মধ্যে ঝুট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব, মালিকানার সমস্যা, বকেয়া পাওনা, কিছু ক্ষেত্রে বহিরাগতদের উসকানি এবং শ্রমিকদের নতুন কিছু দাবি দাওয়া এর পেছনে কাজ করেছে।

আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক সংগঠনের একজন নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আগের সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতাদের ফ্যাক্টরিতে যেমন সমস্যা হয়েছে, তেমনি পাঁচই অগাস্টের পর সুযোগ পেয়ে শ্রমিকরাও নানা দাবি নিয়ে মাঠে নামে। এ আন্দোলনটা শুরু হয় নারী-পুরুষ সমহারে চাকরির দাবিতে। আপনারা জানেন যে ত্রিশটার উপরে দাবি আসছে। একেক কারখানার একেক দাবি।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার মনে করেন শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির নেপথ্যে বহিরাগত একটা প্রভাব কাজ করেছে। ঝুট ব্যবসা নিয়ে একটা সমস্যা- আগে যারা ছিল তাদের জায়গায় নতুন লোকজন এই ব্যবসা নিতে চায়। এছাড়া কিছু বহিরাগত সমস্যা ছিল। আর আন্তর্জাতিক কিছুটা চাপ থাকেই। যারা চায় আমাদের দেশ থেকে এই শিল্পটা আরেক দেশে যেন চলে যায়।

মালিক পক্ষের দিক থেকেও এই অস্থিরতার পেছনে বাইরের ইন্ধন বা একটা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রুবানা হক বলেন, কোনো পোশাক খাতে অস্থিরতার মূল কারণ খতিয়ে দেখতে হবে সরকারকে। একেবারে নিঃসন্দেহে বাইরের ইন্ধন আছে এবং এর পেছনে কেউ না কেউ কাজ করছে। এখন এই শর্ষের ভূতটা কে, এটাতো বার করতে পারা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। কারণ আমরা শুধু শ্রমিক-মালিক সম্পর্কটা দেখতে পারি, এর পেছনে কাজ করতে পারি, নিজের ফ্যাক্টরিতে যেতে পারি কথা বলতে পারি। কিন্তু বাইরে কে আছে এটাতো দেখতে পারবো না। এটি সরকারকে দেখতে হবে।

সংকট দীর্ঘায়িত এবং জটিল হওয়ার পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘাটতি ও সমন্বয়হীনতা একটা কারণ বলে অনেকে মনে করছেন। সরকার পতনের পর পুলিশ একটা বড় সংকটের মধ্যে দিয়ে গেছে। শিল্প পুলিশ, গোয়েন্দা মিলিয়ে যেভাবে সমন্বিতভাবে তৎপরতা চালাতো সেখানে এক ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়। এখনও শিল্প পুলিশ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে আশুলিয়া সাভার এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।

সরকার পতনের পর বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র নেতৃস্থানীয় অনেকেই নিরুদ্দেশ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুল্লাহ হিল রাকিব।

পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন অনেকেই প্রকাশ করতে পারেনি। যার যত পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এখন প্রকাশ করছে। আমি বলবো যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ের স্কোপ রয়ে গেছে। সদিচ্ছা সবারই আছে। চেষ্টা করছে। আর্মি ইজ গিভিং দেওয়ার বেস্ট। এখানে আসলে উচিত সরকারকে আরো একটু কঠোর ভূমিকা পালন করা। আমরা কথা বলছি, তারাও হয়ত চেষ্টা করছেন।

শ্রম মন্ত্রণালয় কী বলছে

বাস্তবতা প্রতিদিনই কোনো না কোনো কারখানায় মজুরি বকেয়া, ছাঁটাইসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঝামেলা লেগেই আছে। সরকার এখন কারখানাভিত্তিক সমস্যা ধরে সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছে। যৌথবাহিনীর আশুলিয়া সাভার এলাকায় বেশ তৎপর হয়েছে। কোথাও কোনো কারখানায় সমস্যা হলে গিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছে।

পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের শান্ত রাখতে শিল্প পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি এবং মালিক-শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের তৎপরতার মূল বার্তা হলো কোনোভাবেই শ্রমিক অসন্তোষ যেন বড় না হয়। ছড়িয়ে না পড়ে।

শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে সরকার কাজ শুরু করেছে। আঠারো দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব কারখানায় বকেয়া বেতন রয়েছে সেখানে প্রয়োজনে সরকার ঋণ দিয়ে বেতন ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা নিচ্ছে। সর্বোচ্চ কনসালটেশনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে চাই। এবং সমাধান করে আসছি। ঝুট ব্যবসা নিয়েও আমরা কাজ করছি, কীভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটাকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক সহিংসতা সেখানে হয়, প্রতিবারই ট্রানজিশনের সময়, সেটাকেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তো সার্বিক বিষয়টাকে আমরা অ্যাড্রেস করছি। আর নিরাপত্তার বিষয়টা সময়ের সাথে সাথে আরো উন্নতি করবে। এখন বিজনেসম্যানরা মোটামুটি একটা কনফিডেন্সে এসেছে যে নিরাপত্তাটা আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

পোশাক খাতে অস্থিরতা নিরসন না হলে এর প্রভাব পড়বে দীর্ঘমেয়াদে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন, মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটিয়ে দ্রুত এই অস্থিরতা নিরসন জরুরি। আমাদের আসলে ক্ষতি অনেক বড়ই বলতে হবে। ক্ষতি এই অর্থে যে আমাদেরতো শুধু কারখানার অর্ডার এবং শ্রমিকের মজুরি না এই মুহূর্তে আমাদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে- রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। সেদিক থেকে আমাদের জন্য কারখানা পর্যায়ে স্থিতিশীলতা ফিরে আসা, এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। এ অবস্থান ধরে রাখা এবং প্রবৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য শ্রমিক অসন্তোষের স্থায়ী সমাধানে কাজ করা এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই, একথা সবাই বলছেন।

**** সূত্র: বিবিসি বাংলা

সূত্র: যুগান্তর।
তারিখ: অক্টোবর ১৩, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪,শনিবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ