Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জেন-জি: সংকট নাকি সম্ভাবনা (২০২৪)

Share on Facebook

সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রকৃতি, সমাজকাঠামো তো বটেই, মনোজগতের দ্রুত বদলে যাওয়ার চিত্র বিস্ময়কর। শতকের পরিবর্তনগুলো এখন দশকে ঘটে যাচ্ছে। নিজের প্রকৃতি ও সমাজকে চেনা যাচ্ছে না। এর মাঝেই করোনাকালীন বিশ্বে অবধারিত বিচ্ছিন্নতা মানুষকে দিয়েছে নতুন জীবন ব্যবস্থার ভাবনা। সেই সময়েই সংগনিরোধকালে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম জেন-জি। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে এ প্রজন্ম এখন সর্বোচ্চ আলোচনায়।

জেনারেশন জেড বা জেন-জি মোটাদাগে ১৯৯৭-২০১২-এর মধ্যবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম। করোনাকাল জেন-জি প্রজন্মের অধিকাংশের কৈশোরকাল। পূর্বতন প্রজন্ম, যাকে আমরা মিলেনিয়াম প্রজন্ম বলি অর্থাৎ এদের জন্মকাল গত শতাব্দীর ১৯৮১-১৯৯৬। তাদের কৈশোরের পড়ার হাতেখড়ির শিশুশিক্ষা বই, পাথরের শ্লেট-পেন্সিল ইত্যাদির সঙ্গে জেন-জি প্রজন্মের পরিচয় হয়নি। যৌথ পরিবার এমনকি মফস্বল শহুরের নানান অনুষঙ্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটেনি। ফলে চারপাশ মিলে যে প্রতিবেশ ও পরিবার, সেটি তাদের কাছে অধরা থেকে গেছে।

জেন-জি প্রজন্ম যেহেতু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জন করেছে, ফলে তাদের নানামাত্রিক কানেকটিভিটি রয়েছে। জেন-জি প্রজন্মের বহুরৈখিক বিষয় আমাদের সামনে দৃশ্যমান। প্রধানত এই প্রজন্ম পূর্বতন যে কোনো প্রজন্ম থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বেশি সময় ব্যয় করছে। কাগজের বই-পত্রিকার সঙ্গে তাদের সংযোগ কমছে। দ্রুত কোনো কিছু পড়ে ফেলা, বুঝতে পারার দক্ষতা তাদের রয়েছে। যে কোনো বিষয়ে তাদের সংকোচ কম। জটিলতা, কূটকচালিতে তাদের অনাগ্রহ। গতানুগতিক রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে জেন-জি প্রজন্ম থিতু থাকতে চায় না। সনাতনী রাজনীতির রীতির প্রতি তাদের আগ্রহ কম। গবেষণায় দেখা গেছে, রাজনীতির প্রতি অনীহা জেন-জি প্রজন্মের। তাদের ওপর প্রভাবক তালিকায় রাজনীতির হার মাত্র ১৭ শতাংশ।

জেন-জি প্রজন্ম খেলাধুলা থেকে বইপড়া– সব যেন চায় ভার্চুয়াল স্ক্রিনে। এমনকি অফিসের কাঠামোবদ্ধ সময়, ড্রেস কোডে আবদ্ধ না থেকে পছন্দমতো সময়ে অফিস করতে চায়। জীবিকা হিসেবে ফ্রি ল্যান্সিং তাদের ভীষণ পছন্দের। সকালে ঘুম থেকে ওঠা, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া, গোসল– এমনকি সময়মতো ঘুমাতে যাওয়াও অনীহা। তারা ছক মেনে চলতে চায় না। বেশ একটু কুড়ে প্রকৃতির এই প্রজন্ম। আবার অধিকার সচেতন ও ইনোভেটিড। হাতের মোবাইল ফোন দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারে শর্ট ফিল্ম, প্রামাণ্যচিত্রসহ হরেক রকম প্রযুক্তিনির্ভর আধেয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে জেন-জি প্রজন্ম নিজেদের সৃজনশীল কাজকে এগিয়ে নিতে চায়। নিত্যনতুন বিষয়ের সংশ্লেষ তাদের চিন্তার জমিনজুড়ে। এ জন্য বহমান সংস্কৃতির রীতি, কৃষ্টি ও বিধির মান্য ভেঙে নেওয়া বিশ্বব্যবস্থা চায় জেন-জি।
২০১৬ সালে ভার্কি ফাউন্ডেশন বিশ্বের ২০টি দেশে ১৫-২১ বয়সের ২০ হাজারের বেশি মানুষের মনোভাব নিয়ে সমীক্ষা করে দেখতে পায়, গড়ে ৫৯ শতাংশ তরুণ ব্যক্তিগত জীবন পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে অসন্তুষ্টির তলানিতে আছে এশিয়ার ধনী দুই দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ২১ শতাংশ, জাপান ২৮ শতাংশ। আবার আর্থিক দিক থেকে পিছিয়েও সন্তুষ্টির চূড়ার দিকে আছে নাইজেরিয়া ৭৮ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়া ৯০ শতাংশ। জেন-জি আমাদের মনোজগতে যে সামাজিক প্রতিষ্ঠার রূপকল্প আঁকা আছে তাতে বিশ্বাসী নয়। বস্তুবাদী সম্পদের স্তূপ গড়া এদের গন্তব্য নয়।

জেন-জিদের নিয়ে বলতে গেলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের কথা প্রাসঙ্গিকভাবে সামনে আসে– ‘আমরা সবসময় তরুণদের ভবিষ্যৎ তৈরি করে যেতে পারব না, তবে ভবিষ্যতের জন্য তাদের প্রস্তুত করে দিয়ে যেতে পারব।’ এই কথাকে মান্য করে বলা যায়, জেন-জিদের ভবিষ্যৎমুখিতাকে সাধুবাদ জানাতে হবে। আগামী দিনে রোবোটিকস ও অটোমেশনের ফলে কাজ সহজ হয়ে চাকরির বাজারে কর্মিসংখ্যার প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে। বিপরীতক্রমে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়ে চাকরির বাজার সম্প্রসারিত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সংকট ও সম্ভাবনা একই সঙ্গে পথ চলছে।
এর মধ্যেই জেন-জির পরবর্তী প্রজন্ম জেনারেশন আলফা (যাদের জন্ম ২০১২-২০২৪-এর মধ্যে) বেড়ে উঠছে। তাদের চিন্তাধারার কাছে হয়তো জেন-জিরা সনাতনী হয়ে যাবে। এদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দাপটে ইতোমধ্যে পশ্চিমা বিশ্ব চিন্তিত। তবে বলা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন ভ্রূণ পর্যায়ে আছে। পরিপূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আলফা জেনারেশন আগমী দিনে কেমন বিশ্বব্যবস্থা গড়বে– সেটিই বিস্ময়!
তবে জেন-জিদের নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনা না করে তাদের ইতিবাচক কাজকে প্রণোদনা এবং নেতিবাচক বিষয়গুলোকে আমরা ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থায় আমাদের বিবেচনায় চাপিয়ে না দিয়ে আলাপ-আলোচনা ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুধাবনের মাধ্যমে ইতিবাচক রাস্তায় হাঁটতে সহায়তা করতে পারি। জেন-জি তো আমাদের থেকে অঙ্কুরিত প্রজন্ম। ফলে এদের মানিয়ে-মিশিয়েই সামনে এগিয়ে দিতে হবে– এ দায়িত্ব অস্বীকার করার জো নেই।

***খান মাহবুব: প্রাবন্ধিক।

সূত্র: সমকাল।
তারিখ: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ