প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশে অবস্থানরত কিছু লোক সরকারের সমালোচনা ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ব্যস্ত। এমন সময়ে তারা এসব করছে যখন আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি কোনো কোনো মানুষকে এ কথাও বলতে শুনেছেন যে- তারা বিমানে করে নিউইয়র্কে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ভর্তি বস্তা ও ট্রাঙ্ক নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী এই অভিযোগকারীদের কাছে জানতে চান যে, এই ট্রাঙ্ক ও বস্তাগুলো যায় কোথায়।
তিনি সকলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে ১৫০টি স্যুটকেসে অর্থ ভর্তি করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন এবং সৌদি আরবের লকার ভাড়া করে ওই অর্থ রেখেছেন। তার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরকে কয়েক লাখ ডলারসহ যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারপোর্টে আটক করা হয় এবং পরে বাংলাদেশি দূতাবাসের মধ্যস্থতায় তাকে মুক্ত করা হয়। নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া এয়ারপোর্টের ম্যারিয়ট হোটেলে আওয়ামী লীগের ইউএস চ্যাপ্টার আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তারা মূলত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তারা দেশের জনগণের শত্রু।
সরকারপ্রধান বলেন, রাজনীতি ভোগের জন্য নয় বরং এটি আত্মত্যাগের জন্য। জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া কখনো জনগণের কল্যাণের কথা ভাবেননি বরং তারা ক্ষমতাকে ভোগ এবং দ্রুত অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে বিবেচনা করতেন।
কিছু মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ হিসেবে আখ্যায়িত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো তারা কিভাবে এই কথাগুলো বলার সুযোগ পায়?’ তারা তার সরকারের তৈরি ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগের সমালোচনার সুযোগ পাচ্ছে। ‘যদি তাদের কোনো আদর্শ থাকে, তারা কখনোই তা করতে পারে না। যারা সরকারের সমালোচনা করছে তারা মূলত বিএনপি-জামায়াত চক্রের কেনা গোলাম।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছিল এবং হাইকোর্ট তাদের সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এতিমদের অর্থ আত্মসাতের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং তার ছেলে (তারেক রহমান) ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই দুর্নীতিতে তাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে জয়কে (সজীব আহমেদ ওয়াজেদ) অপহরণ ও হত্যার জন্য বিএনপি টাকা দিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র্রেও দুর্নীতির সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। খালোদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক জিয়া ও কোকো দেশ থেকে অর্থপাচারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। সরকার তাদের পাচার করা অর্থের একটি অংশ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশে অর্থপাচারের মাধ্যমে সেখানে বিলাসী জীবনযাপন করাই তাদের চরিত্র।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের দীর্ঘ সময় পর আবার ক্ষমতায় এলে, দেশের জনগণ প্রথম বুঝতে পারে যে- সরকার জনগণের সেবক এবং জনকল্যাণে কাজ করে। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, তখনই বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে।
তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্রিমলাইনার বিমানে করে দুটি কারণে নিউইয়র্কে এসেছি। প্রথম কারণ হচ্ছে- অন্য এয়ারলাইন্সের পরিবর্তে দেশি একটি এয়ারলাইন্সকে অর্থ প্রদান এবং এভাবে আমাদের নিজের হাতেই এ ধরনের অর্থ থেকে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি একটি বিমান উড্ডয়ন না করে বিমানবন্দরেই থেকে যায়, তাহলেও প্রতিদিন একটি বিরাট অংকের টাকা খরচ হয়। এমনিতেই করোনা ভাইরাসের কারণে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো স্থগিত রয়েছে। তিনি বলেন, তার সরকার ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় বিমান পরিচালনা শুরু করতে একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সূত্র: বাসস
সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২৫, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,