Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

তাজ-মহলের আড়ালের কিছু কথা- ১

Share on Facebook

তাজ-মহলের আড়ালের কিছু কথা- ১

মুঘল সম্রাট শাহ-জাহন যার অর্থ হচ্ছে সারা বিশ্বের শাহ বা সম্রাট তাঁর সীমাহীন বেদনাকে স্থাপত্য শিল্পের মধ্যো প্রাকাশ করেছেন বিশ্বের সেরা ইমারত বা প্রেমের সমাধি তাজ-মহল তৈরর মধ্য দিয়ে্। (তাজ-মহলের ছবিটি ২০১৩ সালে আগ্রা ভ্রমণের সময় তোলা। )

বিশেষ করে আমাদের এই ভারত উপ-মহাদেশের এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল, যে তাজ-মহলের নাম শুনেন নি বা তাজ-মহল সম্পর্কে জানেন না। বিভিন্ন বইয়ে, প্রবন্ধে, ছায়িছবিতে ওয়েব সাইডে তাজ-মহল সম্পর্কে অনেক কথা, অনেক অ-জানা কথা বলা হয়েছে।

এখন সাধারণ মানুষের পক্ষ্যে তাজ-মহল সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়, নতুন কিছু তথ্য পেতে হলে প্রয়োজন তাজ-মহল নিয়ে গবেষনা। কিন্তু তাজ-মহল নিয়ে আমার কোন গবষনা করা হয় নি বা হওয়ার কথা নয় তবে একটি প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে বহু দিন ধরে উঁকি দিয়েছিল।

গবেষকদের নিখুঁত গবেষনার অনেক মূল্যবান কথা, সম্রাট শাহ জাহানের তাজ-মহল গড়ার পরিকল্পনা, তাজ-মহলের নক্সার গভীরতা, তাজ-মহল গড়া থেকে শুরু হয়ে সমাপ্তের অমূল্য সব বিবরণী বিভিন্ন বই-পুস্তুক ও প্রামান্য চিত্রে যাওয়া যায়।

তাজ-মহল গড়ে উঠার পিছনে অনেক প্রশ্নের মধ্য একটি প্রশ্ন বার বার আমার মধ্যে উঁকি দিয়েছিল আর চষ্টা করেছি সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার বহু দিন ধরে। নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন বই ও ইতিহাস ঘেটে একটি ধারণায় আসতে পেরেছি যে, যমুনার ঠিক তীর ঘেষে সম্রাট কী ভাবে মমতাজ মহলের কবরের উপরে তাজ-মহল গড়ে তুললেন!! মমতাজ মহলের মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যে তিনি কি ভাবে তাজ-মহলের সম্ভাব্য স্থানটি নির্বাচন করলেন !!

ইতিহাস, নানান দলিল পত্র ঘেটে বুঝতে পেরেছি যে মমতাজ মহলের মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যে সম্রাটের প্রিয়তমা স্ত্রীর শেষ ঠিকানার স্থানটি এবং সেখানে একটি সৌধ স্থাপনের একটি নিদৃষ্ট স্থানের সিদ্ধান্তটি তিনি তৎক্ষানাৎ দিতে পারে নি। আর এ পর থেকে বেড়িয়ে আসেত থাকে আমার কাছে নতুন কিছু তথ্য ২০১৩ সালে তাজ-মহল ভ্রমণের সময় কতকগুলি অজানা বিষয় আরো বেশি করে ষ্পষ্ট হয়।

খুব সাধারণ জ্ঞান থেকে এটা বুঝা সম্ভব যে পৃথিবী পৃষ্টে অনেক জায়গায় কোন ইমারত বা স্থাপত্য গড়া গেলেও খুব দ্রুত ঠিক নদী তীর ঘেষে কোন ইমারত, সেতু বা কোন স্থাপত্য গড়া সহজ নয়, নদী পাড়ে কোন ইমারত বা কোন স্থাপত্য তৈরী করতে গেলে প্রকৌশলী বিদ্যায় সবার আগে প্রয়োজন নদী শাসন, যা প্রকৌশলী বিদ্যার একটি বড় অধ্যায়।

মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর থেকে সম্রাট বাবর নিজ সম্রাজ্য উঁচু ভূমি থেকে সমতল ভুমির দিকে তাঁদের নজর যায় আর মুঘল সম্রাটদের রক্তে যে রাজ্য বিস্তারের এক নেশা ছিল, সেই নেশা সম্রাট শাহ-জাহানকেও ধরেছিল। রাজ্য বিস্তারের নেতৃত্ব দিতেন সম্রাটগন নিজেরাই। দখলে না থাকা রাজ্যগুলিকে একটি ফরমান পাঠিয় দিতেন আর ফরমানে বলা হতো হয় মুঘল সম্রাজ্যের বশ্যতা ম্বীকার অথবা যুদ্ধ, যুদ্ধের দামামা প্রায় বেজে উঠত প্রতিবেশি রাজ্যগুলির উপর আর মুঘল সম্রাটদের যুদ্ধে জয়ের বড় অন্ত্র ছিল তাঁদের আধুনিক কামান।

ভারতের বর্তমানের মধ্য প্রদেশ রাজ্যে বোরহান পুর তখন অশান্ত মুঘল সম্রাটের ফরমান মানতে রাজি হন নি সেখানকার রাজা, চুড়ান্ত হল যুদ্ধ, গ্রীস্মের এক ভোরে সম্রাট শাহ জাহান – যার অর্থ হল সারা দুনিয়ার মালিক চতুর্দশ বারের মত সন্তান সম্ভবা তাঁর প্রিয়মতা স্ত্রী সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলকে সাথে নিয়ে রওনা হলেন বোরহানপুরের উদ্দ্যেশে, – এখানে প্রামান দেয় সম্রাট কত খানি সম্রাজ্ঞীর ভালোবাসায় বন্দী ছিলেন যাকে কিনা এক নজরের জন্যে দৃষ্টির আড়াল করতে চান নি তা জীবনে কিম্বা মরণে, যুদ্ধ ক্ষেত্রে কোন সম্রাজ্ঞীকে সাথী করা মুঘোল সম্রাজ্যের একটি বিরল ঘটনা আর এটি আরোও বিরল ঘটনা যে যখন সম্রাজ্ঞী চতুর্দশ বারের মত সন্তান সম্ভবা তখনও তিসি সম্রাট শাহ-জাহানের সাথে যুদ্ধ ক্ষেত্রে। সম্রাজ্ঞী কতটা তাঁদের প্রায় ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ভালোবাসার বন্ধনে সম্রাটকে বন্দী রেখেছিলেন তাঁর একটি প্রমান মেলে সম্রাজ্ঞীর ঘন ঘন গর্ভবতী হওয়ার মধ্য দিয়ে।

বোরহান পুরে যুদ্ধের প্রস্তুতীর জন্য রাজকীয় তাঁবু ও বসবাসের জন্য ইমারতও তৈরী করা হয়েছিল, তৈরী করা হলো বিশ্বের মহান রানীন জন্য গোসল খানা।
( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

লোদীর বিরুদ্ধে বোরহান পুরে তখন যুদ্ধের ডামাডোল তবুও সম্রাট প্রিয় কে নিয়ে তাপতি নদী তীরে সন্ধায় পায়ে চারী করতেন, নানান স্বপ্নের ডাল-পালা বিস্তার করতেন। বোরহানপুরে তাপতি নদীর তীর ঘেষে মুঘল স্থাপত্য যার পাশে সম্রাট সম্রাজ্ঞীকে নিয়ে পায়েচারী করতন। ( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

১৬৩১ সালে ১৬ই জুন যুদ্ধের তাঁবুতে সম্রাটের রাজকীয় চিকিৎসকের তত্বাবধায়নে সম্রাটের ১৪মত রাজকুমারী গৌহারার জন্মদানের প্রাক্কালে রাজ চিকিৎসক সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার আগেই সন্তানের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন আর এটিকে একটি একটি অশুভ সংকেত বলে চিকিৎসক সম্রাটকে জানিয়েছিলেন, সম্রাট খুব উৎবিগ্ন ছিলেন সমাজ্ঞীর চিন্তায়, কন্যা সন্তানের জন্মদানের সংবাদে তিনি প্রফুল্ল হয়েছিলেন তবে চিকিৎকরা সম্রাটকে সমাজ্ঞী সম্পর্কে কোন সঠিক সংবাদ দিতে পারেনি, গভীর রাতে সম্রাট যখন বিশ্রামে যাচ্ছিনে ঐ সময় সংবাদ আজে যে সমাজ্ঞী তাকে দ্রুত তাঁবুতে দেখা করতে বলেছেন তবে মমতাজ মহল অনুমান করেছিলেন আর তিনি আর বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি আর এই বিশ্বে বেঁচে থাকবেন না। তাই তিনি জীবনের প্রিয় মানুষকে জীবনের শেষ কথা ও ইচ্ছার কথা বলতে শুরু করেছিলেন। ইতিহাস বিদরা বলেন রানী তাজ-মহলের মত একটি সৌধ আশা করেছিলেন সম্রাটের কাছ থেকে। এর অল্প পরেই বিশ্বের রানী সম্রাটের কোলে মাথা রেখে বিশ্বের সমাজ্ঞী ১৬৩১ সালে ১৭ই জুন প্রভাতে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন। রাজকীয় দিন লিপিতে বর্ণনা আছে যে, ঐ সময় সম্রাট যেন হঠাৎ এক ভয়বহ ঘূর্নীঝড়ের কবলে পড়েন আর তিনি উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ক্রন্দন করতে শুরু করেন।

ইসলামী রীতি অনুযায় ঐ দিনেই বিশ্বের সম্রাজ্ঞীকে বোরহানপুরে জৈনাবাদে এক দেয়াল ঘেরা বাগানে সমাহিত করা হয় যা শাহ- জাহানের চাচা দানিয়েল তাপতি নদীর তীরে এই বাগন বাড়িটি তৈরী করেছিলেন।

রাজ দরবারের দিন লিপি থেকে জানা যায় সম্রাজ্ঞীর চির বিদায়ের পরে আট দিন সম্রাট কোন খাদ্য গ্রহন করেনি, তাঁবু থেকে বের হন নি, পরিচারকগন শুধু শুনতে পেতেন তাঁবু ভিতরে গুমরিয়ে গুমরিয়ে সম্রাট অনাবরত কেঁদেই চলেছিলেন।

সব সময় অশ্রুজল চোখে থাকার কারনে তিনি চোখে কম দেখতে শুরু করলেন তিনি চশমার ব্যবহার শুরু করলেন। দাড়ি সাদা হচ্ছিল আর পিঠ বাঁকা হয়ে যাচ্ছীল। ২ বছর তিনি গান, দামী পোশাক রত্ন ও সু-গন্ধী ব্যবহার করতেন না। তার এক চাচা ( চাচা দানিয়েল) লিখেছিলেন সে ( শাহ-জাহান) এত শোকাতুর হয়ে থাকলে মমতাজ হয়তো জান্নাত থেকে দুঃখে ভরা এই পুথিবীতে ফিরে আসতে চাইবে আর সম্রাটের উচিত হবে মমতাজের রেখে যাওয়া সন্তানের দিকে নজর দেওয়া।

অবশেষে ১৬৩১ সালে ডিসেম্বর মাসে লোদীর বিরুদ্ধে শাহ-জাহান জয় লাভ করেন ও মুঘল সামরকি বাহিনী তথা সম্রাটের বোরহান পুর থেকে আগ্রায় ফিরে যাওয়ার কথা, কিন্তু তিনি মমতাজ মহলকে ফেলে আগ্রা যেতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে কিছুটা ইসলামিক রীতি-নীতিকে উপেক্ষা করে সম্রাজ্ঞীর দেহাবশেষ কবর থেকে উত্তোলন করে একটি স্বর্নের কফিনে করে সম্রাট পুত্র শাহ সুজার নেতৃতে সামরিক বহরে বোরহান পুর থেকে আগ্রায় প্রথমে যমুনার তীরে আবারও সাময়াকভাবে দাফন করা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নামী মামী স্থাপত্যবিদের আগ্রা রাজ-মহলে ডাকা হয় ও নানান নক্সা তৈরীর জন্য যেখানে প্রস্তাবিত বিশ্বকে অবাক করে দে্য়ার জন্য একটি ইমারত তৈরীর পরিকল্পনা করা হয়। এর আরো এক বা দুই বছর পরে ঠিক যমুনা পাড়ে নদী শাসনের পরে একটি পরিকল্পিত স্থান বা একটি রাজকীয় দালানে স্থায়ি ভাবে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। এর পর থেকে তাজ-মহলের কাজ শুরু হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু দামি ও মহা-মূল্যবান পাথর ও রত্ন।

উল্লেখ্য যে, আগ্রা থেকে বোরহান পুরের দুরুত্ব প্রায় ২৫০ মাইল

অবশেষে যমুনা পাড়ে গড়ে উঠে তাজ-মহল ছবিটি প্রায় ১,৮০০ সালের দিকে তোলা ( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

যমুনার অপর প্রান্ত থেকে বর্তমানের তাজ-মহল ( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

তাজ-মহলের সু-উচ্চ বেদী থেকে এর ধারে বা প্রান্তে যাওয়া একে বারে নিষিদ্ধ নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা তবুও কৌতহল বশতঃ সু-উচ্চ বেদী থেকে এর ধারে বা প্রান্তে এসে যমুনার পানিতে একবার উঁকি দিয়েছিলাম নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আর বুঝতে পেরেছিলাম যে তাজ-মহল এতটাই যমুনার তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে যে পূর্ণিমার রাতে তাজ-মহলের ছায়া যমুনায় পড়ে আরও একটি তাজ-মহল যমুনায় ভাসতে থাকে।

(তাজ-মহলের সু-উচ্চ বেদী থেকে এর ধারে বা প্রান্তের ছবিটি ২০১২ সালে আগ্রা ভ্রমণের সময় নিজ হাতে তোলা। )

তাজ-মহলের সু-উচ্চ বেদী থেকে এর ধারে বা প্রান্তে যাওয়া একে বারে নিষিদ্ধ নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা, কড়া পহড়ায় নিরাপত্তা বাহিনী।
(তাজ-মহলের সু-উচ্চ বেদী থেকে এর ধারে বা প্রান্তের ছবিটি ২০১২ সালে আগ্রা ভ্রমণের সময় নিজ হাতে তোলা। )

তাজ-মহল খুব কাছ থেকে দেখে একে যারা ছুঁয়ে দেখেছেন তাদের অনেকের অনেক কথা মনে হয় তেমনি আমার মনে হল এটি একটি-

সময়ের স্রোতে ভালোবাসার একটি ফুল
ফুটে আছে যা বেদনা প্রকাশে ব্যাকুল।।

উল্লেখ্য যে আজ জুনের ১৭ তারিখ আর এই দিনে সারা বিশ্বের সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহল ও বিশ্বের রানী ১৬৩১ সালে ১৭ই জুন প্রভাতে ভারত সম্রাট শাহ-জাহানের কোলে মাথা রেখে চির বিদায় গ্রহন করেন।

===================

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ১৮, ২০২৪,সোমবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ