Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

করোনাকালে বেড়েছে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা (২০২১)

Share on Facebook

করোনার ধাক্কায় আয় সংকুচিত হয়েছে বহু মানুষের। তবে সংকটকালের এই অভিঘাত এখানেই থেমে নেই। অর্থনৈতিক দুর্দশা ভাঙন ধরাচ্ছে বহু সংসারেও। রাজধানী ঢাকায়ই দিনে ৩৮টি বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। এ হিসাবে প্রতি ৩৮ মিনিটে একটি দাম্পত্যে দাঁড়ি পড়ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি মাসে ৯৯টি বিচ্ছেদ বেড়েছে।

ঢাকার দুই সিটির তথ্য বলছে, ৭৫ শতাংশ ডিভোর্সই দিচ্ছেন নারী। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে চার হাজার ৫৬৫টি বিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়েছে, অর্থাৎ প্রতি মাসে এক হাজার ১৪১টি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪২। এই হিসাবে চলতি বছর প্রতি মাসে বেড়েছে ৯৯টি বিচ্ছেদ। গত বছরও নারীদের তরফে ডিভোর্স বেশি দেওয়া হয়েছে, ৭০ শতাংশ।

করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি মানসিক ও সামাজিক চাপের কারণে সৃষ্ট পারিবারিক কলহ ডিভোর্স বেড়ে যাওয়ার বড় কারণ বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতের অমিল, পারস্পরিক বোঝাপড়া না হওয়াও বড় কারণ। নারীদের পক্ষ থেকে বেশি ডিভোর্স দেওয়ার পেছনে করোনাকালে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিকেই প্রধানত দায়ী করছেন তাঁরা।

বিচ্ছেদের প্রবণতা শুধু ঢাকায়ই নয়, সারা দেশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ১৭ শতাংশ বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে। মহামারিকালে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য বলছে, পুরুষরা বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে মূলত তাঁদের প্রতি স্ত্র্রীর সন্দেহপ্রবণতা, সংসারের প্রতি স্ত্র্রীর উদাসীনতা, বদমেজাজ, সন্তান না হওয়া ইত্যাদি তুলে ধরেছেন। নারীরা কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন পরকীয়া প্রেম, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, মাদকাসক্তি ইত্যাদি।

গত বছর দুই সিটিতে ১২ হাজার ৫১৩টি ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আট হাজার ৪৮১টি আবেদন করেছিলেন নারী, বাকি চার হাজার ৩২টি বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন পুরুষ।

ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দপ্তরে তালাকের আবেদন নথিভুক্ত করা হয়। আবেদনের ৯০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষ আপস অথবা প্রত্যাহার না করলে তালাক কার্যকর হয়ে যায়। দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বেশির ভাগ তালাক দিচ্ছেন নারীরা। দুই সিটিতেই ৭৫ শতাংশ তালাক নারীরা দিচ্ছেন। করোনার মধ্যে পারিবারিক বোঝাপড়া নিয়েই মূলত তালাকের ঘটনা বেশি ঘটছে। পাশাপাশি নারীরা এখন বেশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তাই তালাকের পর কিভাবে চলবেন, তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। সমাজও এখন মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা স্বাভাবিকভাবে দেখতে শুরু করেছে।

করোনাকালে বিচ্ছেদ হয়েছে ঢাকার বনানীর এক ব্যক্তির। নাম গোপন রাখার শর্তে গতকাল শুক্রবার তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী অনেক সন্দেহপ্রবণ ছিল। পাশাপাশি সম্পর্কের প্রতিও উদাসীন ছিল। এ ছাড়া সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি এলে তা নষ্ট হয়ে যায়। তারা সহযোগিতার নামে নেতিবাচক মানসিকতার দিকে ঠেলে দেয়।’ এর এক পর্যায়ে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় বলে জানান তিনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তালাকের আবেদন করেছেন এক নারী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যৌতুকের টাকার জন্য দীর্ঘদিন স্বামী নির্যাতন করে আসছিল। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সহ্য করেছি। কিন্তু স্বামীর বাড়ির পরিবারের কারো সহযোগিতা পাইনি। উল্টো স্বামীকে উসকে দিয়েছে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

একাধিক জরিপ ও সমীক্ষায় দেখা যায়, করোনাকালে নারীদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেক নারী তালাকের দিকে ঝুঁকছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৭১ জন নারী স্বামী কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন।

আসকের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক নীনা গোস্বামী বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে আগে নারীরা জানতেনই না যে তাঁরা তালাক দিতে পারেন। মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করতেন। আর করোনাকালে পারিবারিক সহিংসতা অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি একটা ভুল ধারণা ছিল যে ডিভোর্স দিলে নারীরা মোহরানার টাকা পাবেন না। এখন এটা বেশির ভাগ নারীই জানেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়ে গেছে। পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদও করছে। স্বামী অথবা পরিবার কর্তৃক শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। নারীর ক্ষমতায়নের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। ফলে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়েও উপার্জনক্ষম নারী বাড়ছে। অর্থনৈতিক মুক্তি শুধু কারণ নয়, আদর্শিক চিন্তার পরিবর্তনও একটা বড় কারণ। এ জন্য নারীরা সাহস করে তালাক দিতে পারছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনো বিশ্বাস করা হয় যে সব কিছুর সঙ্গে মেয়েরাই মানিয়ে নেবে, কিন্তু এটা দুজনের বিষয়। এখানে ডমিনেট (আধিপত্য) করার বিষয়টাকে আর মেনে নেওয়া হচ্ছে না। মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে, ফলে আত্মসম্মান বোধটাও বেড়েছে। তাই সব সময় নির্যাতনের কারণেই তালাক দিচ্ছে না।’ নারীদের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়াও অন্যতম কারণ বলে মত দেন তিনি।

সূত্র: কালের কন্ঠ
তারিখ: জুন ২৬, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ