Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এলিভেন মিনিটস-পাওলো কোয়েলহো-পর্ব- (তেরো)

Share on Facebook

অনুবাদে: ইললু।

(ধারাবাহিক ১৩)

বাইরে বজ্রপাতের শব্দ তখন,বৃষ্টি আসার সুর,জানান দিচ্ছে একটা ঝড় আসবার খবর।
“আমার কাছে এটা অস্বাভাবিক,কোন নাটক করার দরকার নেই,আমি ক্রীতদাসী,তুমি
মনিব।কোন নাটক সাজানোর প্রয়োজন নেই যন্ত্রণা খুঁজে নিতে,চলার পথের যন্ত্রনায়ই ভঁরে থাকা মানুষের জীবন”।
মোমবাতি জ্বালানো শেষ,একটা মোমবাতি টেবিলে দিয়ে শ্যাম্পেন আর কাভিয়ার
(ষ্টারজেন মাছের লবনাক্ত ডিম) সাজিয়ে রাখলো,টেরেন্স।

মারিয়া তার ১০০০ ফ্র্যাঙ্কের কথা ভেবে,ড্রিঙ্ক করে যাচ্ছিল,মনটাও ভঁরা তার কৌতুহলে,ছিল ভঁয়,জানা নেই কি ভাবে ভঁয়টা আয়ত্ব করা যায়।জানা এটুকুই এ লোকটার সাথের রাতটা আর অন্য কোন রাতের মত না।
“ওখানে বস”।
স্বরটা বদলে গেছে তখন,নম্র সাধারণ মানুষ থেকে,অত্যাচারী শাসকের সুরে।সুবোধ এক মেয়ের মত মারিয়া মেনে নিল সব কথা,অদ্ভুত এক অনুভুতি ছড়িয়ে পড়া তার শরীর জুড়ে,ওটাতো তার চেনা সুর,ভঁয় নেই কোন সেখানে।

“এটাতো একটা খেলা,শুধু দর্শক হয়ে থাকলে চলবে কি,খেলায় মত্ত না হয়ে উঠলে আনন্দ খুঁজে পাওয়া সম্ভব কি”?

আদেশ পালন করায় যে আনন্দ নেই তা নয়,তবে কোন কিছু ভাবার নেই সেখানে,শুধু আদেশ মেনে নেয়া,বলা যাবে না কোনকিছু।আরও শ্যাম্পেন চাইলো সে,কিন্ত টেরেন্স ভদকা নিয়ে এলো এবার,ভদকার চমকটা অন্যধরণের-নেশায় মাথাটাকে এলোমালো করে দেয় তাড়াতাড়ি,তা ছাড়া কাভিয়ার সাথে জমে বেশ।বোতলটা খুলে দিল টেরেন্সঃবলা যায় অনেকটা একাই ড্রিঙ্ক করে যাচ্ছিল মারিয়া,বাইরের ব্জ্রপাত আর বৃষ্টির সুর তার সঙ্গী।
সবকিছু যেন সাজানো একটা বিশেষ মুহুর্তের জন্য-এমনকি আকাশ,প্রকৃতি যোগ দেয়া তাদের খেলায়।টেরেন্স ছোট্ট একটা সুটকেস খুলে বের করলো আলমারী থেকে,বের করলো এক জোড়া হ্যান্ডকাফ।

“তোমার পা দুটো ফাঁক করে বস”।
মেনে নিল মারিয়া,যেন আর কোন উপায় ছিল না তার।দেখলো লোকটা তার পা দুটোর ফাঁকে উঁকি দিয়ে দেখছে,দেখছে কাল প্যান্টি,লম্বা মোজা,তার উরু,হয়তো খুঁজে নিচ্ছে যোনীর আশেপাশের লোমগুলো।
“উঠে দাঁড়াও”।
চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল সে।দাড়িয়ে বুঝলো সে,বেশ কিছুটা মাতাল।
“আমার দিকে তাকিও না,শুধু মাথা নত করে,মনিবের আদেশটা জেনে নিয়ে পালন করে যাবে,কোন প্রশ্ন নেই,কোন অভিযোগ নেই”।
কোন কিছু ভাবার আগেই সে দেখলো,একটা চাবুক বের করে বাতাসে ছুড়ে দিল টেরেন্স,
চাবুকটা খুঁজে পেল একটা নতুন জীবন।
“গ্লাস তুলে নিয়ে ড্রিঙ্ক কর,তবে মাথাটা নীচু করে,নিজের অবস্থানটা ভুলে যেও না”।

আরও দু গ্লাস ভদকা গিলে ফেললো মারিয়া।এটাতো এখন আর খেলা না,সত্যি সত্যি একটা কিছু ঘটে যাচ্ছে,যা তার নিয়ন্ত্রন আর ক্ষমতার বাইরে।সে যেন আর কিছু না,একটা খেলনা শুধু,মনটা কেন জানি আত্মসর্মপনে খুঁজে পেল স্বাধীনতার আনন্দ।আর সেই শিক্ষকটা সান্তনা দেয় যে,উপদেশ দেয় মাঝে মাঝে,উত্তেজনা আনে মনে,ঐ মানুষটার প্রচন্ড ক্ষমতার কাছে সে ব্রাজিলের ছোট্ট একটা শহরের অচেনা মেয়েটা।

“কাপড় খুলে ফেল,এক এক করে”।
আদেশ দেয়ার ভঙ্গীটা এমন ছিল-কোন আদর ভঁরা মাদকতা নেই কথায়,কিন্ত তবু তেমন কামনামূলক সুর আর কিছুতে হতে পারে না।বোতামগুলো এক এক করে খুলে মারিয়া মেঝেতে ফেলে দিল পোশাকটা।
“তুমি জান তোমার ব্যাবহারটা ঠিক ছিল না,কথাগুলো মেনে নাও নি ঠিকমত”।
আবার বাতাস কাটিয়ে গেল চাবুকের নাচন।
“এ জন্যে তোমাকে শাস্তি দেয়া দরকার।এত সাহস তোমার,আমার কথার বিরুদ্ধে কাজ করছ তুমি।কথাগুলো ঠিকমত মেনে নাও নি,হাটু গেড়ে আমার সামনে বসে কথা বলবে”।

আধো হাঁটু গেড়ে বসলো মারিয়া,চাবুকটা আবার শব্দ করে ছুটে গেল,এবার ছুঁয়ে গেল তার নিতম্ব,একটু জ্বালা-একটু পুড়ে যাওয়ার স্বাদ সেখানে।
“তোমাকে আমি বলেছি না হাঁটু গেঁড়ে বসতে”?
“না,তো”।
“বল-বলেননি,স্যার,বেয়াদপ”।

চাবুকটা আবার শব্দ করে ছুয়ে গেল,তার নিতম্ব।ক্ষনিকের জন্য কিছুটা হতভম্ব সে- সেখানেই ক্ষান্ত দেবে,না কি টাকার জন্যে চালিয়ে যাবে খেলাটা।তবে সে জানে এটুকু নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় তখনই,যখন মানুষ নিজেকে নিয়ে যায় তার সাজানো সীমানার বাইরে।
এটা এক নতুন জগত তার কাছে,সে আর সেই কোপাকাবানার মেয়েটা না,শরীর বিক্রি করে জীবন চালানো যার,আগুনের ছটার,মদের আমেজে হারিয়ে যাওয়া সময়টায়,সে এক নতুন মুখ।সে এখানে অজানা কেউ,অজানা হওয়ার সুবিধা এই তাকে মানিয়ে নেয়া যায় যে কোন মুখে।
“তোমার বাকী কাপড়গুলো খুলে ফেল,আর হেঁটে যাও ,আমি তোমাকে দেখতে চাই আমার মনের আনন্দে”।
মাথাটা নীচু করে মেনে নিল কথাগুলো,মারিয়া।মানুষটা নীচে তখনও তার সম্পূর্ন পোষাক গায়ে,নিরাসক্ত একটা চেহারা,ক্লাবের সেই মানুষটা হারিয়ে গেছে কোথাও,ছূটে আসা উলিসিস যেন লন্ডন থেকে,স্বর্গ থেকে নেমে আসা থিসিয়াস হয়তো বা,হয়তো বা অজানা এক ছিনতাইকারী পৃথি্বীর সবচেয়ে নিরাপদ শহরটায় আর যার হ্রদয়টা যেন বরফে ঢাকা।

মারিয়া খুলে ফেললো তার প্যান্টি,ব্রা,নিজেকে মনে হলো তার বেশ অসহায়,আবার প্রচন্ড ভাবে সুরক্ষিত।চাবুকটা নেচে গেল আবার,তার শরীরটা না ছুঁয়েই।
“মাথাটা নীচু করে রাখ।তুমি এখানে এসেছ আমার কামনার দাসী হয়ে,আমি যা বলবো সেটাই মেনে নিতে হবে তোমাকে,বুঝতে পারছ”?
“না,না।আমার বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি”।
হ্যান্ডকাফটা এনে,মারিয়ার হাতে পরিয়ে দিল সে।
“প্রচন্ড শাস্তি পাবে তুমি,যদি ঠিকমত আচরণ না কর”।
হাতের তালু দিয়ে বেশ জোরে নিতম্বে আঘাত করলো লোকটা,ব্যাথায় চীৎকার করে উঠলো মারিয়া।

“তা হলে অভিযোগ করছ তুমি এখনই,আমি তো আরম্ভই করিনি”
কোন কিছু করার আগে সে একটা রুমাল গুজে দিল তার মুখে,কথা বলা অসম্ভব ছিল না,
সহজেই বলতে পারবে, “হলদে”, “লালচে”।তবু মনে হলো তার এটাই তার চাওয়া ঐ মানুষটার সাথে শরীর খেলায় মত্ত হওয়া।নগ্ন শরীরে,মুখে রুমাল,হ্যান্ডকাফ হাতে আর রক্তে ছুটে যাওয়া ভদকার স্রোত।আরেকটা থাপ্পড় তার নিতম্বে,থেমে থেক না,হেটে যাও”।

মারিয়া তার কথার পর কথাগুলো মেনে চললো, “থাম”, “হাঁট”, “পা দুটো ফাঁক কর”।বেশ কবার থাপ্পড় মারলো টেরেন্স তার নিতম্বে,জানা ছিল না কারণটা,ইচ্ছাটাও ছিল না জানার,
ব্যাথা বেদনা তাকে নিয়ে গেছে অন্য আরেক পৃথিবীতে।এক আধ্যাত্বিক স্বর্গীয় আলোর জগত,যেখানে নিজের সবকিছু বিলিয়ে দেয়া যায় সহজেই,কোন চাওয়া নেই,কোন অহংকার নেই,আনন্দটা নিজেকে বিলিয়ে দেয়ায়।তার শরীর ভিজে গেছে কামনার স্রোতে,কামনায় অন্ধ সে তখন,বোঝার ক্ষমতা নেই কি ঘটছে।

“হাঁটু গেড়ে বস আবার”।
মাথা নত করে সবকিছুই করে যাচ্ছিল মারিয়া,তার বোঝার উপায় ছিল না,বোঝার ক্ষমতা ছিল না কি ঘটে যাচ্ছে।শুধু এটুকু অনুভব পারছিল,চাবুক ঘোরাতে ঘোরাতে ক্লান্ত হাপাচ্ছিল টেরেন্স,আর হারিয়ে যাচ্ছিল মারিয়ার মাঝে লুকোনো পৃথিবীর সমস্ত শক্তি।তার কোন লজ্জা ছিল না,সীৎকারে,কামনায় রক্তাত্ত টেরেন্সকে সে অনুরোধ করছিল তাকে ছুঁয়ে এলোমেলো করে দিতে।তা না করে লোকটা তাকে বিছানায় ফেলে,তার হাত পা বিছানার চার কোনায় বেঁধে দিল।জানা ছিল মারিয়ার কোন ক্ষতি হবে না,আশা করছিল কখন লোকটার লিঙ্গ তার যোনী ভেদ করবে,সে যে প্রস্তত অনেক সময় ধরে।

“তুমি আরও এগোতে চাও”?
অবাক হয়ে দেখলো মারিয়া,চাবুকের হাতলটা ধরে যোনীদ্বারে নাড়াচাড়া আরম্ভ করলো টেরেন্স,চাবুকটা ভগাঙ্কুর ছুঁয়ে গেলে,যেন সব জ্ঞান হারিয়ে ফেললো,সে।খেলার পর আরেক খেলা,একসময় খুঁজে পেল চরম যৌন সুখানুভুতি যা সে পায়নি মাস,বছর হারানো দিনগুলোয়।তার দেখা শত শত পুরুষের কেউ দিতে পারেনি সে আনন্দ।সে যেন ছুটে যাওয়া নক্ষত্রলোকের সেই অজানা কালগুহায়,যেখানে ব্যাথা বেদনার চরমে খুঁজে পাওয়া যৌনসুখের স্বর্গলোক।

হাত পা বাঁধা,রুমাল মুখে ক্লান্ত মারিয়া শুয়ে আছে বিছানায়,হ্যান্ডকাফের ব্যাথা,পায়ের চামড়ার শেকল,বেশ একটু ব্যাথা অনুভব করছিল যদিও,তবে পাওয়া আনন্দের তুলনায় সেটা কিছুই না।আনন্দ,ব্যাথা সাজিয়ে দেয়া পাশাপাশি,চাবুকের হাত তার ভগাঙ্কুরে ছুঁয়ে যাওয়ার চমক তাকে এনে দিল যে যৌনসুখ,সারা আকাশ বদলে যাওয়া সেই ক্ষনিকের আলোয়।

মায়াবী এক রাজ্যে মারিয়া তখন,ভিজে যাওয়া যোনীদ্বারের লোমগুলো,নিরীহ শান্ত একটা হাত
ধীরে ধীরে খুলে দিল রুমাল,পায়ের বাঁধন,হ্যান্ডকাফ।লজ্জায় মুখ লুকিয়ে শুয়ে থাকলো সে,ঐ যৌনসুখ,তার ঐ কামুক চেহারা সেটাতো দেখানোর নয়।লোকটা আলতো করে তার চুল নেড়ে দিচ্ছিল,যদিও কিছুটা ক্লান্ত তার নিঃশ্বাস,কিন্ত আনন্দের আকাশটা ছিল শুধু তার একার।
তার নগ্ন শরীরটা জড়িয়ে ধরলো পোষাক পরে থাকা লোকটাকে যে শুধু আদেশের খেলায় ক্লান্ত তখন।জানা ছিল না তার কি বলা উচিত,জানা ছিল না রহস্যের দেশের শাসনকর্তাকে কিই বা বলা যায়?

“কি করলে তুমি আমাকে”,কেঁদে বললো সে।
“তুমি যা চেয়েছিলে”।
তার দিকে তাকিয়ে সে বুঝতে পারলো,টেরেন্সকে প্রচন্ড দরকার তার।
“আমি তো তোমাকে জোর করিনি,তোমাকে বলতে শুনিনি,হলদে।আমি শুধু তোমার দেয়া ক্ষমতাটাই ব্যাবহার করছি”।
“তুমি কি খুঁজে পেয়েছ যৌনসঙ্গমের সুখ”?
“না”, সে বললো, “আজ মনিবের আনন্দ তার ক্রীতদাসীর আনন্দে”।

এর মাথামুন্ডু কিছুই বোঝা সম্ভব ছিল না,মারিয়ার-কেন না এটাতো জীবনের গল্প না,এ ধরণের কথা কোন গল্পেও শোনা যায় না।রুপকথার এই রাজ্যে তার মন ছড়ানো স্বপ্নের আলোয়,আর ঐ লোকটা নিষ্প্রভ,জীবন শক্তি হারানো একটা চরিত্র।
“তোমার যখন ইচ্ছা যেতে পার,তুমি”,টেরেন্স বললো।
“চলে যাওয়ার আগে আমি বোঝার চেষ্টা করছি,কি ঘটলো আমার শরীরে”।
“এখানে বোঝার কিছু নেই,কিই বা আছে বোঝার,আনন্দের আকাশটায় একটা কাল মেঘের ঢেউ টেনে আনতে চাচ্ছ,নাকি”।

মারিয়ার নগ্নতার উপচে পড়া সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিল চারপাশে,দুটো গ্লাসে মদ ঢেলে নিল।তার পর দুটো সিগারেট জ্বালিয়ে,একটা তুলে দিল টেরেন্সের হাতে।নাটকের চরিত্রগুলো বদলে গেছে তখন-মনিব তখন দাসের চরিত্রে,দাসী মনিবের চেহারায়,তাকে ঐ সুখ দেয়ার পুরস্কার।।
“কাপড়চোপড় পরে নেই,তার পর যাব,তোমার যদি কোন আপত্তি না থাকে কিছুক্ষণ কথা বলি”।
“কথা বলার তেমন কিছু আছে কি?আমার যা চাওয়ার সেটা পেয়ে গেছি আমি,তা ছাড়া কাল তো লন্ডন ফিরতে হবে আমাকে”।

বিছানায় চোখ বুজে শুয়ে ছিল টেরেন্স,বুঝতে পারছিল না মারিয়া ঘুমিয়ে আছে না ভান করছে লোকটা।সেটা নিয়ে মাথা ব্যাথা ছিল না তার,একটা সিগারেট জ্বালিয়ে মদের গ্লাস হাতে জানালায় মুখটা ঠেকিয়ে বাইরে দিকে তাকিয়ে থাকলো-হয়তো লেকের ধারে দাঁড়ানো লোকটা খুঁটিয়ে দেখছে তার নগ্নতা,দেখছে সুখ ছড়ানো শরীরটাকে।কাপড় পরে বেরিয়ে গেল সে,বিদায়ের কোন ভাষা ছিল না ঠোঁটে,দরজাটা কে খুললো তা নিয়ে কোন বির্তক ছিল না,জানা ছিল না তার ফিরে আসবে কি না।

ট্রেরেন্স দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ শুনে ভাবলো-হয়তো মারিয়া ফিরে আসছে,বলবে কিছু একটা ভুলে গেছে,সে উঠে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে নিল।কোন সন্দেহ নেই,মেয়েটার ভাবে ভঙ্গীতে বিশেষত্ব আছে একটা।চাবুকের মারটা নীরবে সহ্য করে গেছে,অবশ্য সেটাতো অত্যাচারগুলোর সবচেয়ে নিম্নস্তরের।তার মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা যখন দুটো মন খুঁজে পেয়েছিল সুখ তাদের যন্ত্রনায়।

০০০০০০০০

জীবনের বিভিন্ন আঙ্গিনায় প্রেমিকরা হারিয়ে যায় তাদের অজান্তেই ঐ যন্ত্রনার আনন্দে।
কাজে যায় তারা,অপমানিত হয়,অপমান করে যন্ত্রনা দেয় তাদের প্রেমিকাকে,জানা নেই তাদের শুধু হাসি মুখের কটা কথায় বেরিয়ে আসতে পারে,ওরা ব্যাথা বেদনা অত্যাচারীর
জগতটা থেকে।টেরেন্স দেখেছে এটা তার সাংসারিক জীবনে,তার বৌ,একজন খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী-সন্দেহ,ঈর্ষায় ভঁরা মনটা সান্তনা খুজে বেড়াতো ডাক্তার আর ওষুধে।ভালবাসার অভাব
ছিল না তাদের মাঝে,তবু জানা ছিল না কেন ঐ যন্ত্রনার পথটা খুঁজে নিল সে,যেন যন্ত্রনার ভার চাপিয়ে দেয়াটাই ছিল তাদের আনন্দ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ।

এক শিল্পীর ছেড়ে যাওয়া, “venus in furs”,বইটা পড়ে মনে হলো টেরেন্সের,যন্ত্রনায় কোথাও লুকানো আছে স্বর্গীয় সুখের একটা আকাশ।
বইটার কথাগুলো আজও মনে গেঁথে আছে তার-‘সুন্দরী মেয়েটা তার কাপড় খুলে হাতে একটা চাবুক নিয়ে বললো,এটাই তো তোমার চাওয়া’।
‘আমি তোমাকে চাবকে মেরে ফেলবো’।
‘আমি চাই তোমার ভালবাসার অতাচার,দয়া কর,এই অভাগাকে’।

বৌ আরেক ঘরে তখন রির্হাসাল চালিয়ে যাচ্ছিল,মাঝে মাঝেই পিয়ানো বাদকের সাথে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল,টেরেন্স ভাবছিল তার বৌ হয়তো ফষ্টিনষ্টি,পরকীয়াতে ব্যাস্ত।মনটা বিধস্ত,
কিন্ত কিই বা করার আছে তার,যন্ত্রনায় সে চেষ্টা করছিল সুখ খুঁজে নেয়ার জন্যে।
বই এর নগ্ন মেয়েটা বলছিল,’আমি চাবুক দিয়ে মারবো তোমাকে’।
‘আমার কোন আপত্তি নেই,অনুরোধ তোমার কাছে,তুমি আমাকে যন্ত্রনায় তছনছ করে দাও’।

টেরেন্স ভাবছিল,সে তো বেশ ভাল একটা চাকরী করে,দেখতে শুনতেও খারাপ নয়,কেন অযথা যন্ত্রনা খুঁজছে সে,কিন্ত ওটাই ছিল তার চাওয়া।ভাগ্য হাসিমুখে তুলে দিয়েছে অনেক কিছু তাকে,কিন্ত জীবনের দেয়া খ্যাতি,প্রতিপত্তি-তবে আনন্দ,সুখ যেন কেড়ে নিয়ে গেছে তার কাছ থেকে।তার মনে হচ্ছিল সে শুধু ছুটে বেড়াচ্ছে সার্থকতার দিকে,কিন্ত এটাও দেখা তার আকাশ ছোঁয়া সার্থকতার চেহারাটা ভেঙ্গে পড়েছে মাটিতে শুধু একটুকু আনন্দের আশায়।

বইটা সম্পূর্নই পড়লো,সে।আনন্দ খোঁজা আরম্ভ করলো,যন্ত্রনায় লুকানো আনন্দ,ভিডিওতে যা দেখতে পাওয়া যায়।লুকিয়ে লুকিয়ে ভিডিও দেখার পর্ব দেখে বৌ জানতে চাইলো,কি করছে সে?টেরেন্স খুব সহজভাবেই বললো,ম্যাগাজিনের কভারের জন্যে-ওটা তার গবেষনা।

এটাও মন্তব্য করতে দ্বিধাবোধ করলো না বৌ এর কাছে,“আমরা যদি খুঁজে নেই ও দেশটা,খুব একটা খারাপ হবে না”।তার পর খেলা আরম্ভ হলো তাদের,প্রথম দিকটায় পর্নের দোকানের বই পড়ে।ধীরে ধীরে তারা খুঁজে নিতে চেষ্টা করলো,চরম যন্ত্রনায় আনন্দ,তাদের সম্পর্কটা আরও গাঢ় হয়ে উঠলো।তারা নিষিদ্ধ এক রাজ্যের দুজন সঙ্গী,যন্ত্রনার খেলাকে নিয়ে গেল তারা রীতিমত এক শিল্পের পর্যায়ে,নিত্য নতুন আবিষ্কার করা তাদের নতুন খেলার পুতুল।

তার বৌ এর বুট পরা ভিডিওটার কাটতি ছিল আকাশচুম্বী,ঘুমের দেশের লোকজন যেন জেগে উঠলো যেন অবিশ্বাস্য এক চমকে।শুধু ইল্যান্ড না সারা ইউরোপ জুড়ে ছিল ঐ রেকর্ডের কাটতি ছিল তুঙ্গে।অবাক হলো টেরেন্স,বুঝতে পারলো শুধু সে না,সবাই চায় তাদের মনের সুপ্ত লালসাকে নতুন এক রুপে দেখার জন্যে।তার বৌ এর গানের গ্রুপ, ‘চাবুক’ দিয়ে তাদের গ্রুপের logoটা বানালো,টি সার্ট,পোষ্ট কার্ড,ষ্টিকার সব কিছুই বেরোলো।যে ভাবে সে মারিয়াকে বলেছিল,প্লেগের সময়ের যন্ত্রনার কাছে আত্মসর্মপন,যন্ত্রনাকে ভঁয় না পাওয়াটাই যন্ত্রনাকে জয় করার উপায়।

মিশর,রোম,পার্সিয়ান রাজ্য-সব দেশেই বিশ্বাস ছিল দেশকে উদ্ধার করতে নিজেদের উৎসর্গ করা দরকার দেবতার কাছে।চীনে কোন দূর্যোগ হলে,শাস্তি পেত দেশের সম্রাট,স্বর্গীয় প্রতিনিধি হিসেবে দোষী হিসেবে ধরা হতো তাকে,মতামত ছিল লোকজনের-তার অত্যাচার অবিবেচনার ফল হলো দূর্যোগ।আদি গ্রীসে নামকরা যোদ্ধাদের সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চাবুক মারা হতো দেবী আর্টেমিসকে উৎসর্গ করে,তার পূজোর জন্যে,চারপাশের লোকজন যোদ্ধাদের অনুরোধ জানাতো যন্ত্রনা সহ্য করার জন্যে,ওটা নাকি তৈরী করতো যোদ্ধাদের মানসিকতা।বেলাশেষে পুরোহিতরা তাদের ক্ষত দেখে যুদ্ধে শহর প্রতিরক্ষা সমন্ধে ভবিষৎ বাণী করতো।

এটাও শোনা যায় চতুর্থ খ্রীষ্টাব্দে আলেকজান্দ্রিয়া এলাকায় খ্রীষ্টান পুরোহিতরা চাবুক মেরে মানুষের শরীরে লুকিয়ে থাকা শয়তানটাকে তাড়ানোর চেষ্টাও করেছে।সাধু সন্ন্যাসীদের শারীরিক আত্মযন্ত্রনার ইতিহাসগুলো খুব একটা অজানা নয়।সন্নাসী রোসা নগ্ন দেহে তার বাগানে দৌড়ে বেড়াতো,ফুলের কাঁটায় রক্তাক্ত শরীর ছিল তার সাধনার বিরাট এক অংশ,সাধু ডোমিনগো লোরিকাটুস, শুতে যাওয়ার আগে চাবুক দিয়ে নিজেকে মেরে রক্তাত্ত করে ফেলতো।সকলের একই কথা-যন্ত্রনা পর্ব তৈরী করে দেয় মানুষকে সেই চরম শক্তির সাথে যোগাযোগের জন্যে।

শোনা যায় কিছু কিছু ফাঙ্গাস(গাছপালা)আছে,যার প্রভাব মানুষকে সমাধিস্থ অবস্থায় নিয়ে যায়,যদিও সেটা নিয়ে দ্বিমতের অভাব নেই।ফাঙ্গাসের প্রভাবের কথাটা গীর্জা ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষের এলাকায় পৌঁছাতে খুব একটা সময় লাগেনি,প্রচলনটাও গীর্জা ছাড়িয়ে ছিল সাধারণ মানুষের মাঝে।১৭১৮ সালে প্রথম একটা বই প্রকাশ করা হয়,শরীরের ক্ষতি না করে কিভাবে যন্ত্রনার মাধ্যমে মোক্ষ লাভ করা সম্ভব।শতাব্দীর শেষের দিকে ওটা বেশ প্রচলিত হয়ে পড়ে ইউরোপের অনেক দেশে।এমনও শোনা যায়,কোন কোন দেশের রাজা,প্রতাপশালী ব্যাক্তিরা তাদের ক্রীতদাসকে দিয়ে নিজের শরীরের যন্ত্রনায় খুঁজে নিত আনন্দ।

সূত্রঃ চতুর্মাত্রিক।
তারিখঃ আগষ্ট ২৬, ২০২১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ