ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ইউরোপ সফর করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করতে গতকাল বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পৌঁছেছেন তিনি। বাইডেন আজ বৃহস্পতিবার মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বিবিসি বলছে, এবারের ইউরোপ সফরে বাইডেন পাঁচটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।
১. ঐক্য প্রদর্শন
রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত তাদের মিত্রদের সঙ্গে ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়েছে। বিশেষ করে যুদ্ধের প্রথমদিকে জরুরি পরিস্থিতিতে কিছু প্রথাগত বাধা দূর করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে যুদ্ধ যতই দীর্ঘায়িত হবে, মতবিরোধের সম্ভাবনাও ততই বাড়বে। বাইডেনকে মিত্রদের বোঝাতে হবে, ন্যাটোর সংকল্প শক্তিশালী করা অস্থায়ী শর্ত নয় বরং এটা নতুন স্বাভাবিক।
২. শরণার্থী সংকট
রাশিয়ার অভিযানের মুখে ৩৫ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন। বেশির ভাগ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন পোল্যান্ডে। ইউক্রেনীয় লাখ লাখ শরণার্থীর জন্য সীমান্ত খুলে রাখায় বেশ চাপে পড়েছে পোল্যান্ড। সংকট ঠিকভাবে মোকাবিলা করা না গেলে এতে করে দেশটিতে সামাজিক অশান্তি ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা শুরুর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আস্থা রাখার মতো ন্যাটো সদস্য হিসেবে পোল্যান্ডের এমন অবস্থান সংহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করাটাও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়।
৩. সামরিক সমাধান
ইউক্রেনে আরও দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে, প্রতিশ্রুতি দেওয়া যতটা সহজ, বাস্তবায়ন করা ততটা সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সহায়তা দেওয়ায় এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এতে করে ন্যাটোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার বাহিনী তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এ ছাড়া একই সঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইউরোপে মার্কিন মিত্রদের সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের এসব অস্ত্র পৌঁছানোও সম্ভব নয়।
৪. নিষেধাজ্ঞার রূপরেখা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নেতৃত্বে রাশিয়ার ওপর একের পর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এতেও ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা বন্ধ করা যায়নি। পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো জোর দিয়ে বলছে, নিষেধাজ্ঞার খড়্গ ধীর ধীরে টের পাবে রাশিয়া। কিন্তু এতে করেও খুব যে কাজ হচ্ছে, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, রাশিয়া পিছু হটেনি। অনেকে বলছেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়াকে শাস্তি দিতে হলে নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এ নিয়েও চাপে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ।
৫. চীন প্রসঙ্গ
রাশিয়া থেকে চীনকে দূরে রাখতে ও সম্ভব হলে রাশিয়ার আগ্রাসনের আরও স্পষ্ট করে নিন্দা জানানোর জন্য বেইজিংকে রাজি করাতে আমেরিকা ও ইউরোপকে এক হয়ে চেষ্টা চালাতে হবে। রাশিয়াকে খোলাখুলি সাহায্য করলে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিতে ইতিমধ্যেই দেশটির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে আসন্ন প্রধান জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চীনের সাম্প্রতিক সমর্থনে বোঝা যাচ্ছে যে কাজটি সহজ হবে না।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: মার্চ ২৪, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,