বিশিষ্ট গণিতবিদ ও উচ্চমাধ্যমিক জ্যামিতি ও ক্যালকুলাস গ্রন্থের প্রণেতা অধ্যাপক এ এ কে এম লুৎফুজ্জামান মারা গেছেন। বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টা ২৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
এ এ কে এম লুৎফুজ্জামান বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মস্তিষ্কের রক্ষক্ষরণজনিত জটিলতায় গত মে মাস থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে লুৎফুজ্জামানের মেয়ে শাহীনা সুলতানা প্রথম আলোকে এই সংবাদ নিশ্চিত করেন। আগামীকাল রোববার বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় সেখানে লিভারমোড় শহরের কবরস্থানে লুৎফুজ্জামানকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে লুৎফুজ্জামান টাঙ্গাইলের ভাওয়াল মির্জাপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর করটিয়া কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ হয়ে যোগ দেন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগে যোগ দেন। সেখানেই তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন। এই সময় তিনি গণিতের ‘লিজেন্ডারি শিক্ষকে’ পরিণত হন।
লুৎফুজ্জামান শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণা ও গণিতের গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর ‘উচ্চমাধ্যমিক জ্যামিতি ও ক্যালকুলাস’ গ্রন্থটি এখনো উচ্চমাধ্যমিকে পড়ানো হয়।
সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি কিছুদিন ঢাকা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ফিজিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন হিসেবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। এর পর থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।
লুৎফুজ্জামান ২০০৭ সাল থেকে দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতকে জনপ্রিয় করার জন্য বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি গণিত অলিম্পিয়াডের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেতেন। গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশ্নোত্তর ও ‘এক মিনিট’ পর্বে লুৎফুজ্জামান শিক্ষার্থীদের গণিতের নানা প্রশ্নের জবাব এবং তাদের গণিত ও বিজ্ঞানমুখী হওয়ার উপদেশ দিতেন।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই বিশিষ্ট গণিতবিদকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৬, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,