রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার ঘটনা এখন আর নতুন কিছু নয়। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়া যুদ্ধে জড়ানোর কারণে পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ব্যবসা বন্ধ করে। তবে এবারে ধাক্কাটা এসেছে রাশিয়ার ‘বিপদের বন্ধু’ বলে পরিচিত ভারত থেকে। কারণ, ভারতের অন্যতম বৃহৎ দুই বহুজাতিক কোম্পানি টাটা স্টিল ও ইনফোসিস সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। খবর সিএনএনের
টাটা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান টাটা স্টিল শুধু ভারতেই নয়, ইউরোপেরও অন্যতম বৃহৎ ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানি। আর ইনফোসিসও ভারতের আরেক বৃহৎ বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি।
ইস্পাত কোম্পানি টাটা স্টিল গত বুধবার জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বন্ধের বিষয়ে একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে সরে এলে তাদের ব্যবসায়ে সম্ভাব্য কী ঝুঁকি দেখা দিতে পারে, সেটি নিয়েও চিন্তা করেছে তারা।
এক বিবৃতিতে টাটা স্টিল জানিয়েছে, রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা শেষ করে ব্যবসায়ের গতি ঠিক রাখতে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। পরিকল্পনায় ভারত, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসে টাটা স্টিলের সব কারখানায় কাঁচামালের বিকল্প সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি কোম্পানিটি।
এদিকে রাশিয়া থেকে কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইনফোসিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সলিল পারেখ বলেন, ‘ওই অঞ্চলে (রাশিয়া-ইউক্রেন) যা চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া থেকে আমাদের সব কার্যক্রম বাইরে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছি।’
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে গত দুই মাসে বিশ্বের কয়েক ডজন কোম্পানি রাশিয়ায় তাদের ব্যবসা বন্ধ বা স্থগিত করেছে কিংবা কার্যক্রম সীমিত করেছে। সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো ভারতের ইনফোসিস ও টাটা স্টিল।
তবে ভারতের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর রাশিয়া ছাড়ার ঘোষণা দেশটির সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় উদ্যোগগুলোর বিপরীত বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত রাজনীতির চেয়ে অর্থনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।
পশ্চিমা দেশগুলো যখন রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছিল, তখন ভারত রাশিয়া থেকে কম দামে তেল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে অপসারণে ভোট দেওয়া থেকেও বিরত ছিল ভারত। এর বড় কারণ হলো, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দেশটির সামরিক সরঞ্জামের ৫০ শতাংশের বেশি আসে রাশিয়া থেকে।
তবে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বিকল্প হিসেবে সম্পর্কোন্নয়নে তৎপর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারত সফর করেছেন। আর এখন ভারত সফরে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ২৪, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,