পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোল রুটে গতকাল মঙ্গলবার থেকে চলাচল শুরু করেছে নতুন দুই ট্রেন জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ও রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস। এমনিতে খুলনা থেকে অন্য তিন ট্রেনে ভিন্ন রুটে ঢাকায় যেতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা। বেনাপোল থেকেও ঢাকায় যেতে প্রায় একই সময় লাগত। তবে নতুন দুই ট্রেন চালু হওয়ায় মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা। গতকাল নবনির্মিত পদ্মা রেল সংযোগে দুটি ট্রেনের উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সকালে কমলাপুর স্টেশনে রেল সচিব ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
লোকোমোটিভ, বগি ও জনবলের ব্যবস্থা না করেই স্টেশন, রেললাইনের বিস্তার করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন রেলপথ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সরকারকে সব খাতেই ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তাই লোকসানি রেলকে স্বাবলম্বী হতে হবে। অপব্যয়কে দুর্দশার বড় কারণ হিসেবেও তুলে ধরেন তিনি।
খুলনা স্টেশন থেকে গতকাল সকাল ৬টায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। নড়াইল দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছাতে সময় লেগেছে পৌনে ৪ ঘণ্টা। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর পৌঁছে। এটি আবার রাত ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, প্রথম দিন খুলনা থেকে ৫৫৩ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। এ সময় যাত্রীদের সঙ্গে রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ট্রেনে করে ঢাকায় যান। তবে খুলনা প্রান্তে ছিল না কোনো উদ্বোধন অনুষ্ঠান। খুলনা রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ জানান, সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। জাহানাবাদ এক্সপ্রেস যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। খুলনা-ঢাকা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস ও নকশি কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন চলাচল করবে আগের নিয়মে।
রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৯২৭ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। আশা করা হচ্ছে, মাত্র পৌনে চার ঘণ্টায় ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছাবে। এর আগে গতকাল বিকেলে যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম রূপসী বাংলা ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস সপ্তাহে সোমবার বিরতি রেখে দিনে দু’বার নিয়মিত যাতায়াত করবে। যাত্রাপথে ট্রেনটি যশোর, নড়াইল, কাশিয়ানী ও ভাঙ্গা জংশনে থামবে।
এদিকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে কালো পতাকা বেঁধে বিক্ষোভ করেছে বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। গতকাল বিকেলে যশোর জংশনে সমাবেশ এবং সন্ধ্যায় রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে কালো পতাকা বেঁধে দেয় তারা। মাত্র একটি ট্রেন দিয়ে যশোর ও খুলনাবাসীকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ করে সংগঠনটি। সংগ্রাম কমিটির নেতারা অবিলম্বে ঢাকা-বেনাপোল রুটে দুটি ট্রেনসহ পূর্বঘোষিত ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সূত্র: সমকাল।
তারিখ: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,