Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

দিনরাত সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ঢাকা জাহাঙ্গীরনগর চট্টগ্রাম সিলেট রাজশাহীতে আহত চার শতাধিক আজ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ (২০২৪)

Share on Facebook

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। হামলা পাল্টা হামলায় দিনরাত ছিল উত্তেজনা। আহত হয়েছেন চার শতাধিক শিক্ষার্থী। গতকাল কয়েক দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ঢাকার মধ্যে ইডেন কলেজ, ঢাকার বাইরে জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, সিলেট শাহজালাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা হয়েছে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। হাসপাতালে গিয়েও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে শতাধিক বহিরাগত নিয়ে এ হামলায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। পরে তারা ভিসির বাসভবনে আশ্রয় নেন। রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানেও হামলা চলছিল।

গতকাল বিকাল ৩টার দিকে ঢাবির মলচত্বর এলাকায় হামলার সূত্রপাত ঘটে। এদিন দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত সাত কলেজের কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। বিকাল ৩টার দিকে কোটা আন্দোলনকারীরা বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের আটকে রাখা শিক্ষার্থীদের আনার জন্য হলপাড়ায় মিছিল নিয়ে যান। এ সময় রড, হকিস্টিক, রামদা নিয়ে হামলা করে ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীরা হামলার পাল্টা জবাব দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। ছাত্রলীগের হামলার মুখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ভিসি চত্বর এলাকায় অবস্থান নেন। পরে ছাত্রলীগ ভিসি চত্বর এলাকায় হামলা চালাতে শুরু করে। এ সময় দিগি¦দিক ছোটাছুটি করেন শিক্ষার্থীরা। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভিসি চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের মধ্যে অবস্থান করেন। তাদের বাস থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে লাঠিপেটা করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, মহানগর শাখার নেতা-কর্মীদের মহড়া দিতে দেখা যায়। রাজু ভাস্কর্যে অবস্থানের পাশাপাশি মধুর ক্যান্টিনে তারা আলোচনা ও বৈঠক করেন। এ হামলায় অর্ধশতাধিক নারী শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। হামলায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ডেইলি স্টারের প্রবীর দাস ও প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক গুরুতর আহত হন। ছাত্রলীগের ধাওয়া খাওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। বিকালে ঢাকা মেডিকেল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর পরপর কয়েক দফা হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় অনবরত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় শহীদুল্লাহ্ হলের সামনেও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা মেডিকেল সংলগ্ন অমর একুশে হল ও শহীদুল্লাহ্ হল এলাকায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগ। হামলায় ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কোটা আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমি মাফ চাওয়ার পরও তারা আমাকে ফেলে লাথি, কিল-ঘুসি মারে। ওখানকার কয়েকজন সাংবাদিক আমাকে বাঁচান।’

সংঘর্ষের সময় গুলি ছুড়ছেন একজন

কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা হয়েছে। আহতদের মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে। ককটেল নিক্ষেপ করেছে। আমাদের কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকারের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করেনি। আমাদের ওপর হামলাটি পরিকল্পিত। হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ শতাধিক আহত শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে আসেন বলে জানা যায়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নির্দেশে হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে। বৈঠক শেষে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের প্রাধ্যক্ষরা রাতভর হলে অবস্থান করবেন। মিটিংয়ে আমাদের আরও কিছু বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রভোস্ট কমিটির পাঁচটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলা হয়-শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন। প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিকভাবে হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। হলগুলোয় কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না। যে কোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান এবং সবাইকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে। কেউ নাশকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। সন্ধ্যার আগে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিকালে জানান, ঢাকা মেডিকেলে আহত অবস্থায় অন্তত ১৮২ শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত জরুরি বিভাগের চিকিৎসা নিয়েছেন। এরপর সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, ২ শতাধিক আহত শিক্ষার্থী ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের অভিযোগ, ঢাবির রাজু ভাস্কর্য, দোয়েল চত্বর, জিয়া হল, শহীদুল্লাহ্ হল, বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের কর্মীরা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এ ছাড়া ইডেন কলেজের ভিতরে ছাত্রলীগের হামলায় অনেক ছাত্রী আহত হন। আহতদের বেশির ভাগ মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন। ঢামেকে আসা আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন সায়মা, তামান্না, ফাহমিদা, এসকায়া, মাহমুদুল হাসান, ইয়াকুব, নাজিব, মাসুদ, জাহিদ, সাখাওয়াত, সায়মন, সাকিব, ইভা, ইমরান, কাজি তাসনিম, সাকিল, ফাহিম, এনামুল, হামজা, রিফাদ রশিদ, জহির, তিশা, আবিদ, তুষার, হাসান, রায়হান, হামজা, নাসির, দেলোয়ার, সুমি, আবির, এহসান, রহিম, শাওন, আরফান, কায়েস, ফারুক, রাহাত, মনিকা, রিপন, জান্নাতুল, তানভীর, ফাহমিদুল, রেয়োম, শাকিল, প্রিয়া, আবু যাহেদ, শুভ, সাকিব, মাহবুব, জুনায়েত, মুরাদ, মেহেদী আসাদুল্লাহ, খোকন, উজ্জ্বল, অরপি, ইতি, রাফিম, অমি, সামিয়া, সুমন, রিজভী, আবিদ ও তরিকুল, আল আকতার, সুশান্ত, সুলতানা, ইশরাত ইমু, রাহাত, শাহিনুর সুমি, সানজিদা, সুমাইয়া সায়মা, সায়মা আফরোজ প্রমুখ। সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঢাবিতে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যার পরপরই ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেওয়া শুরু করে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাবির দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এ সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি গ্রুপ এবং পুলিশের সাঁজোয়া যান একসঙ্গে সামনের দিকে যেতে দেখা যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)-এর যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটের দিকে শহীদুল্লাহ্ হলেরইভতরে অবস্থান করা কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ জাভেদ হোসেনের উপস্থিতিতে হলের নিচে নেমে আসেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে দেখে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

ইডেনে ছাত্রলীগের হামলা : রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী মিছিলে অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ইডেন মহিলা কলেজের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কোটা নিয়ে করা বক্তব্যের প্রতিবাদে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হলে কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ঘটে। শিক্ষার্থীরা যেন বের হতে না পারেন সেজন্য কলেজের গেটে তালা মেরে দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তালা ভেঙে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের দিকে অগ্রসর হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ কলেজের ভিতরেই আটকে থাকায় তাদের বের করার জন্য ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ঢাকা কলেজের ছাত্ররাও ভিড় জমান কলেজের গেটে। একাধিক ছাত্রী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের দিকে যাওয়ার জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ছাত্রলীগের নেত্রীরা এসে ঝামেলা করে এবং আমাদের চলে যেতে বলে। পরে আমরা যেতে না চাইলে আমাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। একপর্যায়ে কয়েকজন আপুকে মাটিতে ফেলে এবং চুল ধরেও মারতে থাকে। এতে আমাদের কয়েকজন আপু আহত হয়েছে। ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা রুটিন মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু দেখেছি শিক্ষার্থীদের একটা অংশ আমাদের মিছিলের মধ্যে ঢুকে যায়। পরে আমরা কয়েকজন তাদের সরে যেতে বলি। ফলে ধাক্কাধাক্কি লাগে, কিন্তু কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’

ব্যারিকেড ভেঙে রাজু ভাস্কর্যে জবি শিক্ষার্থীরা : জবি প্রতিনিধি জানান, কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীরা মোড়ে মোড়ে পুলিশি বাধা ঠেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন। গতকাল বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজার, তাঁতীবাজার ও গুলিস্তান মোড়ে এলে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা ঠেলে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিলিত হয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা দুপুর থেকে উন্মুক্ত লাইব্রেরি সামনে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরে ছাত্রলীগ ও কোটা আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এলে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় সংঘর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

দুপুরে জবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে পুরান ঢাকা হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে একত্র হন। এ ছাড়া সকাল থেকে পুরান ঢাকার সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।

জাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা : জাবি প্রতিনিধি জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলে দফায় দফায় হামলা করেন শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনের সড়কে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। এতে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আবদুর রশিদ জিতু, জাহিদুর রহমান, মাহফুজ ইসলাম মেঘ, সদস্য জাহিদুল ইসলাম বাপ্পীসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর জখম পেয়ে আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের পাঁচজন কর্মী পাল্টা হামলার শিকার হয়ে পেটে ও মাথায় জখম হয়েছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কোটা আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর, চৌরঙ্গি মোড়, মেয়েদের আবাসিক হলসংলগ্ন সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে অগ্রসর হলে লাঠিসোঁটা, রড ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালান শাখা ছাত্রলীগের ২ শতাধিক নেতা-কর্মী। এতে হামলার শিকার হয়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন, পদার্থবিজ্ঞান ভবন ও শহীদ মিনারের দিকে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ওপর পাল্টা হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হন। আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুর রহমান জিতু বলেন, ‘আমাদের কয়েকজনকে কাদাপানিতে মাথা চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। আমাকে ছাত্রলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল সরাসরি আঘাত করেছে। আমি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই-ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাহিনীকে আক্রমণের জন্য লেলিয়ে দিয়ে আমাদের কোটা সংস্কারের দাবি থেকে সরানো যাবে না। শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

চট্টগ্রামে দুই দফায় ছাত্রলীগের হামলা : চবি প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দুই দফায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ও কাটাপাহাড় সড়কে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে দুপুর আড়াইটায় শহরগামী শাটল ট্রেন থেকে কোটা আন্দোলন চবির সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে জোরপূর্বক ছাত্রলীগের মিছিলে তাকে যুক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রাফির ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য প্রক্টরের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের অনুসারীদের।

চট্টগ্রাম শহরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। এতে সাংবাদিক, পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এদিন বিকাল ৫টায় নগরীর ষোলশহর এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা ষোলশহর রেল স্টেশন ও মোড়ে অবস্থান নেন। অন্যদিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুর এলাকায় অবস্থান নেন। এরপর বিকাল ৫টায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে দুই নম্বর গেট থেকে ষোলশহরের দিকে আসেন। এরপর সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বেশ কয়েকবার বিকট শব্দ শোনা গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান করে রাফিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায়। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা কয়েকজন ছাত্রীর ওপর আঘাত করলে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দাবি, খান তালাত রাফি মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তাই তার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নেই। আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থী চৈতী বলেন, আমরা সামনের দিকে ছিলাম। বড় বড় লাঠি দিয়ে আমাদের আঘাত করা হয়। আমাদের অনেকগুলো মেয়েও আঘাত পেয়েছে। এ সময় আমাদের পতিতা বলেও গালি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, আদালতের নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করলে আমরা আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা দিব।

শেকৃবিতে বিক্ষোভ : শেকৃবি প্রতিনিধি জানান, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লুৎফর রহমান হলের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গণভবনের সংযুক্ত সড়কে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা ভেঙে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ চালাতে থাকেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ঢাবিতে হামলা কেন, জবাব চাই চাই’, চবিতে হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘মামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

রাবিতে ছাত্রলীগের হামলা : রাবি প্রতিনিধি জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাম ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন কলাভবনের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হোসেন বলেন, হঠাৎ ছাত্রলীগ নেতা মনোমহন বাপ্পার নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা করে। আমার কানে সার্জারি করা ছিল। সেখানে আঘাত পেয়েছি। হামলায় সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। জানা গেছে, ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেনসহ প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থীর ওপর এ হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এর আগে, বিকাল ৫টার দিকে কোটা আন্দোলনের নামে রাজাকারদের মতাদর্শ প্রচারের বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করে শাখা ছাত্রলীগ। এতে নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাসে সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন নেতারা। এ ঘোষণার পর বাইক নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া শুরু করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ক্যাম্পাসের শহীদ জোহা চত্বর, টুকিটাকি চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম দেখলেই তাদের হটিয়ে দিচ্ছে ছাত্রলীগ। একদল শিক্ষার্থীর অভিযোগ, সংগঠনিক কাজ শেষে ফিরছিলাম। পথিমধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের বাইক দিয়ে আমাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে ছত্রভঙ্গ এবং গালিগালাজ করেন।

যশোরে ছাত্রলীগের হামলা : যশোর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে যশোর এম এম কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুুরে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কাছাকাছি পৌঁছালে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের মারপিট করে ব্যানার কেড়ে নেয় এবং মাসুম নামে তাদের এক সংগঠক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়। এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহরের পালবাড়ি এলাকা ও জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। প্রায় একই সময়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন যশোর সরকারি এম এম কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর : ইবি প্রতিনিধি জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও হল ছাড়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

শাবিতে হামলার বিচার চেয়ে প্রক্টরকে স্মারকলিপি : শাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দেয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে স্মারকলিপি জমা দেন আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ গালিব ও সুইটি আক্তার। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কোটা সংস্কারপন্থিরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

দিনাজপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, কোটা সংস্কার দাবিতে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়লে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এর আগে দুপুর ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, এসব স্লোগান দিতে থাকেন।

গাইবান্ধায় বিক্ষোভ : গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অপমানজনক’ অ্যাখা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শহরের ১ নম্বর রেলগেটে বিক্ষোভ করেন তারা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যা বলেছেন, তা আমাদেরকে আশাহত করেছে। আমরা দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

কুবিতে বিক্ষোভ মিছিল : কুবি প্রতিনিধি জানান, কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল ছাত্র আন্দোলন চত্বর থেকে মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি মূল ফটক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, সরকার সরকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

খুলনায় সড়ক অবরোধ : খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, খুলনায় জিরো পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় নগরীর জিরোপয়েন্ট মোড়ে জড়ো হয়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এতে জিরোপয়েন্টের চতুর্দিকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খুলনা-সাতক্ষীরা, খুলনা-বাগেরহাট, খুলনা-ঢাকা সড়কে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

কুমিল্লা : কুমিল্লায় অন্তত ৫০ জন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। গতকাল সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুয়েট, ঢাকা ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সোহেলের নেতৃত্বে তাদের ধাওয়া দিয়ে জিলা স্কুল ভবনের বিভিন্ন কক্ষে ঢোকানো হয়। এরপর এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নির্যাতন চালায়। তারা দেশি অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ চালায়।

আজ বিক্ষোভ : হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ (মঙ্গলবার) বিকাল ৩টায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, সারা দেশে মর্মান্তিকভাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হলো। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ভিসি এবং প্রক্টর আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থাকতে বহিরাগতরা কীভাবে হামলা করে? সরকার সহিংসভাবে এ আন্দোলন দমন করতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি সারা দেশের মানুষকে নেমে আসার আহ্বান জানান।

তিনি রাত ৯টা ৪০ মিনিটে নতুন কর্মসূচি দিয়ে বলেন, হামলা ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং এক দফা দাবিতে সারা দেশে মঙ্গলবার (আজ) বিকাল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পরে সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
তারিখ: জুলাই ১৬, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ