তিন বন্ধু রনি ইসলাম, মো. রাসেল ও মো. জনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে কাজ করেন। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাড়ি ফেরার জন্য রাতেই ঢাকায় এসেছেন। কিন্তু কঠোর লকডাউনে মেলেনি যানবাহন। যাত্রাবাড়ীতে আমের আড়তে রাত কাটিয়ে কমলাপুর ও যাত্রাবাড়ী ঘুরেছেন। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ এসেছেন গাবতলীতে। দাঁড়িয়ে ছিলেন আমিনবাজার সেতুতে। এখানেও যানবাহন পাননি।
শুধু এই তিন বন্ধু নয়, কঠোর লকডাউনের মধ্যে ঢাকা ছাড়তে পথে নেমেছেন অনেকেই। কেউ যাবেন পঞ্চগড়ে, কেউ চাঁপাইনবাবগঞ্জে, কেউবা সিরাজগঞ্জে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ। পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে। ট্রাক, পিকআপ কিংবা রিকশায় ভেঙে ভেঙে যেতে একদিকে যেমন পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে, তেমনি গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। করোনার স্বার্থে কঠোর লকডাউনের বিষয়টি অনেকে মেনে নিলেও রাজধানীতে মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় গ্রামে ছুটতে হচ্ছে তাঁদের।
আজ যাঁরা ঢাকা ছাড়ছেন, তাঁদের বেশির ভাগ জীবিকার তাগিদে এত দিন রয়ে গিয়েছিলেন। সরেজমিনে দুপুরে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অন্তত ১৪ জনকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য গাবতলীতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
মিনবাজার সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন আলফাজ হোসেন। পেশায় রিকশাচালক আলফাজ যাবেন সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে। ট্রাক খুঁজছিলেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘হাজারীবাগ থেকে রিকশায় আসছি। এখন হাঁটতেছি। ট্রাকে বাড়ি যেতে হবে। বাড়িতে পরিবার আছে। একটা গরু আছে। ওটাকে ঈদে বিক্রি করব।’
রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ গাবতলী। রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। লকডাউনের কারণে সকাল ছয়টা থেকে গাবতলী হয়ে ঢাকায় ঢুকতে ও বের হতে চেকপোস্টে জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হচ্ছে। জরুরি কারণ দেখাতে না পারলে দেওয়া হচ্ছে মামলা।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ০৩, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,