Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বারুদ হয়ে ওঠা স্লোগানগুলো (২০২৪)

Share on Facebook

আন্দোলনের ভাষা হলো স্লোগান। তবে স্লোগান আগে থেকে ঠিক করা থাকে না। মিছিল ও সমাবেশ থেকে স্লোগান জন্ম নেয়। হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতীক।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই আন্দোলনে নামে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। আন্দোলনে নানান ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে বদল আসে স্লোগানে। এসব স্লোগান আন্দোলনকারীদের মধ্যে বারুদের মতো কাজ করে। জোগায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রেরণা।

শুরুতে আন্দোলন অহিংসই ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চড়াও হলে ১৫ জুলাই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। এরপর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন প্রবল আন্দোলনের রূপ নেয়। বাড়তে থাকে সহিংসতা। শেষে সরকার পতনের এক দফা দাবি তুলে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলন সফল হয়। ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের।

হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের স্লোগান
হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের স্লোগানফাইল ছবি: প্রথম আলো
কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের দাবি—৩৬ দিনের এই আন্দোলনের শেষ তিন সপ্তাহে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন স্লোগান। বদলেছে দাবির ভাষাও।

‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার, রাজাকার; কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’—এর মতো শ্লেষের প্রতিবাদ একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা এক দাবিতে। ‘এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়’-এর মতো বজ্রকঠিন কিছু স্লোগান ওঠে।

মাঝের তিন সপ্তাহে যে স্লোগানগুলো শোনা গিয়েছিল, সেখানে আছে ‘চাইলাম অধিকার হয়ে, হয়ে গেলাম রাজাকার’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ এবং ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’-এর মতো আরও অনেক স্লোগান।

তবে আন্দোলনের গতি আর এসব স্লোগান তীব্র হয়ে ওঠে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর। গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। এর পর থেকেই স্লোগান শুরু হয়, ‘আমার খায়, আমার পরে, আমার বুকেই গুলি করে’; ‘তোর কোটা তুই নে, আমার ভাই ফিরিয়ে দে’; ‘বন্দুকের নলের সাথে ঝাঁজালো বুকের সংলাপ হয় না’ এবং ‘লাশের ভেতর জীবন দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’—এসব স্লোগান। যেখানে কয়েকটি শব্দেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জনতার এই দাবির সঙ্গে আছে প্রাণ হারানোর যন্ত্রণা।

আন্দোলনের পুরো সময়ে স্লোগান স্লোগানে মুখর ছিল রাজধানী ঢাকা
আন্দোলনের পুরো সময়ে স্লোগান স্লোগানে মুখর ছিল রাজধানী ঢাকাফাইল ছবি: প্রথম আলো
এরপর পরিস্থিতি যত বদলেছে, তত যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন স্লোগান। বর্তমান প্রজন্মের মুখে উঠে এসেছে আগের প্রজন্মের শব্দ-বাক্যও। যেমন ২ আগস্ট রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘যে হাত গুলি করে, সে হাত ভেঙে দাও’ এবং ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’।

৩ আগস্ট ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ থেকে শোনা যায়, ‘আমার ভাই কবরে, খুনিরা কেন বাইরে’; ‘আমার ভাই জেলে কেন’ এবং ‘গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’—এসব স্লোগান।

সায়েন্স ল্যাব মোড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে শোনা যায়, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ এবং ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’—এর মতো স্লোগানগুলো।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আরও অনেকের মতো একাত্ম হয়েছিলেন রিকশাচালকেরা। ৩ আগস্ট দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ‘গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’; ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’ এবং ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়েছিলেন রিকশাচালকেরা।

১৫ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’ স্লোগানটি আন্দোলনে নতুন গতি দিয়েছিল।

প্রতিবাদী স্লোগানের ভাষা দেখা যায় প্ল্যাকার্ডে
প্রতিবাদী স্লোগানের ভাষা দেখা যায় প্ল্যাকার্ডেফাইল ছবি: প্রথম আলো
তবে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলে, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ স্লোগানটি। আর এসব স্লোগানের সঙ্গে সমান গতিতে লংমার্চ করেছে শব্দে লেখা স্লোগানগুলো। মানুষের হাতে হাতে ছিল সেসব।

মিছিলে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, ব্যানারে মানুষ লিখে নিয়ে এসেছিল কবিতার পঙ্‌ক্তি। সেখানে ছিল জহির রায়হান থেকে শুরু করে হেলাল হাফিজের লেখা কবিতা। উঠে এসেছিল কার্টুনে কার্টুনে ব্যঙ্গচিত্রও।

তবে স্লোগানের বিপরীতেও স্লোগান থাকে। থাকে প্রতিবাদের প্রতিবাদ। যেমন ১৭ জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও উসকানিমূলক’ স্লোগানের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে ৪২৩ জন সাবেক ছাত্রনেতা বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা স্লোগান দেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’।

ছাত্র-জনতার মুখের স্লোগানগুলো শুধু মুখেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সেসব স্লোগান লেখা ছিল প্ল্যাকার্ডেও। ‘অনাস্থা অনাস্থা, স্বৈরতন্ত্রে অনাস্থা’; ‘চেয়ে দেখ এই চোখের আগুন, এই ফাগুনেই হবে দ্বিগুণ’; ‘তবে তাই হোক বেশ, জনগণই দেখে নিক এর শেষ’; ‘আমরা আম-জনতা, কম বুঝি ক্ষমতা’; ‘তোমারে বধিবে যে গোকূলে বাড়িছে সে’; ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘হাল ছেড় না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড় জোরে’; ‘ফাইট ফর ইওর রাইটস’; ‘নিউটন বোমা বোঝো মানুষ বোঝো না’ লেখার মতো শ্লেষাত্মক প্ল্যাকার্ডও ছিল হাতে হাতে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মিছিলে স্লোগান দেন রিকশাচালকেরা
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মিছিলে স্লোগান দেন রিকশাচালকেরাফাইল ছবি: প্রথম আলো
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বলপ্রয়োগে অসংখ্য আন্দোলনকারীর প্রাণহানিতে পরিস্থিতি যত অবনতির দিকে যাচ্ছিল, ততই জোরালো হচ্ছিল স্লোগানের ভাষা।

গুলিতে শত শত মানুষের প্রাণহানির পর শেষ দিকে এসে শেখ হাসিনার পতনের এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান শোনা যায়। এর মধ্যে ব্যাপক আলোচিত হয় আঞ্চলিক একটি স্লোগান, ‘আঁর ন হাঁইয়্যে, বৌতদিন হাঁইয়্য’ (আর খেয়ো না, অনেক দিন খেয়েছ)। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার এই স্লোগান শোনা গেছে ২ আগস্ট থেকে।

ব্রিটিশবিরোধী লড়াইয়ের সাড়া জাগানো ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ থেকে ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও, তবে তুমিই বাংলাদেশ’-এর মতো শত শত স্লোগান সাক্ষী হয়ে আছে মানুষের দাবি আর আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে। শুধু রাজনীতি নয়, স্লোগানে স্লোগানে লেখা থাকে সমাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবেশের কথা।

জাতীয় পতাকা উড়িয়ে স্লোগান তোলেন এক তরুণী
জাতীয় পতাকা উড়িয়ে স্লোগান তোলেন এক তরুণীফাইল ছবি: প্রথম আলো
আন্দোলনে স্লোগান কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে শত বছর আগের একটি ঘটনার উল্লেখ করা যাক। সে সময় আইন করে এই বাংলায় ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান নিষিদ্ধ করেছিল ব্রিটিশরা। এর প্রতিবাদ জানাতে তৎকালীন বাখেরগঞ্জ জেলার (বর্তমানের বরিশালের অংশ) নারীরা চুল বাঁধা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অভিনব এই প্রতিবাদের কথা ইতিহাসে লেখা আছে। শিশির কর সম্পাদিত ‘ব্রিটিশ শাসনে বাজেয়াপ্ত বাংলা বই’-এ এক প্রবন্ধে পাওয়া যাবে এই ঘটনার বর্ণনা।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ১১, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ২২, ২০২৪,শুক্রবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ