ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। যদিও এই ঘোষণার সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মতৎপরতার মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ইউক্রেন সীমান্তে অস্থায়ী হাসপাতাল (ফিল্ড হাসপাতাল) তৈরি করছে রাশিয়া। এই পদক্ষেপ ইউক্রেন হামলার প্রস্তুতি বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বরিস বলেছেন, রাশিয়ার সেনাদের ইউক্রেন সীমান্তের আরও কাছে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু হামলার পরিকল্পনা থাকলেই এ ধরনের ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হয়।
ইউক্রেন ইস্যুতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক করেছে যুক্তরাজ্য সরকারের কোবরা কমিটি। জরুরি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এই কমিটি বৈঠক করে। এই বৈঠকের পর বরিস বলেন, এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছ থেকে মিশ্র বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।
মূলত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব কথা বলেছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে ‘কূটনৈতিক তৎপরতা শুরুর স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যাচ্ছে’। তবে যেসব গোয়েন্দা তথ্য আসছে, তা উৎসাহব্যঞ্জক নয়।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, ইউক্রেন হামলা চালালে রাশিয়ার ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রস্তুত তাঁরা। এ জন্য ‘রাশিয়ার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মুখোশ উন্মোচন’ করতে চান বরিস।
বরিস এ কথা বললেও, তাঁর সরকারের পদক্ষেপে এর প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিবিসি বলছে, রাশিয়ার অবৈধ অর্থ লন্ডন হয়ে বিভিন্ন দেশে যায়। এ প্রসঙ্গে বরিস বলেছেন, এই সমালোচনা সঠিক নয়। কারণ, বৈশ্বিক দুর্নীতি ঠেকাতে যে দেশগুলো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, তার সামনের সারিতে রয়েছে যুক্তরাজ্য। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে অবৈধ অর্থ আসা ঠেকাতে তাঁর সরকার এখন কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
এ ছাড়া রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলাও চালায়, তারপর সেখানে ব্রিটিশ দূতাবাস খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিস। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার এক লাখের বেশি সেনা রয়েছে। সীমান্ত থেকে রাশিয়া কতজন সেনা সরিয়ে নেবে, তা জানানো হয়নি। তবে সীমান্তে সেনাদের কর্মকাণ্ডের ভিডিও প্রকাশ করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের খবরে বলা হয়েছে, ভিডিওতে দেখা যায়, সেনারা তাঁদের ভারী অস্ত্র ট্রেনে তুলছেন।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, এর আগেও রাশিয়া ঘোষণা দিয়েছিল, ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্যাটেলাইট সূত্রে যেসব ছবি পাওয়া গেছে তাতে দেখা যায়, সীমান্ত এলাকায় সেনাদের কার্যক্রমের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ ছাড়া কিছু সেনা তাঁদের মহড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ ছাড়া ইউক্রেন সীমান্তের খুব কাছে যেসব সেনা ছিলেন, তাঁরা কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক মহড়ায় অংশ নেননি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিজেদের এলাকায় তারা যেখানে ইচ্ছা সেখানে সেনা নিতে পারে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,