Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এলিভেন মিনিটস-পাওলো কোয়েলহো-পর্ব-দশ।

Share on Facebook

অনুবাদে: ইললু।

(ধারাবাহিক-(১০) )

হুইস্কীর বোতলটা রেখে সে একটা মদের বোতল নিয়ে আসলো।এর মধ্যে আগুনটা বেশ জ্বলে উঠছে,বাকী বাতিগুলোও নিভিয়ে দিল মারিয়া,ফায়ার প্লেসের আগুনের হালকা আলো শুধু ছড়ানো ঘরটায়।ভাবটা ছিল যেন তার জানা ছিল ওটাই প্রথম পদক্ষেপ,অন্য মানুষটাকে বিচার করা আর নিজের মনটা সাজিয়ে নিয়ে।
তার ব্যাগটা খুলে মার্কেট থেকে কিনে আনা কলমটা দিয়ে বললো,
“এটা তোমার জন্যে,আমি আমার খামার বাড়ী কেনার পরিকল্পনায়,দিন দুয়েক ব্যাবহার করেছি।বেশ ব্যাবহার করেছি,ওটাতে লুকোনো আমার শরীরের গল্প,শরীরের ঘাম,মনের দৃঢ়তা,তোমার হাতে তুলে দিলাম”।পেনটা তুলে দিল,সে।

“বাজার থেকে নতুন কিছু না কিনে,তোমাকে দিলাম যা একান্তই আমার।একটা উপহার”।
সামনে বসে থাকা লোকটার জন্যে একটা সম্মানজনক উপহার,তার সঙ্গ পাওয়ার আনন্দে।
আমার একটা কিছু এখন জড়িয়ে থাকা তার সাথে,যা দেয়া আমার মনের আনন্দে”।

রালফ উঠে গিয়ে, কিছু একটা এনে তুলে ধরলো,মারিয়ার হাতে,
“এটা আমার ছেলেবেলার ইলেকট্রিক ট্রেনের একটা গাড়ী।বাবার অনুমতি ছিল না ওটা নিয়ে খেলা করার,আমেরিকা থেকে নিয়ে আসা একটা দামী গাড়ী যে।অপেক্ষা করে থাকতাম,বাবা কখন সাজিয়ে দেবে গাড়ীটা আমার খেলার জন্যে,কিন্ত আমার বাবা তো সব সময়েই ব্যাস্ত,
ব্যাবসা না হয় অপেরা।ট্রেনটা ছেলেবেলা ছাড়িয়ে ছুটে আসা আমার এই বেলাটাও,কোন ব্যাবহার হয়নি,কোন আনন্দ লুকোনো নিয়ে ওটাতে।সবকিছুই আছে আমার কাছে,লাইন,ইঞ্জিন,
ব্যাবহারের বইটা,একটা ট্রেন যা আমার নয়,আমাকে ছুঁয়ে যাইনি কোনদিন।

মাঝে মাঝে আমার মনে হয়,কেন ছুঁড়ে ফেলিনি আমার অন্যান্য খেলনার সাথে,যদিও
ভুলে গিয়েছিলাম আমি,কিন্ত ঐ ভাঙ্গার খেলায় তো আছে একটা ছেলের জীবন গড়ার গান।
ঝকঝকে ট্রেনটা আমাকে মনে করিয়া দেয় আমার ফেলে আসা ছেলে বেলা,যা কোনদিন আসেনি আমার জীবনে,দামটা আর ব্যাস্ততা সরিয়ে দিয়েছিল আনন্দের আকাশটা।ভালবাসা কোনদিন ছাপিয়ে যেতে পারেনি প্রয়োজনীয়তার চেহারা”।

জ্বলে থাকা আগুনটার দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে ছিল মারিয়া,বুঝতে পারলো কিছু একটা ঘটে যাচ্ছে,শুধু মদ আর পরিবেশ না,পারির্পাশ্বিকতা বাস্তবতা ছাড়িয়ে ছুটে যাচ্ছে,দেয়া নেয়ার পর্বে।রালফ ঘুরে তাকালো আগুনের দিকে।কোন কথা নেই,শুধু কাঠ পোড়ার শব্দ।বসে আছে দুজন,মদের গ্লাসের চুমুর শব্দটা,কথা নেই,কোন কিছু করা নেই,নিস্তব্ধতায় জ্বলজ্বলে আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকা শুধু।

“আমার জীবনেও আছে ও ধরণের ঝকঝকে নতুন ট্রেনের গল্প,তার একটা আমার মন।
সাজিয়ে খেলা করা হয় নি যা কোনদিন”।
“তুমি তো জান ভালবাসা কি জিনিষ”?
“আমি ভালবেসেছি,জানি ভালবাসা কি।আমার ভালবাসা ছিল এতই গভীর,ছুটে পালিয়েছি ভঁয়ে,উপহার দেয়ার সময়টায়”।
“কি বলতে চাইছ,কিছুই বুঝতে পারছি না”।

“সব কিছু তুমি বুঝবে না,বোঝার দরকারটাও নেই তোমার,শিখিয়ে দিচ্ছি এমন কিছু যা
আমার নিজেরই জানা ছিল না কোনদিন।একটা উপহার দেয়া,নিজেকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার আনন্দটা আকাশ ছাড়ানো,খুঁজে পাওয়া যাবে না নেয়ার গল্পে।তোমার কাছে দেয়া আমার স্বপ্ন,আমার গল্পকথা,তোমার দেয়া ছেলেবেলার স্বপ্ন যা দেখনি,কোনদিন।
আমার ধরে রাখা তোমার পুরোনোটা,তোমার ধরে থাকা আমার ছোট্ট বর্তমানের স্বপ্ন,বেশ কাব্যিক,মনে হয় না”?

না থেমে,অবাক না হয়েই বলে গেল সে কথাগুলো,যেন জানা তার যুগযুগ ধরে শুধু ওটাই বলা যায়,ওভাবেই বলা যায়।আস্তে করে উঠে গিয়ে রাখা জ্যাকেটটা গায়ে আলতো করে চুমু দিল সে রালফের গালে।রালফ হার্ট উঠেও দাড়ালো না,চুপচাপ বসেই থাকলো,আগুনের আলোয় নেশাগ্রস্ত,ভাবছিল হয়তো তার বাবার কথা।

“আমার জানা ছিল না কেন আমি রেখে দিয়েছিলাম,ট্রেন,গাড়ীগুলো।এখন বেশ ভাল করেই বুঝতে পারছি সেটা তোমার জন্যে,আমার মনের উপহারটা,আগুনের আলো উত্তাপে।এখন আমার বাড়ীটা আনন্দে ভঁরে উঠেছে”।

সে বললো ট্রেনের বাকী অংশটা,ইঞ্জিন,ধোয়া তৈরী করার পিলগুলো সব কিছু শিশুদের প্রতিষ্ঠানে দান করে দিবে।
“এ ধরণের ট্রেন তো আর তৈরি করা হয় না হয়তো বেশ দাম হবে”,
বলেই মারিয়া বুঝলো বলাটা ঠিক হয়নি,ছেলেমেয়েদের খেলার জন্য বিশেষ একটা উপহার হবে,যদিওতবে কারণটা তা নয়,সে মুক্তি পেতে চায় তার পুরোনো যা এলোমেলো করছে আজও তার বর্তমানটা।

আর কিছু বলা যায় না ঐ সময়টায়,আবার সে আলতো করে চুমু খেল তার গালে,চলে গেল
দরজার দিকে।তবু রালফ তখনও তাকিয়ে থাকা আগুনের ঝলকে,খুব নম্র স্বরেই সে বললো, “দরজাটা,খুলে দাও”।
রালফ উঠে দরজাটা খুলে দিল,মারিয়া বুঝিয়ে বললো ব্রাজিলিয়ানদের এক ধরণের সংষ্কার আছে-প্রথম দেখায় নিজে দরজা খুলে না যাওয়ার,তাতে নিয়তি নাকি ঠেলে দেয় দুই প্রেমিককে দুদিকে।
“আমি যে ফিরে আসতে চাই আবার”।
“যদিও কাপড় খুলিনি,একজন ছুঁয়ে যাইনি আরেকজনকে,তবু যৌনসঙ্গম করেছি-আমরা”।
একটু হাসি ছিল তার ঠোঁটের কোনে-তাকে বাড়ী পৌঁছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবটা হেসে প্রত্যাখান করলো,সে।
“কাল তোমার সাথে দেখা হবে,কোপাকাবানায়”।
“না এসো না,একটা সপ্তাহ যাক না।এটুকু জানি অপেক্ষা করার যন্ত্রনা আছে একটা,জানতে চাই আমি সেই যন্ত্রনার স্বাদ।আমি জানি তুমি আমার পাশেই আছ,যদিও নেই আমার কাছে”।

অন্ধকার শীতের রাতে সে একা একা হেঁটে হেঁটে ফিরে যাচ্ছিল,এমন নতুন কিছু না,তবে বদল হয়েছে বেশ,বরাবরই মনটা ভঁরা ছিল তার একাকীত্বের কান্নায়,এর আগেও হাঁটতে হাঁটতে হিসেব করতো ব্রাজিল ফেরার কথা।আজ যদিও সে হেঁটে যাচ্ছে একা,হেঁটে যাচ্ছে নিজেকে খুঁজে নিতে নিতে,খুঁজে নিতে সেই মেয়েটাকে আগুনের ছটায় একজনের সাথে সময় কাটানো যার,সরলতা,জ্ঞান আর আলোয় ছড়ানো মনটা।কেমেয়েটার মুখটা সে দেখেছে অনেক আগে লেকের ধারে হেঁটে যাওয়ার সময়,দুঃখভঁরা চোখ দুটো,কোনদিন ভাবেনি তার পথটাই বেছে নেবে সে।কিছুটা পথ হেঁটে যাওয়ার পর একটা ট্যাক্সি নিল সে,আমেজটা কেটে যাওয়া তখন।ওটাই ভাল-আনন্দের সময়টা হারাতে চায় না সে অযথার চিন্তায়।

মারিয়ার ডাইরীর উদ্ধৃতি,তার ট্রেনের গাড়ীটা পাওয়ার পরঃ

“অর্ন্তনিহিত চাওয়ার প্রচন্ডতা কোন না কোনভাবে মানুষকে ঠেলে দেয় তার মনের মানুষটার দিকে।বদলে যায় সবকিছু সেই মুহুর্তে,জেগে উঠে একটা পুরুষ,এক নারীর চেহারাটায়-কেন, ব্যাখা কি নেই কোন?চাওয়ার পবিত্র জোয়ারটা ছাপিয়ে যায় তাদের মন,শরীর,জীবনকে ভালবাসতে শেখে তারা,আনন্দে খুঁজে নেয় প্রতি মুহুর্তে,অপেক্ষা করে থাকা না জানাটা খুঁজে নেয়ার জন্যে-জানার রাজ্যে।
কোন তাড়াহুড়া নেই,কোন হাহুতাশ নেই,শুধু খুঁজে যাওয়া নিজেদের।সময়ের আনন্দটা ভোগ করে নেয়া সময়ে,ক্ষনে ক্ষনে যে চেহারা বদলায় আনন্দের”।

০০০০০০০

পরের কটা দিন মারিয়া কাটালো তার নিজের স্বপ্নের ফাঁদে, বের হয়ে আসার চেষ্টা করে নি,কোন দুঃখও ছিল না মনে।এটা জানে সে যতই ভালবাসা থাক না-কোন এক সময়ে,রালফ হার্টের চোখে একদিন সে শুধু পতিতাই হয়ে যাবে।একজন নামীদামী শিল্পী,অনেকটা স্বর্গে বাস-আর সে দূরদেশ থাকা বিপন্ন একটা মেয়ে।ভাল স্কুলে পড়াশোনা করেছে সে,নামকরা গ্যালারিতে আছে তার ছবি আর মারিয়া কোন রকমে স্কুলটা শেষ করা।এ ধরণের গল্প শুধু খুঁজে পাওয়া যায় গল্পের রাজ্যে-তবে মারিয়া জানে এ গল্পগুলো একসময় ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যায়,সবকিছুই ফিরে আসে বাস্তবতায়।সবচেয়ে বড় আনন্দ,সে বলতে পারবে ঐ গল্পের একটা চরিত্র হওয়ার ইচ্ছা নাই তার।

“বিধাতা,আমি যে ভেসে যাচ্ছি কল্পনার রাজ্যে”।
সপ্তাহটা কেটে গেল ভেবে ভেবে-রালফকে খুশী করার উপায়গুলো,সে তো অন্ততঃ তাকে দেখিয়ে দিয়েছে “মনের আলোটা”,যেটা লুকোনো ছিল অজানায়।একমাত্র পুরষ্কার তাকে সে ফিরিয়ে দিতে পারে,তা ছাড়া আর কিছু নেই তার-আছে শুধু যৌনসঙ্গমের খেলা,যৌনবিহার।
কোপাকাবানার জীবনটা বড়ই একঘেয়ে,তাকে উদ্ধুদ্ধ করার মত তেমন কিছুই নেই।পর্নো ছবি দেখা আরম্ভ করলো সে,সেখানেও সেই একঘেয়েমি,শুধু মুখগুলো ভিন্ন ভিন্ন।ঠিক করলো কটা বই কিনবে,তবে জানতো সে ঐ ধরণের বই শুধু একবারই ব্যাবহার করা যায়,তারপর হয়ে যায় ঘরের জঞ্জাল।

রালফের সাথে সান্তিয়াগোর পথটাতে কটা বই এর দোকান দেখেছিল,একটাতে ঢুকে জানতে চাইলো,যৌনসঙ্গমের বই আছে কি না?
“আছে,একটা দুটা না,অনেকগুলো”-দোকানের সহকারী বললো, “মজার কথা,আজকাল অনেক লোক ও ধরণের বই খোঁজে,তাই আমাদের দোকানে একটা অংশই আছে শুধু যৌনতার বই এর,গল্প উপন্যাসের বইগুলোও যেখানে সঙ্গম,যৌনবিহার নিয়ে লেখা।গল্পের মধ্যে লুকিয়ে আছে যৌনতা,ভালবাসার গল্প বা যাই হউক,শুধু একটাই কথা-সঙ্গম,যৌনবিহার”।

মারিয়ার অভিজ্ঞতায় জানা,মহিলাটার বলা ভুল,লোকজন ভাবে যৌনতা সব সময় অন্য কারও মাথাব্যথা।লোকে মাথায় পরচুলা পরে,খাওয়াদাওয়ার দিকে বেশ মনোযোগ দেয়,
শরীরকে লোভনীয় করার জন্যে নানান ধরণের কাপড়চোপড় পরে,যদি কোনভাবে জ্বলে ওঠে শরীরের আগুনটা।কি হয়,তারপর?বিছানায় যাওয়ার পর এগার মিনিট-তারপর সব শেষ।এর মাঝে এমন কোন জল্পনা কল্পনা নেই,যা নিয়ে যাবে তাদের কোন স্বর্গরাজ্যে,জেগে ওঠা আগুন হারিয়ে যেতেও খুব একটা সময় নেয় না।

তবে,কি লাভ তর্ক করে সোনালি চুলের মেয়েটার সাথে,যার ধারণা বই এর পাতায় সমাধান করে দেয়া,পৃথিবীর সব সমস্যাগুলোর।যৌনতা বলতে কোন কিছুর অভাব ছিল না লাইব্রেরীর বিশেষ অংশটায়,লেসবিয়ান,সমকামী পুরুষ,যৌনতায় হিমশীতল,প্রাচ্যের ছবি দিয়ে দেখানো সঙ্গমের বিভিন্ন ভঙ্গী,একটা বই তার দৃষ্টি আর্কষন করলোঃযৌনতার পবিত্র সুর।

ঘরে বসে রেডিও চালিয়ে বইটা দেখা আরম্ভ করলো,বিভিন্ন ভঙ্গীতে যৌন সঙ্গমের দৃশ্য,তবে সে গুলো সার্কাসের খেলোয়াড় ছাড়া আর কারও পক্ষে করা একেবারেই অসম্ভব।বিবরণগুলোও তেমন মন কেড়ে নেয়া না।কাজে মারিয়ার অন্ততঃ এটুকু শেখা,যৌনসঙ্গমে ভঙ্গীটায় সব কিছু না,সেটা বদলে যায় সহজ স্বাভাবিকভাবে,নাচের পদক্ষেপের মত।তবুও জানার আগ্রহটা কমেনি তার।

ঘন্টা দুই বইটা নিয়ে নাড়াচাড়া করার পর,যা বুঝলো তেমন একটা কিছু নেই,তা ছাড়া তাকে রাতের খাবার খেয়ে কোপাকাবানা যাওয়ার প্রস্ততি নিতে হবে,আর দ্বিতীয়ত,বইটা যার লেখা তার কোন ধ্যান ধারণা নেই যৌনতা নিয়ে,শুধু শুধু লিখে গেছে এলোমেলো কটা কথা।একগাদা সাজানো কথা,প্রাচ্যের নানান উপদেশ যার কোন মাথামুন্ডু বোঝার উপায় নেই।সে দেখলো লেখক হিমালয়ে কোন একসময় আধ্যাত্মিকতা শেখায় ব্যাস্ত ছিল(তার জানা দরকার হিমালয়ের অবস্থানটা),ইয়োগা শিখেছে,অনেক পড়াশোনা করেছে শরীরের রহস্য নিয়ে,অন্যান্য লেখকদের উদ্ধৃতি ছিল অনেক,তবু শেখা হয় নি,যা নিয়ে বলা তার,যৌনতা।

জানা ছিল না লেখিকার যৌনতা সমন্ধে জ্ঞানের মাত্রাটা,সেটা তো শুধু সঙ্গমের চিন্তাধারা না,ধুপধুনো জ্বালিয়ে দেওয়া না,কামুকতার রাজ্যও না।কি করে ঐ লেখিকার সাহস হলো যৌনতা সমন্ধে লেখার,যে বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা নেই তেমন,সাজিয়ে নিয়ে কতটুকুই বা লেখা যায়।শরীরের খেলা,মারিয়ার প্রতিদিনের কাজ হলেও জানা নেই তার গভীর ভাবে শরীর যৌনতার রাজ্যটা।ঐ লেখিকা না জেনেই এ ধরণের বই লেখে ফেললো,এ বিষয়ে বই লেখার আগে তার চিন্তা করা উচিত ছিলঃএগার মিনিট।পাগলামি হোক,মিথ্যে ভাবুক লোকজন ওটা হবে তার গল্প।ও ব্যাপারে যদিও তার কোন আগ্রহ নেই,এ সময় তার চিন্তা শুধু কিভাবে রালফকে খুশী করা আর তার খামার বাড়ী নিয়ে।

মারিয়ার ডাইরী থেকে নেয়া,নীরস বইটা সরিয়ে রাখার পরঃ

“প্রেমে পড়েছি আমি।আমি নিজে জড়িয়ে পড়েছি প্রেমের ফাঁদে,আমার চাওয়া নেই কোন,
সেটাই আমার আনন্দের অনুভুতি।জানি,আর মাস তিনেক তার পর আমি চলে যাব বেশ দূরে,এ সব কিছুই হয়ে যাবে শুধু স্মৃতি।তবুও ভালবাসা দরকার,আমি চাই না ভালবাসা ছাড়া জগতটা,আমার।

আমি রালফ হার্টের জন্যে একটা গল্প লিখে যেতে চাই-ওটা যদি তার নাম হয়।কোন সন্দেহ নেই আমার মনে হয় সে আসবে ক্লাবে,কিন্ত তাতে কিইবা যায় আসে।তাকে ভালবাসি আমি এটাই যথেষ্ট,সে সব সময় আছে আমার মনে,এ শহরটা রাঙ্গানো তার কথায়,ভালবাসায়।যখন এ দেশটা আমি ছেড়ে যাবো,একটা মুখ,একটা নাম আর ফায়ার প্লেসটা জ্বলজ্বল করবে স্মৃতির পাতায়।আমার যন্ত্রনার সময়,বিপদ কাটিয়ে ওঠার গল্প কথা সে হিসেবে কিছুই না।তার উপকারের প্রতিদান দেয়ার ইচ্ছা আমার নাই,ক্ষমতাটাও নাই।আমি বুঝতে পেরেছি ঐ ক্লাবে কফি খেতে যাওয়া কোন আকস্মিক ঘটনা না,ওটা নিয়তি।

সোজা কথায়,এ ধরণের মিলন তখনই ঘটে,যখন হতাশায় ডুবে যাওয়া মনটায়,আসে নবজন্ম।সকলের জীবনেই অপেক্ষা করে থাকে এ ধরণের অভিজ্ঞতা,আমাদের অজান্তেই অচেনা হয় চেনা।হতাশার চরমে,না হয় উৎসাহের আকাশে,সেই অজানা ছুঁয়ে যায় আমাদের শরীর,মন-বদলে যায় সব কিছু বদলে,আমরা হয়ে উঠি নতুন আরেকজন।

সবাই জানে ভালবাসতে,ওটা শেখাতে হয় না,ওটা আমাদের জন্মগত পাওয়া।কেউ খুব সহজেই আয়ত্ব করতে পারে ভালবাসার আবেগ,তবে অনেককে শিখে নিতে হয় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার নিয়মটা,তবে সবাইকে জ্বালাতে হয় মনের আগুনটা,শিখে নিতে হয় ভালবাসার সুখদুঃখ,
টানাপোড়েন-মনের বিশেষ মানুষটার কাছে পৌঁছানোর আশায়।

আমাদের শরীরটা কথা বলতে শেখে-আমি ঐ মানুষটাকে নতুন করে শেখাতে চাই শরীরের চরমসুখটা,যাকে সবাই বলে যৌনসঙ্গম।ঐ মানুষটা খুঁজে দিয়েছে আমার মনের আলোটা,যদিও জানা নেই-সেটার বিশেষত্ব আমার কাছে।আমি সুখী করতে চাই তাকে,খুঁজে দিতে চাই তার হারানো শরীরের গান।জীবনটা অনেক সময় বেশ একটা নিষ্ঠুর চেহারা নিয়ে এসে,একজন মানুষ দিন,মাস,বছর কাটিয়ে দেয় একইভাবে,কোন নতুনত্ব নেই,পুরোনো বিস্বাদ হয়ে উঠে সব কিছু।হঠাৎ করে কোন একসময় খুলে যায় নতুন দরজাটা-ভাসিয়ে নিয়ে যায় আবেগের স্রোত।মারিয়ার রালফ হার্টের সাথে দেখাটা সেই নতুন দরজা-শূন্য এক মন,পরের মুহুর্তেই হারিয়ে গেল তার ভালবাসার সমুদ্রে”।

০০০০০০

ডাইরী লেখার ঘন্টা দুয়েক পরে সে যখন ক্লাবে পৌছালো,মিলান ডেকে পাঠালো,
“তা হলে ঐ শিল্পীর সাথে তুমি রাতটা কাটিয়েছ”?

রালফ বেশ পরিচিত ক্লাবে,বুঝতে পেরেছিল তাকে তিনটা খদ্দেরের পয়সা দেয়ায়, কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে।মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো মারিয়া,ভাব দেখালো সে যেন রহস্যময়ী এক চরিত্র।তবে মিলানের জানা এ জীবনের গল্প,তার চেয়ে ওটা নিয়ে আর কিছু না বলাটাই ভাল মনে করলো।

“একজন বিশেষ খদ্দের,এর আগে তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছে প্রায়ই,এখন তুমি মনে হয়
পারবে,ও ধরণের মানুষকে আয়ত্বে আনতে”।
“বিশেষ খদ্দের”।
“কিন্ত শিল্পীর সাথে এ ব্যপারে কি সম্পর্ক”?
“সে ও একজন বিশেষ খদ্দের”।
তা হলে রালফের সাথে ভালবাসার পর্বটা,হয়তো ঘটেছে তাদের কাজের অন্য মেয়েদের সাথে।ঠোঁটে কামড় দিয়ে সে ভাবলো,আর কিছু না হোক কটা দিন কেটে গেল বেশ আনন্দে,ডাইরীর লেখাগুলো বদলাতে হবে তার।
“আমি কি তার সাথে একই খেলা করবো,ঠিক আজকের মত”।
“আমার জানা নেই সেটা,যাক আজ কেউ তোমাকে ড্রিঙ্কের জন্যে ডাকলে,না বলো,আজ তুমি যাবে বিশেষ এক খদ্দের এর সাথে”।

ক্লাব খোলার পর মেয়েরা যথারীতি খুঁজে নিল তাদের বসার জায়গা,থাই মেয়েরা একদিকে,
সবজান্তা কোলম্বিয়ান মেয়েরা আরেক দিকে,ব্রাজিলের তিনজন আরেক দিকে।ওরা ছাড়াও ছিল একজন অষ্ট্রিয়ান,দুজন জার্মান,কজন পুর্ব ইউরোপ থেকে আসা লম্বা,নীল চোখের মেয়েরা যারা খুব সহজেই কেমন ভাবে যেন প্রেমিক খুজে পায় সহজেই।

লোকজন আসা আরম্ভ হলো-রাশিয়ান,সুইস,জার্মান,সবাই ব্যাস্ত অফিস কর্মকর্তার দল,তাদের সামর্থের অভাব নেই শহরের সবচেয়ে দামী পতিতাদের জন্যে।বেশ কজন এলো তার টেবিলে,তবে তার চোখটা ছিল মিলানের দিকে,তার সম্মতির অপেক্ষায়।কিছুটা স্বস্তি ছিল মারিয়ার মনে,অন্তত পা দুটো ছড়িয়ে যোনী সংগ্রাম করতে হচ্ছে না তাকে,বিটকেলে শরীরের গন্ধে অস্থির হতে হচ্ছেনা-শুধু শেখাতে হবে একজনকে শরীরের গান,হারিয়ে যাওয়া যৌনতা এনে দিতে হবে নতুন এক আকাশে।বসে বসে ভাবছিল,উপহারের পর্বটা,তার অভিজ্ঞতার কথা নতুন করে,খুঁজে দেখছিল অভিজ্ঞতার পুরোনো মুখগুলো।

মনে হয় তার,ঐ মানুষগুলো ফিরে যেতে চায় তাদের পুরোনো হারানো,তার কিই বা যায় আসে,ঠিকমত পয়সা পেলেই হলো।রালফ হার্টের থেকে কমবয়সীই হবে হয়তো,একজন তার টেবিলে এসে বসলো।একটা ফলের ড্রিঙ্ক অর্ডার দিয়ে সে অপেক্ষায় থাকলো নাচের আমন্ত্রনের জন্যে।“আমার নাম টেরেন্স,আমি ইল্যান্ডের এক রেকর্ড কোম্পানীতে কাজ করি।এখানে আগেও এসেছি,কিছুটা ধারণা আছে আমার,তাই আশা করি আমাদের কথাগুলো থাকবে এখানেই,আমাদের মাঝে”।

মারিয়া ব্রাজিল সমন্ধে কিছু বলতে চাইছিল,সে তাকে থামিয়ে বললো,
“মিলান আমাকে বলেছে,তুমি জান আমি কি চাই”।
“তুমি কি চাও জানি না,তবে আমার কাজে আমি বেশ দক্ষ”।

অন্যান্য দিনের নিয়ম কানুন ছিল না সেদিন,বিলটা দিয়ে সে মারিয়াকে ট্যাক্সিতে নিয়ে
তার হাতে ১০০০ ফ্রাঙ্ক তুলে দিল।কিছু সময়ের জন্য তার মনে পড়লো আরব লোকটার কথা,নামী শিল্পীর ছবি ভঁরা রেস্তোরার কথাটাও মনে পড়লো।কিছুটা বিচলিত হলো সে,ট্যাক্সি থামলো শহরের একটা নামকরা হোটেলের সামনে,দরজার উর্দিপরা লোকটা আমন্ত্রন জানালো তাদের।সোজা হেঁটে গেল তারা হোটেলের রুমে-বিরাট একটা রুম,জানালার পাশ দিয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে একটা নদী।

মারিয়া দেখছিল লোকটার মদ খাওয়া-চমৎকার দেখতে লোকটা,কি চায় সে তার মত এক পতিতার কাছে।খুব একটা কথা বলছিল না,মারিয়ারও খুব একটা কথা বলা হচ্ছিল না তাই।এমন তো হওয়ার কথা না,হাজার ফ্রাঙ্কের খদ্দেরের সাথে।
“প্রচুর সময় আছে আমাদের হাতে”,বললো টেরেন্স।“সারা পৃথিবীর সময় আমাদের হাতে এখন্।যদি চাও,রাতটা কাটাতে পার এখানে”।

তার মনের অস্বস্তি্টা ফিরে এলো আবার,অন্যান্য খদ্দেরদের মত,মানুষটার মধ্যে কোন দূর্বলতা ছিল না।জানা ছিল তার চাওয়াটা কি,সুন্দর গান ছেড়ে দিল,নদী দেখা জানালার ঘর,রোমান্টিক সুর মায়াবী এক পরিস্থিতি।সুন্দর সুট গায়ে,সুটকেসটা ঠেলে রাখা একপাশে-
শুধু আসা যেন একটা রাতের জন্য,জেনেভায়।
“বাড়ীতে ফিরে যাব,পরে”,মারিয়া বললো।

বদলে গেল লোকটার চেহারা,চেয়ারটা দেখিয়ে বেশ গম্ভীর সুরে বললো,
“বসে থাক,ওখানে”।
একটা আদেশ,রীতিমত একটা আদেশ,উত্তেজনা ফিরে এলো মারিয়ার মনে।
“ঠিকমত বস,সোজা হয়ে বসো,একজন সম্ভ্রান্ত মহিলার মত,না হলে শাস্তি পাবে”।
শাস্তি পাবে!বুঝতে পারলো বিশেষ খদ্দের এর মনোভাব,ব্যাগ থেকে ১০০০ ফ্র্যাঙ্ক বের করে টেবিলে রেখে দিল।

“আমি জানি তুমি কি চাও?আমার পক্ষে সেটা করা সম্ভব না”,লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে সে বললো।
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেল পরিস্থিতি,কিছুটা নরম সুরে টেরেন্স বললো,
“বসো,আমার সাথে একটু মদ খাও।কিছুক্ষন থাকলে খুব ভাল হয়,আর যেতে চাইলে তুমি যেতে পার,কোন আপত্তি নেই আমার”।
কিছুটা আস্বস্ত হলো তার মনটা।
“আমি একজনের চাকরী করি,একটা অনুরোধ-আমার মালিককে কিছু না বলো না”।
কোন আকুতিমিনতি নিয়ে বলা ছিল না কথাগুলো,এক সভ্য অবস্থানে সেটাই মানানসই।
টেরেন্স তখন ফিরে গেছে তার বেশ সম্ভ্রান্ত ভদ্রলোকের চেহারায়।
এ ভাবে চলে যাওয়াটা কি ঠিক হবে?জানা হবে না ‘বিশেষ খদ্দের’ এর রুপটা।
“কি চাও তুমি”?

সূত্রঃ চতুর্মাত্রিক।
তারিখঃ জুন ১৬, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ