ভারতের গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ ছিল আজ সোমবার। এ ধাপে ভোট দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্ত্রী যশোদাবেন। এ সময় সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, কাকে ভোট দিলেন? জবাবে যশোদাবেন মিষ্টি হেসে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ যশোদাবেন গুজরাটের মেহসানা জেলার রঘুভাই সভাভাই পরমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। সেখানেই ভোট দেন তিনি। ভোট দিয়ে বেরোলে সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করেন। এ সময় কাকে ভোট দিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে যশোদাবেন হেসে বলেন, ‘কাকে দিলাম? প্রতিবারই ভোট দিই। এবারও ভোট দিলাম।’
যশোদাবেনকে প্রশ্ন করা হয়, বিশেষ কোনো দলের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন? যশোদাবেনের জবাব, ‘প্রার্থনা তো সবার জন্যই। সবাই যাতে ভালো থাকেন, তার জন্য।’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও যশোদাবেন ভোট দিয়েছিলেন। নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর দিন পুরো ভারত যখন ফলাফলের অপেক্ষায়, তখন যশোদাবেন গিয়েছিলেন অম্বাজি মন্দিরে। সেখানে প্রার্থনা করেন তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমকে যশোদাবেন জানান, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তিন শতাধিক আসন নিয়ে যাতে দিল্লিতে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারে, সে জন্য প্রার্থনায় বসেছিলেন তিনি। সেবার বিজেপি সরকার গঠন করেছিল।
মোদির স্ত্রী যশোদাবেনকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের আগ্রহ রয়েছে বরাবরই। ১৯৬৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তখন মোদির বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সংস্পর্শে গিয়ে মোদি সংসারধর্ম ত্যাগ করেন। সেই থেকে আর যোগাযোগ রাখেননি স্ত্রী যশোদাবেনের সঙ্গে।
এরপর যশোদাবেন চলে যান গুজরাটের মেহসানা জেলার ঈশ্বরওয়ারা গ্রামে ভাইদের কাছে। ভাইয়েরা তাঁর বিয়ে দিতে চাইলেও তিনি বিয়ে করেননি। একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা হিসেবে এখনো তিনি ওই গ্রামে ভাইদের কাছে থাকছেন।
যশোদাবেন আলোচনায় আসেন মোদির স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে। গুজরাটের ভদোদরা আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় দীর্ঘ ৪৫ বছর পর মোদি তাঁর স্ত্রীকে স্বীকৃতি দেন। মনোনয়নপত্রে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মোদি তাঁর স্ত্রীর নাম লেখেন যশোদাবেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে যশোদাবেন বলেছিলেন, ‘তাঁর (মোদির) কাছ থেকে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়াটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সেদিন স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার খবরে আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল। আমি নিশ্চিত, এখনো তাঁর মনে আমার জন্য জায়গা রয়েছে। আমাকে পছন্দই করেন, না হলে হলফনামায় আমার নাম লিখবেন কেন?’
যশোদাবেন মোদির মঙ্গল কামনায় এখনো সপ্তাহের চার দিন উপোস করেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে সরকারি মর্যাদা পাওয়ার কোনো বাসনা তাঁর নেই। তিনি এ জন্য বাড়তি নিরাপত্তা চান না। একজন সাধারণ নারী হিসেবে জীবন কাটাতে চান তিনি।
সূত্র:প্রথম আলো
তারিখ:ডিসেম্বর ০৫, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,