আজ বাবা দিবস, ইংরেজী জুন মাসের সপ্তাহের তৃতীয় রোববার অনেক দেশের সাথে আমাদের দেশেও দিনটিকে বাবা দিবস হিসাবে পালিত হয়, সকল বাবাকে বিশেষ ভাবে স্মরণ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্যে দিয়ে অনেকেই দিনটি পালন করে থাকেন।
বিশেষ করে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ বব্যস্থায় পরিবারে সমাজে বাবার ভূমিকা নিয়ে আমাদের বিশেষ কিছু বলার নেই, এক কথায় বলা যেতে পারে তিনি একটি পরিবারের বট বৃক্ষ, পরিবারের সকল সদস্যকে শুধু ছায়া দিয়ে নিয়ে নয় একটি উচ্চ মাত্রার পরিচয়ে একটি ফুলের মত পরিবারের সদস্যদের পরিস্ফুটিত করে কঠোর একটি নিরাপত্তা দিয়ে আমাদের সাজিয়ে রাখেন যেন পরিবারটি একটি ফুলের বাগান।
বাবা পরিবারের যখন থাকেন তিনি পরিবারের অভিভাবক, প্রধান আয় উপার্জনকারী ব্যক্তি আমাদের সকল সমস্যার সমাধানে পথ দেখান তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত একজন বড় বন্ধু, অভিজ্ঞতার বিশাল এক ভান্ডার, আর সকল সিদ্ধান্তই আসে বাবার কাছ থেকে আর সন্তানকে বড় করতে গিয়ে বাবার বহু ত্যাগ স্বীকারের কথা লিখেও শেষ করা বড় কঠিন কাজ।
তবে বাবা সর্বক্ষণ কর্মক্ষম, সচল অথবা সব সময় আমাদের পাশে থাকেন না, অনেক পরিবার বাবা ছাড়া একটি পরিবার, তারা যেন নাবিকহীন একটি পরিবার, আর ঠিক তখনই বুঝা যায় প্রকৃত অর্থে বাবা কে ! কী আলোকবর্তিকার মত ছিল তার ভূমিকা পরিবারে, সমাজে।
গত বছর অনেকের বাবা ছিলেন এ বছর বাবা দিবসে অনেকের বাবা নেই। এভাবে অনেকেরই বাবা ছিল কিন্তু আজ বাবা নেই। বাবা কথাটির অর্থই একটি নিরাপদ আশ্রয়। নিরাপদ জায়গা। বিশেষ করে শিশুদের পাশাপাশি বড়দের জন্যও। বাবাকে নিয়ে হাজার পৃষ্ঠার লেখা লিখে বাবার গুরুত্ব মাপা যাবে না। অতীতে যায় নি, আজও যাবে না, আগামীতেও না। বাবা তিনি শুধু বাবা পরিচয়ে থাকেন না, খুব সাধারণ অর্থে তিনি কারও পুত্র, কারও সন্তান, ভাই, চাচা, ফুপা, জামাই, দুলাভাই, শ্বশুড়ের মত নানান আত্মীয় সম্পর্কের বন্ধনে বন্দী।
আমি, আপনি, বা অনেকেই আজ আমরা বড় ভুল করে থাকি, বাবা থেকে দূরে থাকি, যে বাবা লেখাপড়া শিখিয়ে সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়েছেন নিজ সুখের জন্য বিদেশে থাকার জন্য বিদেশী বাড়তি সুবিধা গ্রহনের জন্য বিদেশীকে স্ত্রী কিম্বা স্বামী হিসাবে গ্রহন করে এমন কি দেশের নাগিরত্ব পর্যন্ত বাতিল করেছেন রক্ত যখন টগবগে ছিল।
রক্তে শীতলতা আসলে অনেকেই আবার ভুলে যাওয়া বাবার কথা মনে করেন, বাবার কথা স্মরণ করেন তখন হয় তো সময় শেষ ! কিন্তু আপনার বাবা যে সকল সময় আপনাকে আমাকে ভালোবাসেন, স্নেহ করেন কথাটি কিন্তু অস্বীকার করতে পারি না, কিন্তু তারপরেও মনে সংসয় কাজ করে, প্রশ্ন জাগে আমাদের যাদের সামর্থ আছে আমরা বাবাকে কি ভালো রেখেছি ! সাধ্য মত যেমনটি নিজ স্ত্রী ও সন্তানদের মর্যদা ভালোবাসা দিয়ে থাকি, আজ অনেকেই আমরা নিজে নিজে চলার স্বক্ষমতা অর্জন করেছি এখন তো বাবা আমাদের কাছে সেই শিশুটির মত ( যেমন একদিন আমরা নিজেরাই ছিলাম ) তিনি তো আজ কিছুই বলেন না মুখ ফুটে, কি তাঁর প্রয়োজন ! তিনি তো আমাদের সেই শিশুকালের না বলা কথা, ভাষা বুঝেছিলেন আমরা কি তাঁর না বলা কথা আজ বুঝতে পারি ! তিনি তো নিঃস্বার্থ মনে সন্তানের জন্য দোয়া বা প্রার্থনা করেই চলেছেন !
বাবার নামে যতক্ষণ সম্পত্তি থাকে, অর্থ থাকেন ততক্ষণ অনেক সন্তান পিতার তিলে তিলে গড়ে তুলা সেই সম্পত্তির, সেই অর্থের আশার কতই না সেবা যত্ন করনে কিন্তু তার সব সম্পত্তির, সেই অর্থ সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার পরে আমরা আমাদের বাবার খোঁজ খবর রাকি ! সেবা দিয়ে পাশি থাকি !! কেমন আছেন আমাদের বাবা !!!
আমাদের আজ যাদের বাবা নেই সেই বাবার কবরটি কি ফুল ঘাস দিয়ে কি সাজিয়ে রাখি ! প্রার্থনার আয়োজন কি করি !
তারিখ : জুন ২১, ২০১৫
রেটিং করুনঃ ,