Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এ পি জে কালাম – অনেক কথার বাড়ি – ৫ ( সংগ্রহিত)

Share on Facebook

07/28

বন্ধুরা, প্রথমত ধন্যবাদ জানাই আমাকে এখানে কিছু বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাই যারা আমাকে এখানে নিয়ে এসে তোমাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিল। বাংলাদেশকে আমার দুটি কারণে অনেক ভালো লাগে। এক, এ দেশের বিস্তৃত জলরাশি। আজও যখন দিল্লি থেকে উড়ে এলাম তখন দেখছিলাম দেশজুড়ে কত নদী! আসলে তোমাদের নাম হওয়া উচিত ‘ওয়াটার পিপল’। তোমরা খুব সৌভাগ্যবান। আর দুই, এ দেশের তৈরি পোশাকশিল্প। তোমরা নিজেরাও হয়তো জানো না তৈরি পোশাকশিল্পে তোমরা কতটা উন্নত। আর হ্যাঁ, অবশ্যই আমার ভালো লাগার একটা বড় অংশজুড়ে আছ তোমরা, এ দেশের তরুণ যুবসমাজ। এ দেশের জনসংখ্যা অনেক হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবে এর অর্ধেকই তোমরা। তোমাদের ধ্যানধারণা, চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মের ওপরই দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে। বাংলাদেশেরও উচিত তোমাদের শক্তিমত্তার কথা মাথায় রেখে তোমাদের যথাযথ ব্যবহার করা। আর তাই আমার একটি পরামর্শ রইল তোমাদের প্রতি। এখন থেকে সবকিছুতে দেশের কথা মাথায় রাখবে। কোনো স্বপ্ন দেখলে নিজের সঙ্গে বাংলাদেশকে নিয়েও দেখবে, কোনো চিন্তা করলে বাংলাদেশকে নিয়ে করবে আর কোনো কাজে মগ্ন হলে বাংলাদেশের জন্য করবে।
ভারতের তরুণদের সঙ্গে তোমাদের অনেক মিল আছে। যেমন মিল আছে দুই দেশের ইতিহাস থেকে শুরু করে শিল্প-সংস্কৃতি আর সম্পদে। অর্ধশত নদী আমাদের দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবহমান। বিশ্বের সব থেকে সুন্দর এবং সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনও এই দুই দেশজুড়ে রয়েছে। তাই এই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক অটুট। আমার ৮৩ বছরের জীবদ্দশায় দুই দশক ধরে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ তরুণের সংস্পর্শে এসেছি শুধু তাঁদের স্বপ্ন কী সেটা জানতে। তাই যখন তোমাদের কাছে আসার সুযোগ পেলাম, সে সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাইনি।
তোমাদের যখন পেলামই তখন আমার জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে মূলত চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আমি আজ আলোকপাত করব। সেগুলো হলো: জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ, জ্ঞান আহরণ, অনেক বড় সমস্যায় পড়লেও লক্ষ্য থেকে সরে না আসা এবং কোনো কাজে সাফল্য ও ব্যর্থতা দুটোকেই নেতৃত্বগুণে সামাল দিতে পারা।
প্রথমেই তোমাদের আমার একটা ছোট্ট গল্প শোনাতে চাই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমার এক স্কুলশিক্ষক ছিলেন শিব সুব্রমনিয়াম আয়ার, যাঁকে দেখলে ‘জ্ঞানের বিশুদ্ধতা’ কথাটার মানে বোঝা যায়। সেই শিক্ষক একদিন একটি পাখির ছবি এঁকেছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে শিখিয়েছিলেন পাখি কীভাবে আকাশে ওড়ে। বলেছিলেন, কালাম কখনো কি উড়তে পারবে এই পাখির মতো? সেই থেকে আমার আকাশে ওড়ার স্বপ্নের শুরু।
ঠিক উড়তে গেলে কী করতে হবে সেটা আমি বলব না। সেটা তোমরা নিজেরাই ঠিক করে নেবে। তবে আমি তোমাদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারি। কথাগুলো তোমরা আমার সঙ্গে বলো, ‘সব সময় জীবনের অনেক বড় লক্ষ্য রাখব। মনে রাখব ছোট লক্ষ্য অপরাধের সমান। আমি অব্যাহতভাবে জ্ঞান আহরণ করে যাব। সমস্যা সমাধানের অধিনায়ক হব। সমস্যার সমাধান করব। সমস্যাকে কখনো আমার ওপর চেপে বসতে দেব না। যত কঠিন সময়ই আসুক না কেন কখনোই হাল ছেড়ে দেব না। এভাবেই আমি একদিন উড়ব।’
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের জন্ম তামিলনাড়ুতে, ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবে ভূষিত। গত বছর ঢাকা সফরে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এই বক্তব্য দেন।
সবাইকে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। সর্বদা চিন্তা করবে, আমাকে যেন মানুষ মনে রাখে। কিন্তু মানুষ কেন মনে রাখবে, সেটি ঠিক করতে হবে। এই যে চারপাশে এত আলো দেখছ, বাতি দেখছ, বলো তো এই বাতি দেখলেই প্রথমে কার কথা মনে পড়ে? ঠিক, টমাস আলভা এডিসন। এই যে যোগাযোগের জন্য টেলিফোন, এটা দেখলে কার কথা মনে পড়ে? আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। একইভাবে এই বাংলাদেশের কথা চিন্তা করলে প্রথমেই কার কথা মাথায় আসে বলো তো? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সবাই তাঁকে মনে রেখেছে। এভাবে সবাইকে স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। এমন কিছু করে যাবে, যাতে তোমার অনুপস্থিতিতেও পৃথিবী তোমাকে মনে রাখে।
ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা যখন এল তখন বলি, সফল হলেও প্রথমে কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম। আর ওই ব্যর্থতাই আমাকে সফল হতে উজ্জীবিত করেছিল। চ্যালেঞ্জ হলো এই ব্যর্থতাকে দূর করে সফল হওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন নেতৃত্বগুণের। সবার মধ্যে যে গুণটি অবশ্যই থাকা প্রয়োজন। মনে রাখবে, একজন যোগ্য নেতার একটি সুনির্দিষ্ট গন্তব্য, পরিকল্পনা ও যেকোনো অবস্থা সঠিকভাবে উপলব্ধি করার ক্ষমতা থাকতে হবে। তাঁকে হতে হবে সৎ ও উদার মনের। সফলতাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে কিন্তু ব্যর্থতাকে নিজের করে নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় হতে হবে।
সমস্যাকে কখনো এড়িয়ে যেতে চাইবে না। বরং সমস্যা এলে তার মুখোমুখি দঁাড়াবে। মনে রাখবে, সমস্যাবিহীন সাফল্যে কোনো আনন্দ নেই। সব সমস্যার সমাধান আছেই। জ্ঞান আহরণ থেকে কখনো বিরত থেকো না। কারণ, এই জ্ঞানই তোমাকে মহানুভব করে তুলবে। অন্য গুণাবলি অর্জনে সাহায্য করবে। নিজেকে অনন্যসাধারণ করে তোলার চেষ্টা করো। মনে রাখবে, তোমার চারপাশের পৃথিবী সর্বদা তোমাকে সাধারণের কাতারে নিয়ে আসার চেষ্টায় লিপ্ত। হতাশ না হয়ে নিজেকে স্বপ্নপূরণের কতটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারছ সেদিকে নজর রাখবে। কখনোই সাহস হারাবে না। নিজের একটি দিনও যাতে বৃথা মনে না হয় সে চেষ্টা করো।
তোমরা সবাই ভালো থাকবে। সবাই কোনো না কোনো দিন উড়বে। তোমাদের সবার জন্য শুভকামনা।
মূল বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ অবলম্বনে লিখেছেন তৌশিকুর রহমান।

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ