কারফিউ তুলে নিয়ে খুলে দেওয়া হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালত। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় নেমে মানুষ দেখলেন, নিরাপত্তার জন্য কোথাও কোনো পুলিশ বা র্যাব সদস্য নেই। এমনকি ট্রাফিক পুলিশও দেখা যায়নি।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে ঘুরেছেন প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও ফটোসাংবাদিকেরা। তাঁরা বলছেন, অফিসে যাওয়াসহ নানা প্রয়োজনে অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন। রাস্তায় যানবাহনও চলছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগ রয়েছে।
সকালে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মৎস্য ভবন এলাকায় যান শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, কোথাও তিনি পুলিশ সদস্য দেখেননি। বিজয় সরণি মোড়ে যানজট তৈরি হয়েছিল। সেখানে দুজন সাধারণ মানুষকে ট্রাফিক সামলাতে দেখেন তিনি।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার তাঁর সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আলোচনা চলছে। ওদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থানা, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে।
থানা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ব্যাপকভাবে ঘটেছে। গত রোববার থেকেই সড়কের মোড়গুলোয় ট্রাফিক সদস্যদের দেখা যায়নি। গতকাল পুরো শহর ছিল সাধারণ মানুষের দখলে।
আজ মঙ্গলবার মিরপুর সড়ক, বেগম রোকেয়া সরণি, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকা ঘুরে কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, হামলার ভয়ে পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় নামেননি। তাঁদের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো নির্দেশনাও ছিল না। কর্মকর্তাদের অনেকেই আত্মগোপনে। ফলে পুলিশের অভ্যন্তরে একধরনের বিশৃঙ্খলা চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি অফিসে যেতে পারছেন না।
ঢাকার কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান কিছু কিছু খুলেছে। তবে অন্যান্য পণ্যের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাতাসে পোড়া গন্ধ। সড়কে আবর্জনা পোড়া গাড়িসহ বিভিন্ন জিনিস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। উৎসুক জনতা পুড়িয়ে দেওয়া স্থানগুলোয় ভিড় করছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঘোরাঘুরি করছিলেন ষাটোর্ধ্ব রফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সারা জীবনে রাজধানীতে এমন পরিস্থিতি দেখেননি।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৬, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,