Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

করোনাকালে নিন্ম বৃত্ত ‌ও মধ্যবিত্ত সংকটে (২০২১)

Share on Facebook

রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের আনা কারেনিনা উপন্যাসের শুরুর বাক্য: সব সুখী পরিবার একই রকম, কিন্তু সব অসুখী পরিবার যার যার মতো করে অসুখী। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় গল্পটা তার উল্টো। এই গল্পের প্রধান তিন চরিত্র ধনী, গরিব ও মধ্যবিত্ত ভালো সময়ে যার যার মতো করে ভালোই থাকে, কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিকাংশই একই রকম অসুখী।
মধ্য ও নিম্নবিত্তের কিছু দুঃস্বপ্ন

রাজধানীর এক মধ্যবিত্ত পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনই বেসরকারি চাকরি করতেন। ঋণ আর কিছু সঞ্চয় মিলিয়ে তিন মাস আগে নতুন ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তাঁরা। নতুন ফ্ল্যাটে উঠে তা সাজাতে সাজাতেই জানা গেল, পুরুষ উপার্জনকারীর চাকরিটা আর নেই। ঋণ পরিশোধ কীভাবে করা হবে, কীভাবে দীর্ঘ করোনাকাল কাটানো যাবে, সেই চিন্তা এখন তাঁদের সামনে।

একটি বিদেশি সংস্থার প্রধানের গাড়ি চালাতেন মোহন হালদার (ছদ্মনাম)। গত বছর করোনা তীব্র আকার ধারণ করলে প্রতিষ্ঠানের ইউরোপীয় প্রধান বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। বেকারত্বের এক বছরে সঞ্চয় যা ছিল শেষ। ভবিষ্যতের চিন্তা হয় কিন্তু পথ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানালেন তিনি।

দিনে এক ব্যবসায়ীর গাড়ির চালকের চাকরি আর রাতে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং করতেন দুই সন্তানের এক পিতা। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য এটাই ছিল তাঁর বাড়তি আয়ের উপায়। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং বন্ধ করে দেওয়ায় আয় অর্ধেক হয়ে গেল তাঁর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মনে করেন, মধ্যবিত্তের বড় অংশেরেই আয়ের টেকসই ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে বেসরকারীকরণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে যাঁদের হাতে টাকা এসেছিল, করোনাকালে দেখছে ওই আয়ের নিশ্চয়তা নেই। করোনা বা যেকোনো সংকটে প্রান্তের দিকে যাঁরা থাকেন, তাঁদের পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। তাই যাঁরা আপাতভাবে সচ্ছল ছিলেন, তাঁদের বড় অংশ করোনাকালে বিপদে পড়ে গেছে। এদিকে রাষ্ট্রও তাঁদের দায়িত্ব নিচ্ছে না।’

অর্থনীতির শক্তিকেন্দ্রে ঘাটতি ও মধ্যবিত্ত আয়

অনেকেই এখন বেকারত্বের হুমকিতে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও তাদের এই মাসের শুরুর প্রতিবেদনে এই আশঙ্কা জানায়। আইএলও বলছে, ২০১৯ সালে বিশ্বে যত মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, তার চেয়ে ৩৩ মিলিয়ন বেশি কর্মী ২০২০ সালে করোনা মহামারির প্রভাবে চাকরি হারিয়েছেন।

বেসরকারি সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপের তথ্য বলছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আগে মার্চে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ। অর্থাৎ তাদের বাসস্থান, খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার সামর্থ্য তলানিতে নামছে। অনেক ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও নিয়োগদাতা বিলীন হয়ে যাওয়ার মুখে। পোশাকশিল্প খাতের চারটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি বলেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ হারিয়েছে পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় রপ্তানি হারিয়েছে সাড়ে ৯ শতাংশ। ২০২০ সালের এপ্রিল নাগাদ পোশাক খাতের ১ হাজার ১৫০টি সদস্য প্রতিষ্ঠান ৩১৮ কোটি ডলারের কার্যাদেশ বাতিল ও স্থগিতের শিকার হয়েছে। কর্মসংস্থান ও মধ্যবিত্তের আয়ের ওপর এর অভিঘাত পড়তে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির তিন পাওয়ার হাউস হলো প্রবাসী আয়, পোশাকশিল্প আর কৃষি ও খামার। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রবাসী আয় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু প্রবাসীদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা রামরুর জরিপ জানায়, অনেকে এই সময়ে কোনো প্রবাসী আয় পায়নি বলে খুব কষ্টে ছিল। যাঁদের সংসারের খরচ ছিল মাসে গড়ে ১৭ হাজার টাকা, তাঁরা গড়ে ৭ হাজার ৩০০ টাকায় তা চালিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৭০ ভাগ অভিবাসী পুরুষ কর্মীর পরিবার ধারদেনায় চলেছে। নারী অভিবাসী কর্মীনির্ভর পরিবারগুলোর মধ্যে ধার করার হার এক-তৃতীয়াংশ।

বরং খারাপ হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের প্রধান শিল্পকেন্দ্রগুলোর অবস্থা। এসব শিল্প এসব শহর তো বটেই, দেশের অর্থনীতিরও শিরদাঁড়া। এই শিল্পকে ঘিরে টিকে আছে ছোট-বড় নানান ব্যবসা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, স্কুল-কলেজ, বাজার ও বিপণি ইত্যাদি। লকডাউনে শিল্পকারখানা খোলা থাকলেও এসবের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। তার ধাক্কায় অনেক মানুষের আয় কমে যাবে।
করোনাকালে সমাজ রূপান্তর

মহামারির অর্থনৈতিক ধাক্কায় বাংলাদেশেও রূপান্তরের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কর্মহীন গরিব ও মধ্যবিত্ত গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। অন্যদিকে সৎ উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরা কমজোরি হলেও ফাটকা ব্যবসায়ী, ঋণখেলাপি ও মাফিয়া অর্থনীতি আরও সবল হয়েছে। রাজনীতি ও অর্থনীতি এমনকি রাষ্ট্রে তাদের প্রভাব বাড়ার আলামতগুলো পি কে হালদার থেকে শিকদার ভ্রাতৃদ্বয়ের ঘটনা কিংবা এমপি আসলামুল হকের মরণোত্তর ঋণের পরিমাণ অথবা হাজি সেলিমের পুত্রের জামিন লাভ দিয়েও বোঝা যায়। বোঝা যায় দুর্নীতি ও অপরাধ দমনকারী কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তার বদলির ঘটনায়ও।

অন্যদিকে মধ্যবিত্তের ছোট হয়ে আসা, গরিব হয়ে যাওয়া মানে সমাজে তাদের হিস্যা কমে আসা। সাধারণত শহুরে মধ্যবিত্ত সুশাসন ও গণতন্ত্রমুখী হয়। তাদের পিছু হটা মানে রাজনীতি ও অর্থনীতি মাফিয়াতন্ত্রের দাপট অবাধ হওয়া।

করোনাকালে গ্রামগুলোতে ধর্মীয় ভাবাবেগপুষ্ট আন্দোলন জোরদার হতে দেখা যাচ্ছে। ধর্মীয় নেতারা সেই রকম সামাজিক ভিত্তি পাচ্ছেন, যা আগে উপভোগ করতেন শহুরে বুদ্ধিজীবীরা। সাম্প্রতিক হেফাজতে ইসলাম বনাম সরকারি বাহিনীর সংঘাতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত তরুণের জড়িত হতে দেখা গেছে। ধর্মভিত্তিক নেতাদের প্রভাববলয় এ সময়ে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মহামারি সামাজিক রূপান্তরও ঘটায়। অনিচ্ছুক সমাজকেও মহামারি বদলাতে বাধ্য করে। চৌদ্দ শতকের মাঝামাঝি ব্ল্যাক ডেথ নামক প্লেগে ইউরোপের অর্ধেক মানুষ মারা যায়। ফলে সস্তা শ্রমের অভাব দেখা দিলে ভূমিদাসপ্রথা বিলুপ্ত হয় এবং প্রযুক্তিগত আবিষ্কারগুলো দ্রুততর হয়। নতুন বাস্তবতায় ব্রিটিশ সামন্তবাদ ধসে পড়ে, আধুনিকতার উন্মেষ ঘটতে থাকে। ইতালির বিপুল মানুষের মৃত্যুর ধাক্কায় জীবনের মূল্যবোধ বদলাতে থাকে। শিল্প-সাহিত্যে নতুন যুগ আসে, যাকে পরে নাম দেওয়া হয় ‘রেনেসাঁ’ বা নবজাগরণ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের ভাষ্য হলো, ‘আগের মধ্যবিত্ত ছিল চাকরিনির্ভর। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পেশাজীবী অংশ, লেখক, সাংবাদিক, আইনজীবী, প্রকৌশলী। তাঁরা মূলত ছিলেন পাবলিক সেক্টরে। এঁরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখতেন। তবে আশির দশক থেকে বেসরকারীকরণ ও নয়া উদারনৈতিক অর্থনীতির সুবিধাভোগী হিসেবে আরেকটি শ্রেণি গড়ে ওঠে। দুর্বল হতে থাকে পুরোনো মধ্যবিত্তে সামাজিক অবস্থান। ব্যবসা ও বেসরকারি খাতের মানুষেরা সামনে চলে আসেন। তাঁদের জন্য জীবন উপভোগ ও স্বাস্থ্যের সুরক্ষার আয়োজন দেশে বা বিদেশে আছে। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত দেখছে ভালো চিকিৎসা পেতে গেলে বিত্তবান হতে হয়। এই অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে অনাস্থার জন্ম দিতে পারে। এসব মিলিয়ে আমরা একটা রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’
পুরোনো মধ্যবিত্তের পিছু হটা

বাংলাদেশে ষাট থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে মধ্যবিত্তের প্রতিনিধিরাই ছিলেন মধ্যমণি। তাঁরা ভালো পেশাজীবী হতেন, রাজনীতিতে গণসম্পৃক্ত নেতাদের জোগানও এই শ্রেণিই দিত। দেশের সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব ছিল মধ্যবিত্তেরই হাতে। তাঁরা যাকে ভালো বলতেন, তা সাধারণ্যে ভালো বলে গণ্য হতো।

কিন্তু মধ্যবিত্তের চিকিৎসক-প্রকৌশলী-প্রযুক্তিবিদেরা শূন্য দশকে এসে বড় আকারে পশ্চিমা দেশগুলোতে যাওয়া শুরু করেন। শিল্প-অভিনয়-সংগীত ও সাহিত্যের পুরোধা অনেকেও দেশান্তরি হন। চলে যান অনেক মেধাবী শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী। যাঁরা থেকে যান, একটা অংশ দুর্নীতি ও ভোগবিলাসে ভেসে অসামাজিক হয়ে পড়ে। ঘোলা পানিতে মেনি মাছেরা ভেসে ওঠে, তলিয়ে যায় অন্য মাছেরা। এভাবে অনেকেই হারান প্রাসঙ্গিকতা।

পাশাপাশি পুরোনো মধ্যবিত্তের হয়ে কথা বলার মানুষ সত্যিই কমে যাচ্ছে। উঠতি মধ্যবিত্তের আয়তন যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ধনিক শ্রেণির অবয়বও। অর্থনীতিবিদ ও বিআইডিএসের পরিচালক বিনায়ক সেনের গবেষণার তথ্য হলো, ১৯৯২ সালে দেশে ৯ শতাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত ছিল, ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয় ২০ শতাংশ। করোনার আগে আগে তা ছিল ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে বহুজাতিক আর্থিক পরামর্শ দানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ এক্স গত বছর জানিয়েছিল, সম্পদশালীর সংখ্যা বৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে দেশে ধনকুবেরের (৫০ লাখ ডলারের বেশি সম্পদের অধিকারী) সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে।

এই দুটি শ্রেণি দুদিক থেকে মধ্যবিত্তের আবাস, অবস্থান ও মর্যাদাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রথমত নব্য বড়লোকদের কাছে নতজানু হয়ে থাকার চাপ, দ্বিতীয়ত প্রবাসী আয় ও উন্নয়নের সুবাদে গ্রাম-মফস্বল থেকে আসা উঠতি মধ্যবিত্তের সংখ্যার কাছে হেরে যাওয়া। একসময়কার বনেদি উচ্চমধ্যবিত্ত আবাস ধানমন্ডি এখন গুরুত্বহীন। শহরতলির উঠতি মধ্যবিত্ত এলাকাগুলো বরং অনেক সরগরম। মেট্রোপলিটন হতে চাওয়া ঢাকা এখন গ্রাম-মফস্বল থেকে আসা দরিদ্র ও উঠতি মধ্যবিত্তের উপনিবেশমাত্র।

উঠতি মধ্যবিত্ত ও গ্রামনির্ভর ধর্মসমাজ

মধ্যবিত্তের বিবর্তনের অর্থনৈতিক চালচিত্র তুলে ধরে বিনায়ক সেন বলেন, ‘ষাটের দশকে ঢাকার জনসংখ্যার ৫ শতাংশের নিচে ছিল মধ্যবিত্তের সংখ্যা। তাদের পরিবার ছিল কৃষির সঙ্গে জড়িত। তাদের একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা ছিল, নিজেদের স্বার্থে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তবে নগরায়ণ, আধুনিকায়ন, শিল্পায়নের মাধ্যমে গঠিত নতুন মধ্যবিত্ত কৃষির সঙ্গে জড়িত মধ্যবিত্তের মতো আচরণ করবে না। তারা আগের মতো যৌথ জীবন যাপন করে না। সাধারণত উন্নয়নশীল থেকে মধ্য আয়ের স্তরে যাওয়ার পথে সামষ্টিক আন্দোলন হয়। কিন্তু মধ্য আয়ে চলে গেলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি গতিশীলতার সন্ধান পেয়ে যায়। তখন তাদের মনোযোগ থাকে জীবিকাকেন্দ্রিক। জীবনমান বাড়ানোর কোনো সুযোগ তারা হারাতে চায় না। শুধু আমাদের দেশে নয়, উন্নত দেশেও এত বেশি গতিশীলতা এসেছে যে ধনসম্পদ অর্জনের ইঁদুর দৌড় দেখা যাচ্ছে। এখন দেখছি পরস্পরের সঙ্গে পরস্পরের অসহযোগিতার সম্পর্ক। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে উন্নত সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক পরিগঠন আশা করা বৃথা।’

তবে বিনায়ক সেন মনে করেন, উঠতি মধ্যবিত্ত যখন আকারে আরও বড় হবে, অর্থনৈতিক জীবন স্থিতিশীল হবে, তখন তারা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করবে।

তার কিছু লক্ষণ কি দেখা যাচ্ছে? উঠতি মধ্যবিত্তের প্রতিনিধিদের সামাজিক আত্মপ্রকাশের অন্যতম মুহূর্ত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত ও ক্ষমতাসীনদের হারিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের বিজয়ী হওয়া। ২০১৫ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নো-ভ্যাট আন্দোলন, ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন অবধি উঠতি মধ্যবিত্তের তরুণদের এগিয়ে আসারই লক্ষণ।

আশা করা যায়, আগামী দিনে এই উঠতি মধ্যবিত্ত সেই উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে, যা করেছিল তাদের পূর্বসূরি পুরোনো মধ্যবিত্ত শ্রেণি। পুরোনো রাজনীতি ভেঙে পড়ার কালে নতুন রাজনৈতিক সমাজ এভাবেই গড়ে ওঠে। আমাদের হয়তো নবজাগরণ নেই, তবে অন্ধকারে এটাই হয়তো রুপালি রেখা।

লেখক: ফারুক ওয়াসিফ: কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: এপ্রিল ২৪, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ