এই পদ্ধতি বাতিলের ১৩ বছর পর গণআন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদলে ফিরে আসছে নির্বাচনকালীন এ ব্যবস্থা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বহুবার বলেছেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা’ জাদুঘরে চলে গেছে, তা ফেরানোর আর ‘সুযোগ নেই’।
সেই সংবিধান সংশোধন কমিটির অন্যতম প্রধান, আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এখন ‘মরা গাছ’, আর মরা গাছে কখনো ‘ফুল ফোটে না’।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়কের নামে ‘অনির্বাচিত’ সরকার এলে ‘সংবিধান অশুদ্ধ হবে’।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে আবার ‘জেলের ভাত’ খেতে হতে পারে, সুতরাং কেন ‘খাল কেটে কুমির আনা’!
শেখ হাসিনার শাসনামলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা না ফিরলেও খালেদা জিয়াকে ঠিকই ‘জেলের ভাত’ খেতে হয়েছে। আর প্রবল গণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে ফের দেশের হাল ধরছে একটি ‘অনির্বাচিত’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের পরিচয় হয়েছিল সাড়ে তিন দশক আগে, আরেক সংকটময় সময়ে। সেনাশাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের পর পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ নামে পরিচিতি পায়।
ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বিএনপি সরকার ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন করে দলীয় সরকারের অধীনে। তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধান সংশোধন করে বিএনপি।
ওয়ান-ইলেভেনের তিক্ত অভিজ্ঞতার পর সেই আওয়ামী লীগই ২০০৯ সালে ক্ষমতায় ফিরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান নেয়। পরে আদালতও ওই ব্যবস্থাকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে।
আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সংসদ ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে। তখন এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরানোর দাবিতে ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নিলেও ভরাডুবির পর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলে।
এই তিনটি নির্বাচনই হয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়। নানা বিতর্ক আর অভিযোগের মধ্যে প্রতিবারই তারা বড় জয় পায়।
গত জানুয়ারির নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ বড় ধাক্কা খায় সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশিদের আন্দোলন শুরুর পর।
সেই আন্দোলনই এক মাসের মাথায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় এবং বিপুল গণ জাগরণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটায়।
৪ অগাস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের শাসক শেখ হাসিনা। নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনে ১৩ বছর পর আবার ডাক পড়ে জাদুঘরে পাঠানো সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার।
নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতে সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
গণঅভ্যুত্থানে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ সরকারের পতনের পর পঞ্চম সংসদের নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার গঠন করা হয়।
সেই সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ এরশাদ বিরোধী আন্দোলনকারী সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠন করা হয় সেই অস্থায়ী সরকার।
সেজন্য বিচারপতি সাহাবুদ্দীনকে প্রথমে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার হাতে দায়িত্ব দিয়ে পদত্যাগ করেন তখনকার রাষ্ট্রপতি এরশাদ।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি দশজন উপদেষ্টাকে নিয়ে গঠন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়। তাতে জিতে সরকার গঠন করে বিএনপি, প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া।
বিএনপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওই সংসদ সংবিধানের একাদশ সংশোধনী এনে ওই অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধতা দেয়। আর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালন শেষে প্রধান বিচারপতির পদে ফিরে যান সাহাবুদ্দীন।
আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার
বিএনপি সরকারের সেই মেয়াদে বিপত্তি দেখা দেয় মাগুরা-২ উপনির্বাচনে। ১৯৯৪ সালের ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ তোলে তখনকার বিরোধীদল আওয়ামী লীগ।
ওই নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তোলে।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগসহ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বিরোধী দলগুলোর ১৪৭ জন সংসদ সদস্য ১৯৯৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর একযোগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।
বিরোধীদের বর্জনের মুখে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে। বিএনপির বাইরে ওই নির্বাচনে অংশ নেয় কেবল ফ্রিডম পার্টি।
ওই সংসদে বিএনপির বাইরে একটি দল থেকে একজন সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদে আসেন ১০ জন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে পরে সাজাপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ ওই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারে বসেন।
আওয়ামী লীগসহ বিরোধীদলগুলোর ব্যাপক আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালের ২৭ মার্চ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিল পাস হয় ষষ্ঠ সংসদ।
এরপর ৩০ মার্চ সংসদ ভেঙে দিয়ে সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকার গঠনের মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ করে বিএনপি সরকার।
সাংবিধানিকভাবে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
তার নেতৃত্বাধীন ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম সংসদ নির্বাচন হয়। তাতে বিজয়ী হয়ে ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। তখন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন খালেদা জিয়া।
আওয়ামী লীগের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় নির্বাচন হয়।
ওই নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সেই নির্বাচনে ‘সূক্ষ্ম কারচুপির’ অভিযোগ তোলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়েই বিপত্তি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় নির্বাচন একভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেলেও ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়েই বাঁধে বিপত্তি।
সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতেন পূর্বতন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু ২০০৬ সালে বিচারপতি কে এম হাসানকে মানতে আপত্তি জানায় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছিল, ‘পছন্দের ব্যক্তি’ কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার হওয়ার সুযোগ তৈরি করতে প্রধান বিচারপতির অবসর বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছরে উন্নীত করেছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে বিচারপতি কে এম হাসান দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজপথে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানি হয়।
সংবিধানে থাকা অন্যান্য বিকল্প সুযোগ কাজে লাগাতে না পেরে আরেক বিধানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নে
ওই সরকারের অধীনে রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে বাতিল হয়ে যায় নির্বাচন। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধান উপদেষ্টা হন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ফখরুদ্দীন আহমদ। দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিন মাস মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হলেও ফখরুদ্দীন সরকার ক্ষমতায় ছিল দুই বছর, তবে মূল ক্ষমতা ছিল সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের হাতে।
ওই সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতে হয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। দুই নেত্রীকে রাজনীতিতে সরিয়ে দিয়ে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নের অভিযোগ করে দুই দল।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সে সময় নতুন দল গঠন করে রাজনীতিতে নামার উদ্যোগ নিয়েও পরে পিছিয়ে যান।
এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২৬৩টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে।
আদালতের রায়, তত্ত্বাবধায়ক বিলুপ্ত
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এসে সেই ব্যবস্থাকে বাতিলের পথে হাঁটে আওয়ামী লীগ।
যে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তনের বিধান হয়েছিল, সেটিকে বাতিল করে ২০১১ সালে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
তবে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দেন আদালত। আর এক্ষেত্রে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা বলা হয়।
আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই এবং বিরোধীদলের অনুপস্থিতিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে নবম সংসদ।
নির্বাচনকালীন ওই পদ্ধতি বাতিলের বিরোধিতা করে বিএনপি মাঠে নামলেও আওয়ামী লীগ তার অবস্থানে অটলই থাকে।
শেখ হাসিনার অধীনে তিন নির্বাচন, নানা সমালোচনা
ছোট পরিসরের আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে আওয়ামী লীগকে টলাতে ব্যর্থ হয়ে ২০১৩ সালে হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচির দিকে যায় বিএনপি-জামায়াত।
২০১৩ ও ২০১৪ সালে তাদের ওই কর্মসূচির মধ্যে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও জ্বালাও-পোড়াও হয়।
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলেও তাদের আন্দোলন থামেনি।
ওই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে রেকর্ড ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় আওয়ামী লীগ। ওই সংসদে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে বিরোধ দল হিসাবে পান শেখ হাসিনা।
এরপর ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে আসে বিএনপি আসে।
ব্যাপক কারচুপির অভিযোগের মধ্যে ২৫৯টি আসনে জয় পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পায় ২০টি আসন। ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, বিকল্প ধারা ২টি, তরীকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১টি আসন পায়।
বিএনপি নেতারা মাত্র পাঁচটি আসনে জয় পেলেও মেয়াদপূর্তির আগেই তারা পদত্যাগ করেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত অন্য দুজন সংসদ সদস্য শেষ পর্যন্ত ছিলেন।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যে সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নতুন কৌশল নেয় আওয়ামী লীগ।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে আসা এড়াতে দল মনোনীত প্রার্থীর বাইরে অন্য নেতাদেরও ভোটে লড়ার সুযোগ করে দেয় আওয়ামী লীগ। শরিকদের পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকেও কিছু আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ।
এই ভোটে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পেছনে ফেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন; যারা সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা। স্থগিত হওয়া আরেকটি আসনেও জয় পায় আওয়ামী লীগ।
জাতীয় পার্টির আসন আগেরবারের তুলনায় অর্ধেকের চেয়ে বেশি কমে ১১টিতে নামে। দুটিতে জয় পায় আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পায় কল্যাণ পার্টি।
ওই নির্বাচন ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিল না’ বলে মত দেয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল। এর মধ্যে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে সোমবার দুপুরে পতন হয় শেখ হাসিনার। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামে ব্যাপক প্রাণহানির পর তিনি চলে যান ভারতে।
সূত্র: bangla.bdnews24।
তারিখ: আগষ্ট ০৮, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,