বাংলাদেশের সঙ্গে আকাশপথে নতুন গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচলের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের জন্য বহুমাত্রিক উপায়ে এ দেশের নৌপথও ব্যবহার করতে চায় নেপাল। সড়ক, নৌ আর আকাশপথে নেপালের সংযুক্তি বাড়ানোর এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মতো হিমালয়বেষ্টিত দেশটির সঙ্গে সংযুক্তি বাড়াতে বাংলাদেশও আগ্রহী।
আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন। তিনি এখানে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারির সদ্য সমাপ্ত সফর নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নেপালের প্রেসিডেন্ট গতকাল সোমবার ঢাকায় আসেন। দুই দিনের সফরের প্রথম দিনেই জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও নেপালের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। গত রাতে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে দুই দেশ চারটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। সফরের দ্বিতীয় দিনে নেপালের প্রেসিডেন্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। দুপুরে তিনি নেপাল ফিরে গেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৬ সালে সম্পাদিত নেপাল-বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির প্রটোকলের সংযোজনী হিসেবে রোহানপুর-সিংহাবাদ রেল সংযোগ পয়েন্টকে অন্তর্ভুক্ত করে দুই দেশের বাণিজ্যসচিবদের মধ্যে একটি সম্মতপত্র সই হয়েছে এই সফরে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো নেপাল ও ভুটানের ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে আগ্রহী নেপাল। এ ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহারের প্রক্রিয়া নির্ধারণের কাজ এগিয়ে নিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন নেটওয়ার্ক ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে নেপাল। এ ছাড়া বাংলাদেশের সৈয়দপুর বিমানবন্দর এবং নেপালের বিরাটগর/ভদ্রপুরের মধ্যে সরাসরি বিমান সংযোগ স্থাপনেও নেপাল আগ্রহী। বাংলাদেশ প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
বাংলাদেশের নৌরুট ব্যবহারের জন্য নেপাল কি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার নৌ প্রটোকল অনুযায়ী এগোতে চায়—জানতে চাইলে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সংযুক্তি বাড়ানোর জন্য রেলপথের পাশাপাশি নেপাল নৌরুট ব্যবহারের কথাও বলেছে। আমরা এ বিষয়ে কারিগরি দিক নিয়ে কাজ করছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, নেপাল মূলত সড়ক ও নৌপথে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে চায়। ফলে নেপালকে নৌপথ ব্যবহারের সুবিধা দিতে হলে বিদ্যমান বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলের আওতায় হতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ নিয়ে একমত হতে হবে। যেমনটা হয়েছে রোহানপুর-সিংহাবাদে নেপালকে পণ্য পরিবহনে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: মার্চ ২৩, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,