জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকা আর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে দেওয়া উন্নয়নের নৌকা এখন শ্রীলঙ্কার পথে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডের ঈদগাহ মাঠে জাপার মিরপুর ও শাহ আলী থানার দ্বিবার্ষিক-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বললেই সরকারের কিছু নেতা ষড়যন্ত্র খোঁজেন। আমরা যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার মতো ব্যর্থ হতে চলছে, তখন আমাদের মূর্খ বলেছেন। এখন আমাদের প্রশ্ন, দেশে লোডশেডিং কেন? ডলারের দাম এত বেড়েছে কেন? জ্বালানি তেলের দাম এত বেড়েছে কেন? সারা দিন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফকে গালাগাল করে এখন ঋণের জন্য তাদের পেছনে ঘুরছেন কেন?’
জ্বালানি খাতে বিপুল দুর্নীতির অভিযোগ করে জাপার চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ জানতে চায়, প্রতিবছর কত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে জ্বালানি খাতে। কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
বিদেশে অর্থ পাচার প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, তাদের তালিকা জানতে চায় দেশের মানুষ। সরকার পাচারকারীদের তথ্য প্রকাশ না করে নিজেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দুর্নীতিবাজ ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছে সরকার। তাই সাধারণ মানুষ মনে করছে, বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ক্ষমতাসীন দলের লোকজনকে বাঁচাতে দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করছে না।
আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা জি এম কাদের বলেন, দেশের মানুষ আর টালবাহানার নির্বাচন চায় না। নির্বাচনের নামে ইভিএমের কারসাজি চলবে না। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেই আওয়ামী লীগের কিছু নেতা মনে করেন তাঁদের গালাগাল দেওয়া হচ্ছে। অযৌক্তিকভাবে তাঁরা আমাদের গালাগাল দিতে শুরু করেন। তাঁরা বুঝতে চান না, মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চান। মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে চান।’
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ১২, ২০২২
আমরা শ্রীলঙ্কার মতো স্বৈরশাসন চাই না: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। তিনি বলেন, সরকার নাকি আইএমএফের পরামর্শে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। আইএমএফ যদি মানুষ হত্যা করতে বলে, তাহলে কি সরকার মানুষ হত্যা করবে?
সোমবার বিকেলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে জি এম কাদের এ কথা বলেন।
এ সময় জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন নিম্নমুখী, তখন হঠাৎ দাম বাড়াতে হলো কেন? তেলের দাম ১০৯ ডলার থেকে কমিয়ে ৮৯ ডলার হয়েছে, তখন কেন দেশে তেলের দাম বাড়াতে হবে? যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে, সেই টাকা গেল কোথায়? লুটপাট হয়েছে?
জি এম কাদের বলেন, ‘আমি আগে যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে, তখন আমাকে বলা হলো আমি নাকি মূর্খ। কিন্তু এখন এই অবস্থা কেন?’ তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কিছু মিল রয়েছে আমাদের। সেখানেও স্বৈরশাসন চলছে। জনগণের কাছে শাসকদের কোনো জবাবদিহি নেই। আর মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলছে। আমরা শ্রীলঙ্কার মতো স্বৈরশাসন চাই না, মেগা প্রকল্প চাই না।’
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, এমন অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। তেলের দাম বাড়ালেই পরিবহনশ্রমিকেরা একধরনের হরতাল ডেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেন। তখন সরকার হাত-পা ধরে কিলোমিটারে ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়। আর পরিবহনশ্রমিকেরা কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করছেন। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হয়, তাকে পথে নামিয়ে দেওয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা বলেন, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। আমরা জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি। বিশ্বব্যাংক আর আইএমএফকে সকাল–সন্ধ্যা গালাগাল করল সরকার। আমাদের নাকি অনেক রিজার্ভ আছে। কিন্তু এখন কেন ঋণের জন্য ধরনা দিচ্ছে? এত রিজার্ভ গেল কোথায়?
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দেশে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেসব দেশে রেশন দেওয়া হয় আর দুঃসময়ে নগদ টাকাও দেওয়া হয় জনগণকে। সেখানে মানুষের প্রতি সরকারের জবাবদিহি আছে। আমাদের দেশের মানুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, এখন প্রতিনিধিরা রাজা হয়ে গেছেন, সাধারণ মানুষ হয়েছে প্রজা। আমরা আর রাজা চাই না। দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় দেশের মানুষ।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৯, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,