পঞ্চম অংশ
অনুবাদে: ইললু।
বেশ সকাল সকাল উঠে মারিয়া গেল নাস্তা খেতে পুরোনো দোকানটায়,লেকের ধারে হেঁটে বেড়াতে বেড়ালো,দেখলো একটা কিছু নিয়ে চলছে বিদেশীদের প্রতিবাদ।কুকুর নিয়ে বেড়াচ্ছিল এক মহিলা,জানলো তার কাছে প্রতিবাদ করছে কুর্দরা,কোন ভনিতা না করেই মারিয়া জানতে চাইলো,
“কোথা থেকে এসেছে কুর্দরা”?
মহিলার ও জানা ছিল না কোথা থেকে আসে কুর্দরা।পৃথিবীটা এ ধরণেরই, সবাই ভাব দেখায় সবকিছুই জানে,প্রশ্ন করলে তাদের জ্ঞানের শূন্যতা খুব সহজেই ধরা পড়ে যায়। কফির দোকানে ইন্টারনেটে দেখলো,কুর্দিস্থানের লোকজন,যার ভৌগোলিক কোন অস্তিস্ত নেই,তুরস্ক আর ইরাকের মাঝের কিছু অংশ।
“আমি ও ছিলাম ঐ মহিলার মত,আমারও আছে না জেনে সব জানার ভাব করা।তবে আরব লোকটার সামনে সাহস করে বলতে পেরেছি,কোকাকোলা আর পেপসির পার্থক্যটাই আমার জ্ঞানের পরিধি।লোকটা কি একটুকু ও অবাক হয়নি?কি ধারণা করেছে,সে?আমার সরলতায় কি অবাক হওয়া ছিল তার? যখনই চেষ্টা করি জ্ঞানের বহর প্রকাশ করতে,নিজেকে নিজেই বিপদেই ফেলি আমি।যাকগে,অনেক হলো অযথার চিন্তাধারা”!
মডেল এজেন্সীর কথা ভাবছিল সে,তারা কি জানতো আরব লোকটার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল?তাই যদি তা হলে সে আবার পড়ে যাবে এই অজানা চক্রে,হয়তো এমনও হতে পারে তারা তাকে সত্যিই কাজ যোগাড় করে দিতে চেয়েছিল।
যাই হউক না কেন,মারিয়ার মনে তখন কোন হতাশা ছিল না আর,চার পাশেই তো যন্ত্রনার রাজ্য,প্রচন্ড ঠান্ডায়-কুর্দদের প্রতিবাদ,বেঁচে থাকার তাগিদে ঘড়ির সময়ে কাজে ছুটে যাওয়া লোকজন,কটা টাকার জন্যে বসে থাকা ভিখারীর দল।সে তখন আর একা নয়,তার পাশে অদৃশ্য এক অজানা অচেনা এক শক্তি।
পাশের চেহারাটা অনেকটা চেনা তার কাছে,দেখতে বেশ কিছুটা, ‘মেরী’,যীশুর মা।হেসে বললো মুখটা,সবকিছু সহজ মনে হলেও আসলে তা নয়,সে যেন সর্তক থাকার চেষ্টা করে।অযাচিত উপদেশ,বিশ্বাস হয় না,কিই বা ষড়যন্ত্র অপেক্ষা করে থাকতে পারে তার জন্যে।এটা নতুন শিখেছে সে,১০০০ ফ্রাংক,শুধু ঘন্টা খানেক তার দু পায়ের মাঝে যৌনবিহারের জন্যে।তাকে ঠিক করে নিতে হবে ১০০০ ফ্রাংক জোগাড় করে ফিরে যাবে জন্মস্থানে,নাকি আরও কিছু টাকাপয়সা নিয়ে পছন্দের পোশাকে,খুঁজে যাবে তার স্বপ্নের রাজ্য।
অদৃশ্য চেহারাটা তাকে মনে করিয়ে দিল,সব কিছু অত সহজ নয়,মারিয়া তাকে বললো অযথা বিরক্ত না করতে,কতগুলো বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার তার।
তাকে ভেবে চিনতে ঠিক করতে হবে,ব্রাজিলে যাওয়াটাই ঠিক, কি না।
তবে ফিরে গেলে স্কুলের বন্ধুরা,যারা ছোট্ট শহরটা ছেড়ে কোনদিন বের হয়নি,বলবে চাকরী থেকে বরখাস্ত হয়ে ফিরে গেছে সে,কোনদিন কোন প্রতিভাই ছিল না তার।
মা এর মনটাও খারাপ হবে,কথামত কোনদিনই পেল না মাসে মাসের টাকাটা,যদিও অনেকবার চিঠিতে লিখতে মারিয়া সংকোচ করেনি টাকা পাঠাচ্ছে সে,হয়তো চুরি যাচ্ছে টাকাগুলো কোথাও।মারিয়ার বাবা হয়তো চোখে মুখে মন্তব্য করছে, ‘কি বলেচ্ছিলাম’; ফিরে গিয়ে আবার কাজ আরম্ভ করবে পুরোনো দোকানটায়,বিয়ে করবে মালিকটাকে।হারিয়ে যাবে প্লেনে করে যাওয়া পনীর খেয়ে আসা,ফরাসী ভাষা শেখা, বরফের আঙ্গিনায় হেঁটে বেড়ানো,মেয়েটা ।
যদি অন্যভাবে চিন্তা করে,ঐ মদের গ্লাসগুলো,যার জন্যে তার পাওয়া ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক।সৌন্দর্য হারাতে তো সময় লাগে না,বাতাসের চেয়েও দ্রুতগতিতে হারায় সৌন্দর্য।নিঃসন্দেহে বছর খানেক কাজ করে টাকাপয়সা জোগাড় করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে সে,আর যা কিছু করবে তা তো তার নিজের নিয়মে,নিজের আইনে।সমস্যা একটাই,জানা নেই কি করা দরকার,আরম্ভ করবে কোথায়?মনে পড়ে তার ‘নাইট ক্লাবে’ কাজের সময়,একজন মেয়ে তাকে বলেছিল,রু ডে বার্নের কথা,এখানে এসে সুটকেস নামিয়ে রাখার আগেই ঐ নামটা শুনেছিল সে।
হেঁটে হেঁটে গেল জেনেভার বিদেশি পর্যটকদের সাহায্যের জন্যে ম্যাপের সাইনবোর্ডগুলোতে,
দাঁড়ানো একজনকে জিজ্ঞাসা করলো,রু ডে বার্নটা কোথায়।কিছুটা অবাক হয়েই জিজ্ঞাসা করলো লোকটা-রু ডে বার্ন রাস্তাটা,না রাজধানী রু ডে বার্নে যাওয়ার রাস্তা।“আমি খুঁজছি রু ডে বার্ন রাস্তাটা”,লোকটা ধরেই নিল এটা মজা করার কোন টিভির দৃশ্য হয়তো,বেশি কিছু না বলে সোজা হেঁটে চলে গেল।মিনিট পনের ধরে ম্যাপটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খুজে পেল,জায়গাটা।
মারিয়ার অদৃশ্য সঙ্গিনি,তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল,আদর্শের কথা,এটা এমন একটা পথ,শুধু ছুটে যাওয়াই যায়,ফিরে আসার উপায় নেই কোন।
নিজের মনকে উত্তর দিল মারিয়া,যদি ব্রাজিলে ফিরে যাওয়ার টাকা উর্পাজন করার ক্ষমতা আছে তার,তবে কেন সে পারবে না একই ভাবে উন্নতি করতে,তা ছাড়া ঐ সব মেয়েরা কোন সময়েই পথটা বেছে নেয় নি,ওটা তাদের বেঁচে থাকার উপায়।
‘এক সমুদ্র কান্নার জলে থাকি আমরা’,তার অদৃশ্য বন্ধুকে বললো মারিয়া।“স্বপ্ন দেখতে পারি আমরা সবাই,তবে পৃথিবীটা বড় নিষ্ঠুর,বেশ দুঃখের জায়গা একটা।কি বলার ইচ্ছা তোমার,মানুষে আমাকে ঘেন্না করবে,ছি ছি করবে?কেউ জানবে না কিছু,এটা আমার জীবনের আরেকটা পর্ব শুধু”।
একটা দুঃখের হাসি নিয়ে হারিয়ে গেল তার অদৃশ্য বন্ধু কোন এক অজানায়।
মারিয়া ফিরে গেল থিমপার্কে,টিকিট কিনে নিয়ে উঠে পড়লো রোলার কোষ্টারে,আর সকলের মতই চীৎকার করে গেল,জানে কোন ভঁয় নেই,ওটা শুধুই একটা খেলা।
রাতের খাবারটা খেল একটা জাপানী রেস্তোরায়,কি খেল জানা ছিল না তার,শুধু জানা এটুকুই সেটা বেশ দামী রেস্তোরাটা,সে এখন প্রাচুর্যতার আনন্দে মত্ত।কারও ফোনের জন্যে তাকে অপেক্ষা করতে হবে না,হিসেব করে পয়সা খরচ করতে হবে না।
মারিয়া এজেন্সীতে ফোন করে জানালো,তাদের সাক্ষাৎকারের কথা।তারা যদি সত্যিকারের মডেল এজেন্সী হয়,তবে নিশ্চয় ছবি পাঠাবে তারা।পাশের ব্রিজটা পার হয়ে ধীরে ধীরে ফিরে গেল তার ছোট্ট ঘরটায়।ঠিক করলো আর যাই হউক কোনদিন সে টিভি কিনবে না,তার অনেক সময় দরকার চিন্তা করার।
মারিয়ার ডাইরী থেকে নেয়া,সেই রাতে
(পাশে ছোট্ট একটা লেখা, ‘জানিনা কোনটা ঠিক’)
“আমি জানতে পারলাম পুরুষরা পয়সা খরচ করে মেয়েদের পেছনে,শুধু সুখ খুঁজে পাওয়ার আশায়।কেউ ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক খরচ করবে না,শুধু যৌনবিহারের চরম সুখের জন্য,ওরা সুখী হতে চায়,আমিও সুখী হতে চাই,কে না সুখী হতে চায়।কিই বা হারাবো আমি,যদি কটা দিনের জন্য আমি…..কথায় বা ভাষায় এটা হয়তো বলা যায় না …..আসল কথায় আসা যাক,আমার হারানোর কিই বা আছে,যদি কিছু দিনের জন্য আমি শরীর বিক্রি করি?
আদর্শ,সম্মান,মর্যাদা,ও গুলোতো কোনদিনই ছিল না আমার।আমি তো চাই নি এই পৃথিবীতে আসতে,খুঁজে পাই নি ভালবাসা।ভুল সিদ্ধান্তটাই যদি নিয়ে থাকি কে বলে দিবে কি করা উচিত আমার।
মারিয়া পরের দিন ফোন করলো মডেল এজেন্সী,ছবি চেয়ে পাঠালো তারা,ফ্যাশন শো এর দিন ক্ষনটা জানতে চাইলো। জানালো আরব ভদ্রলোক তাদের সাথে যোগাযোগ করবে,বুঝতে পারলো যা কিছু ঘটেছে এজেন্সীর লোকজনের অজান্তে।
লাইব্রেরীতে গিয়ে যৌনতা-সহবাস বই এর খোঁজা আরম্ভ করলো,যে কাজে সে নামছে,
কোন অভিজ্ঞতা নেই তার।যদিও একটা বছর কাজ করবে,তবুও জানা দরকার কি ভাবে আনন্দ দেওয়া সম্ভব গ্রাহকদের,চলা বার্তা ধরণ ধারণ এগুলো তো শেখা দরকার।
বেশ হতাশ হলো লাইব্রেরীয়ান যখন বললো,সরকারী লাইব্রেরীতে সে ধরণের বিশেষ বই তেমন একটা নেই,যা আছে সেগুলো দেখিয়ে দিল।তেমন কিছু ছিল না বইগুলোতে,লিঙ্গের ঝজুতা নিয়ে কথা,কি ভাবে যোনীদ্বারে ভেদ করতে হবে,সহবাসে অক্ষমতা,বন্ধ্যাত্ব,
সর্তকতা…..,এগুলোই।সহবাসে,যোনী ভেদে যে আনন্দ নেই না তা নয়,তবে তার মতে চরম সুখ পাওয়া যায় হস্তমৈথুনেই।
তবে আনন্দ খুঁজতে আসেনি সে,এসেছে কাজের দক্ষতা বাড়িয়ে নেয়ার তাগিদে।লাইব্রেরীয়ানকে ধন্যবাদ দিয়ে মারিয়া গেল একটা পোষাকের দোকানে,এমন একটা পোষাক খুঁজে নিল যাতে পুরুষের কামনা বাড়ানো যায়।শহরের ম্যাপটা দেখে খুঁজে বের করলো তার-রু ডে বার্ন।রাস্তাটার প্রথম দিকে কটা সস্তা ঘড়ির দোকান,আর শেষের দিকে ক্লাবগুলো যাদের কথা শুনেছে সে,দিনের বেলায় অবশ্য সবগুলোয় বন্ধ।কিছুটা লজ্জায় বেশ কিছুক্ষন মারিয়া লেকের ধারে অযথাই ঘুরে বেড়ালো,একটা পর্নোর দোকানে যেয়ে পত্রিকা ঘেটে দেখাও আরম্ভ করলো,কিছুটা জানা দরকার তার,এটাই তো তার কাজ।আলো হারানো অন্ধকারে মারিয়া গেল রু ডে বার্নে,বেছে নিল একটা ক্লাব,জড়ানো তার স্মৃতির সাথে ‘কোপাকাবানা’।
নিজের মনকে বললো,কোন কিছুই ঠিক করেনি সে,শুধু ঘুরে ফিরে দেখছে আর কিছু না,সুইজারল্যান্ডে আসার পর এত স্বাধীন নিজেকে কোনদিন মনে হয়নি তার।
ক্লাবের মালিককে দেখে বললো,“আমি কাজ খুঁজছি”,বারের পেছন দিকটায় গ্লাস ধুচ্ছিল মালিক।কটা টেবিল চেয়ার,দেয়ালে দেয়া কটা সোফা,এক পাশের মেঝেতে নাচের জায়গা।
“অনুমতি পত্র না থাকলে কোন কাজ হবে না”।
অনুমতি পত্র দেখার পর,প্রশ্ন ছিল
“কোন অভিজ্ঞতা আছে তোমার”?
ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না কি বলা উচিত,যদি “হ্যা” বলে ,জানতে চাইবে কোথায় কাজ করেছে, “না” বললে কিছু না বলে বিদায় করে দিবে।
“আমি একটা বই লিখছি”।
কেউ যেন শিখিয়ে দিল তাকে কথাটা,অদৃশ্য কোন একজন।বোঝাই যাচ্ছিল মালিকটা তাকে বিশ্বাস করেনি,
“কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে,এখানকার মেয়েদের সাথে কথা বলে নাও।প্রতিদিনই অন্ততঃ ছয়
সাতটা মেয়ে আসে,তাদের দেখলেই বুঝতে পারবে এটা তোমার জন্যে কিনা”।
উপদেশের কোন দরকার নেই তার,তা ছাড়া সে তো কোন কিছু ঠিক করেনি,
কিছু না বলে বারের অন্য দিকটায় গেল মারিয়া।
মেয়েরা আসা আরম্ভ করলো,মালিক কজনকে ডেকে বললো তার সাথে কথা বলার জন্যে,খুব একটা আগ্রহ দেখালো না কেউ,সে তো তাদের প্রতিদন্দী একজন।ব্রাজিলিয়ান গান বেজে চলছিল স্পীকারে,এক পাশে মেয়ে চীন বা থাইল্যান্ড এর এক মেয়ে,সাথে যেন বরফের দেশ থেকে নেমে আসা এক পুরুষ।ঘন্টা দুয়েক এ ভাবেই কাটলো,চুপচাপ বসে খাওয়া দাওয়া কিছু নেই,শুধু কটা সিগারেট,আর ভাবছিল, ‘কি জন্যে আসা আমার এখানে?কি করছি আমি,এখানে’।
এক ব্রাজিলিয়ান মেয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “কি করছো তুমি এখানে”?
বই লেখার কথাটা বলতে পারতো,বলতে পারতো কুর্দদের সাথে তার অভিজ্ঞতার কথা,জান মিরোর গল্প,ফেলিনির রেস্তোরার কথা,তবে সত্যিটাই বললো,
“জানি না কোথায় আরম্ভ করবো,তবে আমি যদি এই কাজটা করতে চাই”।
হাতের হুইস্কীতে চুমুক দিয়ে কিছুক্ষন ব্রাজিলের স্মৃতি টেনে আনলো মেয়েটা,বললো জেনেভাতে বেশ বড়সড় একটা আর্ন্তজাতিক সমাবেশ,তেমন একটা ব্যাবসা হয়তো হবে না সেদিন।
“শোন খুব সহজ কাজ এটা,তিনটা নিয়ম যদি মেনে চলতে পারো।
প্রথমঃপ্রেমে পড়বে না কোন সময়,যাদের সাথে কাজ করবে,যাদের কাছে শরীর বিক্রি করবে।
দ্বিতীয়ঃটাকা নেবে প্রথমেই,কারও কথা বিশ্বাস করবে না,কাউকে বিশ্বাস করবে না।
তৃতীয়ঃ কোন ড্রাগ(মাদক দ্রব্য) ব্যাবহার করো না”।
কিছুক্ষনের নিস্তব্ধতা,তারপর মেয়েটা বললো
“শোন আজকেই আরম্ভ করে দাও,যদি ফিরে যাও তোমার প্রথম ব্যাবসা ছাড়া,অনেক কিছু চিন্তা করবে হয়তো আর সাহস হবে না ফিরে আসার”।
গিয়েছিল একটা পরামর্শ নেয়ার জন্যে,কিন্ত যা পেল তা ছিল সামনে ছড়ানো হতাশা,যা মানুষকে ঠেলে দেয় অন্ধকারের অজানা গভীরে,ইচ্ছা ছিল না যেটা তার।
“ঠিক আছে,আজ রাতেই আমি আরম্ভ করবো”।
বলতে পারেনি,গতকালই আরম্ভ করেছে,দেহ ব্যাবসা।
মেয়েটা মালিককে সবকথা বললো,মিলান নামে ডাকা যাকে।
“তোমার কোন সুন্দর আন্ডারওয়ার আছে”?
আরব লোকটাকেও তাকে একই প্রশ্ন করেছিল,কোন রাখাঢাকা সোজাসুজি প্রশ্ন,হয়তো এ ব্যাবসার এটাই নিয়ম ।
“নীল রং এর প্যান্ট আমার।কোন ব্রা টা নেই”,কিছুটা গর্ব করেই বললো।
মিলান একটু রাগের সুরেই বললো,
“কালকে কাল প্যান্ট পরবে,ব্রা,মোজা কোনটা যেন বাদ না যায়।মনে রাখবে-কাপড় খোলাটাও এ ব্যাবসার একটা অংশ”।
কথা না বাড়িয়ে কাজ আরম্ভ করতে যাচ্ছে এমন একজনকে সব পদ্ধতিগুলো বুঝিয়ে বললো,মালিক।
“কোপাকাবানা” সময় কাটানোর জন্যে একটা ভাল জায়গা,তবে এটা বেশ্যাপাড়া না।পুরুষেরা বারটাতে আসে তাদের মনের মেয়েটা খুঁজে নিতে।যদি তার টেবিলে আসে কেউ(মাঝপথে অন্য মেয়েদের হাতে আটকে না গেলে),
জিজ্ঞেস করবে,
“আমার সাথে ড্রিঙ্ক করবে”?
তাতে হ্যা বা না বলা,যা তার পচ্ছন্দ।তবে এক রাতে এক বারের বেশি “না” বলাটাই ভাল।যদি হ্যা বলে,তবে যেন সবচেয়ে দামী ফলের জুসের ককটেল অর্ডার দেয়।কোন রকমের মদ অবশ্যই না,তার গ্রাহকও যেন তার জন্যে কোনভাবে মদ অর্ডার না দেয়।নাচের আমন্রন জানালে,নাচবে তার সাথে।বেশির ভাগ লোকজনই চেনা গ্রাহক,মাঝে মাঝে কিছু “বিশেষ গ্রাহক” আসবে,তাদের সমন্ধে তেমন কিছু বললো না মিলান।পুলিশ,স্বাস্থ্য সংস্থার লোকজন এসে তাদের মাসোহারা নিয়ে যায়,দেখে যায় কারও কোন যৌন রোগ আছে কি না।
কনডম ব্যাবহার করা একেবারেই বাধকতা,যদিও সেটা পরখ করে দেখার কোন পদ্ধতি নেই।কোন রকম ভাবে সে যে কোন কেলেংকারী না বাধায়,মিলান বিবাহিত,চায় না তার ক্লাবের কোন বদনাম হয়।
নিয়ম কাননগুলো ব্যাখা করে চললো মিলানঃনাচের পর টেবিলে ফিরে যাবে গ্রাহকের সাথে,বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তাকে হোটেলে যাওয়ার আমন্ত্রন জানাবে।৩৫০ ফ্র্যাঙ্ক দাবী করবে- ওটাই চলতি,৫০ ফ্র্যাঙ্ক মিলানের,ক্লাবের টেবিল চেয়ার ব্যাবহার করার জন্যে(আইনের মারপ্যাঁচ থেকে দূরে থাকার উপায়)।
মারিয়া বললো,
“আমি তো ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক নিলাম…..”।
হেঁটে অন্যদিকে চলে যাচ্ছিল মিলান,ব্রাজিলিয়ান মেয়েটা তাকে বুঝিয়ে বললো,যে কথাগুলো পাশে দাঁড়িয়ে শুনছিল,
“ও ঠাট্টা করছিল”।
মারিয়ার দিকে ঘুরে পর্তুগীজ বাসায় বললোঃ
“এটা জেনেভার সবচেয়ে দামী জায়গা।আর কখনও ও রকম ভাবভঙ্গী করো না।ও জানে চলতি দাম কি বাজারে,যৌনবিহারের জন্যে কেউ ১০০০ ফ্যাঙ্ক খরচ করে না।
“বিশেষ গ্রাহক” না হলে কেউ খরচ করে না ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক,সে তুমি যদি ভাগ্যবান হও,তোমার সেই বিশেষ গুনগুলো থাকে”।
মিলানের চোখটা কটা রংএর-যুগোস্লাভিয়া থেকে এক্সেছে,বছর কুড়ি ধরে আছে জেনেভায়,
কোন সন্দেহ রাখতে চায় না কোন ব্যাপারেই।
“চলতি হলো ৩৫০ ফ্র্যাঙ্ক,বুঝতে পেরেছ”।
“ঠিক আছে তাই”,নম্র হয়ে বললো মারিয়া।
প্রথমে সে ঠিক করে দিল কি ধরণের আন্ডারওয়ার পরবে সে,এখন সে ঠিক করে দিচ্ছে তার শরীরের দামটাও।
চিন্তা করার কোন সময় নেই,তখনও মিলান নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে,ফাইভ ষ্টার হোটেল ছাড়া অন্য কোন হোটেল বা কারও বাড়ির আমন্ত্রন গ্রহন করবে না।যদি গ্রাহকের কোন যাওয়ার জায়গা না থাকে,এখান থেকে মাইল আধেক দূরে একটা হোটেল,সেখানে ব্যাবস্থা আছে।
অবশ্যিই ট্যাক্সি নেবে,রু ডে বার্নের লোকজন যেন তোমার মুখটা না চিনে রাখে।
শেষ কথাটা মারিয়া বিশ্বাস করলো না,তার কাছে মনে হলো এটা হলো মিলানের ব্যাবসার রহস্য কেউ যেন তাকে পয়সা দিয়ে নিয়ে না চলে যায়।
“মনে রাখবে যদিও আমি বলেছি,তবুও আবার বলছি কাজের সময় মদ খাবে না কোনদিন,
একেবারে পুলিশেরা যেমন করে।লোকজন আসা আরম্ভ করবে খুব শীঘ্রীর,তৈরী হয়ে নাও”।
ব্রাজিলিয়ান মেয়েটা তাকে পর্তুগীজে বলে দিল,
“কি করছো,মিলানকে বলো যে সত্যিই তুমি কৃতজ্ঞ”।
মারিয়া তাকে ধন্যবাদ জানালো।
মিলান একটু হেসে আরও কটা র্নিদেশ যোগ করলো,
“প্রথম ড্রিঙ্ক খাওয়া আর ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে চল্লিশ মিনিটের বেশী সময় কাটিও না কোনদিন,সুইজারল্যান্ডে চার পাশে ছড়ানো ঘড়ি,সময় দেখতে তেমন একটা কষ্ট হবে না।মনে রেখ এটাই আমার সংসার চালানোর উপায়”।
সে কি ভুলতে পারে।
এর পর সে একটা গ্লাসে মিনেরাল জলের সাথে লেবু মারিয়াকে এনে দিল মিলান,যা সহজেই জিন আর টনিক বলে চালিয়ে দেওয়া যায়,বললো বসে অপেক্ষা করতে।ধীরে ধীরে বেশ ব্যাস্ত হয়ে পড়লো ক্লাব,লোকজন কেউ একা এসে টেবিলে বসলেই-সাথে সাথে একজন মেয়ে যেয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছে,যেন একসাথে আনন্দ করতে আসা তাদের।সারাদিনের কাজের শেষে ক্লান্ত শরীরটাকে আনন্দ দিতে আসা একসাথে।মারিয়ার অস্বস্তি ভাবটা কেটে গেছে তখন,হয়তো এটাই সুইজারল্যান্ড,আজ হোক কাল হোক টাকাপয়সা হবে তার,খুঁজে পাবে তার স্বপ্নের রাজ্য।
মনে হলো অনেকদিন পর খুঁজে পেয়েছে আনন্দ,হতে পারে সেটা ভেসে আসা ব্রাজিলিয়ান গানে,হতে পারে সেটা পর্তুগীজভাষী লোকজনদের কথায়।আনন্দেই সময়টা কাটছিল তার, চারপাশে মেয়েদের হৈচৈ এ,যদিও কেউ তার সাথে কথা বলতে আসেনি,ওটাই স্বাভাবিক,কিই বা আশা করা যায় এ ধরণের কাজে।সকলের প্রতিযোগীতা একই পুরস্কারের আশায়,সেও যুদ্ধ করছে,ভেঙ্গে পড়া কোন দুর্বল মেয়ে না।ইচ্ছে হলেই চলে যেতে পারে,এটুকু তার জানা-সাহস করে এসেছিল শরীর বিক্রি করতে,রীতিমত বোঝাপোড়াও করেছে মনের সাথে,এটা তার স্বপ্নের বাইরের সত্যিটা।সে ভাগ্যের কোন শিকার না,সব কিছু তার নিজের সিদ্ধান্ত,নিজেকেই ঠেলে দিয়েছে চরমে,পরিনত বয়সে এটাই জানবে সে,এটাই সত্যি।
ধরেই নিয়েছিল কেউ আসবে না কাছে,আগামীকাল তার কাছে মনে হবে সবটুকুই ছিল একটা পাগলামী,ফিরে যেতে চাইবে না সে আবার একই অবস্থানে।বুঝতে পারলো ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক কিছুক্ষনের যৌনবিহারের জন্যে একবারই পাওয়া যায়,এর চেয়ে বরং ভাল হবে-প্লেনের টিকিট কিনে ব্রাজিলে ফিরে যাওয়া।সময় কাটানোর জন্যে বসে বসে হিসেব করা আরম্ভ করলো,কত উর্পাজন হতে পারে একজনের এক রাতে,যদি তিন বার বাইরে যেতে পারে,তা হলে চার ঘণ্টার জন্যে যা ঘরে আনবে,তা ব্রাজিলে তার ছোট্ট শহরটায় দু মাসের উর্পাজন।
সেটা কি খুব বেশি?১০০০ ফ্যাঙ্ক উর্পাজন করেছে সে শুধু এক সন্ধ্যায়,তবে সেটা হয়তো আচমকার ভাগ্য।যতই যাই হউক না কেন,একজন পতিতা তার ফরাসী ভাষা শেখানোর চেয়ে অনেক বেশি উর্পাজন করে।তাদের তেমন কিছুও করতে হয় না,বারে বসে সময় কাটানো,কিছুক্ষন নাচ করা,তার পর পা দুটো ছড়িয়ে যৌনবিহার,এই তো আর কিছু না।কথাবার্তাও তেমন একটা বলতে হবে না,টাকাপয়সাই তাদের প্রেরনার সেই উৎস,কিন্ত শুধু কি তাই?নাকি ঐ যে মানুষগুলো,পুরুষ হয়তো বা মেয়েরাও খুঁজে পায় কোন আনন্দ এর মাঝে।আসলে পৃথিবীটা কি স্কুলে শেখানোর রাজ্যটার চেয়ে অনেকটাই অন্য ধরণের।
কনডম ব্যাবহার করলে তেমন একটা বিপদও নেই।তা ছাড়া জানাজানি হওয়ার ভঁয়ও তেমন নাই,জেনেভায় যারা আসে বেশির ভাগই ব্যাঙ্কের লোকজন।ব্রাজিলের লোকজন পছন্দ করে মায়ামি,প্যারিসে, কেনাকাটা করে,৩৫০ সুইস ফ্যাঙ্ক করে-সপ্তাহে পাঁচদিন,একেবারে ভাগ্য ফুলে যাওয়া।এই মেয়েরা কাজ করেই যাচ্ছে,এক মাসের কাজেই তো তাদের দেশে ফিরে গিয়ে মা বাবাকে ছোট্ট একটা বাড়ি কিনে দিতে পারে?নাকি তারা সবাই হয়তো মাত্র কদিন ধরে কাজ করছে?
এমনও হতে পারে তারা আনন্দ পাচ্ছে এই কাজ করায়!
মারিয়া ভাবছিল যদি একটু শ্যাম্পেন পাওয়া যেত,নেশা সবকিছুকেই একটু রঙ্গীন করে দেয়।
“আমার সাথে ড্রিঙ্ক করবে”?
সামনে দাঁড়ানো বছর তিরিশের একটা লোক,এয়ারলাইনের পোষাক গায়ে,জিজ্ঞাসা করলো।
সারা পৃথিবীটা মারিয়ার যেন চলা শ্লথ গতিতে,নিজেকে পরখ করে দেখছিল বাইরে দাড়িয়ে।
লজ্জাটা ঢেকে নিয়ে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো মারিয়া,তার সারা আকাশটা বদলে গেল সেই মুহুর্তে।
ফলের জুস,হাল্কা কটা কথা বার্তা,কি করছ এখানে,বাইরে বেশ শীত,এই তো?এই গানটা আমি পছন্দ করি আমি ও,ABBA গ্রুপের গানও পচ্ছন্দ করি,সুইজারলয়ান্ডে শীত বেশ,তুমি কি ব্রাজিলিয়ান?তোমার দেশ সমন্ধে কিছু কথা বলো আমাকে।ব্রাজিলের কার্নিভালের কথা কিছু বলো,তোমরা ব্রাজিলের মেয়েরা বেশ সুন্দরী।
মুচকি হেসে একটু লজ্জায় মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো মারিয়া।নাচের ফ্লোরে গেল দুজনে, চোখটা ছিল মিলানের দিকে,ঘড়ির দিকে তাকিয়ে,মাথা চুলকে জানিয়ে দিবে সে সময়।
লোকটার কলোনের গন্ধ ছিল কিছুটা অসহনীয়,তবে ধীরে ধীরে তাকে শিখতে হবে এগুলো সহ্য করতে।একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষন নাচলো দুজনে।আরেকটা ফলের জুস,মিলান তো বলেছে খুব বেশি হলে ৪৫ মিনিট।ঘড়ির দিকে তাকাল সে,লোকটা জিজ্ঞাসা করলো আর কারও জন্যে অপেক্ষা করছে নাকি,সে বললো বন্ধুদের জন্যে,ঘন্টাখানেকে মধ্যে ফিরে আসবে তারা।
হোটেল যাওয়ার জন্যে আমন্ত্রন জানালো লোকটা।হোটেলের রুম,৩৫০ ফ্যাঙ্ক,যৌনসঙ্গমের পরে গোসল(লোকটা অভিভুত,এ রকম আনন্দ তার জীবনে আসেনি কোনদিন),এটা যেন মারিয়া না অন্য কেউ ঐ শরীরটা শুধু ছুটে যায় বিক্রির নেশায়।একজন অভিনেত্রী সে,মিলান তাকে শিখিয়েছে অনেকটাই,এমনকি শিখিয়েছে বিদায় দেয়ার ভঙ্গীটাও।
ক্লাবে আর ফেরার ইচ্ছা ছিল না তার,ফিরে যেতে চাচ্ছিল ঘরে,তবে মিলানকে তো দিতে হবে ৫০ ফ্র্যাঙ্ক।আরেকজন লোকের সাথে ফ্রুটের ককটেল,ব্রাজিল নিয়ে প্রশ্ন আরও,আরেকটা হোটেল,গোসল আবার(কোন মন্তব্য ছিল না এবার),ক্লাবে ফেরার পর,মিলান বললো,তেমন একটা লোকজন নেই বাড়ি ফিরে যাওয়াটাই ভাল।
কোন ট্যাক্সি পেল না সেই রাতে,হেঁটে হেঁটেই পার হয়ে গেল রু ডে বার্ন,অন্যান্য ক্লাবগুলোর দিকে উকি দিতে দিতে,বন্ধ ঘড়ির দোকানগুলো ছাড়িয়ে(সবকিছুই বন্ধ কেউ তাকিয়ে দেখছে না তার দিকে)।
হেঁটে গেল প্রচন্ড শীতের রাতে একা,এ ধরণের শীত জানা ছিল না তার,কাঁদে নি ,
উর্পাজনের টাকাগুলোর কথাও ভাবছিল না,যেন সমাধিস্থ নতুন এক মানুষ।কিছু কিছু মানুষের জীবন যুদ্ধগুলো শুধু তার একার জন্যে,হয়তো সেটা ভাল হয়তো সেটা খারাপ,এটাই জীবন,মারিয়া সেই দলের একজন।
সে ভাবছিল কি ঘটে গেল,শুধু একটা দিন যৌন ব্যাবসায়,তবে নিজেকে মনে করছিল বেশ দক্ষ এ ব্যাবসায়-অনেকদিনের ঘোরাফেরা তার ঐ জীবনে।তবু একটা গর্ব ছিল তার মনে, পালিয়ে যায় নি,হার মানে নি সে ভাগ্যের কাছে।এখন তাকে ঠিক করতে হবে চালিয়ে যাবে এ জীবনটা,নাকি এটুকুই,গল্পের যবনিকা সেখানেই।যৌন ব্যাবসাও যদি চালিয়ে যেতে চায় চেষ্টা করতে হবে তাকে শ্রেষ্ঠতের জন্যে,তার চেয়ে দক্ষ যেন কেউ নেই আর।জীবন তাকে শেখার পথ দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল খুবই দ্রুতগতিতে,শুধু ভাল যোদ্ধারাই টিকে থাকে যুদ্ধে, দুর্বলেরা হারিয় যায় খুব সহজেই,আর যোদ্ধার টিকে থাকার একমাত্র উপায় শ্রেষ্ঠত্ব।
মারিয়ার ডাইরী থেকে নেয়া,সপ্তাহ খানেক পরেঃ
“আমি শুধু একটা শরীর নই,অদৃশ্য একটা জীবন লুকোনো আছে সেখানে।আমি একটা অদৃশ্য জীবন,যার শরীরটুকু শুধু দেখা যায়।অন্যান্যরা কি ভাববে জানিনা,তাতে এমন কিছু একটা যায় আসে না,সারা সপ্তাহটা শুধু ভেবেছি সেই লুকোনো অস্তিত্বের কথা,নিজেকে বিচার করিনি,বলিনি নিজেকে কিছু,শুধু আমার নিজেকে দেখেছি-আমার আয়নায়।
বুঝতে পেরেছি কেন এই পরিবর্তন আমার মধ্যে,অনেক দিনক্ষন পার হয়ে গেছে ভাবিনি ভালবাসার কথা।ভালবাসা আমাকে ছেড়ে ছুটে যাচ্ছে কোন এক অজানায়,যেন সেটা আমার কাছে অপ্রয়োজনীয় জঞ্জাল একটা।কিন্ত যদি ভালবাসার কথা না ভাবি,আমি তো নিজেই জঞ্জাল।
পরের দিন আমি কোপাকাবানায় ফিরে গেলে,বেশ সম্মানের সাথেই সবাই টেনে নিল আমাকে।বেশীর ভাগ মেয়েরাই ক্ষান্ত দেয়,একটা রাত্রির পর,যারা টিকে থাকে অদ্ভুত একটা যোগাযোগ সৃষ্টি হয় তাদের মাঝে,অজানা যে কারণেই হোক না এ ধরণের জীবনটা বেছে নেওয়া।সবাই স্বপ্ন দেখে কেউ না কেউ কোন একদিন এসে খুঁজে নেবে তাদের ভেতরের নারীটাকে,ছিনিয়ে নিয়ে যাবে এই যন্ত্রনার আকাশ থেকে একমুঠো শান্তির জগতে।কিন্ত সেটা কি আর ঘটে?আমাকে লিখতেই হবে ভালবাসার কথা,আমাকে লিখতেই হবে-সেটাই তো আমাকে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র শক্তি”।
সূত্রঃ চতুর্মাত্রিক ।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০৭, ২০২০
রেটিং করুনঃ ,