লেখক: শওকত হোসেন।
আবার আলোচনায় মূল্যস্ফীতি। কেবল যে বাংলাদেশে তাই নয়, বিশ্বজুড়েও। নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা শঙ্কিত বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ে। দুই বছর ধরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ছিল কম। উৎপাদনও কম হয়েছে। সরবরাহব্যবস্থা ছিল বিঘ্নিত। কোভিডের নতুন ধরন অমিক্রন আসার আগে মনে হচ্ছিল পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। ফলে বাড়ছিল চাহিদা। কিন্তু সে তুলনায় উৎপাদন বাড়েনি। আর সরবরাহব্যবস্থাও ফিরতে পারেনি আগের অবস্থায়। বরং জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এ অবস্থায় অবধারিত ছিল মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়া। এখন দেশে দেশে তাই ঘটছে।
বাংলাদেশ চিত্র
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অক্টোবর পর্যন্ত। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তারও আগের মাস, আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। অবশ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রমাণ নিত্যপণ্যের বাজারেই আছে। বিবিএস বলছে, অক্টোবরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগজনক খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে, যা একলাফে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশে ঠেকেছে। এই হার গত ৬২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেপ্টেম্বর মাসে এই হার ছিল ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মধ্যে গত অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি খরচ বেড়েছে পরিবহন খাতে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা, আসবাব, বাড়িভাড়া, পোশাক খাতেও খরচ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে গড় মূল্যস্ফীতির ওপর।
সাধারণত বলা হয়ে থাকে, ১০ শতাংশ না ছাড়ালে মূল্যস্ফীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অর্থনীতিবিদেরা তো মনেই করেন, সহনীয় মাত্রায় কিছুটা মূল্যস্ফীতি থাকা অর্থনীতির জন্য ভালো। কারণ, এতে উৎপাদন বাড়ে, উৎপাদকেরা উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহী হন। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়তে থাকলে অবশ্যই তা দুশ্চিন্তার।
সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি কবে
এবার একটু ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করা যাক। জানেন কি, গত ৫০ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি কখন হয়েছিল? বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, সালটি ছিল ১৯৭৪। আমরা সবাই জানি, দেশে ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আর সেই দুর্ভিক্ষের বছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে স্বাভাবিকভাবেই খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল বেশি—৭৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। বলে রাখা ভালো, স্বাধীনতার পর প্রথম ভিত্তি বছর ঠিক করা হয়েছিল ১৯৭৩-৭৪। মূল্যস্ফীতির হিসাবটি এই ভিত্তি বছর ধরেই।
দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ যখন এলই, তখন আগ্রহী পাঠকদের জন্য ৭৪–এর দুর্ভিক্ষ নিয়ে দুটি কথা বলা যায়। বিশেষ করে খাদ্য উৎপাদন, খাদ্যপণ্যে মূল্যসূচক এবং দুর্ভিক্ষের সম্পর্ক নিয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ১৯৭৮ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ’৭৪–এর দুর্ভিক্ষ নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলেন। সেই লেখায় ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের খাদ্য উৎপাদনের একটি হিসাব দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, ১৯৭৩-৭৪ সালের তুলনায় ১৯৭৪-৭৫ সালে খাদ্য উৎপাদন সামান্য কম হলেও তা ১৯৭২-৭৩ সালের তুলনার যথেষ্ট বেশি ছিল। অর্থাৎ খাদ্যঘাটতির কারণেই দুর্ভিক্ষ হয়, সে কথা খুবই সত্য। কিন্তু ঘাটতি কীভাবে সৃষ্টি হচ্ছে, সেটাই দেখার বিষয়। দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল ব্যবসায়ী শ্রেণির চোরাচালান, মজুতকারী, চোরাকারবারি ও বর্ধিত মুনাফার উদ্দেশ্যে খাদ্য বিনষ্ট করে দেওয়ার কারণে।
সে সময় পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। ‘বাংলাদেশ: জাতি গঠনকালে এক অর্থনীতিবিদের কিছু কথা’ গ্রন্থে তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭৪ বছরটি শুরুই হয় মারাত্মক রাজস্ব ঘাটতি ও একটি নতুন ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠার ক্রমবর্ধমান ব্যয় দিয়ে। সৃষ্ট বাজেট ঘাটতি, ব্যাংক অর্থায়নকৃত রাষ্ট্রীয় খাতে লোকসান এবং ট্রেডিং, নির্মাণ ও মজুতদারিতে লিপ্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বৃদ্ধি এতে আরও ইন্ধন জোগায়। ভোগ্যপণ্যের মূল্যসূচকের বৃদ্ধি ১৯৭২ সালে ৫২ শতাংশ ও ১৯৭৩ সালে তা ৩৩ শতাংশ ছিল। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারি-জুনে মূল্যসূচকের বৃদ্ধি ২১ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির কারণে হতদরিদ্র ভাগচাষি, কৃষিশ্রমিক ও শহরের শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি ব্যাপকভাবে কমে যায়।’
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি
১৯৭৫ সালের রক্তাক্ত ১৫ আগস্টের পর ৮১ দিনের জন্য ক্ষমতায় ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। এরপরই ক্ষমতায় আসেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে বক্তৃতায় আগের সরকারের সময়কার উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ আসে। তিনি বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘অভাবনীয় মুদ্রাস্ফীতি, যা আমাদের জনসাধারণের বিদ্যমান নিম্ন জীবনযাত্রার মানকে মারাত্মকভাবে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছিল, তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা হয়েছে।’
এই দাবির পরেও দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরে—প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলেই। সে সময় মূল্যস্ফীতি ছিল ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যসূচকে ২১ দশমিক ৪১ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। তখনো ভিত্তি বছর ১৯৭৩-৭৪। আর অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। ১৯৮০-৮১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি স্বীকার করেছিলেন, ‘এ বছরের আরেকটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। কিছুকাল যাবৎ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এই সমস্যার চাপ অনুভব করছে।’
সাইফুর রহমান অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘আমি আত্মতুষ্টির জন্য অন্যান্য উচ্চতর মূল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করছি না। আমি শুধু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টিকে বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করছি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সমস্যা আছে এবং এর পেছনে রয়েছে দেশের ভেতরে ও বাইরে উদ্ভূত পরস্পর–সংশ্লিষ্ট নানা কারণের জটিল সমষ্টি। পণ্যাদির উৎপাদন বৃদ্ধির তুলনায় মোট চাহিদার অধিক বৃদ্ধি, বিভিন্ন পণ্য সরবরাহে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে শিল্পজাত দ্রব্য এবং তেলের মূল্যবৃদ্ধির দরুন মূল্যস্ফীতি—এই সবকিছু একসঙ্গে মিলে সৃষ্টি করেছে এই সমস্যাটি।’
আবারও জিয়া সরকার
একটি বছর বাদ দিলে জিয়া সরকারের পুরোটা সময়েই মূল্যস্ফীতির বড় ধরনের চাপ ছিল। তৃতীয় সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিও জিয়া সরকারের আমলেই, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরেই। ওই বছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যে ছিল ১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ১৩.৯৮ শতাংশ। এই অর্থবছর শেষ না হতেই সরকারের পরিবর্তন ঘটেছিল। সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করে জেনারেল এরশাদ।
এরশাদ সরকারের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরের সেই বাজেটে অবধারিতভাবেই মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গটি এসেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘বিগত বছরের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে অসংগতি রেখে যায় মূল্যস্ফীতির প্রচণ্ড চাপ। মূল্যস্ফীতির বার্ষিক হার বর্তমান বছরের প্রথম ৯ মাস ধরে বেশ দ্রুত বাড়তে থাকে। এর কারণ হচ্ছে দুটি। এ বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদনে ঘাটতির ফলে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ে অনেক, যদিও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধির বার্ষিক হার হয় স্থিতিশীল, নয় নিম্নগতি ছিল। দ্বিতীয়ত, সরকারি খাতে উৎপাদিত ও সরবরাহকৃত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্যে ভর্তুকি বহুল পরিমাণে বেড়ে যায়। আর এই ভর্তুকি হয় সরকারি রাজস্ব, নয় ব্যাংকঋণ দিয়ে পুষিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সরকারি সংস্থার লোকসান একদিকে মুদ্রাস্ফীতিতে ইন্ধন জোগায়, অন্যদিকে বিনিয়োগের অর্থের কমতি ঘটায়। বাস্তবানুগ ও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের অপারগতা আমাদের জন্য রেখে গিয়েছে হতাশাব্যঞ্জক উত্তরাধিকার।’
আরও মূল্যস্ফীতি
এরশাদের সময়ে প্রথমবারের মতো অর্থনীতিতে ভিত্তি বছর পরিবর্তন হয়। ১৯৭৩-৭৪–এর পরিবর্তে নতুন ভিত্তি বছর হয় ১৯৮৫-৮৬। আর ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরেই এরপরের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ঘটে। ওই অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যে ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ১১ দশমিক ০৩ শতাংশ।
দেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি জিয়া সরকারের সময়েই, ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যসূচকেই ছিল ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এর পরের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতিটি ২০ বছর পরের, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে। তখন ক্ষমতায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সে সময় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ, আর ভিত্তি বছর ছিল ২০০৫-০৬। এর মধ্যে খাদ্যসূচকে ছিল ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
ফলে ২০০৮-০৯ অর্থবছরের বাজেট দেওয়ার সময় তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলামকে মূল্যস্ফীতি নিয়ে বিস্তারিত বলতে হয়েছিল। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ‘দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ক্ষতি এবং একই সঙ্গে খাদ্যসামগ্রীর আমদানিমূল্য বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি জনজীবনকে অনেকটা বিপর্যস্ত করেছে—এটা অস্বীকার করতে আমার কোনো দ্বিধা নেই।’
সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি
এবার তাহলে দেশের সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতির তথ্যও জানা যাক। দেশের সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি ছিল ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ২০০০-০১ অর্থবছরে। তখন সরকারে আওয়ামী লীগ, আর অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতির খোঁজে এরপর ফিরে যেতে হবে ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে, তখন ছিল ২ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর পরেরটি হচ্ছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে। অর্থমন্ত্রী তখন এম সাইফুর রহমান। এরপরই আবার শাহ এ এম এস কিবরিয়ার আমল, ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে, ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,