Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এলিভেন মিনিটস-পাওলো কোয়েলহো-পর্ব-পনেরো (১৫)

Share on Facebook

অনুবাদে: ইললু।

(১৫)

তার নিরাসক্ত ভাব দেখে কিছুটা হতাশ হলো রালফ,অনুভুতি,উচ্ছাস একপাশে সরিয়ে রেখে বললো,
“আমার পড়া,গবেষনায় সংগ্রহ করা কিছু কাগজপত্র”।
“যাক যন্ত্রনার আলোচনায় আসা যাক,আমি জানতে চাই যন্ত্রনা সমন্ধে,আমার সেদিনের অনুভুতি”।

“গতকাল তুমি যন্ত্রনায় খুঁজে পেয়েছ আনন্দ,আজ যন্ত্রনা তোমাকে নিয়ে গিয়েছে শান্তির রাজ্যে।তবে ওর দাস হয়ে পড়ো না,নেশাটা আটকে রাখবে তোমাকে,ফেরার সূযোগ হবে না হয়তো আর। যন্ত্রনা লুকানো আমাদের জীবনে,আমাদের প্রতিদিনের ত্যাগে,আমরা ভালবাসাকে দোষী করি আমাদের ব্যার্থতার জন্যে,কিন্ত আসলে তা তো নয়। যন্ত্রনা তার আসল চেহারায় বড়ই ভয়ঙ্কর,কিন্ত ওটাই মাতিয়ে রাখে তোমাকে নেশায় যখন আসে কৃচ্ছসাধণ,উৎসর্গের পোষাক পরে।যন্ত্রনা নিয়ে মানুষের খেলার ইতিহাসটা বেশ পুরোনো,আমরা সবসময় খেলা করে যাচ্ছি যন্ত্রনা নিয়ে।

“আমি বিশ্বাস করি না,কেউ যন্ত্রনা খুজে নেয়,জীবনে”।
“তুমি যদি মনে কর,যন্ত্রনা ছাড়া জীবন আছে,তবে অনেকটা পথ এগিয়েছ, অবশ্য ভেব না অন্যান্য কেউ তোমাকে বুঝতে পারবে। এটা সত্যি কথা কেউ যন্ত্রনা খোঁজে না,মানুষ উৎসর্গ করে,বলিদান করে,খুঁজে নিতে চায় স্বর্গীয় যোগ। যাকগে মনে রেখ পৃথিবী শুধু আনন্দ কেন্দ্রিক না, ওখানে আছে মানুষের স্বর্গিয় যোগ খোঁজের আত্মত্যাগের একাত্মতা।

মানুষ যখন যুদ্ধে যায়,সে কি মানুষ মারতে যায়? না কি যায় তার দেশের স্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করতে।কোন স্ত্রী কি তার স্বামীকে কখনও বলে দেয় কতখানি সুখী বা অসুখী,সে? না সে দেখাতে চায় তার আনুগত্য,আত্মত্যাগ স্বামীকে খুশী করার জন্যে। স্বামীর কথাটাই ধরা যাক,সে কি চাকরী করতে বা কাজে যায় আত্মসুখের জন্য,না তার ঘাম আর চোখের জলে লুকানো পরিবারের জন্যে আত্মত্যাগ?

এ ভাবেই চলেঃ
সন্তানের আত্মত্যাগ পিতামাতার জন্যে,পিতামাতার বদলানো জীবনধরণ শুধু সন্তানের জন্যে,যন্ত্রনা আর বেদনায় খুঁজে পাওয়া যায় ভালবাসা”।
“থাম,থাম”।
রালফ থেমে গেল,ওটাই ছিল থেমে যাওয়ার যথাযথ সময়।একটার পর একটা ছবি দেখালো মারিয়াকে।কিছু মানুষের ছবি,কিছু লেখা,প্রথম দিকে তেমন একটা বোঝা না গেলেও,ভাবে ভঙ্গীতে অনেক কিছুই বুঝলো সে।

“হ্যা,যা বলছিলাম,বেশ্যাবৃত্তির ইতিহাস কিন্ত একটা না দুটো।প্রথমটা তো তোমার জানাই, যে কোন কারণেই হউক,সুন্দরী মেয়েরা অনেক সময় বেশ্যাবৃত্তি খুঁজে নেয়,জীবনযাত্রার একমাত্র উপায় হিসাবে।অবশ্য এমন না যে সেখানেই তাদের জীবন কথার ইতি,এদের মাঝে কেউ কেউ পরবর্তীতে দেশ শাসনও করেছে,যেমন রোমের মেসালিনা,কেউ আবার ইতিহাসের নামকরা চরিত্র যেমন মাদাম ডু বোভারী,কেউ কেউ ছুটে গেছে অভিযোগ দূর্যোগের দিকে যেমন গুপ্তচর মাতা হারি।অবশ্য বেশীর ভাগ মুখগুলোই খুঁজে পায় না,সৌভাগ্যের আলো,তারা সেই পুরোনো গ্রামের মেয়ে-ছুটে যায় খ্যাতির পেছনে,না হয় জীবনটা কাটায় একটা স্বামী, খোঁজার অভিযানে।তবে সময়ে বাস্তব এসে তাদের দেখিয়ে দেয় জীবনের আসল চেহারাটা, তারা বুঝতে পারে জীবনের ভুলটা-বুঝতে পারে কোন সময় কোন কিছুই ছিল না তাদের আয়ত্বে।

শিল্পীরা ছবি আঁকছে,মূর্তি তৈরী করছে,গল্প লিখছে তিন হাজার বছরেরও বেশি হবে,ঠিক
একই ভাবে দেহবৃত্তির ব্যাবসাও চলে আসা একই সময় থেকে।তুমি কি বিস্তারিত জানতে চাও”?
মাথা নাড়লো মারিয়া।জানা দরকার ব্যাথা,যন্ত্রনার কথা,বুঝতে পারলো কোন কিছু একটা অশুভ ছেড়ে গেছে তার শরীর।

“পতিতাদের কথা বলা হয়েছে অনেক নামকরা সাহিত্যিকদের কথায়,মিশরীয় হাইরোগ্লিফসে,
সুমেরিয়ান সাহিত্যে,এমন কি খুঁজে পাওয়া যায় ধর্মগ্রন্থেও-পুরোনো,নতুন টেষ্টামেন্টে।তবে এটা সাংগঠনিক আরম্ভ হয়েছে খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দে,যখন সোলোন নামে এক গ্রীক রাজনীতিবিদ প্রতিষ্ঠা করলো,রাষ্ট্রীয় তত্বাবধানে প্রথম বেশ্যালয়,আয়কর বসানো হলো শরীরের ব্যাবসায়।
এথেনিয়ান ব্যাবসায়ীরা বেশ খুশী,কেন না কদিন আগেই ওটা ছিল বেআইনী।ভাগ করে দেয়া হলো পতিতাদের মান মর্যাদা,তাদের আয়কর হিসেবে।

সবচেয়ে সস্তাদরের যারা,তারা পর্নিয়া,ক্রীতদাস বাড়ীর মালিকের কেনা মেয়েরা,তারপর প্রিপাটিটিকা যারা রাস্তার থেকে যোগাড় করে আনতো খদ্দের।এবার বলা যাক,
উঁচু শ্রেনীর,সবচেয়ে দামী পতিতা-হেটাএরাদের কথা,খদ্দেরদের সাথে তারা যেত রেস্তোরায়,
ভ্রমন সঙ্গী হিসেবে,এমন কি তারা জড়িত ছিল রাজনীতিতেও,তাদের খদ্দেরদের সময় মত উপদেশও দিত।বুঝতে পারছ,কিছুই বদলায়নি আজও,এমন কি যৌনসঙ্গমে রোগের গল্পটাও…”।

শীতের বড্ড ভঁয় মারিয়ার,আগুনের উত্তাপ তার মন শরীরকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো বর্তমানের আকাশটায়।পৃথিবীটা থেমে আছে,অনেক কিছুই ঘটে যাচ্ছে বারে বারে,অনেক কিছুই বদলানো, তবু মানুষ কোনদিনই হয়তো দেহ ব্যাবসাকে সম্মানের চোখে দেখবে না।
“দেখে মনে হচ্ছে তোমার খুব একটা কৌতুহল নেই আমার কথায়”।
রালফের দিকে তাকিয়ে মারিয়া ভাবছিল এই কি সেই মানুষটা যাকে মনটা সপে দিতে চেয়েছে,হেঁটে যেতে চেয়েছে তার হাত ধরে আলো খোঁজার দেশটায়,কিছুটা সন্দিহান সে,সেটা হয়তো ঠিক হবে,না।
“আমি জানতে চাই না যা আমার জানা,তুমিই না বললে আরেকটা ইতিহাস আছে,সেটা বরং বল আমাকে”।

যেন সমাধিস্থ অবস্থা থেকে জেগে ওঠা মনটা তার,বেড়ে গেছে আগ্রহটা জানার।
দেহবৃত্তি কি জড়ানো আছে পূন্যতায়?শরীরবৃত্তিতে কি খুঁজে পাওয়া যায় স্বর্গযোগ?
“এটা গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডোটাসের লেখা ব্যাবিলোনিয়ার উদ্ধৃতিঃএখানে অদ্ভুত একটা সংষ্কৃতি আছে,সুমেরিয়ার মেয়েদের জন্মের পর অন্তত একবার দেবীর ইসতার মন্দিরে গিয়ে অজানা আগুন্তকের সাথে যৌনসঙ্গম করতে হয়।ওটা ছিল আতিথেয়তার নির্দশন,আর তার মানব দেহের মূল্যটা”।মারিয়া ভাবলো ঐ দেবী সমন্ধে পরে কিছুটা জেনে নেবে,হয়তো ফিরে পাবে আত্মসম্মানের কিছুটা।

“দেবী ইসতারের প্রভাব তখন সারা মধ্যপ্রাচে,সার্ডিনিয়া,সিসিলী,ওখানকার নানান বন্দরে।
রোমান সাম্রাজ্যের দেবী ভেসতা,তার প্রতি উৎসর্গ করা হতো সতীত্ব না হয় সম্পূর্ন সর্মপন।মন্দিরের আগুন জ্বালিয়ে দেবদাসীদের,যুবক বা রাজাদের যৌনসঙ্গমের আলোকে দেবীকে সম্মান দেখানোর প্রচলন ছিল।দেবীকে উৎসর্গ করে গান গাওয়া হতো কামুকসুরে,
পৌছানো এক সমাধিস্থ অবস্থায় যেখানে যোগাযোগ হয় সেই বিশেষ শক্তির সাথে,শরীরের গানে”।

রালফ হার্ট একটা প্রাচীন ধর্মশাস্ত্রের লেখার ফটোকপি বের করলো,নীচে লেখা জার্মান ভাষায় অনুবাদ।সেখান থেকে ধীরে ধীরে পড়া আরম্ভ করলোঃ
“আমি যখন বসি থাকি সরাই এর দরজায়,
আমি দেবী ইসতার,
আমি বেশ্যা এক,আমিই মা,আমিই দেবী আবার,
আমি সেই যা মানুষ ভাবে জীবন শক্তি,
আবার বলতে পার আমিই মরনের দেশটা।
আমিই আইন ছড়ানো সারা বিশ্বব্রক্ষান্ডে,
আমিই ব্যাভিচার মানুষের মনের,
আমি সেই যা খুঁজছো তুমি,
যা পেয়েছ তুমি,
আমি তাই ছড়ানো তোমার মন মাঝে,
কুড়িয়ে নাও,সাজিয়ে রাখ আমাকে তোমার মন আধারে”।

ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো মারিয়া,রালফ হার্ট এর মনে হলো,ফিরে আসছে মারিয়ার অন্তরের আলোটা।হয়তো ভাল হবে ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করা,ফিরে আসুক ভালবাসার দেশটা,মারিয়ার কাছে।

জানা নেই কারও কেন থেমে গেল পূন্যতার দেহবৃত্তি,অন্তত সেটা দেখা যায় নি শ দুয়েক বছরে।হয়তো হতে পারে অসুখবিসুখ,হতে পারে ধর্মের নতুন নিয়মকানুন।যাই হউক হারিয়ে গেছে,শরীরে বিধাতা খোঁজার আকাশটা,আর ফিরে আসবে না সেটা কোনদিন।এখন বদলে গেছে দেহবৃত্তির ব্যাবসাটা অনেক,ওটা একটা সামাজিক কলংঙ্কার,খুব সহজেই মেয়েদের বেশ্যা বলে ডাকা হয়।
“কালকে তুমি আসতে পারবে,কোপাকাবানায়”,
রালফ ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি,কেন ঐ প্রশ্নটা ছিল মারিয়ার,তবুও মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।

মারিয়ার ডাইরীর লেখা,খালিপায়ে জেনেভায়, জার্ডিন এনগলাইসে হেঁটে যাওয়ার পরঃ

“পবিত্র হোক,না হয় হোক না অপবিত্র,কিছুই যায় আসে না,আমি ঘৃনা করি আমার এই কাজ।ওটা ধবংস করছে আমার মনের আলো,হারিয়ে ফেলছি আমি নিজেকে।এ এক অদ্ভুত অনুভুতি যা শিখিয়ে দেয় যন্ত্রনারও একটা পুরস্কার আছে,আর টাকা পয়সা প্রতিপত্তিতে কেনা যায় সবকিছু।
আমাদের চারপাশে সুখী নেই কেউ,খদ্দেররা ভাবে শরীরটা দেয়ার জন্যে এত টাকাপয়সা কেন?
মেয়েরা যখন দেহ বিক্রি করে,তার সাথে মিলিয়ে দিতে চায় স্নেহ ভালবাসা,আনন্দ,
কিন্ত তা হয় না,শুধু ভেঙ্গে যায় মনটা।আমি অনেক যুদ্ধ করেছি নিজের সাথে
এই কথাগুলো বলার আগে জানা ছিল না,কত অসুখী আমি।আমি তো সবসময় বলতে পারিনা,সব কথাগুলো আগের মত,চারপাশের এগুলো সব নাটক,আমার জীবনের নতুন একটা পর্ব।ভুলে যেতে চাই আমি এ পর্বটা,ভালবাসতে চাই- আমার চাই শুধু একটুকু ভালবাসা।
জীবনটা খুবই ছোট,না হয় হয়তো বা খুবই বড় জানা নেই আমার,আমি সাজিয়ে দিতে চাই আমার জীবনটাকে বেঁচে থাকায়”।

০০০০০০

এটা রালফের বাড়ী না,এটা আমার বাড়ীও না,এটা ব্রাজিল না,সুইজারল্যান্ডও না,এটা একটা
হোটেল,পৃথিবীর যে কোন জায়গায় হতে পারে সেটা,সাজিয়ে দেয়া যে কোন হোটেলের রুমের
মত,কিন্ত তার সাথে আমার যোগাযোগ কোথায়।

এটা নদী ছোঁয়া সেই হোটেল রুম না,যা মনে করিয়ে দেয় আমাকে যন্ত্রনার আকাশ,
যৌনসুখের চরম।এটা তাকিয়ে আছে সান্তিয়াগোর দিকে,তীর্থ যাওয়ার পথে,প্রায়শ্চিত্রে না সাধনায়,এখানে মানুষ একে অন্যতে খুজে নেয় লুকোনো আলোটা,বন্ধুত্ব,ভালবাসা।বৃষ্টি পড়ছে,রাতের এ সময়টায় নিশ্চয় কেউ হাঁটছে না ওখানে,যদিও মানুষের হেঁটে যাওয়া যুগের পর যুগ-হয়তো ক্লান্ত পথটাও।
“আলোটা নিভিয়ে দাও।পর্দাটা ফেলে দাও”।
সে বললো রালফকে কাপড়চোপড় খুলে ফেলতে,নিজেও খুলে ফেললো তার পোষাক।অন্ধকারের অন্ধত্ব যতই প্রচন্ডতা নিয়েই আসুক না কেন,কোন সময় সেটা ছাপিয়ে যেতে পারে না আলোর উচ্ছাস।তার চোখটা কিছুটা সামলে নিয়ে বেশ বুঝতে পারছিল রালফের শরীরের চেহারাটা,কোন এক জায়গা থেকে ছুটে আসা আলোর ছটায়।এর আগের দেখায় তার শরীরের কিছুটা অংশ ছিল অনাবৃত।

দুটো রুমাল সাবান পানিতে ধুয়ে,বেশ নিংড়ে নিল যেন লুকিয়ে না থাকে সাবানের ছেড়ে আসা কোন সুবাস।একটা রুমাল দিয়ে নিজের চোখদুটো বেঁধে নিয়ে বললো রালফকেও,একটু ইতস্তত হয়ে মন্তব্য করলো সে জানে অজানা নয় তার কাছে নরকের রাজ্যটা,মারিয়ার কাছে।

মারিয়া বললো,ওটা তার ভুল ধারণা,সেও খুঁজছে অন্ধকারের নিস্তবদ্ধতা।তবে এখন তার পালা রালফকে কিছু শেখানোর,সে যেমন শিখেছে যন্ত্রনার অন্য চেহারাটা।আত্মসর্মপন করলো রালফ,চোখে বেঁধে নিল রুমালটা।মারিয়াও বেঁধে নিল রুমাল চোখে,আলো নেই কোথাও,শুধু অন্ধকার,কাল একটা পর্দায় ঢাকা সারা পৃথিবীটা,বিছানায়ও গেল তারা হাত ধরা হাতে, নির্ভরশীলতার ছবি একটা।

“না,না শুয়ে পড়ো না,যে ভাবে বসে ছিলাম,ঠিক সে ভাবেই বসে থাক,সামনাসামনি,
একটু কাছে আরও,হাঁটুটা ছুয়ে যাওয়া হাঁটুতে”।
এটা তার পুরোনো একটা স্বপ্ন,তবে সময় হয়নি,সূযোগটাও হয়নি।ভালবাসার প্রথম চেহারার মানুষটার সাথে না,যে পুরুষটা যোনীদ্বার ভেদ করেছে প্রথম।ঐ আরবটার সাথেও না,যার চাওয়ার আকাশটা ছিল পাওয়ার জগত ছাড়ানো,কিন্ত ১০০০ ফ্রাঙ্কে ওর চেয়ে বেশী তার প্রাপ্য নয়।
পুরুষের দল,যারা খেলা করে তার শরীরটা নিয়ে,তবে তাদের আসা যাওয়া ঐ দুপায়ের মাঝে,যৌনবিহারে,হয়তো নিজের কথা ভেবে,কোন কোন সময় হয়তো তারা কি ভাবে তার কথা,হয়তো না-তারা তো ব্যাস্ত,অযথা বলে যায় এলোমেলো কথা শুধু পুরুষত্ব প্রমানের জন্য।

ডাইরীর কথা ভাবছিল মারিয়া,কিন্ত যথেষ্ট লেখা হয়েছে,আর কটা সপ্তাহ তারপর জেনেভা পর্বের শেষ,এই মানুষটার কাছে নিজেকে সর্মপন করছে,ওর মাঝে লূকোনো তার ভালবাসার আলোর জগতটা।নিষিব্ধ ফলটা ছিল না পাপ,যা মানবজাতির স্বর্গ থেকে বের হয়ে আসার কারণ,ছিল ইভের বিশ্বাস শুধু তার না,এডামেরও স্বাদ নেয়া দরকার ঐ ফলটার।ইভের ভঁয় ছিল একা হেঁটে যাওয়া অজানা পথটায়-একজন সঙ্গী দরকার ছিল তার।অনেক অভিজ্ঞতায় আছে জীবনে যা শুধু একাই অনুভব করা যায়।সমুদ্রে ভঁয় নেই আমাদের যখন ঝাপিয়ে পড়ি আমরা স্বইচ্ছায়,ভঁয় পঙ্গু করে দেয় মানুষের মনোবল।এটা বুঝতে গিয়ে মানুষ ছুটে যায় নরকের দেশটায়।ভালবাস,ভালবাসতে শিখ,ভালবাসা তো আধিপত্য নয়,কেড়ে নেয়া নয় অন্যের স্বাধীনতা।

আমি এই মানুষটাকে ভালবাসি,ভালবাসি আমার স্বাধীনতা-তার ভালবাসা আমাকে নিয়ে যায় মুক্ত এক আকাশে,কোন বাঁধন নেই,সাজানো কোন টানাপোড়েন নেই,শুধু ভালবাসায় ভালবাসা।বিশ্বাস করতে চাই একবার,দুবার,হাজার হাজার বার,আমার মনের জানা সুর এটা।
মারিয়া ভাবছিল কাজের অন্যান্য দেহ ব্যাবসায়ীদের কথা,ভাবছিল তার মা বাবা,বন্ধুদের কথা।সবাই বিশ্বাস করে এগার মিনিটের উচ্ছাসে পুরুষদের কামনার সমাপ্তি,আর সেটার জন্যে তাদের কোন কার্পন্য নেই,টাকা পয়সা উচ্ছাস,জীবনের অজানা স্রোতে ভেসে যাওয়ায়।কিন্ত ওটা কি সত্যি,অবশ্যই না,পুরুষের মাঝেই তো লুকোনো তার মনের মেয়েমানুষটাও,তাই সবাই খুঁজে নেয় নিজেকে আরেকজনের মাঝে।

মারিয়া ভাবছিল,তার মার জীবনটাও কি একই ধরণের,মা ও কি খেলা করে গেছে সারাটা জীবনশরীরের খেলায়,শুধু ভান করে গেছে চরম যৌনসুখের?ব্রাজিলের মানুষের কাছে কি শরীর,যৌনতা একটা অপবিত্র,নিষিদ্ধ জগত?ভাবছিল মা,বন্ধুদের কথা,হয়তো জানা নেই তাদের ভালবাসার আনন্দ,স্বাধীনতা-জীবনের রহস্যগুলোয় তাদের চোখটা হারিয়ে যাওয়া অন্ধকারে,জানা নেই তাদের চাওয়াগুলো।

ভুলে গেল তার দেহ ব্যাবসার কথা,মা,সঙ্গীদের গল্প,মারিয়া এক অচেনা অন্ধকার রাজ্যে।সারাটা বিকাল এলোমেলো ভাবে ঘুরে বেড়ালো,কি উপহার দেয়া যায় মানুষটাকে,
যে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে তাকে আত্মসম্মানের জগতটায়,হাত ধরে নিয়ে গেছে সুখের দেশটায়-যন্ত্রনার অরাজকতা নয়।
“আমি নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই-নিয়ে যেতে চাই তাকে নতুন একটা আনন্দের আকাশে, গতকাল ও আমাকে শিখিয়েছে যন্ত্রনার অন্ধকার,বেশ্যাবৃত্তির পবিত্রতা,অপবিত্রতার গল্পকথা। অদ্ভুত একটা উৎসাহ ছিল তার শেখানোর মাঝে,ওর হাত ধরে আমি ছুটে যেতে চাই আলোর দেশে।জানতে চাই কি ভাবে খোঁজা যায় শরীরের আনন্দ কামনার ছন্দে,শুধু মনটা ছুঁয়ে যাওয়া না,কি ভাবে শরীর খেলায় যৌনসঙ্গমের খেলায় আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় সঙ্গীর সাথে,কি ভাবে লিঙ্গযোগে খুঁজে পাওয়া যায় চরম যৌনসুখ”।

হাত বাড়িয়ে দিল মারিয়া,রালফকেও বললো হাতটা বাড়িয়ে দিতে।ফিসফিস করে বললো,এ রাতটায়,অজানা এ দেশটায়,সে আবিষ্কার হতে চায় নতুন ভাবে রালফ হার্টের হাতে,ভেঙ্গে দিতে চায় তাদের মাঝের অজানা প্রাচীরটা।বললো এলোমেলো হতে তার ছোঁয়ায়,শরীর জানে শরীরের কথা,আর সময়ে মনের ছোঁয়ায় সেখানে ছুটে আসে ভালবাসার বাতাসটা।একে অন্যকে ছোঁয়া আরম্ভ করলো,কোন এক অজানা জানায় তারা হারিয়ে গেল একে অন্যের যৌনতার সুরে।

সূত্রঃ চতুর্মাত্রিক।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২২, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ