বাংলাদেশে গুমের অভিযোগ তদন্তে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে নেত্র নিউজে প্রকাশিত গুমের শিকার ব্যক্তিদের ‘আয়নাঘরে’ আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করেছে এইচআরডব্লিউ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত আগস্টে তিন দিনের বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তিনি সরকারের প্রতি গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগগুলো তদন্তে একটি বিশেষায়িত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান, যারা ভিকটিম, তাদের পরিবার ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে এ ধরনের একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারেরাও নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের নিপীড়ন বন্ধের জন্য চাপ বাড়িয়েছে।
এইচআরডব্লিউর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, গুমের ঘটনায় বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততার প্রচুর তথ্য রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের এ বিষয়ে না জানার ভান করাটা বন্ধ করা উচিত। গুমসংক্রান্ত অভিযোগগুলোর বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে জবাব প্রদান এবং কার্যকর জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করা উচিত।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে গুম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল তারা। পাশাপাশি গুমের ৮৬টি ঘটনা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। জবাবে বাংলাদেশ সরকার শুধু তা অস্বীকার করেছিল। এর পর থেকে এসব ঘটনা নিয়ে তারা আর কোনো তথ্য দেয়নি।
গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞার জবাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে হুমকি ও ভয় দেখাতে শুরু করে।
সংস্থাটি বলেছে, গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের গুরুতর অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘ, বিভিন্ন দেশের সরকার, অধিকারকর্মী ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিবারগুলো উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। পক্ষান্তরে বারবার এ বিষয়ে অর্থবহ সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জবাবদিহির ঘাটতি দূর করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের নিপীড়ন ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য দেশেরও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
এ বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী দপ্তরের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ৩০, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,