ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে গল্পকথক [ কথাশিল্পী না ] খুশবন্ত সিং এর জন্মের ১০০ বছর হলো (জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৫, মৃত্যু ২০ মার্চ ২০১৪ বয়স ৯৯ ) । এর ৯৯ বছরই নিজেও বেঁচে থেকে ভোগ করে গেছেন এই তীব্র ইহবাদী ,পরিহাসপ্রিয়, কবিতাপ্রেমী,অকুতোভয় মৌলবাদবিরোধী , অননুতাপিত অজ্ঞেয়বাদি [agnostic],আত্মরম্ভি সাংবাদিক লেখক ।
ভবিষ্যতের মানুষ যদি কেউ মনে রাখে তবে তাকে কি হিসেবে মনে রাখবে ? ভারতের ডানপন্থি হিন্দুদের কথিত- ‘ভারতের মাটিতে জন্ম নেয়া শেষ পাকিস্তানি’ হিসেবে, না ‘ইন্দিরা গান্ধীর ‘চামচা হিসাবে- যার জন্য তাকে ‘খোশামোদ সিং’ বলা হতো ? তিনি প্রথা ও প্রতিষ্ঠান বিরোধীকারীও, আবার আপন দেশ জাতি ও ধর্মের প্রতি বিদ্বেষপরায়ন,বিদ্রুপকারী ।
তার ছিল সবার প্রতি অপকার[ malice ] করার প্রবল এক বিকৃত মানসিকতা এবং ছিলেন একজন দাম্ভিক । তিনি প্রবলভাবে যৌনকাতর ,আছে বিকৃতমনস্কতা – তার প্রথম দিককার বেশকিছু উপন্যাস নিয়ে প্রায় কেলেঙ্কারীজনক অবস্থায় পড়েছিলেন । এছাড়াও লাম্পট্যতা ও কূ-ভাষীতা-পার্লামেন্টে তার বিতর্কে তার প্রমান মিলে ।
আর ছিল সবচেয়ে কম পড়েও সবকিছু জানার ভনিতা । একজন তৃতীয় শ্রেণীর আইন ব্যবসায়ী অন্যদিকে একজন পাখি পর্যবেক্ষক ও আর্টলাভার- ।
তার একমাত্র সীরিয়স কাজ- শিখ জাতির ইতিহাস লেখা ।
আমার কাছে তাকে মনে হয় তিনি,একটু মোটা দাগে বললে- ভারতীয় তসলিমা নাসরিন । তসলিমার লজ্জা’র মতই ‘ট্রেন টু পাকিস্তান-একটি সংখ্যালঘূদের মর্মযাতনা ,অন্যটিতে ভারতীয় উপমহাদেশ ব্যবচ্ছেদকালের একটি মর্মরস্পর্শী দলিল ; তসলিমার যৌনতা বিষয়ে লেখার মত তারও ছিল যৌন বিষয়ে বেশরম স্পষ্টবাদীতা , সবার অপকারেচ্ছা নিয়ে ক’ এর মত আত্মজীবনি , প্রতিষ্ঠানবিরোধীতা এবং তসলিমার মতই ধর্মসহ নানা বিষয়ে স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাত করার মানসিকতা । তসলিমার কথিত ভারত-তোষণের মত তারও আছে পাকিস্তান প্রসন্নতা ।
সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং- আমাদের মধ্যে যারা তসলিমার কর্মকান্ডের জন্য তার ভীষণ সমালোচক,প্রায় একই রকম ভুমিকাতে তারাই আবার খুশবন্তের ভীষণরকম ডাইহার্ট ভক্ত ।
নিজের এপিটাফে লেখেন-‘এখানে একজন শুয়ে আছে যে কোন মানুষকে যেমন ছাড়েনি, তেমনি ঈশ্বরকেও’ [ Here lies one, who spared neither man nor God ]
তার সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত কোটেশন-‘মদ দোষের নয় ,দোষ মাতাল হওয়া –
(নেট এর সহয়োগীতায়-)
সংগৃহিত : ফেব্রুয়ারী ০৩, ২০২০
রেটিং করুনঃ ,