কালি, কলম ও কাগজের পাতা ছাড়া লেখা-লেখি……….।
পানি জাহাজটি পানিতে একটি শান্ত গতিতে বাতাসের অনুকূলে এগিয়ে চলেছে আমি যদি সেেই পানি জাহাজের একটি কেবিনে শুয়ে থাকি আমার বুঝে নেওয়া বেশ কষ্ট যে জাহাজটি কত বেগে চলছে !! তবে জালনা দিয়ে বাইরে তাকালে বুঝা যায়, নদী পথে বাতাসের বেগ বেড়ে গেলে তা বুঝা যায় কিম্বা স্রোতের প্রতিকূলে চললে বুঝায় যায় যে, জাহাজটি চলছে।
আমাদের সাহিত্যও একটি রূপকের বা উপমায় পানি জাহাজ হয়ে নদীতে বা সমুদ্রে চলছে দীর্ঘ কাল ধরে। কিছুদিন আগে বা অনেক বছর বা কয়েক যুগ আগে থেকে আমাদের সাহিত্যে আধুনিকার ধারার ছোঁয়ায় এগিয়ে চলেছিল তেমনি কোন না কোন ধারায় আমাদের সেই সাহিত্য রূপকের পানি জাহাজ হয়ে নদীতে বা সমুদ্রে এখনও চলছে, এগিয়ে চলেছে।
আমি কোন লেখক নই, মাঝে মাঝে বিবিধ বা কবিতার মত কিছু লিখি তবে কবিতা হিসাবে আমার নিজের কাছ থেকে স্বীকৃতি মেলে না, স্বীকৃতি মিলানোটা একটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার মধ্যে অথবা এই জীবনে নানান কারণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়াটাও হয় তো হবে না।
বেশ কিছুদিন হলো একটি লেখার বিষয় ( লেখা বিষয়ে লেখা ) পেয়েছি আর মাঝে মাঝে লিখি, সমালোচিত হয় আবার ভালো আলোচনাও পাই, সেই সাথে প্রযুক্তির বদৌলতে ঝামেলা মুক্ত লেখা অর্থাৎ কালি, কলম ও কাগজের পাতা ছাড়া, আর প্রিয় পাঠকের কাছে লেখা দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া।
আজকের পাঠক যে যন্ত্রটির সাথে সব চেয়ে বেশি পরিচিত বা সেটি তিনি বেশি ব্যবহার করেন, সময় কাটান আর সেখানে যদি আমার লেখা পৌঁছানোর অপশন বা ব্যবস্থার অনুমতি থাকে তবে তিনি আমার লেখা হয় পড়বেন অথবা এড়িয়ে যাবেন যেমন সূর্য আলো বা তাপ দিয়ে যান এখন আমাদের দায়িত্ব নিজ শরীরে আলো বা তাপ লাগানো বা না লাগানো !! পাঠকের তেমন স্বাধীনতা আমার লেখা তিনি পড়বেন নাকি এড়িয়ে যাবেন !!
লেখার বিষয়টি ষ্পষ্ট করাটার মত স্ব-ক্ষমতা আমার এখনও অর্জন হয় নি, তবে বলতে পারি আমাদের সাহিত্য নুতনের একটি ধারা বা প্রযুক্তির একটি ধারা নিয়ে এগিয়ে চলেছে, এই ধারাটির মধ্যে বড় যে ভাবনার বিষয় সেটি হলো আমাদের এখন লেখকের সংখ্যা অনেক বেশি, বিষয়টি ষ্পষ্ট করতে আমি বইয়ের লেখক এবং বইয়ের পাঠকের কথা এখানে উল্ল্যেখ করছি না, শুধু মাত্র যারা কালি কলম ও কাগজের পাতা ছাড়া যারা লেখক বা পাঠক তাদের কথাই বলছি। বলতে বেশ নিরাপদও অনুভব করছি এই কারণে যে আমার কোন লেখা বইয়ের পাতায় নেই।
কিন্তু কালি, কলম ও কাগজের পাতা ছাড়া যে লেখা, লেখক এবং পাঠক তারা সকলেই সাহিত্যের একটি নুতন ধারার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এটি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ আজকের পেক্ষাপটে তবে ঠিক একদিন বুঝা যাবে পানি জাহাজটি চলেছে স্রোতের অনুকূলে নাকি প্রতিকূলে ! আমি প্রায় নিত্যই লিখে চলেছি সেই রূপকের পানি জাহাজের একটি কেবিনে শুয়ে থেকে, জাহাজটি তার গতিতে চলছে কিন্তু আমার বুঝা হচ্ছে না জাহাজ কোন গতিতে চলছে আর আমিই বা কোথায় চলেছি !!
সমুদ্রের কথা বলতে চাই না নদীর কথাই বলি – নদী একটি সোজা পথে চললেও যতই এগিয়ে যাই দেখি নদীতে নানান বাঁক, আঁকা-বাঁকা নদীর পথ; কোন বাঁকে পড়ে আমার লেখা থেমে যাবে এটাই আমার এখন বড় ভাবনার বিষয়।
রেটিং করুনঃ ,