Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এলিভেন মিনিটস-পাওলো কোয়েলহো-পর্ব-তিন।

Share on Facebook

পাওলো কোয়েলহো এর এলেভেন মিনিটস
অনুবাদে- ইললু।

তৃতীয় অংশ

সমুদ্র সৈকতে পরের দিন মারিয়ার দেখা দোভাষী ম্যালিসন,সাথে সুইস ভদ্রলোক।
পরামর্শমত মারিয়া জানিয়ে দিল সুইস ভদ্রলোককে এমব্যাসীর দেওয়া চুক্তিপত্র থাকলে তার কোন আপত্তি নেই প্রস্তাবে।বিদেশী সুইসের কাছে এটা অভাবনীয় কিছু না-সুইস মেয়েদের তো আর সামবা নাচে বিশেষ কোন দক্ষতা নেই,সুইস এমব্যাসী থেকে কাগজ পেতে কোন ঝামেলা হবে না।মারিয়ার পরামর্শদাতা ম্যালিসন-বলে দিল চুক্তিপত্র সই হওয়ার পর,চুক্তির ৫০০ ডলারের তিরিশ ভাগ তার প্রাপ্য।

“মনে রেখ এটা তোমার এক সপ্তাহের বেতন,এক সপ্তাহ বুঝলে তো?এখন থেকে তুমি প্রতি সপ্তাহে ৫০০ ডলার পাবে,আমি শুধু এই প্রথম সপ্তাহের বেতনের তিরিশ ভাগ নিলাম”।

মারিয়ার কাছে দূরে কোথাও যাওয়ার ব্যাপারটা ছিল একটা স্বপ্ন,আর স্বপ্ন দেখতে কে না ভালবাসে।স্বপ্ন-কল্পনা বাস্তবতায় টেনে আনায় যন্ত্রনা অনেক,দোষ দেওয়া যায় ভাগ্যকে, পারির্পাশ্বতাকে।চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তার স্বপ্ন,কোনদিন ভাবেনি যা সামনে আসছে তার।বুঝে উঠতে পারছিল না এটা কি উত্থান,না পতন তাকিয়ে আছে,তার পুরোনো চেনা সব ফেলে দিয়ে সে ছুটে যাবে কোন এক অজানায়।কেন যে ভাগ্য-কেন যে “মা মেরী” তাকে ছুঁড়ে দিল এতদূরে।

নিজের মনকে সান্তনা দিল মারিয়া,তেমন আর কি,সে তো যে কোন সময় মন বদলাতে পারে,আর যা হোক এটা তো একটা খেলার মত,অন্ততঃ বাড়ী ফিরে বলতে পারবে বান্ধবীদের তার অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা।এমন কিছু না,হাজারখানেক কিলোমিটার দূরে তার বাড়ী আর তার সাথে তো ৩৫০ ডলার তো আছেই।সকাল বেলায় ঐ টাকাটা নিয়ে সে যদি চলেই যায় তাকে খুঁজে বের করা কোন ভাবেই সম্ভব বা হবে না কারও।এমব্যাসীতে চুক্তি সই করার পর মারিয়া বিকেলটা একলাই কাটালো সমুদ্রধারে-ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ছুটে বেড়াচ্ছিল বালুর খেলায়,কজন ভলিবল খেলায় ব্যাস্ত,ভিখারীর দল ছড়ানো ছিটানো,দল বেঁধে আড্ডায় বসে থাকা মানুষেরা,ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী কুটীরশিল্পের হকারে(যদিও সবকিছু তৈরী করা চীনে),তাস খেলায় ব্যাস্ত অবসরপ্রাপ্ত বুড়োরা সমুদ্র সৈকতের শেষ দিকটায়।

দু দিন বাসে চেপে মারিয়া রিও ডি জেনোরোতে এসেছে,নাম করা হোটেলে রাত কাটিয়েছে,এমব্যাসীতে গিয়ে কাগজপত্র সই করেছে,নতুন পোষাক,নতুন জুতা উপহার হিসেবেও পেয়েছে,কিন্ত এটা কেউ জানে না,কাউকে জানাতে পারেনি সে,বাড়ীতে কারও পক্ষে সম্ভব না এটা কল্পনা করা।এখন কি হবে?

সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে মারিয়া ভুগোলের জ্ঞানে হিসেব করে দেখলো,সোজা চলে গেলে সে পৌছাবে হয়তো আফ্রিকায়,সিংহ,জঙ্গল ভরা গরিলা যেখানে।একটু বা দিকে গেলে পৌছে যাবে ইউরোপে,আইফেল টাওয়ার,ইউরো ডিসনী,পিসার হেলান টাওয়ারের দিকে।হারানোর সম্ভাবনা কোথায়?আর যে কোন ব্রাজিলিয়ান মেয়ের মত মারিয়া শিখেছে সামবা,সেটা “মা” বলার আগেই।আর যখন পারবে না,না হয় ফিরেই আসবে,নতুন কিছু জানা দেখার এই সুযোগ ছেড়ে দেয়ার কোন মানে নেই!

চিন্তা করে দেখলো,তার জীবনের অনেক কিছুতেই সে “না” বলে গেছে যেখানে হয়তো বলা উচিত ছিল,“হ্যা”।এখন এই জীবন সমুদের নতুন নাবিক সে,সমুদ্রের নাবিকদের মত,তার চোখদুটো আটকে আছে অজানার না দেখা জগতটায়।“না” বলাটা তো বেশ সহজ,”হ্যা” বলে দেখতে চায় সে জীবনের অন্য দিকটা।

ব্রাজিলের ছোট্ট অজানা শহরের একটা মেয়ে,জীবনের অভিজ্ঞতা বলতে যার-স্কুল,টিভির ধারাবাহিক ছাড়া আর কিছু নেই-তার কাছে এটা তো একটা বিরাট সুযোগ।মারিয়া জানে সৌন্দর্য আছে তার,তবে সেটা জীবনে কতটুকুই বা সাফল্য এনে দিতে পারে।দেখলো পাশে দাঁড়ানো বেশ কজন ছেলেমেয়ে ঠেলাঠেলি করছে,সাহস করতে পারছে না সমুদ্র স্নানের,সেই কদিন আগের পুরোনো মারিয়া।

এখন ভয়টা আর নেই তার,ইউরোপের মারিয়া কি সেই একই রকম হবে না,কেন হবে না?মনে মনে প্রার্থনা করলো, “মেরীর” কাছে,তার কাছে উপদেশ চাইলো,বেশ কিছুটা আশ্বস্তি এলো মনে।কোন দ্বিধা ছিল না আর,এখন যদি ঐ সুইস ভদ্রলোক তার মনটা না বদলায়।

এতই উচ্ছাস ভরা মনটা ছিল তার,সে নিজেই সুইস ভদ্রলোককে রাতের খাবারের আমন্রন জানালো।হাত দুটো ধরে তাকে জড়িয়ে ধরতে চাইলো সে,কিন্ত বিদেশী সুইস সরে গিয়ে মুচকি হেসে বললো,“সামবার রানী,তুমি সামবার রানী,যাবে সুইজারল্যান্ডে,সামনের সপ্তাহে”।
সব কিছুই ঠিক আছে,তবে “সামনের সপ্তাহে”,সেটা তো একেবারেই অসম্ভব।মারিয়া ভাবে ভঙ্গীতে বিদেশী সুইসকে বুঝিয়ে বললো-তার বাবা মা এর সাথে আলাপ আলোচনা না করে সব কিছু সেই মুহুর্তে ঠিক করা সম্ভব হবে না তার পক্ষে।বেশ খেপে গিয়ে সুইস লোকটা,হাতের সই করা চুক্তিপত্র নেড়ে নেড়ে মারিয়াকে বলে গেল একগাদা কথা।
“মনে রেখ এটা সই করা চুক্তিপত্র”।

মারিয়া ঠিক করেছিল বাড়ি ফিরে যাবে,পরামর্শদাতা ম্যালিসনের সাথে আলোচনাও করেছে সে আগে,তা ছাড়া ম্যালিসনকে তো এজন্যেই পয়সা দেওয়া তার।ম্যালিসনকে খুঁজতে গিয়ে দেখলো,ম্যালিসন তখন ব্যাস্ত বিদেশীদের সমুদ্রধারে উন্মুক্ত বক্ষ ব্রাজিলিয়ান সুন্দরী দেখানো নিয়ে,বেশ কষ্টই হলো মারিয়ার তাকে খুঁজে সব কিছু বোঝাতে।
জিজ্ঞাসা করলো, “আমি কি আমার মন বদলাতে পারি না”?
“আমার মনে নেই চুক্তিপত্রে কি লেখা আছে,তবে চুক্তিভঙ্গের জন্যে জেলে যেতে পারো তুমি,সেটা মনে রেখ”।
“আমাকে খুঁজে পাবে না কোনদিন!”

বেশ চিন্তায় পড়ে গেছে সুইস ভদ্রলোক-৫০০ ডলার,একটা দামী পোশাক,জুতো,
এমব্যাসীর কাগজপত্রের খরচ,কে জানে সবটাই কি জলে গেল,নাকি।মারিয়া বেশ জোর দিয়েই বলছিল,বাবা মা এর সাথে কথা না বলে তার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হবে না।সব কিছু ভেবে নিয়ে সুইস লোকটা ঠিক করলো দুটো বিমানের টিকিট কিনে মারিয়ার সাথে সেও যাবে,ছোট্ট শহরটায়।একটু হাসি, একটু মাথা নাড়াচাড়া তবে মারিয়া এটুকু বুঝলো,অনূভূতি,
মন ভোলানো আর চুক্তিপত্র কোনটাই ছেলেখেলা নয়।অবাক হওয়ার পালা ছিল ছোট্ট শহরটার মানুষদের-মারিয়ার জন্যে বিরাট গর্ব একটা,একটা বিদেশির সাথে ফিরে এসেছে, ছোট্ট শহরের মেয়েটা।সবাই জানতে পারলো,নামকরা তারকা হবে মারিয়া একজন আর সেটা ঐ বিদেশীর কল্যানেই।স্কুল বান্ধবীরা সবাই জানতে চাইলো,“ বল না,কি ভাবে,কি ভাবে ঘটলো,সব”?
“ভাগ্য,বলতে পারিস আমি হয়তো ভাগ্যবতী”!
বান্ধবীরা জানতে চাইলো রিও ডি জেনোরো এ ধরনের ঘটনা কি প্রায়ই ঘটে,যে ভাবে দেখায় টিভির ধারাবাহিকগুলোতে।নিজেকে অত নীচে নামাতে চায় নি,সে বুঝিয়ে বললো তার বিশেষত্ব আছে বলেই সম্ভব হয়েছে সবকিছু,এটা খুব একটা সহজ ব্যাপার না।বিদেশী সুইস মারিয়ার মাকে বিকিনি পরা ছবিগুলো দেখানো আরম্ভ করলো,নগ্নতার চরমে সাজানো ছবিগুলো দেখার কোন ইচ্ছা ছিল না মারিয়ার মায়ের,ফিরিয়ে দিল সাথে সাথেই।
“ওর নাম কি”?
“রজার”।
“রজারিও,আমার এক আত্মীয় ছিল,রজারিও নামে”!
বিদেশী সুইস হাসি মুখে হাততালি দিয়ে চললো কথায় কথায়,কোন কথা বোঝা সম্ভব ছিল না তার পক্ষে।
মারিয়ার বাবা মন্তব্য করলোঃ
“দেখে মনে হয় ও আমার বয়সীই হবে হয়তো”।
মারিয়ার মা তাকে বুঝিয়ে বললো মেয়ের জীবনের আনন্দে অযথা নাক গলানোটা ঠিক হবে না।মেয়েকে বললো মাঃ
“মনে রাখিস,একজন প্রতিপত্তিশালী স্বামীর সাথে বরং অসুখী হওয়া ভাল,গরীব স্বামীর সুখের চেয়ে।আর যদি সম্পুর্নই ব্যার্থ হয় সম্পর্কটা তা হলে বাসে করে সোজা ফিরে আসবি”।
একটু হেসে মাকে বুঝিয়ে বললো মারিয়া,“মা,ইউরোপ থেকে বাসে কি আসা যায়? ওতো অনেক দুরের রাস্তা,আর তা ছাড়া আমার বিয়ে করার ইচ্ছে নেই এখন,আমি চাই একজন নামকরা অভিনেত্রী হতে”।

মা এর চোখে ছিল শুধু হতাশাঃ,
“মারিয়া যখন যাওয়ার রাস্তা আছে নিশ্চয় ফিরে আসার রাস্তাও আছে।অভিনেত্রী হচ্ছিস ভাল কথা,তবে তোকে এর আগেও বলেছি,সৌন্দয্যের চমক-খুব বেশী হলে তিরিশ বছর তারপর হারাবে সব।

যতদিন আছে রুপের বাহার,চমক ঠিকমত সাজিয়ে নিবি জীবনের আয়েশগুলো।ভালবাসার কথা বলছিস,ভালবাসা আর কিছুই না,শুধু সাজানো কটা কথা।দেখ না,তোর বাবাকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম,এখনও ধুঁকে ধুঁকে চলছি,পয়সা-পয়সা বদলে দেয় সবকিছু এমন কি ভালবাসাটাও”।

একটা বান্ধবীর জন্য সেটা খারাপ পরামর্শ,তবে নিঃসন্দেহে এক মায়ের তার মেয়ের জন্য ভাল উপদেশ।দু দিন পর মারিয়া ফিরে গেল,রিও ডি জেনোরোয়,তার কাজের জায়গায় মালিককে জানিয়ে দিল তার ইস্তফার কথা।দোকানের মালিক বললো,“শুনেছি,একজন নামকরা ফরাসী পরিচালক তোমাকে নিয়ে যাচ্ছে প্যারিসে তার ছবির জন্যে,তোমার স্বপ্ন খোঁজার পথে বাঁধা হতে চাই না আমি।তোমার আনন্দে আমারও আনন্দ।তবে দাঁড়াও আমার একটা উপহার আছে তোমার জন্যে”।

একটা লকেট পকেট থেকে বের করে হাতে তুলে দিল তার দোকানের মালিক,
“এটা প্যারিসের এক গীর্জা থেকে আনা,তোমার বিপদে আপদে কাজে আসবে।প্যারিসের গীর্জায় যেয়ে ‘মা মেরীর’ কাছে প্রার্থনা করো,এই দেখ এর পেছনে কিছু আর্শিবাদের কথাও লেখা আছে মনে হয়”।

দেখলো মারিয়া লেখা,“সব প্রশংসা মেরীর জন্যে,গর্ভধারণ করা যার কোন পাপ ছাড়া,আর্শীবাদ করো তুমি,আমরা যারা তাকিয়ে আছি তোমার দিকে”।
“শোন সময় পেলেই এই প্রার্থনাটা করো”।
কিছুটা থেমে মারিয়ার দোকানের মালিক বললো,
“তবে…যদি ফিরে আসার ইচ্ছা হয় কোনদিন,মনে রেখ আমি তোমার জন্যে অপেক্ষায় থাকবো।যদিও কোনদিন বলার সূযোগ হয়নি, ‘ভালবাসি,ভালবাসি তোমাকে’।হয়তো দেরী হয়ে গেছে কিছুটা তবুও তোমাকে বলতে চাই কথাটা”।

অনেকবার শুনেছে মারিয়া কথাগুলো তার বাইশ বছর বয়েসে,জানে ভালবাসা কথাটা একেবারেই মুল্যহীন।তবু,ধন্যবাদ জানালো সে তার মালিককে,বললো কথাগুলো ধরে রাখবে স্মৃতির পাতায়(জীবনের চলার পথে কখন কি দরকার হবে কেই বা জানে),গালে একটা আলতো একটা চুমু দিয়ে ফিরে গেল,যাওয়ার পথে।

পরের দিন মারিয়া ফিরে গেল রিও ডি জেনোরোতে,পার্সপোটের ব্যাবস্থা হয়ে গেল,তেমন কোন সমস্যা হয়নি।বিদেশি সুইস কিছুটা ভাঙ্গা পর্তুগীজে,কিছুটা দেহভঙ্গীতে বললো, “অনেক, বদলে গেছে ব্রাজিল,কিছুদিন আগে হলে এটা লেগে যেত কমপক্ষে মাসখানেক”।মারিয়া দোভাষী,পরামর্শদাতা ম্যালিসনের সাথে কিছু কাপড়চোপড়,জুতা,প্রসাধন কেনাকাটা করলো।

যাওয়ার আগের দিন রাতে সবাই গেল এক নাইট ক্লাবে,মনের আনন্দে নেচে গেল মারিয়া।মারিয়ার নাচ দেখে,রজারের চোখে মুখে ছিল বেশ স্বস্তি,আনন্দের চেহারার এক রজার।মনে আর কোন সন্দেহ ছিল না,তার সামনে ভবিষৎ এর একজন নামকরা ক্যাবারে নর্তকী।আলো আধারী চেহারার মেয়েটার ঝকঝকে চোখ, ব্রাজিলের কাল গ্রানা পাখীর রং রঙ্গিয়ে দেওয়া চুলগুলোয়,ও যেন রুপকথার কোন দেবী।সুইস এমব্যাসীতে কাজ করার অনুমোদন পত্রেও সময় লাগেনি,চলে গেল তারা চকলেট,ঘড়ি আর পনীরের দেশে।ভাবছিল মারিয়া যদি রজারকে প্রেমের মোহে যদি টেনে আনা যায় খুব একটা খারাপ হবে না,এমন কিই বা বুড়ো,আর তা ছাড়া টাকাপয়সাও তো আছে মন্দ না,এর বেশি কিই বা আছে চাওয়ার!

০০০০০

ক্লান্ত,ভয় ছেয়ে যাওয়া মনে মারিয়া সুইজারল্যান্ডে,পাশের মানুষটার ওপর সম্পুর্ন নির্ভরশীল সে তখন।কোন ধারনা ছিল না তার সুইজারল্যান্ড সমন্ধে,জানা ছিল না মানুষগুলোর কথা,সেখানকার শীতের প্রচন্ডতা।কদিন পরেই রজার ব্যাবহার বদলানো আরম্ভ করলো ক্ষনক্ষনে,হারিয়ে গেল তার মিষ্টি স্বভাবটা।যদিও সে কোন সময় চেষ্টা করেনি তাকে চুমু খাওয়ার,চেষ্টা করেনি তার স্তন নিয়ে খেলা,শরীর নিয়ে খেলা,তবু রজার তখন অজানা নতুন এক চেহারা।ছোট্ট একটা হোটেলে মারিয়ার থাকার ব্যাবস্থা,ভিভিয়ান-এক ব্রাজিলিয়ান মহিলার দায়িত্ব তাকে সবকিছু শেখানো,বোঝানো।

ভিভিয়ানের কোন সহানূভূতি ছিল না নতুন মেয়েটার জন্যে,কোনদিন নতুন কোন পরিবেশে যাওয়া হয়নি যার।ভিভিয়ান জানালো তার করনীয়গুলো,“কোন কল্পনার রাজ্যে লুকিয়ে রেখ না নিজেকে,হয়তো জানা নেই তোমার,যখনই তার ক্লাবের নর্তকী বিয়ে করে সরে যায়,রজার ছুটে যায় ব্রাজিলের দিকে নতুন আরেক নর্তকীর খোঁজে।ও জানে,তুমিও জান তোমার চাওয়াগুলো,তিনটার মধ্যে একটাঃ
অভিযান,টাকাপয়সা না হয় বিয়ে”।

কি ভাবে জানবে ভিভিয়ান,সবার চাওয়াগুলোর ধরণ কি একই রকম!নাকি ভিভিয়ানের কিই বা ক্ষমতা আছে তার মনের কথা জেনে নেওয়ার।
“এখানে যত মেয়েরা আসে,সবার চাওয়াগুলো একই”।
ভিভিয়ান যেন তার মনের কথা বুঝে ফেলেছে,থেমে থাকেনি ভিভিয়ান আরও বললো, “অভিযানের কথা ভুলে যাও,যা ঠাণ্ডা এখানে।আর এমনিতেই হোটেল ভাড়া আর খাওয়াদাওয়ার খরচ বাদ দিলে,বছর খানেক লেগে যাবে শুধু তোমার দেশে ফিরে যাওয়ার প্লেন ভাড়ার জন্যে”।
“কিন্ত…..”।
“জানি তুমি বলবে,এটা তো লেখা নেই তোমার চুক্তিপত্রে।কিন্ত সত্যিটা কি জান,অনেকের মতই তুমি সময় মত যথাযথ প্রশ্ন করনি।কেন না সুইস মানুষেরা মিথ্যা বলে না,তবে সুযোগের আশ্রয় নিতে কোন দ্বিধা নেই তাদের”।
“আর বিয়ের কথা যদি বলো,যখনই রজারের ক্লাবের কোন মেয়ে বিয়ে করে বেশ ক্ষতি হয় রজারের।আমরা বিয়ের কথা নিয়ে কোন সময়ই আলোচনা করি না,মনে রেখ এটা স্বামী ধরার জায়গা না,এটা রু ডে বার্নো”।
রু ডে বার্নো?
“এখানে স্বামী স্ত্রী আসে সময় কাটাতে,আর যে কটা বিদেশী টুরিষ্ট আসে,তারা তো কিছুক্ষন থেকেই অন্য জায়গায় ছুটে যায়।তুমি তো নিশ্চয় জান?আর তুমি যদি গান করতে জান,তবে আরও ভাল,তা হলে বেতন বাড়বে তোমার আর সাথে হিংসা বাড়বে অন্যান্য মেয়েদের।তোমার জন্যে আমার পরামর্শ হলো গান গাওয়ার কথাটা বরং ভুলেই যাও,আর শোন টেলিফোন ব্যাবহার করো না,যে কয়টা টাকাপয়সা থাকবে,সেটাও যাবে”
“কিন্ত আমাকে তো সপ্তাহে ৫০০ ডলার দেয়ার কথা”!
“ওটা মনে হয়,ওটা মনেই রাখ”।

এটা মারিয়ার ডাইরী থেকে নেয়া,সুইজারল্যান্ডে তার দ্বিতীয় সপ্তাহঃ

“গতকাল গিয়েছিলাম ক্লাবে,সেখানে আমার দেখা হলো ক্লাবের নৃত্য পরিচালকের সাথে,ভদ্রলোক এসেছে মরক্কো নামের কোন এক দেশ থেকে।এমন একটা মানুষের কাছে আমাকে সামবা শিখতে হলো যে জীবনেও কোনদিন যায়নি ব্রাজিলে,যা করছে যা ভাবছে মনে করছে,সেটাই সামবা।এত লম্বা একটা সফর শেষে আমি একটু বিশ্রাম করার সুযোগও পায়নি,প্রথম রাতেই আমাকে শুরু করতে হলো নাচ।সব মিলিয়ে আমরা ছয়জন নাচের মেয়ে,কিন্ত আমরা কেউ জানিনা,আমরা কি করছি সেখানে।দর্শকেরা হৈ চৈ করে,চুমু ছুঁড়ে দেয়,মাঝে মাঝে অশোভনীয় ভঙ্গীও করে,তবে ঐ টুকুই।

গতকাল আমার সাপ্তাহিক বেতনটা পেলাম,যা কথা ছিল তার দশ ভাগের একভাগ মাত্র,বাকীটুকু আমার দেশে ফিরে যাওয়ার প্লেন ভাড়ার জন্যে।ভিভিয়ানের কথামত সেটাতো লাগবে প্রায় বছর খানেক,তার মানে একটা বছর অব্যাহতি নেই আমার এই বাঁধনথেকে।আর যাবই বা কোথায়?এই তো এলাম,এখনও তো কিছুই দেখা হয়নি!আর তা ছাড়া এমন কি খারাপ সাত দিন নাচ করায়?আগে নাচ ছিল আমার আনন্দের জন্যে,এখন সেটা উর্পাজনের মাধ্যম।আর এমন তো না পায়ের ব্যাথায় আমি জর্জরিত,শুধু সব সময় মুখে হাসি রাখা সেটা বেশ একটা কষ্টকর ব্যাপার।আমি ভাবতে পারি নিজেকে পারিপার্শিকতার শিকার,হতে পারি জীবনের অভিযানের নতুন এক নাবিক,সবটুকুই আমার দেখার চোখে”।

সূত্র: নেট থেকে সংগৃহিত চতুর্মাত্রিক।
তারিখঃ আগষ্ট ২৭, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ