আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, মেয়র, সংসদ সদস্যসহ ৪৯ ব্যক্তিকে একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হওয়া ১৪৪টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এসব মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি হবে। এ জন্য ঢাকার আদালতের নিরাপত্তা জোরদারেও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র মতে, এরই মধ্যে আসামিদের আদালতে হাজির করতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে পুলিশের লালবাগ জোন বরাবর অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগ। আজ ভোরে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে।
তারপর তাঁদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি হবে। তবে কোনো আসামি অসুস্থ থাকলে বা কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করা হলে সে ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি হবে না।
জানা গেছে, এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪৯ জনকে আদালতে হাজির করা হবে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমোডর মনিরুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাবেক কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, বাড্ডা থানা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার পিন্টু এবং পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমান।
এর মধ্যে আতিকুলকে ১৩ মামলায়, মামুনকে ১৬ মামলায়, কামাল আহমেদকে ১২ মামলায়, পলককে ১০ মামলায়, আনিসুলকে ৯ মামলায়, সালমান এফ রহমানকে চার মামলায়, দীপু মনিকে পাঁচ মামলায়, মেনন ও রাজ্জাককে তিন মামলায়, ব্যারিস্টার সুমন, সাদেক, হাজি সেলিম ও জিয়াউলকে দুটি করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।
ডিএমপির উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. তারেক জুবায়ের বলেন, পুলিশের লালবাগ জোনের সঙ্গে সমন্বয় করে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
সূত্র:কালের কন্ঠ।
তারিখ: অক্টোবর ৩০, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,