সেস্টাস- প্রাচীন গ্রীকের একটি শহর, কিন্তু বর্তমান কালের তুরস্কের ইউরোপীয় অংশে অবস্থিত। অনেক অনেক বছর আগে এপ্রিল মাসের এক রৌদ্রকোজ্জ্বল দিনে এই সেস্টাসের এক নির্জন টাওয়ারে বসে এক সুন্দরী যুবতী সামনের হেল্লেসপন্ট প্রনালীর (বর্তমানের দার্দানালিশ প্রনালী) দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এই সেই হেল্লেসপন্ট প্রনালী, যেখানে হেল্লে নামের এক বালিকা স্বর্নলোমের ভেড়া থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন এবং তার নামেই প্রনালীর নামকরণ করা হয়েছিলো হেল্লেসপন্ট। পরবর্তীতে স্বর্নলোমের ভেড়ার চামড়া উদ্ধারের জন্যই জেসন এবং অন্যান্য আর্গোনটরা তাদের বিখ্যাত অভিযান শুরু করেছিলেন। সে যাই হোক, সেই সুন্দরী যুবতী টাওয়ার থেকে নিচে তাকিয়ে দেখছিলো, নীল জলরাশি কীভাবে সৈকতে লুটোপুটি খাচ্ছে, পাথরের উপরে কীভাবে আছড়ে পড়ছে আর দেখছিলো সাদা পাল তোলা জাহাজগুলো ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র নিয়ে সেস্টাসের প্রবাহ থেকে কীভাবে দূরে সরে যাচ্ছে।
যুবতীটি প্রনালীর অন্য প্রান্তের দূরের তীরের দিকে তাকালেন, এবাইডোস (বর্তমান কালের তুরস্কের এশিয়া অংশে অবস্থিত)- সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বাড়িগুলোর অস্তিত্ব এই সেস্টাস থেকে যেনো অনুভব করতে পারছিলেন হিরো।
হ্যাঁ, যুবতীটির নাম হিরো। জন্মের সময় ভবিষ্যৎবানী করা হয়েছিলো, এই শিশু যদি বাইরের মানুষজনের সাথে মিশে, অনর্থ হবে, যাতে হিরোর মৃত্যুও হতে পারে। সেই ভয়ে হিরোর বাবা- মা হেল্লেসপন্টের এই নির্জন টাওয়ারে হিরোকে রেখে দিয়েছিলেন, সঙ্গে একমাত্র সাথী হিসেবে আছেন বৃদ্ধা এক সেবিকা।
তুরস্কে অবস্থিত “টাওয়ার অব হিরো”, ধারণা করা হয়ে থাকে এই টাওয়ারেই হিরো বৃদ্ধা সেবিকাকে নিয়ে থাকতেন
হিরো তার সমবয়সী কোনো নারী-পুরুষের সাথে মিশতে পারতেন না।
তিনি ছিলেন খুবই সুন্দরী, কুমারী এবং ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতির পুরোহিতানী। টাওয়ারে বৃদ্ধা সেবিকার সাথে থেকে হিরোর কাজই যেনো ছিলো আফ্রোদিতির উপাসনা করা এবং অবসর সময়ে টাওয়ার থেকে হেল্লেসপন্টের জলরাশি এবং এর উপরে ভেসে চলা জাহাজগুলো দেখা এবং প্রতিবছরে এক বিশেষ উৎসবে মন্দিরে পুরোহিতানীর কাজ করা। এভাবেই কেটে গিয়েছিলো হিরোর বিশটি বছর!
সেই সময়ে প্রতিবছর সেস্টাসে আফ্রোদিতি এবং অ্যাডোনিসের স্মরণে এক উৎসবের আয়োজন করা হতো। সেই উৎসবে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ আসতেন। সেই দূরের ফ্রিজিয়া থেকে শুরু করে উত্তর গ্রীসের থেসালী, সাইপ্রাস এমনকি লেবানন থেকেও মানুষ আসতেন এই উৎসবে যোগ দিতে।
এই উৎসবের জন্য বিশেষ করে যুবকেরা খুব আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করতেন, কারণ তারা এই সময়ে এখানেই অসাধারণ কিছু সুন্দরী যুবতীদের দেখা পেতেন, তাদের সাথে কিছু মধুর সময় কাটাতে পারতেন।
এই উৎসব উপলক্ষ্যে হিরোর কোনো নিজস্ব পরিকল্পনা ছিলো না, শুধুমাত্র আফ্রোদিতির একজন পুরোহিতানী হিসেবে কাজ করা ছাড়া, এই সময়টিতে তিনি আফ্রোদিতির মন্দিরেই কাজ করতেন। কিন্তু তার সৌন্দর্য্যের প্রশংসা ছড়িয়ে গিয়েছিলো বহুদূর পর্যন্ত। লোকে বলতো, হিরোর চিবুক দেখে যেনো চন্দ্রদেবী সেলেনের চিবুকের কথা মনে পড়ে যায়। তারা পরস্পরকে আরো বলতো, হিরো যখন হাঁটে, মনে হয় যেনো গোলাপের এক বিস্তীর্ণ তৃণভূমি হাঁটছে! যুবকেরা সেস্টাসে আসতো আফ্রোদিতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ দিতে, কিন্তু মন, হৃদয়, চোখ- সবকিছুই যেনো হিরোময় হয়ে যেতো, যদিও তারা সবাই তখন স্পার্টার সুন্দরী হেলেনের কথাও জানতো।
কথায় আছে না, দূরের অসাধারণ সৌন্দর্য্যের চেয়ে কাছের সাধারণ সৌন্দর্য্যও অনেক বেশী প্রার্থনীয়, আর হিরোর সৌন্দর্য্যতো একেবারে সাধারণ নয়, হেলেনের সাথে প্রতিযোগিতা করার মতো!
হিরোর এই আলো ঝলকানো সৌন্দর্য্য দেখে অনেক যুবক বাকহারা হয়ে গেলো। তারা বলাবলি করতে লাগলো, হিরোর সাথে প্রথম শুতে যাওয়ার বিনিময়ে তারা মৃত্যুকেও গ্রহন করতে প্রস্তুত, আবার কেউ কেউ বলতে লাগলো, অমর হওয়ার চেয়ে তারা হিরোকে বিয়ে করাটাকেই বেশি প্রাধন্য দিবে, আবার অন্যরা বললো, হিরোর দিকে সারাক্ষন তাকিয়ে থাকলেও তারা কখনো ক্লান্ত হবে না। সবাই যেখানে শুধু স্তব করতেই ব্যস্ত, সেখানে একজন মাত্র সাহস করে এগিয়ে গিয়েছিলেন হিরোর কাছে, তিনি লিয়েন্ডার, প্রনালীর অপর পাড়ের এবাইডোস শহরে যার বসবাস। লিয়েন্ডারের কিছুই বলা হলো না, কিন্তু অভিব্যক্তিই যেনো সবকিছু বুঝিয়ে দিলো হিরোকে। তাদের দুইজনের যেনো চোখে-চোখে, মনে-মনে অনেক কথা হয়ে গেলো।
কেউ কেউ বলেন, হিরো এবং লিয়েন্ডার কোনো কথা বলার আগেই একে অপরের হাত ধরেছিলেন। মনে হয় একেই বলে, প্রথম দেখাতেই প্রেম!
হাতে হাত রেখে লিয়েন্ডার হিরোর কাছে তার ভালোবাসার কথা বললেন, বললেন তার প্রতি সদয় হতে। তিনি হিরোর গ্রীবায় চুমু দিলেন। তিনি হিরোকে বললেন, ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতি নিশ্চয়ই হিরোর কুমারী থাকাকে পছন্দ করবেন না। হাঁটু গেড়ে লিয়েন্ডার ঘোষনা দিলেন হিরো তার কাছে দেবীর মতো।
হিরো তার এতদিনকার জীবন যাপনের কারণে প্রথমে রাজী হলেন না, প্রথম দেখাতেই লিয়েন্ডারকে ভালোবেসে ফেললেও ইতস্তত করতে লাগলেন। কিন্তু লিয়েন্ডারের প্রবল ভালোবাসাকেও প্রতিহত করতে পারছিলেন না, কিছুক্ষন নিশ্চুপ হয়ে রইলেন, যদিও তার হৃদয়েও তখন ধুক ধুক শব্দ হচ্ছিল, বয়ে যাচ্ছিলো ভালোবাসার ফল্গুধারা। অবশেষে নিরবতা ভঙ্গ করে বলেছিলেন, “হে আগন্তুক, তোমার কথা দিয়ে তুমি পাথরেও প্রাণ আনতে পারো!”
হিরো লিয়েন্ডারের ভালোবাসার শক্তির কাছে নত স্বীকার করলেন, সেই সাথে এটাও জানালেন কোনো বিদেশীর সাথে তার বিয়েতে তার বাবা- মা কোনোক্রমেই রাজী হবেন না। এবং লিয়েন্ডার যদি সেস্টাসে থেকে যায়, তাদের ভালোবাসার কথাও তখন কারো কাছে গোপন থাকবে না। ভালোবাসার জোরে বলীয়ান হয়ে লিয়েন্ডার আবার ঘোষনা করলেন, “তোমার ভালোবাসার শপথ, তোমার জন্য উন্মত্ত সাগরকেও সাতরিয়ে পাড়ি দিতে পারবো আমি”।
লিয়েন্ডার হিরোকে জানালেন তিনি এবাইডোস থেকে এসেছেন। তিনি হিরোকে অনুরোধ করলেন প্রতিরাতে টাওয়ারে বাতি জ্বালাতে, যাতে সেই বাতি দেখে অন্ধকারে সাতরিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে এবাইডোস থেকে সেস্টাসে আসতে পারেন। টাওয়ার থেকে প্রতিরাতে জ্বলানো বাতিই হবে তার জীবন রক্ষাকারী আলো!
এভাবেই হিরো এবং লিয়েন্ডার, প্রনালীর দুই পাড়ের দুই যুবক-যুবতী হলেন গোপন প্রেমিক-প্রেমিকা। প্রতিরাতে হিরো টাওয়ারের চূড়ায় বাতি জ্বালিয়ে সেটা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতেন, সেই আলো রেখা দেখে লিয়েন্ডার সাঁতার কেটে এবাইডোস থেকে সেস্টাসে আসতেন। তারা নিদ্রাহীনভাবে সারারাত একসাথে থাকতেন, ভালোবাসায় মশগুল হয়ে যেতেন।
আবার পূব আকাশে সূর্য উঠার আগেই হিরো আবার বাতি জ্বালিয়ে টাওয়ারের চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতেন, সেই আলো রেখায় লিয়েন্ডার সাঁতার কেটে ফিরে যেতেন সেস্টাস থেকে এবাইডোসে। কোনো সন্দেহ নেই, এই যুবক-যুবতী দিনের আলোয় প্রার্থনা করতেন কখন রাত হবে, সবাই ঘুমিয়ে যাবে, তাহলেই তাদের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তের শুরু হবে!
বাতি হাতে টাওয়ারের চূড়ায় হিরো (শিল্পী- এভেলিন ডি মরগান, ১৮৮৫ সাল)
যখনই সন্ধ্যা নেমে আসতো, লিয়েন্ডার এবাইডোসের তীরে অপেক্ষা করতেন, অপেক্ষা করতেন সিগন্যালের জন্য। রাত একটু গভীর হলেই হিরো টাওয়ারের চূড়ায় গিয়ে বাতি জ্বালাতেন, লিয়েন্ডার সেই আলো দেখেই সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তিনি জানতেন ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতি তাকে রক্ষা করবেন। লিয়েন্ডার কোন কিছুর দিকে না তাকিয়ে শুধু টাওয়ারের আলো বরাবর সাঁতার কাটতেন, সেখানে তিনি নিজেই যেনো তার নিয়ন্তা, তিনি নিজেই যেনো এক জাহাজ।
লিয়েন্ডার সাঁতার কেটে হিরোর সাথে রাতের অভিসারে যাচ্ছে (শিল্পী-বার্নার্ড পিকার্ট)
এভাবেই লিয়েন্ডার এসে পৌঁছাতেন সেস্টাসের তীরে, যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন হিরো। লিয়েন্ডারের সারা শরীর তেল দিয়ে মালিশ করে দিতেন, ঘ্রাণ নিতেন শরীরে লেপ্টে থাকা সাগরের নোনা জলের। আবেগে হিরো বলে উঠতেন, “এই যে এখানে আমার স্তনযুগল, আফ্রোদিতির ভালোবাসার সাগরে ভাসার আগে, তুমি তোমার পরিশ্রমকে এখানে বিশ্রাম দাও!” এ যেনো এক বিয়ে, কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান নেই, এ যেনো এক শয্যা, কিন্তু কোনো শপথ নেই! বাবা-মায়ের ভয়ে দেবী আফ্রোদিতির পুরোহিতানী, সুন্দরী হিরো দিনে রইলেন কুমারী হয়ে, আর রাতে লিয়েন্ডারের বাহুলগ্না হয়ে স্ত্রী! এ যেনো বিবাহবন্ধনের দেবী হেরার জন্য যথেষ্ট অসম্মানজনক। তিনি কী সহজে ভুলে যেতে পারেন তার এই অসম্মান?
গ্রীষ্ম মৌসুমে এভাবেই চললো, দুই প্রেমিক-প্রেমিকার কোনো সমস্যাই হলো না। এরপর যখন শীত এলো, সাগরের মতিগতি পরিবর্তিত হলো, এমনকি সাহসী নাবিকেরাও সহজে জাহাজ ছাড়তেন না।
যদিও লিয়েন্ডারের গোপন অভিসার এই খারাপ আবহাওয়াতেও বাধাগ্রস্ত হলো না। কিন্তু একদিন এক ঝড়ো আবহাওয়ার রাতে লিয়েন্ডার যখন মাঝ সাগরে, বাতাস এসে হিরোর হাত থেকে বাতিকে ফেলে দিলো। লিয়েন্ডার কিছুই দেখতে পেলেন না, অন্ধকারের মধ্যে আলোকবর্তিকা ছাড়া ঝড়ো হাওয়ার সাথে বেশিক্ষন যুদ্ধ করতে পারলেন না লিয়েন্ডার, হারিয়ে গেলেন এই পৃথিবী থেকে!
পরের দিন সাগরে ভাসতে ভাসতে লিয়েন্ডারের মৃতদেহ যখন টাওয়ারে এসে পৌছালো, হিরো দেখলেন লিয়েন্ডারের শরীরের চামড়া ছিলে যাচ্ছে পাথরে ঘষা লেগে। তিনি সহ্য করতে পারলেন না লিয়েন্ডারের এই পরিণতি। হাহাকার নিয়ে টাওয়ার থেকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তিনিও, এভাবেই মৃত্যুর মাধ্যমেই যেনো লিয়েন্ডার এবং হিরো একসাথে রয়ে গেলেন।
হিরো লিয়েন্ডারের মৃতদেহ দেখছেন (শিল্পী- উইলিয়াম ইটি, ১৮২৮-২৯)
তাদের এই ভালোবাসার কথা হিরোর সেই বৃদ্ধা সেবিকা ছাড়া আর কেউ জানতেন না। কিন্তু কীভাবে যেনো এই কাহিনী আমাদের জানিয়ে দিয়ে গেলেন মুসায়েস গ্রামাটিকাস এবং কবি পাবলিয়াস অভিডিয়াস নাসো। হয়তোবা লিয়েন্ডারের ভালোবাসাকে অনুকরণ করা এখন খুব কষ্টসাধ্য, কিন্তু অনেক অনেক অনেক বছর পর তার সাঁতারের ব্যাপারটির পুনরাবৃত্তি হয়েছিলো। ১৮১০ সালে বিখ্যাত ইংরেজ কবি লর্ড বায়রন সেস্টাস থেকে এবাইডোস পর্যন্ত এক ঘন্টা দশ মিনিটে সাতরিয়ে এসেছিলেন, যদিও সেখানে দেবী আফ্রোদিতির কোনো সুন্দরী পুরোহিতানী তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন না!
সেস্টাস, এবাইডোস এবং হেল্লেসপন্ট প্রণালী
এই সিরিজের আগের লেখাগুলোঃ
সৃষ্টিতত্ত্বঃ পর্ব-১: বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি এবং ইউরেনাসের পতন পর্ব-২: টাইটান যুগের সূচনা এবং অলিম্পিয়ানদের জন্ম পর্ব-৩: প্রথম টাইটান যুদ্ধ এবং জিউসের উত্থান পর্ব-৪: মানবজাতির সৃষ্টি, প্রমিথিউস এবং পান্ডোরা উপাখ্যান পর্ব-৫: প্রমিথিউসের শাস্তি এবং আইও পর্ব-৬: আবার যুদ্ধ- জায়ান্ট এবং টাইফোয়িয়াস পর্ব-৭: ডিওক্যালিয়নের প্লাবন
দেবতাদের গল্পঃ এথেনা এবং আফ্রোদিতি পর্ব-৮: জিউস, মেটিস এবং এথেনার জন্ম পর্ব-৯: এথেনার গল্পকথা-প্রথম পর্ব পর্ব-১০: এথেনার গল্পকথা- দ্বিতীয় (শেষ) পর্ব পর্ব-১১: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ হেফাস্টাস এবং অ্যারিসের সাথে ত্রিমুখী প্রেমকাহিনি পর্ব-১২: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ অ্যাডোনিসের সাথে অমর প্রেমকাহিনী পর্ব-১৩: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ এনকেসিসের সাথে দূরন্ত প্রেম
ভালোবাসার গল্পঃ পর্ব-১৪: পিগম্যালিয়ন এবং গ্যালাতিয়া পর্ব-১৫: পিরামাস এবং থিসবি
লেখকঃ এস এম নিয়াজ মাওলা
ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেট
রেটিং করুনঃ ,