কোভিডের আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংবাদের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে। তখন রীতিমতো বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে।
কোভিড শুরু হওয়ার পর অবশ্য বাণিজ্যযুদ্ধের খবর অনেকটা আড়ালে চলে যায়। এবার সেই স্মৃতি উসকে দিয়ে নতুন খবর, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উৎপাদিত পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যেসব কোম্পানি চীনের এই অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানি করবে, তাদের এই মর্মে প্রত্যয়ন করতে হবে যে, এসব পণ্য জোরপূর্বক শ্রমে তৈরি হয়নি। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, চীনের উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলমানদের এই অঞ্চলে আটকে রেখে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে। যদিও চীন বরাবরই বলে আসছে, তারা উইঘুর মুসলমানদের জিনজিয়াং প্রদেশে জোর করে আটকে রাখেনি। তবে ইতিমধ্যে এই অঞ্চলের সুতা ও টমেটো আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট বা উইঘুর জোরপূর্বক শ্রম প্রতিরোধ আইনের আলোকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বলেছেন, এই আইনের মধ্য দিয়ে তাঁরা পরিষ্কার এক বার্তা দিতে চেয়েছেন: যুক্তরাষ্ট্র চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দাসশ্রম ও মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধের বিষয়ে মুখ বুজে থাকবে না। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা একযোগে এ আইন প্রণয়ন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের তথ্যানুসারে, চীন জিনজিয়াং প্রদেশে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ১০ লাখের বেশি উইঘুর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলমানকে আটক করে রেখেছে। তারা মনে করে, লাখ লাখ উইঘুর মুসলমানকে জিনজিয়াং প্রদেশে খুব কম মজুরি বা বিনা মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তা করা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিল্পসহায়তার মতো গালভরা বুলির আড়ালে।
চীনা কর্তৃপক্ষ বরাবর এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও ফাঁস হওয়া নথিপত্র ও বিবিসির হাতে আসা কাগজপত্রে প্রমাণিত হয়েছে, জিনজিয়াংয়ে দলগত ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা ও নির্যাতনের অনেক নজির পাওয়া গেছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কী হবে, বিবিসির এমন প্রশ্নের উত্তরে ওয়াশিংটন ডিসির স্বাধীন ওয়ার্কার্স রাইটস কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে জিনজিয়াং প্রদেশে উৎপাদিত বেশির ভাগ পণ্য বাজারে আর থাকবে না। ফলে আশা করা যায়, নিষেধাজ্ঞার ফল মিলবে, সেখানে দাসশ্রম অনেকটাই কমবে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ২২, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,