এখন জ্যৈষ্ঠ মাস, প্রকৃতির নিয়মে বৃষ্টি হীন দিন। দেশ জুড়ে এখন খরার আবহ। আকাশ কখনো রৌদ্রময়। হঠাৎ মেঘ। বজ্রপাত। কখনো অজস্র ধারায় বর্ষণ। কবিতায় রবীন্দ্রনাথ জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের অসাধারণ এক ছবি এঁকেছেন।
” এমনি করে কালো কাজল মেঘ
জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে ঈশান কোণে ।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ় মাসে নামে তমাল – বনে ।
এমনি করে শ্রাবণ – রজনীতে
হঠাৎ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে ।”
মন এখন নানান কারণে এলোমেলো, কিছু সময় কাল কোথাও ডুবে থাকার ইচ্ছা।
বই এ ডুবে থাকা যায়। লেখা লেখিতে ডুবে থাকা যায়। আড্ডায় ডুবে থাকা যায়। কিস্তু গৌতম বুদ্ধের বিন্দু মাত্র পর্যায়ে না পরার কারণে আমাদের সংসারের মায়া কাটানে হয় না বলে ডুবে থাকাও হয় না। তবুও কোথাও ডুবে থাকার ইচ্ছা।
অন্তত জীবনের শুরুতে অনেকের জীবনের অনেক দৃঢ় ভাবে, দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় ভর করে রচিত হয় এক অসাধ্য প্রেমের মহা কাব্য, শুরু হয় এক মহা যাত্রা। সমাপ্তি যেন রবি ঠাকুরের পরের চার লাইনে।
” রুক্ষ দিনের দু:খ পাই তো পাব–
চাই না শান্তি , সান্ত্বনা নাহি চাব ।
পাড়ি দিতে নদী হাল ভাঙে যদি , ছিন্ন পালের কাছি ,
মৃত্যুর মুখে দাঁড়ায়ে জানিব তুমি আছ আমি আছি ।”
জীবন দশায় অনেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাকে ভেদ করে অনেকেই আবিষ্কার করেছেন যে ভালোবাসার মানুষটি সব সময়ের জন্য ভালো হলেও বেশি ক্ষণ ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে ডুবে থাকা যায় না।
বড় বড় সবুজ বৃক্ষে ঘেরা টলটল পরিষ্কার পানির একটা দিঘীতে আধা মিনিট হোক, এক মিনিট হোক বা তার থেকে কিছু বেশি সময় হোক ডুবে থাকাটাই হোক প্রকৃত ডুবে থাকা। আর ডুবে যাওয়ার আগে কন্ঠে আসুক আবারো রবি ঠাকুরের গান।
” কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে !
মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা মনে মনে।
তেপান্তরের পাথার পেরোই রূপ-কথার,
পথ ভুলে যাই দূর পারে সেই চুপ্-কথার–
পারুলবনের চম্পারে মোর হয় জানা মনে মনে॥
সূর্য যখন অস্তে পড়ে ঢুলি মেঘে মেঘে আকাশ-কুসুম তুলি।
সাত সাগরের ফেনায় ফেনায় মিশে
আমি যাই ভেসে দূর দিশে–
পরীর দেশের বন্ধ দুয়ার দিই হানা মনে মনে॥”
তারিখ: মে ২৩, ২০১২
রেটিং করুনঃ ,