এই বাজেট ‘ছিনতাই’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বিদেশে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন। তিনি মনে করেন, এই বাজেট থেকে গরিব মানুষ কিছু পায়নি, বরং বিদেশে যাঁরা বেনামে সম্পদ করেছেন, তাঁদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক, রাজনৈতিকভাবে হঠকারী ও অর্থনৈতিকভাবে অনুপযোগী। একজন একবার চুরি করল, আবার সেই টাকা চুরি করে বিদেশে পাঠিয়ে দিল। এই দুবার চুরির অপরাধীকে ৭ শতাংশ কর দিয়ে দেশে টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলো। অথচ সৎ করদাতারা বছরের পর বছর ৩০-৩২ শতাংশ কর দিয়েছেন। বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আনা অলীক কল্পনা। এটা কার্যকর হবে না। এতে সরকারের বদনাম হলো। এ ধরনের নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যেও আলোচনা হওয়ার কথা জানি না।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত কীভাবে হলো? এই বাজেটে গরিব মানুষের জন্য কিছু হলো না, কিন্তু বিদেশে বেনামে সম্পদধারীদের সুযোগ দেওয়া হলো। তাহলে এই বাজেট কার জন্য হলো? এটা কীভাবে ছিনতাই হয়ে গেল, সেটিই আজকে দেখার বিষয়।’
অন্যদিকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার উদ্যোগকে ‘দিবাস্বপ্ন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, যাঁরা টাকা পাচার করে ফেলেছেন, তাঁরা আবার এই টাকা দেশে আনবেন, এটা দিবাস্বপ্নের মতো। এর আগে একাধিকবার কালোটাকার সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলেও তেমন সাড়া মেলেনি।’
তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘পি কে হালদার ধরা পড়েছেন। কিন্তু তাঁর টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখন আর পি কে হালদারের হাতেও নেই। তাঁর অর্থ ফেরত পাঠাতে ভারতের আপত্তি থাকতে পারে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তি থাকতে হবে। অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন করে আমরা এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হয়েছিলাম। এখন আমরা তাদের কাছে কী জবাব দেব?’
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে বক্তব্য দেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক রিফাত বিন সাত্তার, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক কাশফিয়া ফিরোজ ও অভিযানের নির্বাহী পরিচালক বনানী বিশ্বাস।
মধ্যবিত্তরা এখন ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এগুলো হলো বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক বাজেটীয় পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ১৯, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,