ইউরোপের অভিন্ন মুদ্রা ইউরো প্রবর্তিত হয় ১৯৯৯ সালে। সেই হিসাবে ইউরোর ২৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটল—মার্কিন ডলার ও ইউরোর মান সমান হয়ে গেল।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে এক ডলারের বিনিময়ে ঠিক এক ইউরো মিলেছে, অর্থাৎ এ বছর ইউরোর দরপতন হয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতির সূচক রেকর্ড ছুঁয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার হ্রাস করেছে। এই বাস্তবতায় ইউরোপসহ আমেরিকায় চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ইউরো আর ডলার সমান হয়ে গেল।
যুদ্ধের আগে ইউরোপের ৪০ শতাংশ গ্যাস আসত রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের জেরে ইউরোপ রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। শুধু তা–ই নয়, দীর্ঘ মেয়াদে রাশিয়ার তেল–গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের চেষ্টা করছে তারা। এর জবাবে রাশিয়াও ইউরোপের অনেক দেশে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস করেছে। ফলে উৎপাদন–সংকটে পড়েছে ইউরোপ। খবর সিএনএনের।
তবে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ এ পর্যন্ত নীতি সুদহার ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছে। সে কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে আমেরিকায় বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। ফলে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এদিকে শুধু ইউরো নয়, এ কারণে গোটা এশিয়াতেই স্থানীয় মুদ্রা এখন দুর্বল—চিনের ইউয়ান, জাপানের ইয়েন—সব কটিরই পতন ঘটছে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুদ্রারও পতন হয়েছে।
বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম যেভাবে স্থির হয়, সেই চাহিদা আর জোগানের অঙ্ক মেনেই বিদেশি মুদ্রার সাপেক্ষে দেশীয় মুদ্রার দাম নির্ধারিত হয়। বিদেশি মুদ্রার প্রয়োজন হয় বৈদেশিক বাণিজ্যের কাজে। বিশ্ব বাণিজ্যে ডলারের একক আধিপত্যের কারণে ডলারে এগিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুলাই ১৩, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,