Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ওয়াশিংটন পোস্টের নিবন্ধ-ন্যাটোকেই শক্তিশালী করলেন পুতিন (২০২২)

Share on Facebook

তিন বছরেরও কম সময় আগে ‘ন্যাটোর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটার’ (ব্রেন ডেড অব ন্যাটো) বিষয়ে আক্ষেপ শোনা গেছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর কণ্ঠে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তখন পশ্চিমাদের এই সামরিক জোটভুক্ত মিত্রদের এই বলে হুমকি দিচ্ছিলেন, যাঁরা ন্যাটোর জন্য পর্যাপ্ত করেননি, তাঁদের সুরক্ষায়ও কিছু করা হবে না। তখন মাঁখো ওই আক্ষেপ করেন। এরপর জোটসঙ্গীদের সঙ্গে নামমাত্র আলাপ–আলোচনার পর আফগানিস্তান (ন্যাটোর মিশন) থেকে যখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেন, তখনও পরিস্থিতির এমন কিছু ইতর–বিশেষ হয়নি। তালেবানের দখলে কাবুল চলে যাওয়ার পর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকা সম্পাদকীয় লিখল; শিরোনাম ছিল—‘কীভাবে ন্যাটো ভাঙলেন বাইডেন’।

তবে এখন দেখা যাচ্ছে, ন্যাটোর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটেনি কিংবা জোট ভেঙেও পড়েনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান সামরিক জোটটিকে নতুন করে জীবন ইজারা দিয়েছে; শীতল যুদ্ধের পর থেকে ন্যাটো কখনো এত বেশি রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সামরিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল না।

ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে ন্যাটো অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। এমনকি জার্মানি রক্তপাতহীন প্রতিরক্ষার ওপর জোর দিয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করলেও অবশেষে তারাও ইউক্রেনে ভারী অস্ত্রশস্ত্র পাঠাচ্ছে। ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশ আরও অনেক কিছু করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, পোল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য রয়েছে নেতৃত্বের অবস্থানে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে তারা।

ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গনের অগ্রভাগে থাকা দেশগুলোতে ন্যাটো তাদের বাহিনীর উপস্থিতি দ্বিগুণ করেছে, যোদ্ধা গ্রুপের সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে করেছে আট। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপে তাদের শক্তিমত্তা বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে তারা সেনাসংখ্যা ৮০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখে উন্নীত করেছে।

এমনকি যেসব দেশ দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে, সেই সুইডেন ও ফিনল্যান্ড এখন ন্যাটোভুক্ত হওয়ার ইচ্ছার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছে। তুরস্কের এ বিষয়ে উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত আপত্তি এবং ‘ছদ্ম–বাস্তববাদীদের’ তথাকথিত অতিরঞ্জিত উদ্বেগ সত্ত্বেও দেশ দুটি প্রায় নিশ্চিতভাবে রুশ ‘ভালুককে’ উসকে দেওয়ার বিষয়ে তাদের অবস্থানের কথা প্রকাশ করেছে।

সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে ন্যাটো তাদের কৌশলগত বাজিমাত ঘটাবে। ন্যাটোয় দেশ দুটির অন্তর্ভুক্তি কিন্তু কোনো দাতব্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা নয়। নিজেদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে তারা সমীহ–জাগানো সামরিক শক্তি; যা সামনের দিনগুলোতে রাশিয়ার যেকোনো ‘আগ্রাসন’ রুখে দিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

ফিনল্যান্ডের গোলন্দাজ বাহিনীর সক্ষমতা অনেক। তাদের দখলে রয়েছে দেড় হাজার কামান; আছে পর্যাপ্ত এফ–১৮ যুদ্ধবিমান। রকেট হামলা চালানোর মতো একাধিক ব্যবস্থা, দূরের লক্ষ্যবস্তু আঘাত করতে সক্ষম হাউইটজারসহ (বিশেষ ধরনের কামান) নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র ও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর বেশকিছু ব্যবস্থা রয়েছে তাদের হাতে। হেলসিংকি তাদের প্রতিরক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়াচ্ছে। সম্প্রতি তারা ৬৪টি এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। তাদের সেনাসদস্যের সংখ্যা অবশ্য বেশ কম, মাত্র ২২ হাজার। তবে দেশটিতে সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার সেনাসদস্যের সমাগম ঘটাতে সক্ষম তারা; যা ইউক্রেনে রাশিয়ার পাঠানো সামরিক বাহিনীর চেয়ে বড়।

ন্যাটোতে যুক্ত হওয়া থেকে ফিনল্যান্ডকে বিরত রাখতে ক্রেমলিন সম্ভাব্য সব ধরনের হুমকি–ধমকি দিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য থেকে তাদের দূরে রাখা যায়নি। ১৯৩৯–৪০ সালের যুদ্ধে (উইন্টার ওয়ার বা প্রথম সোভিয়েত–ফিনল্যান্ড যুদ্ধ) রুশ আগ্রাসনে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির কথা তারা ভোলেনি। অন্যদিকে, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অবস্থা বেশ নাজুক। ফলে হুমকি–ধমকি কোনোভাবে ফিনল্যান্ডবাসীর মনে রেখাপাত করতে পারেনি। রাশিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে কী করা হবে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি পর্যন্ত নিয়ে রেখেছিল ফিনল্যান্ড। এরই মধ্যে রাশিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যখন দেখাই যাচ্ছে ‘তর্জন–গর্জনে’ কাজ হচ্ছে না, তখন রাশিয়ার শাসক ভ্লাদিমির পুতিন নিজের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আনতে শুরু করেছেন।

সুইডেনের জনসংখ্যা ফিনল্যান্ডের প্রায় দ্বিগুণ। দেশটির (সুইডেন) প্রতিরক্ষা বাজেট বেশ বড়, তবে সামরিক বাহিনীর তুলনামূলক আকার অনেকটা ছোট। বাহিনীতে সক্রিয় মাত্র ২৪ হাজার সেনাসদস্য ও রিজার্ভ সেনার সংখ্যাও খুব কম, মাত্র ৩১ হাজার ৮০০। তবে স্টকহোমও তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে ও সামরিক বাহিনীর আকার বাড়াচ্ছে। সুইডেনের বিমানবাহিনী দেশে তৈরি ২০৪টি সাব জেএএস ৩৯ গ্রিপেন যুদ্ধবিমানের ফরমায়েশ দিয়েছে। সুইডেন ডিজেলচালিত সাবমেরিন তৈরি করে। তাদের নৌবাহিনী সাবমেরিনের বহর চারটি থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি করার পরিকল্পনা করেছে। নতুন রণতরী কিনতেও উদ্যোগী হয়েছে তারা।

সুইডেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ সম্ভবত তাদের গোটল্যান্ড দ্বীপ। বাল্টিক সাগরের মাঝে অবস্থিত এই দ্বীপ হতে পারে বিমান ওঠা–নামার প্রধান জায়গা, যেটি চাইলেও ডুবিয়ে দেওয়া যাবে না। এখানে ন্যাটোর ঘাঁটি গড়া মানে বাল্টিক সাগর ‘ন্যাটো লেক’ বা ন্যাটোর হৃদে পরিণত হওয়া, যেমনটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মাল্টার ওপর ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণ ভূমধ্যসাগরকে মিত্রদের হ্রদে পরিণত করেছিল।

ন্যাটোর পরিকল্পনাকারীদের মনে দীর্ঘদিন ধরে এক ভয় কাজ করে। তা হলো, কখনো কোনো কারণে যুদ্ধ বাঁধলে তখন এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় যুদ্ধসরঞ্জামের পুনঃসরবরাহ কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা, মস্কো তাদের সব অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো করে রেখেছে কালিনিনগ্রাদে। রাশিয়ার এ ছিটমহলটির অবস্থান পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মাঝে। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জোটে পাওয়ার পর পরিস্থিতির বদল ঘটবে, উত্তরাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্র ন্যাটোর অনুকূলে ঝুঁকবে।

ন্যাটোর উচিত হবে, রণক্ষেত্রের অগ্রভাগে থাকা দেশগুলোতে ঘুরেফিরে সেনা মোতায়েনের অবস্থান থেকে সরে আসা। এর পরিবর্তে উচিত এসব দেশে স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করা। নির্দিষ্ট করে বললে বাল্টিক প্রজাতন্ত্রগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। কেননা তাদের ভৌগলিক অবস্থান রাশিয়ার লাগোয়া। পাশাপাশি এসব দেশে রুশভাষী মানুষ রয়েছে; যা ‘আগ্রাসন’ চালানোর প্রশ্নে ভ্লাদিমির পুতিনের অজুহাত হয়ে উঠবে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকায় ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের মাইকেল ও’হ্যানলন তাঁর লেখায় বাল্টিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতা ও উপস্থিতি বাড়ানোর পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেছেন। তাঁর ভাষ্য, বাল্টিক অঞ্চলে ১০ হাজারের মতো মার্কিন সেনা থাকা দরকার, যাতে থাকবে চার হাজার যুদ্ধ–সেনা (ও সহায়ক সেনা), বিমানের একটি ব্রিগেড থাকবে এবং দুই থেকে তিনটি যুদ্ধিবিমানের স্কোয়াড্রন থাকতে হবে। এমনটা করা হলে তা যথেষ্ট বলেই মত দিয়েছেন মাইকেল ও’হ্যানলন। এমন পদক্ষেপও চীনের অবশ্যম্ভাবী ‘খবরদারি’ ঠেকানোর পক্ষে যথেষ্ট প্রতিরোধী ঢাল হয়ে উঠবে না ঠিকই, তবে ওইসব ছোট গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তিশালী করে তুলবে।

সবচেয়ে বড় পরিহাস হলো, রাশিয়া তার সীমানায় আর একটিও ন্যাটোভুক্ত দেশ দেখতে চায় না, এ কথা বলে ইউক্রেনে হামলা চালানোকে ন্যায্যতা দিতে সচেষ্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর এখন রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটোর উপস্থিতি তিন গুণ বাড়বে—৩১৬ মাইল থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৯৫২ মাইলে। এ জন্য পুতিন নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দোষারোপ করার মতো পাবেন না।

ভালো করছেন, ভ্ল্যাদ। ন্যাটো শক্তিশালী করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এ জন্য যতটা যা মূল্য দিতে হলো, তা ইউক্রেনীয়দের দুঃখ ও দুর্দশা। তবে তা (ন্যাটোর শক্তিশালী হওয়ার তুলনায়) খুব বেশি নয়।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: হাসান ইমাম।

সূত্র প্রথম আলো।
তারিখ: মে ২৩, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ