Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

তালেবানকে পুরোপুরি উপেক্ষার ফল পাচ্ছে আফগানরা (২০২১)

Share on Facebook


লেখক: হাজ্জাতুল্লা জিয়া কাবুলভিত্তিক সাংবাদিক।

আফগানিস্তানে হঠাৎ করেই ক্ষমতার বদল দেখতে পেল বিশ্ব। এ ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়টার প্রতিফলন হলো? ব্যাখ্যা করতে গিয়ে, আমেরিকা-ন্যাটোর আগ্রাসনের পর আফগানিস্তানে যে সরকারব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল, সেটার দুর্বলতা ও দুর্নীতির ওপর জোর দিচ্ছেন অনেক বিশ্লেষক। কিন্তু এ গল্পের উল্টো দিকটার দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। সেটা হলো, বৈধতার সংকট সৃষ্টি হবে জেনেও আফগান সরকারের সঙ্গে কেন সন্ধি করতে অস্বীকৃতি জানাল তালেবান? কেন তারা এত অনড় থাকল?

এর মূল কারণ হচ্ছে, আফগানিস্তানে পশ্চিমা আগ্রাসনের পর সরকার গঠনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে তালেবানকে বাদ রাখা হয়েছিল। ২০০১ সালে তালেবানের হাত থেকে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে সরকার গঠনের উদ্দেশ্যে পশ্চিমা জোট এবং তাদের আফগান মিত্ররা জার্মানির বনে একটি সম্মেলনে মিলিত হয়েছিল। সেখানে নর্দান অ্যালায়েন্স, পাকিস্তানে নির্বাসিত আফগান পশতুনদের পেশোয়ার গ্রুপ, রোম গ্রুপ নামে পরিচিত রাজপরিবারের সদস্য, আফগানদের সাইপ্রাস গ্রুপ উপস্থিত ছিল।

এরপর ২০০২ সালে লয়া জিরগা গঠন করা হয়। দেশটির সর্বোচ্চ এ পরিষদের সিদ্ধান্তে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছিল। সে সময়ও তালেবানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ২০০৩ সালে সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ারও বাইরে রাখা হয় তাদের। ২০০৪ সালে লয়া জিরগাতে সংবিধান পাস হয়। সেখানে জাতিসংঘ সনদ এবং সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে নারীর মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০০১-পরবর্তী ক্ষমতার কাঠামো থেকে তালেবানকে বাদ রাখার ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক করে দেওয়াটা মেনে নিতে পারেনি তালেবান। সাংবিধানিক অধিকার এবং স্বাধীনতার ধারণার সঙ্গে নিজেদের কট্টর মতাদর্শকে মেলাতে পারেনি তারা। দেশে ও বিদেশে প্রান্তিক হয়ে যাওয়ায় তালেবান আবার সংগঠিত হতে শুরু করে। তারা আফগান সরকার ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের ওপর হামলা শুরু করে। পরবর্তী বছরগুলোয় তালেবান হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, অপ্রয়োজনীয় দুর্দশা ও ভোগান্তির শিকার হয় আফগান জনগণ। নিজেদের কট্টর অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো নিদর্শনই দেখায়নি তালেবান।

এখন অনেকে যুক্তি দিতে পারেন, বন সম্মেলনে তালেবানকে যুক্ত করা যেত না। কেননা নর্দান অ্যালায়েন্স সেটা মেনে নিত না। তালেবানের হাতে নিপীড়নের শিকার হওয়া পরিবারগুলো এতে প্রতিবাদ করত। এ ছাড়া লয়া জিরগাতে তালেবানের উপস্থিতির কারণে সংবিধানে নারী অধিকার ও স্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকার যুক্ত করা যেত না। এরপরও বলা যায়, ২০০১ সালের প্রশাসনে তালেবানকে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে অনেক ক্ষেত্রেই সেটা টেকসই হতে পারত। অনেক ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব পড়ত। আমেরিকা ও ন্যাটো জোট নর্দান অ্যালায়েন্সকে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের জন্য চাপ দিতে পারত। আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত দিতে পারত। এখন যেটা তালেবানের সঙ্গে তারা করছে। সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের সময়ও তালেবান নেতাদের পরামর্শ নেওয়া যেত। এ প্রক্রিয়ায় তখন অনেক রক্ষণশীল ও ধর্মীয় নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

এটা করা গেলে, তালেবান নেতারা কিছু সুনির্দিষ্ট ইস্যুতে নমনীয় হতে পারতেন। অসম্মত বিষয় সমাধানের ক্ষেত্রে সংলাপে অভ্যস্ত হতে পারতেন। অন্তর্ভুক্তিকরণের এই প্রক্রিয়ায় তাঁরা তাঁদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি মধ্যপন্থার দিকে নিয়ে যেতে পারতেন। এতে করে আফগান সাধারণ জনগণের মধ্যে তাঁদের প্রতি সমর্থন বাড়ত। এর ফলে নতুন আফগান প্রশাসনকে এতটা প্রান্তিক হতে হতো না। এরই মধ্যে অনেক কর্মকর্তা তালেবানকে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক বদলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত না করায় পরিতাপ করছেন।

দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে, অনেক দেরি হওয়ার আগপর্যন্ত তালেবানের কাছে পৌঁছানোর কোনো চেষ্টা করাই হয়নি। এখন আমেরিকা ও তার মিত্রদের সামনে আর মাত্র কিছু পথ খোলা আছে। তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অথবা অর্থনৈতিক সহযোগিতা তারা স্থগিত করতে পারে। তবে সেটা কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে। যা-ই হোক, নারী ও সংখ্যালঘুর অধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আফগানিস্তানে জোর ধাক্কা খাবে কি না, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়।

গত দুই দশকে কাবুল ও ওয়াশিংটনের অনুসৃত ভুল নীতি এবং ভুল হিসাবের কঠোর মূল্য দিতে হচ্ছে আফগানদের।

আল-জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

হাজ্জাতুল্লা জিয়া কাবুলভিত্তিক সাংবাদিক

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০৬, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ