আপনার যদি একটি গাড়ি থাকে, তাহলে আপনার নিজের সম্পদের পাশাপাশি স্ত্রী বা স্বামীর সম্পদের হিসাবও দিতে হবে। এবার গাড়িওয়ালাদের স্ত্রী বা স্বামী , নাবালক সন্তান বা পোষ্যদের নামে থাকা সব ধরনের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী জানতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কারণ, অনেক গাড়িওয়ালার জীবনযাপন ও আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় স্ত্রী বা সন্তানদের নামে সম্পদ লুকিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ আছে। ফলে করদাতা ও তাঁর পরিবারের প্রকৃত সম্পদ কত, তা জানতে পারেন না কর কর্মকর্তারা।
মোটা দাগে ধনী করদাতাদের জন্য সম্পদের বিবরণী প্রতিবছরই দাখিল করা বাধ্যতামূলক। বার্ষিক আয়-ব্যয়ের পাশাপাশি কাদের সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে হবে, সে সম্পর্কে তিনটি শর্ত নির্ধারণ করেছে এনবিআর। প্রথমত, করদাতার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা অতিক্রম করলে; দ্বিতীয়ত, একটি মোটরগাড়ির মালিক হলে এবং তৃতীয়ত, সিটি করপোরেশন এলাকায় গৃহ-সম্পত্তিতে বিনিয়োগ বা অ্যাপার্টমেন্ট থাকলেই সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে হবে। কোনো করদাতা একটি শর্ত পূরণ করলেই বাধ্যতামূলকভাবে নিজের, স্ত্রী বা স্বামী, নাবালক সন্তান বা পোষ্যদের নামে কোথায় কী সম্পদ আছে, তা জানিয়ে আয়কর রিটার্নের সঙ্গে সম্পদের বিবরণীও জমা দিতে হবে। অর্থাৎ এর মধ্যে একটি হলেই আপনাকে নিজের পাশাপাশি স্ত্রী বা স্বামী, নাবালক সন্তান বা পোষ্যদের নামে থাকা সম্পদের ঠিকুজি জানাতে হবে। এনবিআরের আইটি ১০বি বা আইটি ১০বি ২০১৬ ফরম পূরণ করে এ তথ্য জানাতে হবে।
অভিযোগ রয়েছে, একশ্রেণির করদাতা নিজেদের সম্পদ স্ত্রী বা সন্তানদের নামে রেখে দেন। অনেক সময় আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য না থাকায় এমনটি করে থাকেন বলে জানা গেছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার নতুন ব্যক্তিগত গাড়ি নিবন্ধন হয়। এর মানে প্রতিবছর গাড়িওয়ালার সংখ্যা বাড়ছে। সে জন্য এনবিআর বিআরটিএর সার্ভার ব্যবহার করে গাড়ি নিবন্ধনের তথ্য জানবে। কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ছাড়া গাড়ি নিবন্ধন নেওয়া যায় না। তাই কোন টিআইএনধারী গাড়ি কিনেছেন, তা সহজেই বের করতে পারবেন কর কর্মকর্তারা। এই সূত্র ধরে কোনো গাড়িওয়ালা পরিবারের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন কি না, তা সহজেই জানতে পারবেন কর কর্মকর্তারা। এনবিআরের আয়কর বিভাগ আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে করদাতার তথ্য ডিজিটাল উপায়ে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, অনাবাসী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি নয় এমন করদাতারা শুধু বাংলাদেশের স্থাবর সম্পদের বিবরণী দাখিল করবেন। আর বার্ষিক করযোগ্য আয় চার লাখ টাকার বেশি, এমন করদাতাদের জীবনযাত্রার মান–সম্পর্কিত ব্যয় বিবরণী বাধ্যতামূলকভাবে দাখিল করতে হবে। এনবিআরের আইটি ১০বিবি বা আইটি ১০বিবি ২০১৬ ফরম পূরণ করে এ তথ্য জানাতে হবে। সেখানে করদাতার সন্তানের শিক্ষার খরচ, বিদেশ ভ্রমণ, সামাজিক অনুষ্ঠান, উপহার সামগ্রিসহ বিভিন্ন খাতের ব্যয়ের তথ্যও দিতে হবে।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ০১, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,