বিশ্বের সব সাংবাদিককে শান্তির নোবেল উৎসর্গ করেছেন ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এখন সাংবাদিক হওয়াটা অনেক বেশি কঠিন ও বিপজ্জনক। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সাহসী লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে এবার যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন দুই সাংবাদিক ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা (৫৮) ও রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ (৫৯)। নরওয়ের রাজধানী অসলোতে গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দুজনের নাম ঘোষণা করা হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মারিয়া বলেন, ‘এটা (নোবেল শান্তি পুরস্কার) সত্যিই বিশ্বের সব সাংবাদিকদের জন্য।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য মারিয়া তাঁর লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের (সাংবাদিক) অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য দরকার। এখন সাংবাদিক হওয়াটা অনেক বেশি কঠিন ও বিপজ্জনক।’
দুই সাংবাদিককে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টিকে আপৎকালীন পরিস্থিতি থেকে সাংবাদিকতাকে রক্ষার একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন মারিয়া। তাঁর আশা, এই পুরস্কার সাংবাদিকদের ভয়ভীতি ছাড়াই ভালোভাবে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
মারিয়া ফিলিপাইনের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট র্যাপলারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ফিলিপাইন ব্যুরোপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
২০১২ সালে আরও কয়েকজনের সঙ্গে র্যাপলার প্রতিষ্ঠা করেন মারিয়া। ফিলিপাইনে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে শত শত মানুষকে হত্যা করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় র্যাপলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিলিপাইনে পাচার বিষয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে র্যাপলার।
ফিলিপাইনের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে ও তাঁর নীতির খোলাখুলি সমালোচনা যারা করে, তাদের মধ্যে র্যাপলার অন্যতম। এ জন্য র্যাপলারের প্রধান মারিয়াকে সরকারের রোষানলে পড়তে হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।
গত বছর ফিলিপাইনের সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ আইনে ম্যানিলার একটি আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। সত্যের সন্ধান ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য তাঁকে একাধিকবার জেলেও যেতে হয়েছে। মারিয়া ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ অক্টোবর ১২, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,